বিজ্ঞানের অনবদ্য এক আবিষ্কার উড়োজাহাজ বা বিমান। এর অনেক নাম আছে। উড়োজাহাজ বাংলা নাম হলেও বর্তমানে এই শব্দের ব্যবহার কম। সবাই বিমান বা প্লেন বলে। দ্রুত কোথাও যেতে এর বিকল্প নেই। হেলিকপ্টারও আকাশযান বটে। তবে এগুলো রুটভিত্তিক সার্ভিস লাইন নয়। তুমি চাইলে এক ঘণ্টা বা বেশি সময়ের জন্য ভাড়া করে যেতে পারো তোমার দাদু বাড়ি, নানা বাড়ি। তবে ভাড়া গুনতে হবে অনেক। এখন অনেকে চমক লাগোনোর জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া করে। আর এ জন্য প্রচুর টাকা খরচের ব্যাপার কিন্তু আছে। বিমানের নানা ধরন আছে। আমরা এ লেখায় বিমান নিয়ে আলোচনা করবো।
এ যুগের একটি অপরিহার্য পরিবহনের নাম প্লেন বা বিমান। বাতাসের চেয়ে ভারী অথচ উড্ডয়নক্ষম এক ধরনের আকাশযান। যাত্রী ও পণ্য পরিবহন এবং যুদ্ধে এটি ব্যবহৃত হয়। উড়োজাহাজ নামটি এসেছে উড়া বা ওড়া এবং জাহাজ বা পোত শব্দ দু’টি একত্রিত করে। উড়োজাহাজকে ইংরেজিতে আমরা সাধারণত অ্যারোপ্লেন বলি। আমেরিকা, কানাডাসহ অনেক স্থানে এয়ারপ্লেন (Airplane) বলে। ব্রিটেনসহ বিভিন্ন দেশে মূলত অ্যারোপ্লেন নামে ডাকা হয়। ইংরেজিতে এই নাম দু’টি এসেছে গ্রিক αέρας (Aéras-) (Air বা বাতাস) এবং গণিতের Plane (তল) শব্দ দুটি থেকে। বাংলায় বিমানের আরো কিছু নাম আছে। আকাশযান, খপোত, ব্যোমযান ও বিমানপোত। উড়োজহাজ শব্দের কথা আগেই বলেছি। বেশির ভাগ উড়োজাহাজই উড়োজাহাজে অবস্থানকারী চালক বা পাইলট উড়িয়ে নিয়ে যান, তবে কিছু উড়োজাহাজ দূর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সাহায্যে বা রোবট দিয়ে ওড়ানো বা চালানো হয়।

কী করে আবিষ্কার হলো বিমান?
বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার সবচেয়ে দ্রুততার যান হচ্ছে উড়োজাহাজ বা বিমান। দেশের বাইরে তো বটেই এখন দেশের ভেতরেও কোথাও অল্প সময়ে যাওয়ার জন্য প্রথম পছন্দ বিমান। এর আবিষ্কারক দুই ভাই। তারা রাইট ব্রাদার্স নামে পরিচিত। উইলবার রাইট এবং অরভিল রাইট। তারাই প্রথম উড়োজাহাজ আবিষ্কার করেন।

উইলবার রাইট ১৮৬৭ সালের ১৬ এপ্রিল আর অরভিল রাইট ১৮৭১ সালের ১৯ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। দু’জনেই ছিলেন পেশায় মার্কিন প্রকৌশলী। তাদের পিতা মিল্টন রাইট ছিলেন গির্জার যাজক। তাদের মায়ের নাম সুসান ক্যাথরিন। একদিন পিতা দুই ছেলেকে একটি খেলনা হেলিকপ্টার উপহার দিয়েছিলেন। সেটির নকশা করেছিলেন হেলিকপ্টার উদ্ভাবক ফ্রান্সের আলফোন্স পে। সেটি দেখে দুই ভাই নতুন একটি হেলিকপ্টার তৈরি করে।
১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর মাসের কথা। দুই ভাই সে বছর বিমান বা প্লেন আবিষ্কার করেন। তাদের এই সাফল্য বিশ^কে তাক লাগিয়ে দেয়। এ নিয়ে দুই ভাইকে দীর্ঘ সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। মুখোমুখি হতে হয়েছে অনেক ঝড় ঝাপ্টার। কেননা এসব কাজে সহসা সাফল্য ধরা দেয় না। কিন্তু তারা দমে যাননি।

