প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা নিশ্চয়ই স্বপ্ন দেখো। তোমরা কি জানো, মানুষ জীবনের ৩৩% সময় ঘুমিয়ে কাটায়? হ্যাঁ, এই ঘুমের ভেতরেই তোমরা স্বপ্ন দেখে থাকো। আর এই স্বপ্ন কিন্তু কেবলমাত্র স্বপ্ন নয়। বরং এই স্বপ্ন হচ্ছে তোমাদের মনের খোরাক, আগত দিনের আশা। স্বপ্ন শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ Dream। স্বপ্ন বা Dream শব্দটির প্রচলন শুরু হয় Old English Dream song থেকে। আর Old এর সাথে সম্পর্কিত উচ্চ জার্মান শব্দ Troum এর প্রচলন শুরু হয়। Troum  শব্দটি প্রাচীন গ্রিক শব্দ Throulos শব্দ থেকে এসেছে। ঞৎড়ঁস শব্দের প্রচলন থেকেই সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়ে ওল্ড নর্স শব্দ Draumr হয়। আর Draumr-ই হয়ে গেলো Dream বা স্বপ্ন। স্বপ্ন শব্দটির বাংলা অর্থ হচ্ছে- খেয়াল, অলীক কল্পনা, অলীক কামনা, খোয়াব।

মূলত স্বপ্ন হচ্ছে ইমেজ, ধারণা, আবেগ এবং সংবেদনগুলোর একটি উত্তরাধিকার যা সাধারণত ঘুমের নির্দিষ্ট পর্যায়ে মনের মধ্যে অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটে থাকে। তোমরা যখন ঘুমিয়ে থাকো তখন নানারকম কল্পনাশ্রয়ী চিন্তা ও দৃশ্য বা ছবি তোমাদের চোখে ও মনে উদিত হয়। এসব দৃশ্য বা ছবি দেখাকেই স্বপ্ন বলা হয়। তাহলে আমরা বলতে পারি, স্বপ্ন হলো ধারাবাহিক কতগুলো ছবি ও আবেগের সমষ্টি যা ঘুমের সময় তোমাদের মনের মধ্যে আসে। তোমাদের জানা দরকার, মানব শিশু জন্মের তিন চার মাস পর থেকেই স্বপ্ন দেখা শুরু করে। দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা ঘুম সময়ের প্রায় ৪০% এবং কৈশোরে ঘুম সময়ের ২০% থেকে ২২% স্বপ্ন দেখে থাকে। চল্লিশের পর থেকে ঘুম সময়ের ১২% থেকে ১৫% স্বপ্ন দেখা হয়। অর্থাৎ মানুষের বয়স যত বাড়তে থাকে স্বপ্ন দেখা তত কমতে থাকে।
স্বপ্ন নানা রকম হতে পারে। সুখের, দুঃখের, হাসি বা কান্নার। অন্ধ বা বধির শিশুও স্বপ্ন দেখে থাকে তবে তাদের স্বপ্ন কিন্তু সাদা-কালো বা শব্দহীন নয়। তাদের স্বপ্ন তোমাদের মতই রঙিন, বা বর্ণিল, রিনিঝিনি ছন্দময় স্বপ্নে প্যারালাইজড রোগীও দৌড়াতে বা খেলতে পারে। স্বপ্ন ভয়ের হতে পারে। তোমাদের মতো শিশু-কিশোররা ভয়ের স্বপ্ন বেশি দেখে। স্বপ্ন দেখে ঘুমের মধ্যে কেউ কেউ চিৎকার করে ওঠে।

