প্রতিদিনই ভোর হয়। হালকা নীয়ন আলোয় ভরে ওঠে পৃথিবীর বুক। কোমল সূর্যের আলো নেমে আসে ধীরে। শিশির ভেজা ঘাসে যখন পা রাখি মনে হয় শিরশির করে শরীর। যেনো সব কষ্ট হারিয়ে যায়। কেমন এক ভালোলাগা জীবনকে জাগিয়ে তোলে।
একটা সময় ছিল এমন শিশির ভেজা সকালে পাশে ছিলে তুমি। তোমার সাথে গল্প হতো চায়ের কাপ হাতে। কত কত কথা বলতে তুমি। নীরব শ্রোতা হয়ে মুগ্ধ হয়ে তোমাকে শুনতাম। কোথায় চলে গেছ তুমি? কতদূরে! কখনো কি আর একসাথে চা খাওয়া হবে না। শিশিরে পা ভিজিয়ে শিউলি কুড়ানো হবে না। এসব ভাবনার মধ্যেই রুদ্র এসে পড়ে।
রুদ্র- আম্মু আম্মু। কোথায় তুমি! এতো ভোরে কি করছ বাগানে? আম্মু তুমি কি বাবাকে নিয়ে ভাবছো!
নীলা- কী বলছো বাবা। কখন ভাবলাম। কী দেখছিস অমন করে। কিছুই ভাবছি না। আজকের ভোরটা কত সুন্দর দেখ। বহুদিন পর শিশিরে পা ভেজালাম। তুইও আয়। খালি পায়ে হাঁটবি। ভালো লাগবে তোর।
রুদ্র- নো, নো আম্মু। একদমই নো। এসব আমার একদমই পছন্দ না। এটা তুমি জানো। আম্মু আজ বিকেলে আমার ক্রিকেট ম্যাচ। এবার কিন্তু তুমি না করবে না। তোমাকে যেতেই হবে। সবার আম্মু আব্বু আসে। কত্ত মজা করে। তুমি একবারও আসো না। আব্বু থাকলে নিশ্চয়ই যেতো। আমি কিছুই জানি না। তোমাকে যেতেই হবে। হবে মানে হবেই।
নীলা- দীর্ঘশ্বাস নিয়ে নীলা বললো; ওকে বাবা সোনা। যাবো এবার। তুই তো জানিস এসব খেলা টেলা আমার একদমই ভালো লাগে না।
রুদ্র- আমি কিছু জানি না। আমি সবাইকে বলেছি তুমি যাবে।
মা ছেলে কী নিয়ে কথা হচ্ছে, বলতে বলতেই মিথিলা চলে এলো। মিথিলা হলো রুদ্রর হাসি আন্টি। রুদ্রকে খুব হাসায় মিথিলা। মজার মজার জোকস বলে হাসিতে ওর পেট ফাটিয়ে ফেলার উপক্রম হয়। রুদ্রও ভীষন পছন্দ করে ওর আন্টিকে।
রুদ্র- আন্টি আজ আম্মুকে যেতেই হবে আমার ম্যাচ দেখতে। তুমিও আসবে আন্টি? তাহলে আম্মু বোরিং হবে না। প্লিজ আন্টি প্লিজ।
মিথিলা- বেশ আমাদের গ্রেট বয় যা বলবে তাই হবে। আমরা যাবোই যাবো। তোমাকে কিন্তু বেস্ট খেলতে হবে। ঠিক আছে রুদ্র সোনা!