পরে ধীরে ধীরে বিমান চলাচল ব্যবস্থা সহজ হয়ে আসে আর আজকের বিমান সেবা তারই চূড়ান্ত রূপ। এখন তুমি চাইলে মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ করে অল্প সময়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চলে যেতে পার। রেলে গেলে লাগবে ৮-১০ ঘণ্টা আর বাসে ৫-৬ ঘণ্টা। নিজস্ব কারে কিছু সময় কম লাগবে। ঢাকা থেকে ইউরোপের কোন দেশ বা লন্ডন যেতে পার ১১-১২ ঘণ্টায়। কী মজার বাহন তাই না? যেন রূপকথার রাজ্য। রাইট ব্রাদার্স সেটা করে দিয়ে গেছেন আর অমর হয়ে আছেন।
বলছিলাম ১৯০৩ সালের কথা। প্রথম নিয়ন্ত্রিত, শক্তিসম্পন্ন এবং বাতাসের চেয়ে ভারী সুস্থিত মানুষ-বহনযোগ্য উড়োজাহাজ তৈরি করা হয় সে বছর। অরভিল ও উইলবার বারবার উড়োজাহাজ তৈরি করার চেষ্টা করেন এবং বারবারই ব্যর্থ হন। কিন্তু চেষ্টা তারা থামাননি।

১৮৯৯ সালের জুলাই মাসে উইলবার রাইট পাঁচ ফুট উচ্চতার একটি বাক্স ঘুড়িতে বেঁধে ওড়ার চেষ্টা করেন। ঠিক তারপরের বছরই তাঁরা গ্লাইডার তৈরি করতে সক্ষম হন। আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনার কিটিহকে নিয়ে আসেন এটিকে ওড়ানোর জন্য। গ্লাইডারটি আকাশে ভেসে ছিল মাত্র ১২ সেকেন্ড। এরপর ১৯০১ ও ১৯০২ সালে পরপর দু’টি পরীক্ষা করেন। এবার তাঁরা তাদের উদ্ভাবিত যন্ত্রটি ব্যবহার করে কিছুটা সাফল্য লাভ করেন। এটিকে তাঁরা প্রায় এক হাজার বার ওড়ান। এর নাম দেন ‘Flyer-১’। ১৯০৩ সালের ২৩ মার্চ রাইট ব্রাদার্স তাঁদের উড্ডয়নকৃত গ্লাইডার এর পেটেন্টের জন্য আবেদন করেন। এরপর তাদের কঠোর অধ্যবসায়ের পর ১৯০৪ সালে ‘Flyer-১১১’ তৈরি করেন এবং এটিকে তাঁরা ১০৫ বার উড্ডয়ন করেন। তাঁরা ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিমানকে আরও নিরাপদ উড্ডয়নের জন্য ব্যাপক গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। ফ্রান্সের একটি কোম্পানি এবং আমেরিকার সেনা সদস্যের সাথে তাঁদের একটি সহযোগিতা চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক বড় ভাই উইলবার রাইট ফ্রান্সে এবং ছোট ভাই অরভিল রাইট ওয়াশিংটন ডিসিতে কাজ করেন। উইলবার রাইট ১৯০৮ সালের ৮ই আগস্ট বিমান নিয়ে সফলভাবে আকাশে ওড়েন। ওই বছরই ১৪ মে ডেটনের ফারসান নামের একজন সহকারী প্রথম যাত্রী হিসেবে উইলবারের সাথে ফিক্সড উইং এয়ারক্রাফট ভ্রমণ করেন। ৭ অক্টোবর এডিথ ওজিলবি বার্গ নামক এক মহিলা প্রথম আমেরিকান নারী হিসেবে উইলবারের সাথে আকাশে ওড়েন।

