নীল সাগরের উত্তরে স্বর্ণদ্বীপ।
এক সময় বেশ কয়েকটি স্বর্ণখনি ছিল এই দ্বীপে। তখন অনেক মানুষের আনাগোনা থাকলেও এখন আর কেউ যায় না সেখানে। কোনো মানুষজনও বসবাস করে না। স্বর্ণখনি থেকে স্বর্ণ তুলে আনতেও সাহসী হয় না কেউ। কারণ, স্বর্ণদ্বীপে এখন এক ভয়ঙ্কর দানব বাস করে। ওখানে কেউ গেলে তাকে বন্দী করে রাখে সেই দানব। মাটির নিচে স্বর্ণখনিতে বন্দীদের আটকে রেখে তিল তিল করে কষ্ট দিয়ে হত্যা করে।
এখন এটা চরম আতঙ্কের দ্বীপে পরিণত হয়েছে। নীল সাগরে চলাচল করা জাহাজ, নৌকাগুলো এই দ্বীপের বহু দূর দিয়ে যায়। কোনোভাবেই কাছে যাওয়ার সাহস করে না মাঝিমাল্লার দল। কারণ, ওখানে গেলে কেউ প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারে না।
রহমত গরিব জেলেমানুষ। অভাবের সংসার। নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। সাগরে, নদীতে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালায়। কিন্তু মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে যে টাকা-পয়সা পায় তাতে ঠিকমতো সংসার চলে না। যথেষ্ট পরিশ্রম করে রহমত । জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সাগরে ঝড়-তুফান উপেক্ষা করে নৌকা চালায়। জাল ফেলে মাছ ধরে। সব সময় মাছ পাওয়া যায় না। তখন খালি হাতে ফিরতে হয় বাড়িতে। না খেয়ে কাটাতে হয় রহমত এবং তার পরিবারের সবাইকে। এতো কষ্টের পরও সে তার বাপ-দাদার পেশা ছাড়তে পারে না। অভাবের তাড়নায় সাথের কেউ কেউ অন্য কাজ ধরেছে। তাদের অভাব দূর হয়েছে। অনেকেই রহমতকে মাছ ধরার কাজ ছেড়ে জলদস্যুর দলে যোগ দিতে বলেছে। জলদস্যুর দল সাগরে বিভিন্ন নৌকা এবং জাহাজে ডাকাতি, লুটপাট করে। মানুষ হত্যা করে তাদের মূল্যবান ধনসম্পদ ছিনিয়ে নেওয়া তাদের কাজ। জেলে হিসেবে নৌকা নিয়ে উত্তাল সাগরে ঘুরে বেড়ানো রহমত অনেক সাহসী হলেও লোভী কিংবা অসৎ নয়। চুরি ডাকাতি করে লুটপাট করে অনেক টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার কথা ভাবতে পারে না সে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিশ্রম করেই সৎভাবে টাকা-পয়সা উপার্জন করতে চায় সে।

নৌকা নিয়ে রহমত নীল সাগরে মাছ ধরতে গেছে বহুবার। সাগরের উত্তরে স্বর্ণদ্বীপের কাছাকাছি যাবার সাহস করেনি সে। যদিও শুনেছে সে, ভয়ঙ্কর সেই দ্বীপে এখনও প্রচুর স্বর্ণ রয়েছে। দানবের ভয়ে কেউ তা আর তুলে আনতে পারেছ না  বলে সেই স্বর্ণ পড়ে আছে খনির মধ্যে। স্বর্ণের লোভে যারাই গেছে, তাদেরকে এই দ্বীপের ভয়ঙ্কর দানব বন্দী করেছে। তারপর তাদের তিল তিল করে কষ্ট দিয়ে নিষ্ঠুরভাবে মেরেছে। রহমত লোভী নয় কোনোভাবেই। তাই সে কোনো সময়ে স্বর্ণদ্বীপে যাবার কথা চিন্তা করে না।