নীলা- রুদ্র তোমার আন্টি তো বলল এবার খুশি থাকো। স্কুলে যাবার সময় হয়ে গেছে। চলো নাস্তা করবে।
রুদ্র- ওকে আম্মু।
মিথিলা- সাত সকালে তোমার মুড অফ কেনো! কি হয়েছে? ফাইয়াজ ভাইয়ের কথা ভাবছো। কেনো এতো মন খারাপ করো। যে চলে যাবার সেতো চলেই গেছে। রুদ্রকে নিয়ে তোমার ভালো থাকতে হবে। ছেলেটার খুশি নিয়ে ভাবতে হবে। তুমি কেনো খেলার মাঠে যেতে চাও না। রুদ্র কতটা মন খারাপ করে বলোত। তোমারও ভালো থাকা দরকার।
নীলা- চা খাবে? দুধ চা খাই না অনেকদিন। এসো চা খাই।
মিথিলা- তুমি এড়িয়ে যাচ্ছ। যে চলে যাবার সে চলে গেছে। জীবন কি থেমে থাকে বলো। সময়ের সাথে কি যুদ্ধ করা যায়। যায় না। তোমাকে এমন দেখলে আমারও কষ্ট হয় খুব।
নীলা- বাদ দাও এসব প্রসঙ্গ। তোমার কথা বলো। সামনেই বই মেলা আসছে। যাবে না?
মিথিলা- হুম দেখতে দেখতে এসেই যায় সবকিছু। গতবছর এই দিনে আমরা সবাই কত আনন্দ নিয়ে বই মেলায় গিয়েছি। রুদ্রও ভীষন আনন্দ পেয়েছিল। ফাইয়াজ ভাই, তুমি, আমি, রুদ্র মিলে সময়টা ভীষন আনন্দের ছিল।
নীলা- একদম তাই। বইয়ের বুকে কেমন করে পুরো পৃথিবী বাস করে। কত কী জানার সুযোগ ঘটে। নিজেকে জানার তীব্র তৃষ্ণা থেকে জাগ্রত হয় জ্ঞানের পিপাসা। বইয়ের ভাঁজে লুকিয়ে থাকে অতীত ইতিহাস। মহাকালের গর্ভে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা। নতুন নতুন লেখক লেখিকার আনন্দ। জানো মিথিলা গত বছর একজন লেখিকার সাথে পরিচয় হয়েছিল। সে বারই তার প্রথম কোনো বই বাজারে এসেছে। একটি উপন্যাস।
মিথিলা- তাই নাকি। কই আমিও তো ছিলাম। আমার সাথে তো দেখা হয়নি। আমি তখন কোথায় ছিলাম।
নীলা- তোমরা তখন চটপটির স্বাদ নিচ্ছিলে। আমি একাকী দাড়িয়েছিলাম। দেখলাম একটি মহিলা ভীষন আনন্দ নিয়ে বইয়ের কথা বলছে। তার আগ্রহ দেখে কথা বলি তার সাথে। মেয়েটি পেশায় একজন এডভোকেট। নাম ঋতি। সরল চেহারার মধ্যে একটা চমক আছে। চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক। লেখিকা হবার আনন্দ। এ এক অন্যরকম আনন্দ তাই না।
মিথিলা- একদম তাই। উনার বইয়ের নাম কি। কি বিষয় নিয়ে লিখা। জানতে চাওনি।
নীলা- হুম অবশ্যই জেনেছি। একটি উপন্যাস। প্রেমের উপন্যাস। নামটি মনে পড়ছে না। কি যেনো নাম ছিল। বইটি আছে দিবো তোমাকে পড়ে দেখ। এখন গল্প শোন।
মিথিলা-বেশ বলো শুনি কি কাহিনি। মেয়েটি ছোট্ট থেকেই স্বপ্ন দেখত একদিন লেখিকা হবে। কিন্তু ভালোবেসে জীবন শুরু করে জানলো তার প্রেমিক বর কোনোভাবেই এসব লেখালেখি পছন্দ করে না। বেচারার এ নিয়ে ছিল ভীষণ মন খারাপ। কোনোভাবেই সে তার স্বপ্নকে ভূলে থাকতে পারে না। মাঝে মাঝেই সে তার মনের কথাগুলো ফেইজবুকে লিখত। টুকটাক লেখালেখি করতে করতে তার মনে হলো এটা থেকে দূরে সরে যাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না। অনেকেই তাকে এ বিষেয়ে উৎসাহিতও করলো। ফলে সে একটি উপন্যাস লিখতে শুরু করে। একসময় তার লেখাগুলো সে একটি পেইজে পোস্ট করে। যারা তার লেখা পড়ছিল সবাই তাকে বিভিন্ন কমেন্টের মাধ্যমে লিখতে উৎসাহিত করছিল। আবার অনেকে পরামর্শ দিল একটা বই করার। উপন্যাস শেষ করে যখন ভাবলো বই করবে। তখনই হলো বিপত্তি। বর চায়না। আবার কিভাবে বই ছাপাতে হয় তার জানা নেই। যাহোক অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে একদিন ঠিকই বইটি এলো তার হাতে। মেয়েটি যখন এ কথাগুলো বলছিল বিশ্বাস করবে না ওর চোখমুখও যেন ঝিলিক দিচ্ছিল।
মিথিলা- আসলেই কি অদ্ভুদ ঘটনা। তারপর কী হলো বলো।
নীলা- তারপর আর কী হবে বলো। কিন্তু আমি ভীষন অবাক হয়েছি তার একটি কথায়। ভাবনারা এমনও হয় এটাই মনে হচ্ছিল।
মিথিলা- কী বিষয়ে অবাক হয়েছ?