এ ঘটনা পৃথিবীর সব গণমাধ্যম বিশেষ করে আমেরিকার বিখ্যাত ‘হেরাল্ড ট্রিবিউন’ পত্রিকায় গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়। রাইট ভ্রাতৃদ্বয় ছিলেন চিরকুমার। ব্যস্ততার কারণে তাদের দু’জনের বিয়ে করা হয়নি। উইলবার ১৯১২-এর ৩০ মে মৃত্যুবরণ করেন। আর ছোট ভাই অরভিল মারা যান ১৯৪৮-এর ৩০ জানুয়ারি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার ১৯৫৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ১৭ ডিসেম্বর দিনটিকে রাইট ব্রাদার্স দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। আমেরিকানরা বেশ আয়োজন করেই এই দিনটি পালন করেন। তবে এটি সে দেশের কোনো সরকারি ছুটির দিন নয়। ওয়াশিংটন ডিসিতে যেখানে রাইট ব্রাদার্স মেমোরিয়াল ট্রফি প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও উত্তর ক্যারোলিনার কিটি হক, যেখানে রাইট ফ্লাইয়ারের প্রথম ফ্লাইট ছিল। সেইসঙ্গে রাইট ভাইদের নিজ শহর ডেটন, ওহিওতে দিবস উপলক্ষে নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা অ্যারোস্পেস একাডেমি, ফ্লোরিডা এয়ার মিউজিয়াম এবং সান এন ফান অ্যারোস্পেস এক্সপো সহ বেশ কয়েকটি স্থানে দিনটি উদযাপন করে।

কিভাবে আকাশে ওড়ে বিমান?
বিমানের ঊর্ধ্বগতি এর ডানার সম্মুখগতির কারণে। এই ধরনের আকাশযানের ঊর্ধ্বগতি ঘূর্ণায়মান ডানা সংবলিত আকাশযানের মত ডানায় বা উপরে অবস্থিত পাখার ঘূর্ণনের কারণে সৃষ্ট হয় না, যেমনটি হেলিকপ্টারে হয়। যদিও রকেট বা মিসাইল আকাশে উড়ে কিন্তু তাদের উড়োজাহাজ বলা হয় না কারণ এগুলো ডানার সম্মুখগতি ব্যবহার না করে রকেট থার্স্ট-এর সাহায্যে ঊর্ধ্বগতি অর্জন করে। অনেক উড়োজাহাজ প্রপেলার বা জেট ইঞ্জিন দ্বারা সৃষ্ট ঘাতের প্রভাবে সম্মুখে চালিত হয়।
আরো সহজ করে বললে বলতে হয়, খুব সাধারণ কিছু ট্রিক বা কৌশল মেনে বিমান আকাশে উড়ে। আমরা জানি, যে কোন বস্তুর চারদিকে বাতাসের চাপ সব সময় সমান। কিন্তু তাকে শূন্যে ছেড়ে দিলে তা মাটিতে পড়ে যায় বস্তুর ওজন ও মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে । সুতরাং এমন একটা শক্তির ব্যবস্থা করতে হবে যাতে বস্তুর ওজন+মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে মোকাবেলা করে বাতাসে ভেসে থাকা যায়। যেহেতু চারিদিকে বাতাসের চাপ সমান তাই +মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীত দিকে বাতাসের চাপ কমালেই নিচ থেকে বাতাসে চাপ ঐ বস্তুকে ভেসে থাকতে সাহায্য করবে। এই শক্তির নামই lift। সুতরাং যে কোনভাবে হোক বস্তুর উপরের অংশের বাতাসে চাপ কমালেই ভেসে থাকা সম্ভব। কিন্তু তা করা যাবে কিভাবে?
Bernoulli principle মেনে। বাংলায় বলা যায় যে কোন প্রবাহিত স্রোতের কোন জায়গায় গতি বেশি হলে সেখানে তার চাপ কমে যায়।
অ্যারোপ্লেনের উইংগুলো দেখলে লক্ষ করা যায় উপরের অংশ খানিকটা উঁচু কিন্তু নিচের অংশটা একদমই ফ্ল্যাট বা সমতল। এর কারণ হলো যখন রানওয়েতে অ্যারোপ্লেনটি দ্রুতবেগে এগিয়ে যায় তখন উপরের অংশে বাতাসের চাপ কমে যায়। কারণ উপরের অংশ বাঁকা বা কার্ভ হওয়ায় সেখানে বাতাসের বেগ বেশি থাকে নিচের তুলনায়। উপরের অংশে চাপ কমতে কমতে এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি হয় যখন অ্যারোপ্লেনটি বাতাসে ভাসতে পারে সহজেই। ঠিক তখন ইঞ্জিনের Thrust বা ধাক্কাকে কাজে লাগিয়ে বিমান উপরের দিকে উঠে যেতে পারে। একবার উপরে উঠে গেলে আর বাতাসের চাপ নিয়ে ভাবতে হয়না। প্রপেলার বা জেট ইঞ্জিনের অনবরত ধাক্কায় বিপুল গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে বিমান। প্লেন কিভাবে আকাশে উড়ে তা বুঝতে হলে প্রথমে প্লেনের যান্ত্রিক গঠনের দিকে লক্ষ করতে হবে। বিশেষ করে বিমানের ইঞ্জিন ও পাখার গঠন। এগুলো কিভাবে কাজ করে সেদিকে লক্ষ্য করতে হবে। সবার আগে যেটা মনে রাখতে হবে তা হলো প্লেনের ইঞ্জিন গাড়ির ইঞ্জিনের মতো নয়।