কিন্তু একদিন সাগরে মাছ ধরতে ধরতে সন্ধ্যে হয়ে যায়। মাছ ধরায় ব্যস্ত থাকায় কোনো দিকে খেয়াল ছিল না রহমতের। অন্ধকার নেমে আসে সাগরে। এর মধ্যে ঝড়বৃষ্টি  শুরু হয়। বড় বড় ঢেউয়ের তালে তার মাছ ধরার ছোট্ট নৌকা বেসামাল হয়ে পড়ে। অনেক কষ্টে নৌকার হাল ধরে থাকে সে। সঙ্গে কেউ না থাকায় আরও বেশি বিপদে পড়ে যায়, অসহায়ভাবে নিজের নৌকা নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করতে থাকে। ঝড়বৃষ্টি আর সাগরের বড় বড় ঢেউয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে এগোতে থাকে সে। তার নৌকা কোনদিকে যাচ্ছে ঠিকঠাক মতো বুঝে উঠতে পারে না। কারণ, রাতের অন্ধকারে ঝড়বৃষ্টির মধ্যে কখনও সাগরে থাকেনি রহমত। দিনের আলোতে কিছুটা ঠাহর করে সাগরে নৌকা নিয়ে পথ চলা গেলেও রাতে সেটা মোটেও সম্ভব নয়। এভাবে চলতে চলতে ঝড়ের মধ্যে নৌকাটি একটি জায়গায় গিয়ে আটকে যায়। ভালো করে তাকাতেই মাটির চিহ্ন দেখা যায়।
হয়তো বাড়ির কাছে কোথাও সাগর উপকূলে, সৈকতে নৌকাটি এসে ঠেকেছে, রহমত মনে করে। কিন্তু ততক্ষণে সকাল হয়ে যাওয়ায় দিনের আলোতে সে দেখতে পায়, অচেনা একটি দ্বীপে এসে ঠেকেছে তার নৌকা।
ঝড়বৃষ্টি থেমে গেলে নৌকা থেকে নেমে পড়ে সে। অচেনা দ্বীপে কাউকে দেখা যায় না। এই দ্বীপে মানুষজন বলতে কেউ নেই। কিছুদূর সামনে এগোতেই মাটিতে বড় বড় পায়ের ছাপ দেখে চমকে ওঠে সে। এই দ্বীপে মানুষজন কাউকে দেখা না গেলেও এতো বড় পায়ের ছাপ এলো কিভাবে? আর এ তো সাধারণ কোনো মানুষের পায়ের ছাপ নয়, দেখে ঠিক বুঝতে পারে সে। তাহলে কি সাগরে ঝড়তুফানে পথ হারিয়ে ভাসতে ভাসতে নৌকা নিয়ে স্বর্ণদ্বীপে চলে এসেছে রহমত? যেখানে এক ভয়ঙ্কর দানব বাস করে এখন। যার অত্যাচারের নির্মমতার ভয়ে, আতঙ্কে সবাই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছে । বর্তমানে এখানে কেউ আসে না। স্বর্ণখনির স্বর্ণ চুরির লোভে কেউ এলে আর ফিরে যেতে পারে না প্রাণ নিয়ে।
মাটিতে দানবের বড় বড় পায়ের ছাপ দেখে রহমত বুঝে নেয় ভয়ঙ্কর স্বর্ণদ্বীপে চলে এসেছে সে পথ হারিয়ে। কিন্তু সে তো স্বর্ণের লোভে এখানে আসেনি। সাধারণ এক গরিব জেলে সে। টাকা-পয়সার কোনো লোভ-লালসা নেই তার মনে। অনেক কষ্টে তার সংসার চলে। সৎভাবে পরিশ্রম করে বাঁচার লড়াই করছে সে। এখন এই স্বর্ণদ্বীপে যদি সেই ভয়ঙ্কর দানব দেখে ফেলে, তাহলে ভাববে, অন্য অনেকের মতো সেও এসেছে স্বর্ণখনির মূল্যবান স্বর্ণ চুরি করতে। লোভী স্বর্ণচোর সন্দেহে নিশ্চয়ই তাকে স্বর্ণখনিতে মাটির নিচের অন্ধকারে আটকে রাখবে। সেখানে অনেক কষ্ট পেয়ে মরতে হবে তাকে।
যে করেই হোক এই ভয়ঙ্কর বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে হবে তাকে। কোনোভাবেই দানবের সামনে পড়া যাবে না। যদি তার সামনে পড়ে যায়, তাহলে তাকে বিশ্বাস করাবে কিভাবে, সে আসলে চুরি করতে আসেনি। ঝড়তুফানে পথ হারিয়ে চলে এসেছে এই স্বর্ণদ্বীপে।