নীলা- মেয়েটির সাথে যখন কথা হয় সে সময় মেয়েটি জানায়; জানেন আপু বইটি করার জন্য যে টাকা খরচ হয়েছে তা একান্তই আমার খুব সখের গহনা বিক্রির টাকা। আমার একবারও মনে হয়নি কাজটি আমার ভুল হয়েছে। বরং বইটি হাতে পেয়ে মনে হয়েছে শতরকম গহনা এ আনন্দের কাছে তুচ্ছ। মনে হয়েছে আমার বই আমার সমস্ত পৃথিবী। জীবনে পাওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার।
মিথিলা- সত্যিই তো এমন করে কখনো ত ভাবিনি। আমরা কতরকম স্বপ্ন দেখি। দেখি কে কোথায় ঘুরতে যাবো। কেউ দেখি জীবনে কিভাবে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবো। কিন্তু এভাবে একজন লেখক হবার স্বপ্নের কথা খুব একটা শুনি না।
নীলা- হ্যাঁ তুমি যা বললে তা খুবই সত্য। আসলে নিজস্ব সৃষ্টির যে আনন্দ তা আর কোনোভাবেই কিছুতেই পাওয়া সম্ভব না। বিশেষত বইয়ের আনন্দ। যুগের প্রবাহে সভ্যতা টিকেই আছে বইয়ের পাতায়। বই না হলে আমরা কেমন করে জানতাম বিশ্বকে। তাই আমাদের সবারই বই পড়া উচিত। বই ই হলো নিরাপদ বন্ধু। যে শুধুই দিয়ে যায়। বিনিময়ে কিছুই প্রত্যাশা করে না।
মিথিলা- নীলা দেখ গল্পে গল্পে কত সময় গড়ালো। রুদ্রর আজ ক্রিকেট ম্যাচ। তাড়াতাড়ি রেডি হও। না হলে সে ভীষন মন খারাপ করবে।
নীলা- ঠিক বলেছো। এ সময়গুলোতে আমি তোমার ভাইকে খুব মিস করি। কেমন করে জীবনটা এমন হয়ে গেলো। একটি এক্সিডেন্ট কেমন করে বদলে দেয় জীবনকে। হাসি-আনন্দ খুঁজে বেড়াতে হয়। ছেলেটির কতই বা বয়স বলো। চলো যাই। রুদ্র স্কুল থেকেই চলে যাবে খেলার মাঠে। গিয়ে যদি দেখে আমরা নাই আসলেই মন খারাপ করবে।
মিথিলা- তাতো করবেই। শোনো কোনোকিছুই মানুষের হাতে থাকে না। সৃষ্টির নিয়ম মেনে চলতে হয়। আল্লাহর কাছে ছেলের জন্য বেশি বেশি দোয়া করবে। ভাইয়ার জন্যও করবে যেনো আল্লাহ উনাকে বেহেশতের মেহমান করে নেন।
নীলা- আমীন। তুমিও দোয়া করো। চলো এখন বের হই।
রুদ্র- আম্মুরাকি আসবে না আজও। এতো করে বললাম। শিহাব, জামিল, অর্নব সবাই ডাকাডাকি করছে প্র্যাকটিসের জন্য। কী করবো। মন খারাপ হয়ে যায় ওর। তখনই ওর ম্যাথ টিচার আহনাফ স্যার এসে পাশে বসেন। পিঠ চাপড়িয়ে বলেন, কি খবর আপনার। মন খারাপ কেনো। শোনো জীবনে বড় হতে হলে মন খারাপের সাথে ফাইট করে তাকে ভাগিয়ে দিতে হবে। তোমার আম্মু দেখ ঠিক সময়ে চলে আসবে।