তোমরা কি জানো, পশু পাখিরাও যে স্বপ্ন দেখে? তোমার পোষা পাখি অথবা বিড়াল যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন খেয়াল করলে দেখতে পাবে বিড়ালটি ঘুমিয়ে থেকেও চোখ নাড়াচাড়া করছে কিংবা কান নাড়ছে, লেজ নাড়ছে। আসলে স্বপ্ন দেখছে। গবেষণায় পাওয়া গেছে পশু-পাখিরা স্বপ্নে সুন্দর সুন্দর কীট পতঙ্গের ছবি দেখতে পায়, যেগুলো তারা খাদ্য হিসেবে খায়। তার মানে স্বপ্ন সবাই দেখে।
বন্ধুরা, তোমরা কি জানো আদিমকালে মানুষ এই স্বপ্ন নিয়ে কি ধারণা করত? আদিম মানুষেরা বিশ্বাস করত ঘুমের মধ্যে মানুষের আত্মা দেহ থেকে বের হয়ে আসে। তারপর ঘুরে বেড়ায় চারপাশের জগতে। তাই মানুষ স্বপ্ন দেখে। আবার প্রাচীন গ্রিক রোমানরা ভাবতো স্বপ্ন বিশ্লেষণ করলে হয়তো ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানা যায়। তাই রোমান সম্রাটগণও নীতিনির্ধারণী বিষয়ে তাদের ঘুমের মধ্যে দেখা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের স্বপ্ন পেশ করতেন সিনেটে। আর তা নিয়ে গবেষণায় বসতেন স্বপ্ন বিশারদরা। অবশেষে সে আলোকেই হতো সিদ্ধান্ত। তারা মনে করতেন স্বপ্ন সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে আসা কোন দিকনির্দেশনা। এমনকি অনেক সম্রাট সম্রাজ্ঞী তাদের সামরিক বাহিনীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ¯্রফে স্বপ্নের ওপর ভিত্তি করেই। ফলে যুদ্ধে গিয়ে হয় নতুন দেশ জয় করে বীরের বেশে জয়ের মালা পরে ফিরেছেন, না হয় হেরে গিয়ে পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছেন। খ্রিষ্টপূর্বে ৩১০০ অব্দে মেসোপটেমিয়ান সভ্যতায় সম্রাট-সম্রাজ্ঞীদের অনেক সিদ্ধান্ত তাদের স্বপ্নের ওপর ভিত্তি করেই নেয়া হতো বর্তমান আধুনিক মনোবিদদের মতে স্বপ্ন তেমন একটা আহামরি কিছুই নয়। রাজ্য শাসন করার জন্য নীতিনির্ধারণ কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এর কোনো গুরুত্ব আদৌ আছে বলে কেউ মনে করেন না।

ঊনবিংশ শতাব্দীতে এসে সিগমুন্ড ফ্রয়েড প্রথম স্বপ্নের ওপর বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নির্মাণ করেন। তিনি বলেন প্রত্যেক মানুষের ভেতরে কিছু অবদমিত ইচ্ছা বা কামনা থাকে। স্বপ্নের মাধ্যমে আমাদের অবচেতন মন সেই অবদমিত ইচ্ছা বা কামনা নিয়ে নাড়াচাড়া করে। আধুনিক মনোবিদদের মতে মানুষের অবচেতনের ভাবনা চিন্তা, ভয় বা ইচ্ছার প্রতিফলন হলো এই স্বপ্ন।
বন্ধুরা, এবার তোমাদের বলি মানুষ কখন স্বপ্ন দেখে? প্রথমে জানতে হবে ঘুমের চারটি স্তর রয়েছে। প্রথম স্তরে ঘুম পায়। এই স্তরে ব্রেন শরীরকে সংকেত দেয় যে তোমাকে এখন ঘুমাতে হবে। ঘুমের এই স্তরকে Light sleep বলা হয়। এই স্তরে শরীর ও ব্রেন বিশ্রাম বা রিলাক্স করা শুরু করে দেয়। দ্বিতীয় স্তরে ঘুম একটু গভীর হয়ে আসে। ঘুমের এই স্তরে চেতনা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। এই স্তরে তোমরা আশপাশের শব্দ বা আওয়াজ আর শুনতে পাও না। তৃতীয় স্তরের ঘুমকে বলা হয় Slow wan sleep। এ সময়ে ঘুম বেশ গভীর হয়। এই স্তরে ব্রেনের কার্যক্ষমতা এককেবারে কমে যায়। ঘুমের এই স্তরে যদি তোমাকে ডেকে তোলে তাহলে তোমার মাথা ব্যথা হতে থাকে। এই স্তরকে Deep sleep বলা হয়।