এত ভারী হওয়ার পরও বিমান কিভাবে আকাশে উড়তে পারে?
একেকটি বিমানের ওজন প্রায় ২ লাখ কিলোগ্রাম হয়ে থাকে। তারপরও খুব সহজেই আকাশে ভেসে থাকতে পারে। পাখি কিভাবে আকাশে উড়ে? এদের গায়ে পালক, ফাঁপা হাড় পাখিকে আকাশে উড়তে এবং ভেসে থাকতে সাহায্য করে। পালকগুলো থাকে খুব হালকা কিন্তু দৃঢ়। এগুলো নমনীয় এবং স্থিতিস্থাপক। পাখিদের পালক বিন্যাস উড়ার সময় এদেরকে হালকা রাখতে সয়াহতা করে। প্লেন ওড়ানোর জন্য এই ধরনের পদ্ধতিই ব্যবহার করা হয়।

নিজ ওজনের চেয়ে বেশি ওজন বহনে সক্ষম বিমান
অবাক করা বিষয় হলো যে প্লেন নিজের ওজনের চেয়েও বেশি ওজন নিয়ে আকাশে উড়তে সক্ষম। এগুলো হচ্ছে কার্গো প্লেন। বাংলায় বলা হয় পরিবহন বিমান, মালামাল পরিবহন করা হয় বলে এই নাম। যেমন আন্তোনভ এ. এন.- ২২৫ হলো একটি কার্গো বিমান যা সাধারণত বিশাল আকৃতির কোনো একক পণ্য আন্তর্জাতিক সীমানায় পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয় আর খালি অবস্থাতেই এই প্লেনটির ওজন ২৮৫,০০০ কিলোগ্রাম। বিমানটিকে আকাশের দৈত্য বলা হয়। প্লেনটি ইউক্রেনে তৈরি করা হয়েছিল। তখন ইউক্রেন ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। পণ্যসহ উড্ডয়নের সময় এর সর্বমোট ওজন ৬৪০,০০০ কিলোগ্রাম পর্যন্তও হতে পারে। এখন বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মানের কার্গো বিমান তৈরি হয়।