রুদ্র বললো, না স্যার আসবে না। আব্বু চলে যাবার পর আম্মু আর খেলা দেখতে চায় না। এমনকি আম্মু ভীষন পছন্দের বই মেলাও যাবে না এবার। আচ্ছা স্যার আল্লাহ কেনো আমার আব্বুকে নিয়ে গেলো। আমার সব বন্ধুদের আব্বু আছে। শুধু আমার নেই। বলতে বলতে তার চোখ ভরে যায় পানিতে। স্যার তখন রুদ্রকে আদর করে কাছে টেনে নেয়। বলে, তুমিই পারো তোমার আম্মুকে খুশি করতে। তিনি আবার খেলা দেখবেন। আবার বই মেলাতেও যাবেন। রুদ্র অবাক হয়ে বললো- কেমন করে। কি করবো আমি। আমি তো এখনও অনেক ছোট।
স্যার।
রুদ্র তুমি ছোট বলেই আরো বেশি করে পারবে। তুমি বই মেলা থেকে অনেকগুলো বই কিনে তোমার আম্মুকে উপহার দেবে। এ কাজে আমি তোমাকে সাহায্য করবো। তোমার আম্মু বই পেলে ভীষন খুশি হয়ে যাবে। আরো একটি কাজ করতে হবে তোমার। তা হলো তোমকেও বেশি বেশি পড়তে হবে। যখন তোমার আম্মু দেখবে তোমারও বইয়ের প্রতি আগ্রহ। নতুন নতুন বইয়ের সন্ধান চাই তোমারও। তখনই দেখবে তোমাকে সাথে নিয়ে বই মেলায় যাবে তোমার আম্মু।
স্যার এর কথা শুনে রুদ্রর চোখ চকচক করে উঠলো। বললো- ঠিক আছে স্যার আমি আজ থেকেই পড়া শুরু করবো। আপনি কীভাবে আমাকে বই কিনে দেবেন?
স্যার বললো- তুমি কী কী বই কিনতে চাও লিস্ট করে দিও। আমি রকমারি থেকে কিনে দেবো তোমাকে। অথবা আমি বই মেলাতে গিয়েও কিনতে পারি।
রুদ্র বললো- অনেক ধন্যবাদ স্যার।
নীলা- দূর থেকেই রুদ্রকে দেখা যাচ্ছে তার ম্যাথ স্যার এর সাথে। নীলা আর মিথিলা কাছে এলে স্যারকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করে। একটু পর ম্যাথ স্যার চলে গেলেন।
রুদ্র- মা মা তুমি এসেছো ! দৌড়ে মাকে জড়িয়ে ধরে। মাও চুমু আঁকে ছেলের কপালে। খেলতে চলে যায় রুদ্র।
মিথিলা- দেখেছো ছেলেটা কতটা খুশি হয়েছে তোমাকে পেয়ে। সবকিছু মনের মধ্যে রেখে ছেলের খুশির জন্য এগিয়ে যাও। শোনো আজ চলো ছেলেকে সারপ্রাইজ দেই।
নীলা- কীভাবে? কি করতে চাও।
মিথিলা- খেলা শেষ হলে চলো বই মেলায় যাই। রুদ্র ভীষন খুশি হবে। তুমি আর না করো না। একবার চলো। দেখবে কষ্টের মধ্যেও বইয়ের গন্ধে কেমন মন ভালো হয়ে যায়।