চতুর্থ স্তরেই ঘুমের সবচেয়ে গভীর অবস্থা হয়। এই স্তরকে Rapid Eye movement (REM) বলা হয়। এই স্তরেই গভীর ঘুম হয় এবং স্বপ্ন দেখা হয়। ঘুমের মধ্যে যে সময় মানুষ স্বপ্ন দেখে না সে সময় বলা Non Rapid Eye movement Period. ঘুমের মধ্যে প্রায় সবাই ৯০ মিনিটে প্রায় ১০ মিনিট সময় ধরে REM ঘুম দেয়। ঘুমের মধ্যে ৪/৫ বার REM ঘুম হয়। অর্থৎ প্রতিদিন তোমরা অন্তত ৪/৫টি স্বপ্ন দেখো। কিন্তু ঘুম থেকে জেগে ওঠার পরে অনেক সময় তোমরা স্বপ্নগুলো ঠিকঠাক মনে করতে পারো না। অনেক সময় ঘুম ভাঙার পর পর স্বপ্ন মনে থাকে কিন্তু সময় যতই যেতে থাকে স্বপ্ন ততই ভুলে যাও। আবার কিছু স্বপ্ন আছে যা বাস্তব ঘটনার চেয়েও বেশি স্পষ্ট এবং উজ্জ্বল। এসব স্বপ্ন জীবনে কখনোই ভোলা যায় না। মজার বিষয় হচ্ছে ঘুম ভাঙার পর তোমরা যখন অন্যের কাছে তোমাদের দেখা স্বপ্ন বর্ণনা করো তখন অনেকে মিথ্যাচারের আশ্রয় নাও। বানিয়ে বানিয়ে স্বপ্নের গল্পো করো। স্বপ্ন এতটা সাজানো গোছানো থাকে না যতটা তোমরা সাজিয়ে গুছিয়ে বর্ণনা করো।

স্বপ্ন দেখার সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে ইচ্ছে তোমরা অনেক কিছুই চাও কিন্তু পাও না। আবার এরকম হয় আসলে তোমরা কি চাও সেটাও জানো না। স্বপ্নে একদিকে চেয়ে না পাওয়া বস্তুগুলো পেয়ে তার ইচ্ছা পূরণ হয় অন্য দিকে স্বপ্ন দেখে জানতে পারো আসলে তোমরা কি চাও। যে যেমন মানুষ সে তেমন স্বপ্ন দেখে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর রাজর্ষির নাটকের কাহিনী স্বপ্নে পেয়েছেন। ইংরেজ কবি কোলরিজ তাঁর বিখ্যাত কোবলা খান কবিতাটি স্বপ্ন দেখে লিখেছেন। বিজ্ঞানী নিলস বোর পরমাণুর গঠন স্বপ্নে দেখেছেন। বিজ্ঞান কেকুলে বেনজিনের গঠন তত্ত্বটি স্বপ্নে দেখেন। প্রায় প্রত্যেক শিশুকিশোর একটা স্বপ্ন দেখে সেটা হচ্ছে সে পরীক্ষার হলে গিয়ে কিছুই লিখতে পারছে না। ছেলেবেলায় আমি এই স্বপ্ন বহুবার দেখেছি। বিশেষ করে পরীক্ষা এলেই এই স্বপ্ন দেখতাম। আবার যখন বড় হয়েছি তখন স্বপ্নে প্রশ্নপত্র পেয়েছি। বাস্তবে যখন পরীক্ষার হলে গিয়েছি তখন তো অবাক হয়ে দেখেছি স্বপ্নে পাওয়া প্রশ্ন বাস্তবে মিলে গেছে। এ রকম বেশ কয়েকবার হয়েছে।