রহমত অনেক ভয় পেয়ে যায়। দ্রুত ছুটতে থাকে সাগরের দিকে, যেখানে সে তার নৌকাটি বড় একটি পাথরের সঙ্গে বেঁধে রেখে এসেছিল।
কিন্তু হঠাৎ করে রহমতের সামনে পাহাড়ের মতো বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিশাল দেহের দানবটা। তার পথ আটকে দানব হুঙ্কার ছাড়ে। রাগে দু’হাত নিজের বুকে চাপড়ায়। থর থর করে কাঁপতে থাকে স্বর্ণদ্বীপের পুরো এলাকা।

হাত, পা ছুড়ে ভয়াবহ গর্জন করতে করতে দানব বলে, অ্যাই, তুই কি মরতে এসেছিস এই দ্বীপে। স্বর্ণ চুরি করতে এলে কেউ ফিরতে পারে না এখান থেকে। তোর অবস্থাও তাদের মতো হবে, যারা এর আগে এসে এখানে আমার হাতে ধরা পড়ে বন্দী হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরেছে। তুই মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হ।
তখন ভয়ে করজোড়ে রহমত মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে দানবের সামনে। কী বলবে সে, ভেবে পায় না। তার কথা কি বিশ্বাস করবে এই ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর দানব? তারপরও সে বলতে থাকে নিজের কথা।
‘বিশ্বাস করো, আমি স্বর্ণের লোভে এই দ্বীপে আসিনি। আমি রহমত। একজন সাধারণ গরিব জেলে। টাকা-পয়সার কোনো লোভ নেই আমার। অনেক কষ্টে সংসার চালাই। অনেক সময় দু’বেলা খাবারও জুটে না। আমি চাইলে চুরি ডাকাতি করে অন্যের ধন-সম্পদ ছিনিয়ে নিয়ে আমার এই দুঃখকষ্ট আর অভাবের জীবন বদলাতে পারতাম অনেক আগেই। আমি অসৎভাবে উপার্জন করে সংসার চালাতে চাই না। নিজের পরিশ্রমে যা পাই সেটা দিয়েই কোনোভাবেই বেঁচে থাকতে চাই। আমাকে ছেড়ে দাও। আমি এখানে তোমার হাতে বন্দী থাকলে বাড়িতে আমার বউ ছেলে-মেয়েরা আমার অপেক্ষায় থাকবে। অভাবের সংসারে সবাই না খেয়ে মারা যাবে। তার চেয়ে আমি বাড়ি ফিরে তাদেরকে সংসার চালানোর মতো কিছু ব্যবস্থা করে দিয়ে আসি। তাদের জন্য কিছু একটা করে দিয়ে সাথে সাথে আমি আবার ফিরে আসবো তোমার কাছে এই স্বর্ণদ্বীপে। তখন তুমি আমাকে আটকে রেখে যা খুশি শাস্তি দাও। সব মাথা পেতে নেবো। যদি তোমার হাতে আমার মৃত্যুও হয়, তাতে কোনো দুঃখ থাকবে না।
জীর্ণ ক্লিষ্ট শীর্ণ দেহে ছেঁড়া জামা-কাপড় পরা গরিব জেলে রহমতের কান্নাজড়ানো কথাগুলো শুনে দানবের কঠিন মন গলে নরোম হয়ে যায়। তার সহজসরল কথাবার্তা শুনে দয়া হয় দানবের মনে। লোকটি তার পরিবারের অন্য সবার জীবনধারণের জন্য  কিছু একটা ব্যবস্থা করে দিয়ে আসতে চাইছে। তাকে তেমন একটা সুযোগ দিয়ে দেখতে চায় দানব। এর আগে তো কেউ তেমনভাবে তার কাছে সুযোগ চায়নি। দেখা যাক, সুযোগ পেয়ে শেষ পর্যন্ত  গরিব জেলেটি কী করে?
