মনিরা শিশু শ্রেণীর ছাত্রী। আজকে ক্লাসের পড়া শেখেনি ও। তাই ম্যাডাম আচ্ছা রকম বকাঝকা করেছে সবার সামনে। জানো না, নিজের কাজ নিজেই করতে হয়। তোমার পড়া কি কেউ শিখে দিবে? তোমাকেই শিখতে হবে। তোমার কাজ কেউ করে দিবে না বরং তোমাকেই করতে হবে। সব সময় মনে রাখবে, নিজের কাজ নিজেকেই করতে হয়।
বাড়ি ফিরার পথে কাঁদায় পিছলে পড়ে যায় ও। কাপড় চোপড় স্কুলব্যাগ নোংরা হয়ে যায়। তাই কাঁধ থেকে স্কুলব্যাগটা রেখে সোজা ওয়াশরুমে চলে যায়। পাউডার দিয়ে ভালো করে কাপড়গুলো ভিজিয়ে নেয়। অনেক ক্ষুধা লেগেছে। পাতিলের ঢাকনা উল্টাতের সুস্বাদু খাবারের ঘ্রাণে জিবে জল চলে এসেছে। যেই না খাবার নিবে অমনি ম্যাডামের কথা স্মরণ হয়ে যায়। সাথে সাথে পেঁয়াজ মরিচ আর দা নিয়ে বসে যায়। ডিম ভাজি করে তা দিয়ে আপতত ক্ষুধা মেটাবে। আম্মু ঘরের কাজে ব্যস্ত। তাই এখনও টের পাননি। কোনমতে পেঁয়াজ মরিচ কেটে শেষ করে মনিরা। যেই না গ্যাসের চুলার কাছে গেল, অমনি ডাক পড়ল,
: মনিরা মা! ওখানে কী করছ?
: না আম্মু কিছু না।
: তো ওখানে গেলে কেন?
: আমার কাজ করছি আম্মু।
মা দৌড়ে এসে দেখেন ও ডিম ভাজার চেষ্টা করছে। মা ওর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ডিম ভেজে দিলেন। খাবার শেষে ওয়াশরুমে কাপড় ধোয়ার বেলায়ও একই অবস্থা ও ওর কাজ করতে গেলেই আম্মু এসে বাধা দেয়।

পরদিন
: মনিরা পড়া শিখে এসেছো?
: আপু! আপনার দেওয়া প্রথম আদেশটিই পালন করতে পারিনি। পড়ব কিভাবে?
আম্মু আমার সব কাজে ভাগ বসান। আমার একটা কাজও আমি করতে পারিনি। আম্মুর সাথে ঝগড়াঝাঁটি করে আর পড়া হয়নি।
: কেন কী হয়েছে?
ও সবকিছু ম্যাডামকে খুলে বলে। বৃত্তান্ত শোনে ম্যাডাম একেবারে থ হয়ে গেলেন। কয় কী মেয়েটা! আমি বললাম কী আর ও বুঝলো কী!

Share.

মন্তব্য করুন