তোমরা কেন স্বপ্ন দেখো? হ্যাঁ, চলো জেনে নেই এ সম্পর্কে কিছু বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।
– আধুনিক সাইকোলোজিতে মনে করা হয় রাতে যদি ঘুম না হয় তার মানে তুমি হয়তো অন্য কারো স্বপ্নে জীবিত ছিলে। মানে তোমাকে নিয়ে হয়তো কেউ স্বপ্ন দেখছিলো। যার কারণে রাতে তোমার ঘুম হয়নি।
– রাতে ঘুমানোর সময় যাদের নাক ডাকার অভ্যাস আছে তারা সচরাচর স্বপ্ন দেখে না অথবা দেখলে কম দেখে। কারণ বিজ্ঞান মনে করে নাক ডাকা ও স্বপ্ন দেখা দু’টি একই সাথে সম্ভব না।
– আধুনিক বিজ্ঞান মনে করে, প্রতিটি মানুষই স্বপ্ন দেখে। তোমাদের ভেতরে কেউ যদি মনে করো যে, তুমি স্বপ্ন দেখো না তার অর্থ হচ্ছে তুমি স্বপ্ন মনে রাখতে পারো না। অথবা তুমি জটিল কোনো মানসিক রোগে ভুগছো।
– বিজ্ঞান বলছে গড়ে একজন মানুষ বছরে প্রায় ১৪৬০টি স্বপ্ন দেখে। প্রতি রাতে গড়ে প্রায় ৪/৫টি স্বপ্ন দেখে থাকো তোমরা।
– এখন মনোবিজ্ঞানে বলা হচ্ছে মানুষের ব্রেনে বা মস্তিষ্কে কোনো চেহারা তৈরি করে না, স্বপ্নে তোমরা যাদের দেখো তাদের সবাইকে জীবনে কোনো না কোন সময় দেখেছো যা মনে রাখতে পারোনি কিন্তু তোমার অবচেতন মন তা ধরে রাখে এবং পরবর্তীতে স্বপ্নে দেখায়।
– আধুনিক মনোবিজ্ঞান আরো বলে, মানুষ তার জীবন চক্রে প্রায় ৬ বছর স্বপ্ন দেখে কাটায়।
– তোমরা শিশু-কিশোররা সাধারণত দুঃস্বপ্ন বেশি দেখো। এ কারণেই শিশুরা হঠাৎ করে ঘুম থেকে জেগে কান্না শুরু করে দাও।
কথায় আছে Life is beautiful. তোমরা যদি জীবনকে সুন্দর করে তুলতে চাও তাহলে অবশ্যই স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দাও। স্বপ্ন দেখতে হয়। স্বপ্ন দেখাতে হয়। যে স্বপ্ন দেখে না সে তো মৃত। আর সব সময় স্বপ্ন বড় করেই দেখতে হয়। বড় স্বপ্ন দেখলে ছোট স্বপ্নগুলো এমনিতেই পূরণ হয়ে যায়। মনে করো তুমি ক্লাসে প্রথম হওয়ার স্বপ্ন দেখলে। সেই অনুযায়ী খুব পড়ালেখা করতে থাকলে তখন কিন্তু আর পরীক্ষায় ফেল করবে না বরং সব বিষয়ে ভালো নম্বর অর্জন করবে। বড় স্বপ্ন দেখার মজাই এটা।

তোমার স্বপ্নের কথা বন্ধুদের অবশ্যই বলবে তুমি যখন তোমার বড় স্বপ্নের কথা অন্য বন্ধুদের বলবে তখন তোমার জীবনে দু’টি ঘটনা ঘটবে। দেখবে, কেউ কেউ তোমার স্বপ্ন নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করছে। তারা তোমাকে বলতে থাকবে তুমি পারবে না। এটা তোমাকে দিয়ে হবে না। আবার কেউ কেউ তোমার স্বপ্ন পূরণে তোমাকে উৎসাহ দিবে। বন্ধুদের দেয়া উৎসাহ তোমাকে সামনে চলতে অনুপ্রেরণা জোগাবে। তখন তোমার স্বপ্ন তোমাকে থামতে দেবে না, বিশ্রাম দেবে না। এমনকি তোমাকে ঘুমাতেও দেবে না।

