“ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশির ঈদ
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন্ আসমানী তাগিদ”

বন্ধুরা ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই গান দিয়ে আমরা রমজানের ঈদকে স্বাগত জানাই প্রতি বছর। এই কালজয়ী গান যেন আমাদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। বেতার টেলিভিশনের পর্দায় কখন বাজবে সে অপেক্ষায় থাকি আমরা যারা রোজা রাখি। বন্ধুরা এবার শুনো! প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততার জীবনে হাঁপিয়ে উঠলে আমরা সবাই চাই একটু নির্মল আনন্দ, একটু প্রশান্তি তাই না বন্ধুরা। একটু ছুটি পেলে কোলাহল এই শহর থেকে দূরে হারিয়ে যেতে মন চায়। আর ঘুরতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো ঈদের ছুটি। ঈদের ছুটিতে তোমরা ঘুরে আসতে পারো ঢাকা অথবা ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে। বন্ধুরা তোমাদের জন্য কিছু দর্শনীয় স্থান ও বিনোদন কেন্দ্রের তথ্য দিলাম। ভালো লাগলে সময় পেলে অর্থ থাকলে ঘুরে আসতে পারো।

শিশু পার্ক
রাজধানীর শাহবাগে শিশুপার্কের ভেতরে শিশুদের হরেকরকম বিনোদন ও খেলার আয়োজন আছে। নামে শিশুপার্ক হলেও বড়দের সাথে আসতে পারো।

জাতীয় জাদুঘর শাহবাগ
রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর অবস্থিত। সেখানে রয়েছে বিশাল ডায়নোসরের কঙ্কাল, মূর্তিমান বাঘ, হরিণ, ময়ূরসহ আরো অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। যা দেখলে হতবাক হবেই এবং জানবে অনেক কিছু।

চিড়িয়াখানা
মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানা অবস্থিত। এখানে দেখা মিলবে নানা প্রকারের পশু পাখি, যেমন- জিরাফ, বাঘ, ভাল্লুক, সিংহ, হরিণ, সাপ, গরু, মহিষ দেখতে ভালোই লাগবে। চোখ জুড়িয়ে যাবে। বারবার যেতে ইচ্ছে করবে।

আহসান মঞ্জিল
পুরোনো ঢাকার ইসলামপুরে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে আহসান মঞ্জিল অবস্থিত। এটি ছিল ঢাকার নবাবদের প্রাসাদ। এই প্রাসাদের চারপাশে সবুজ ঘাসে ছাওয়া মাঠ। ফুলের বাগান। ইচ্ছে হলে নৌকায় ঘুরতে পারো বুড়িগঙ্গা নদীতেও।

ফ্যান্টাসি কিংডম
বর্তমানে ঢাকাবাসীদের কাছে বিনোদন কেন্দ্রগুলার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো আশুলিয়া সাভারের ফ্যান্টাসি কিংডম। এখানে চড়ার জন্য অনেক রাইড আছে। সারাদিন হই-হুল্লোড়, খেলাধুলা আর খাওয়া-দাওয়ার জন্য রয়েছে চমৎকার বিনোদন কেন্দ্র।

নন্দন পার্ক
সাভার, ইপিজেড পেরিয়ে সামনে গেলে দেখা মিলবে আরেকটি আধুনিক বিনোদন কেন্দ্র। যার নাম নন্দন পার্ক। নন্দন পার্কেও তোমাদের ভালো লাগবে বেড়িয়ে আসলে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক
গাজীপুরে সাফারি পার্কের মজাটাই ভিন্নরকম। আমরা যদি আর পশুপাখি ঘুরে বেড়াচ্ছে স্বাধীনভাবে। কি মজা তাই না? তবে গাড়িতে বসে পশু পাখিদের সাথে সাক্ষাৎ করা যায়। এ সাক্ষাতের আনন্দই অন্যরকম।

ড্রিম হলিডে পার্ক নরসিংদী
ঘুরে আসতে পারো নরসিংদী ড্রিম হলিডে পার্ক। ঈদকে ঘিরে ড্রিম হলিডে পার্কটিকে সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। এখানে রয়েছে বিনোদনের নানা আয়োজন।

কুয়াকাটা
আরেকটি দর্শনীয় স্থান কুয়াকাটা। এখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ রয়েছে। আশা রাখি ভালোই লাগবে।
কক্সবাজার
বাংলাদেশের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। বিশাল বিশাল ঢেউ, অসীম সমুদ্র, নীল আকাশ তোমাকে হাতছানি দিবে সব সময়।

ফয়েজলেক
চট্টগ্রামের পাহাড়ের পাদদেশ লেকসমৃদ্ধ বিশ^মানের একটি ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র। রয়েছে লেকের ওপর ঝুলন্ত সেতু। অত্যাধুনিক রাইডস, মোটেল রিসোর্টস, ক্লাব হাউজ, নৌকা, প্যাডেল বোটসহ বিনোদনের আরো অনেক কিছু।

মহেশখালী
দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী। যারা প্রকৃতির সৌন্দর্যের সন্ধানে আছো তারা ঈদে ঘুরে আসতে পারো মহেশখালী থেকে।

ডাইনোসর পার্ক, কুমিল্লা
কুমিল্লার কোটবাড়ির ডাইনোসর পার্কে বেড়াতে গেলে স্বাগত জানাবে একদল ডাইনোসর। একদম ভয় পাবে না কিন্তু। কারণ এগুলো কৃত্রিম ডাইনোসর। এখানে আসলে তোমাদের মনে হবে জুরাসিক পার্কে চলে এসেছ।

সিলেট
সিলেট আসলে মনে পড়বে হযরত শাহজালাল ইয়ামেনী রহ.-এর কবর জেয়ারত করা। তাঁর ভাগিনা শাহ পরাণ রহ.- এর কবর জেয়ারত করা। তারপর অন্যান্য জায়গায় বেড়ানো।

জাফলং
এখানে দেখতে পাবে পাহাড়ের ঝরনার অপরূপ দৃশ্য। এ দৃশ্য দেখে মনে হয় পাহাড়ও মানুষের মতো কান্নাকাটি করে। জাফলং এ দেখতে পাবে পিয়ান নদী। যে নদী থেকে ছোট বড় পাথর উঠানো হয়। আল্লাহর কুদরতিভাবে এই নদীতে পাথর আসে। সে পাথর আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজে লাগাই।

সুনামগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
ঈদের ছুটিতে সুনামগঞ্জের কিছু দর্শনীয় স্থানেও ঘুরে আসতে পারো। যেমন: হাছন রাজার জাদুঘর, বাকের টিলা, টাঙ্গুয়ার হাওর, যাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান, নীলাদ্রি লেক প্রভৃতি।
আমাদের এ দেশ সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা সোনার বাংলাদেশ। এ দেশে কি নেই ঘুরে আসার জন্য বেড়ানোর জন্য, বিনোদনের জন্য রয়েছে অনেক স্থান। তবে দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার পর বেড়াতে যাওয়ার আগে অবশ্যই নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো গুছিয়ে নিতে ভুলবে না।

Share.

মন্তব্য করুন