এখান থেকে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরে গিয়ে যদি সে ফিরে না আসে তাহলে তো কিছু করার থাকবে না। তবুও এই দ্বীপে ফিরে আসার শর্তে সূর্যকে বাড়ি যাবার সুযোগ দিতে চায় দানব।
রহমতকে বাড়ি ফিরে যাবার অনুমতি দেয় দানব। রহমতও কয়েক দিনের মধ্যে বাড়িতে বউ ছেলে-মেয়েদের সবকিছু গুছিয়ে দিয়ে ফিরে আসবে প্রতিশ্রুতি দেয়।

স্বর্ণদ্বীপ থেকে মুক্তি পেয়ে নিজের নৌকা নিয়ে ফিরে আসে রহমত। বাড়ি ফিরে কয়েকদিনের চেষ্টায় পরিবারের জীবনধারণের কিছু ব্যবস্থা করে। কিন্তু সে বউ ছেলে-মেয়েদের কাছে আসল ঘটনার কিছুই খুলে বলে না। মন খারাপ হলেও মুখে তা প্রকাশ করে না। কারণ, স্বর্ণদ্বীপের দানবের কাছে ফিরে যাবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুক্তি পেয়েই সে বাড়ি ফিরতে পেরেছে। এখন চাইলে সে স্বর্ণদ্বীপের ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর দানবের কাছে ফিরে নাও যেতে পারে। দানব আর তাকে কোনোভাবেই নাগালে পাবে না। তাকে ফাঁকি দিয়ে নিজের বাড়িতেই থেকে যেতে পারে রহমত।
বউ-ছেলে-মেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে গিয়ে তার বুকের ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে ওঠে। তাদেরকে ছেড়ে চিরদিনের জন্য চলে যেতে কোনোভাবেই মন চায় না। স্বর্র্ণদ্বীপে ফিরে গেলে দানব তাকে বন্দী করে রাখবে এবং এভাবেই তার মৃত্যু হবে, নিশ্চিতভাবে জানে সে ।
তার বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে ।
নিজের মনের সঙ্গে অনেক যুদ্ধ করে সে। স্বর্ণদ্বীপের ভয়ঙ্কর দৈত্যকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়ি ফিরেছে, আবার সেখানে ফিরে যাবে বলে কথা দিয়ে এসেছে। এখন সেই প্রতিশ্রুতি ভেঙে ফিরে না গেলে সেটা হবে এক ধরনের ফাঁকি। গরিব হলেও রহমত অসৎ কিংবা প্রতারক নয়। মিথ্যাবাদী হিসেবে কাউকে কোনো সময়ে ঠকানোর কথা ভাবতে পারে না সে। সততার প্রমাণ দিতে চায় সে স্বর্ণদ্বীপে ফিরে।
একদিন সকালে সাগরে মাছ ধরার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরোয় রহমত ।
বউ-ছেলে-মেয়েদের কারো কাছে কোনোভাবেই পুরো ব্যাপারটা বুঝতে দেয় না।
সাগরে নৌকা নিয়ে ভাসতে ভাসতে একসময় সে স্বর্ণদ্বীপে পৌঁছে যায়। নৌকা থেকে নেমে বিষণœ মনে হাঁটতে থাকে। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে একটি বড় গাছের নিচে এসে বসে ভাবতে থাকে দানবের হাতে বন্দী হয়ে মাটির নিচে স্বর্ণখনির অন্ধকারে তিল তিল করে মৃত্যুযন্ত্রণার কথা। ভাবতে ভাবতে কেমন উদাস হয়ে পড়ে সে।