অন্য দিকে তোমার যে সব বন্ধু জীবনে কখনও বড় বা সুন্দর স্বপ্ন দেখে না বা কখনও স্কুলে কোনো ভালো কাজ করে দেখাতে পারে না, কারও উপকার করে না, তারা তোমাকে ভয় দেখাবে, নিরুৎসাহিত করবে। তোমাকে পাগল বলবে। তাই বলছি, তোমার মনে যদি বড় ও সফল হওয়ার স্বপ্ন থাকে তাহলে তুমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করতে পারো। এমন কোনো শক্তি নেই যে তোমাকে থামাতে পারে। পরীক্ষায় এ প্লাস পাওয়ার জন্য যেমন এ প্লাস পাওয়া ছাত্রকে অনুসরণ করতে হয়, তেমনি সফল বা বড় হওয়ার জন্য সফল মানুষকেই অনুসরণ করতে হবে। যদি তুমি নায়ক নায়িকা হতে চাও তাহলে সফল নায়ক-নায়িকাকে অনুসরণ করো। যদি নেতা হতে চাও তাহলে সফল এবং বড় মাপের নেতাকে অনুসরণ করো। স্বপ্নকে হৃদয়ে লালন করো এবং সঠিক নিয়ম মেনে স্বপ্নের পথে হাঁটতে শুরু করো। দেখবে একদিন ঠিক ঠিক তুমি স্বপ্নের সমান বড় হয়ে গেছো। আমি জানি, তোমাদের মনে নানা স্বপ্ন নানা ইচ্ছে আছে, এই সব স্বপ্ন পূরণ করতে হলে অবশ্যই লেগে থাকতে হবে, লেগে থেকে বারবার চেষ্টা করলে এক সময় সফল হবে এবং সেই সফলতা নিয়ে গর্ব করে বলতে পারবে এটাই আমার স্বপ্ন।
তোমার একটি স্বপ্নই তোমাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা জোগাবে। আশা বা উৎসাহের মূলে রয়েছে এই স্বপ্ন। স্বপ্ন নিয়ে তাই মহান ব্যক্তিরা চমৎকার সব বাণী দিয়েছেন। এই সব মূল্যবান বাণীগুলো তোমাদেরকে সফল হতে সাহায্য করবে।
– এপিজে আবদুল কালাম আজাদ বলেছেন- স্বপ্ন সেটা নয় যা তুমি ঘুমিয়ে দেখো বরং স্বপ্ন সেটাই যা তোমাকে ঘুমোতে দেয় না।
– ওয়াল্ট ডিজনি বলেছেন- এক কথায় স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে চারটি জিনিস প্রয়োজন ইচ্ছা, আত্মবিশ্বাস, সাহস, আর নিয়মিত কাজ করা।
– নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছেন- বড় স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পথে ছোট ছোট অর্জনগুলোকেও মূল্য দাও।
– বিশ্ব বিখ্যাত ব্রাজিলিয়ান লেখক পাউলো কোয়েল হো বলেছেন অতিরিক্ত ব্যর্থতার ভয় থাকলে তোমার স্বপ্ন কখনই পূর্ণ হবে না।
– বিশ্ববিখ্যাত জার্মান কবি ও দার্শনিক জোহান গথে বলেছেন- স্বপ্ন দেখলে বড় করে দেখো। সেটাই তোমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করবে।
– আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছেন- ভয়কে কখনোই নিজের স্বপ্নগুলো নষ্ট করতে দিও না।
– মার্ক জুকারবার্গ বলেছেন- আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম সেই স্বপ্নে আস্থা ছিল। আর আমি কাজটা ভালোবাসতাম ফেসবুক বিফল হলেও আমার ভালোবাসাটা থাকত। জীবনে একটা স্বপ্ন থাকতে হয়। সেই স্বপ্নকে ভালোও বাসতে হয়।
– বিল গেটস বলেছেন- আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার সত্যি সত্যি অনেক অনেক স্বপ্ন ছিলো। আর এ স্বপ্ন তৈরি হয়েছিলো কারণ আমার অনেক অনেক পড়ার সুযোগ ঘটেছিলো।
– বিশ্বখ্যাত লেখক মার্ক টোয়েন বলেছেন- যারা তোমার বড় স্বপ্নকে নিরুৎসাহিত করে তাদের থেকে দূরে থাকো। ছোট মানসিকতার মানুষরাই বড় স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়। যারা আসলেই বড় মনের মানুষ তারা সব সময়ে তোমাকে উৎসাহ দেবে।
– দাসপ্রথা বিরোধী নেত্রী হ্যারিট টাবম্যান বলেছেন- সব বড় স্বপ্নই শুরু হয় একজন স্বপ্নদ্রষ্টার হাত ধরে। মনে রাখবে পৃথিবীকে বদলে দেয়ার শক্তি, ধৈর্য্য, আর আকাক্সক্ষা তোমার ভেতরে সব সময়ই বিদ্যমান।
– মার্কিন সাঁতারু মাইকেল ফেলপস বলেছেন- আপনি যত বেশি স্বপ্ন দেখবেন ততবেশি সামনে যাওয়ার শক্তি পাবেন।
– জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন- একজন মানুষকে জানার সত্যিকারের উপায় হচ্ছে তার স্বপ্নটা জানা।

সবশেষে তোমাদের বলতে চাই স্বপ্ন কেবল কল্পনা নয়, বরং স্বপ্ন মানেই তোমার বাস্তব, স্বপ্ন মানেই তোমার গন্তব্য। তুমি কোথায় যেতে চাও তার নামই স্বপ্ন। মনে রাখবে মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় হয়। পবিত্র বাইবেলে সুন্দর একটি কথা আছে He who lived, he who believed, shall never die. অর্থাৎ যে বিশ্বাস করে সেই বেঁচে থাকে। যদি স্বপ্নকে বিশ্বাসে রূপান্তরিত করতে পারো তাহলে তা অর্জনও করতে পারবে।

Share.

মন্তব্য করুন