নীলা- হ্যা তাই। জীবনকে বয়ে নিতে হয়। বেশ তাই হবে। দেখ দেখ ছেলে কেমন খেলছে। ঠিক ওর বাবার মতো খেলা পাগল। জানো, ওর বাবাও খেলার জন্য খাওয়া পর্যন্ত ভুলে যেতো। কোনো ম্যাচ মিস করতে চাইত না। এ নিয়ে আমার সাথে ও ঝগড়া করতো। এসব আলাপচারিতার মধ্যেই খেলা শেষ হয়ে এলো। চলো চলো তাড়াতাড়ি বের না হলে বাড়ি ফিরতেও দেরী হয়ে যাবে। রুদ্রকে এখনই কিছু বলা যাবে না। চলো যাই।
রুদ্র- মা দেখেছো আমার খেলা। কেমন খেলেছি আমি।
নীলা- হ্যা বাবা দেখলাম। তুই অনেক বড় হয়েছিস। আরো ভালোভাবে খেলবে। দোয়া করি অনেক বড় হও। এখন চল্। এক জায়গায় যাবো। তাড়াতাড়ি চল্।
রুদ্র- কোথায় মা?
নীলা- গেলেই দেখতে পাবে। চলো সবাই।
এই বলে সবাই বেরিয়ে পড়ে। বই মেলার কাছাকাছি এলে রুদ্রর মনে নানান প্রশ্ন উঁকি দিতে থাকে। আমরা এখানে কেনো। তবে কি ম্যাথ স্যার আম্মুকে কিছু বলেছে। কিন্তু উনিত আমাকে বই কিনে দিবে বলেছিলো। তাহলে আমরা কোথায় যাচ্ছি। মনে মনে সে এসব ভেবে চলছে। সে তার হাসি আন্টিকে চুপিচুপি জিজ্ঞেস করে, আন্টি আমরা কোথায় যাচ্ছি। আন্টি হেসে বললো- চলো গেলেই দেখবে।
তার বিষ্ময়ের ঘোর যেনো কাটছেই না। কি ভাবলো আর কীইবা হতে চলছে। সে তার মাকে সারপ্রাইজ দিতে চাইলো। এখন তো দেখা যাচ্ছে তার জন্যই সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে।
নীলা- রুদ্র বাবা তুমি খুশি হওনি! কী ব্যাপার। এতো চুপ কেনো। কি হয়েছে। তুমিই তো বই মেলায় আসতে চেয়েছিলে। তাই তোমাকে সারপ্রাইজ দিতেই তো এলাম। কিছু বলো।
রুদ্র- মনে মনে ভাবে আমি কি চেয়েছিলাম আম্মু আর কী হয়ে গেলো। বুদ্ধিমান রুদ্র তার মনের কথাগুলো আর প্রকাশ করে না। ম্যাথ স্যারের সাথে তার যা যা কথা হয়েছে সব নিজের মধ্যে রেখে দেয়। তার মা তাকে খুশি করতেই বই মেলায় এসেছে এটাই বড় কথা। আম্মু আজ বইয়ের গন্ধ নেবে। আম্মুর পছন্দের বইয়ে আনন্দ পাবে আম্মু। এসব ভাবতে ভাবতে রুদ্রর মন খুশিতে ঝলমল করে ওঠে। সে তার মাকে জড়িয়ে ধরে বললো- মা আমি তোমাকে ভীষন ভালোবাসি।
সময় গড়িয়ে যায়। তবুও যেনো কি পড়ে থাকে ফেলে আসা পথে। দীর্ঘশ্বাসে নীলাও ছেলেকে কাছে টানে পরম মমতায়। চারিদিকে নতুন বইয়ের গন্ধ নীলাকে নিয়ে যায় নতুন কোনো স্বপ্নের জগতে!

Share.

মন্তব্য করুন