হঠাৎ সেখানে দানব এসে উপস্থিত হয়।
রহমতকে স্বর্ণদ্বীপে ফিরে আসতে দেখে অবাক হয়ে যায় দানব। এখান থেকে বাড়ি ফিরে যাবার সময় দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে এই গরিব জেলে ফিরে এসেছে। এখানে এলে তার জন্য কঠিন মৃত্যু অপেক্ষা করছে। কোনোভাবেই বউ-ছেলে-মেয়েদের কাছে ফিরে যেতে পারবে না। এতোসব জেনেও লোকটি তার সততার প্রমাণ দিতে ফিরে এসেছে এখানে। নিজের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে সে। তার সাথে প্রতারণা করেনি।
রহমতের সততায় অবাক না হয়ে পারে না দানব।

এখান থেকে ছাড়া পেয়ে প্রাণে বাঁচার সুযোগ পেলেও তার সাথে প্রতারণা করেনি লোকটা। গরিব হলেও একজন সত্যবাদী মানুষ রহমত। তার সততার কোনো তুলনা নেই। দানব মুগ্ধ হয়ে যায় তার ফিরে আসায়।
‘সত্যি তুমি অবাক করেছ আমাকে। তোমার মধ্যে কোনো লোভ-লালসা নেই। চাইলে সেদিন আমাকে ফাঁকি দিয়ে এখান থেকে স্বর্ণ চুরি করে নৌকায় করে পালিয়ে যেতে পারতে। কিন্তু তুমি তা করোনি। এরপর ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রক্ষা করেছ। এমন মানুষ পৃথিবীতে খুব কম দেখা যায়, যারা নিজের প্রাণের চেয়ে সততা বজায় রেখে প্রতিশ্রুতি রক্ষাটাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। আমি তোমাকে এই দ্বীপে আটকে রাখবো না। তুমি এখন মুক্ত। তুমি বাড়ি ফিরে যেতে পারো এক্ষুনি। তোমার সততায় আমি অনেক মুগ্ধ হয়েছি, খুশি হয়েছি। তোমাকে আমি উপহার হিসেবে কিছু স্বর্ণ দিতে চাই। যা দিয়ে তোমার বাকি জীবন বেশ ভালোভাবেই কেটে যাবে। তুমি তোমার নৌকায় ভরে স্বর্ণখনির যতখুশি পরিমাণে স্বর্ণ নিয়ে যাও। কেউ বাধা দেবে না তোমাকে। অভাব, দুঃখ-কষ্ট, দারিদ্র্য সব দূর হবে তোমার।
দানবের কথা শুনে অবাক হয়ে যায় সে। বিশ্বাস করতে পারে না পুরো ব্যাপারটা।
তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হয় সবকিছু।
স্বর্র্ণদ্বীপের দানবের কাছ থেকে পাওয়া অনেক স্বর্ণ নৌকা ভর্তি করে সাগর পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফিরে আসে রহমত। সততার পুরস্কার হিসেবে পাওয়া বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ তার ভাগ্য বদলে দেয় রাতারাতি। তার সব অভাব, দুঃখ-কষ্ট ঘুচে যায় এভাবেই।

উপদেশ : সৎ মানুষের জয় হবেই। সততার কোনো বিকল্প নেই। যে কোনো দুঃখ-কষ্ট, বিপদেও সততাকে ধরে রাখা উচিত সবার। সততার পুরস্কারের ব্যবস্থা করে দেন বিধাতাই। অতএব, সৎ থেকে, ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।

Share.

মন্তব্য করুন