বিমানের ইঞ্জিন বৈশিষ্ট্য কী?
প্লেন উড্ডয়নের সময় চারটি বিষয় কাজ করে। উত্তোলন, ওজন, ধাক্কা, টান। প্লেনের ইঞ্জিন বিশেষভাবে নকশা করা হয়েছে। এই ইঞ্জিন এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যা চলন্ত অবস্থায় পুরো প্লেনকে অতি উচ্চ গতিতে সম্মুখে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। যার ফল স্বরূপ প্লেনের পাখায় অতি উচ্চ গতিতে বায়ু প্রবাহিত হয়। বায়ু প্রবাহ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে থাকে। পাখার সুনিপুণ যান্ত্রিক গঠনের ফলে উড্ডয়নের সময় এই উচ্চ গতির বায়ু পাখার সাহায্যে ভূমি অভিমুখে চালিত হয়ে বল প্রয়োগ করে। বিমান যখন উড্ডয়নের প্রারম্ভে থাকে তখন এর পাখার সংকীর্ণ প্রান্ত নিম্নমুখী থাকে, যেন ইঞ্জিনের সহায়তায় প্রাপ্ত উচ্চ গতির বায়ু প্রবাহ পাখার সাহায্যে ভূমি অভিমুখে বল প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়। যার ফল স্বরূপ প্লেন ২ লাখ কিলোগ্রাম বা তার বেশি ওজন নিয়েও আকাশে উড়তে সক্ষম হয়।

অ্যারোনটিক্যাল সায়েন্স বা বিমান উড্ডয়ন বিদ্যা বিজ্ঞানের একটি বিশাল সাবজেক্ট। এখানে সেই সব খুঁটিনাটিতে না গিয়ে শিশু-কিশোরদের বুঝবার উপযোগী করে কিছু তথ্যাদি তুলে ধরা হলো। প্রবন্ধ দীর্ঘ হয়ে যাবে বিধায় আরো তথ্যাদি দেয়া গেল না। তোমাদের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হলে বড় হয়ে এ বিষয়ে আরো জানতে পারবে।

বিস্ময়কর যুদ্ধবিমান

পৃথিবীর জন্য যুদ্ধ একটা অভিশাপ। আর এই যুদ্ধে সবচেয়ে বিপদে পড়ে শিশু-কিশোররা। কিন্তু এরপরও বিশে^ যুদ্ধ থেমে নেই। এক দেশ আরেক দেশকে ঘায়েল করতে নতুন নতুন অস্ত্র আবিষ্কার করে চলেছে। যুদ্ধেও বিমান ব্যবহার শুরু হয় এক সময়। কারণ অতি অল্প সময়ে উড়ে গিয়ে শত্রুপক্ষের টার্গেটে বোমা ফেলার কোনো জুড়ি নেই। রাইট ব্রাদার্স যাতায়াতের সুবধার জন্য যে বিমান বানিয়েছিলেন তারই পরবর্তী একটি রিপ ব্যবহার করা শুরু হলো যুদ্ধবিমান বা জঙ্গিবিমান হিসেবে। ইংরেজিতে বলে ফাইটার প্লেন বা ফাইটার জেট। এই লেখায় তারই কিছু তুলে ধরবো।
আকাশপথে প্রাচীনতম নথিভুক্ত যুদ্ধ প্রাচীন চীনে সংঘটিত হয়েছিল বলে জানা যায়। তখন একটি মনুষ্যবাহী ঘুড়ি সামরিক বুদ্ধিমত্তা এবং যোগাযোগের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির জন্য রওনা হয়েছিল। যুদ্ধক্ষেত্রে মূলত ভূমিতে অবস্থিত বস্তুসমূহের উপর আক্রমণ চালানোর জন্য যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়। আমেরিকাতে পারসুইট বলা হতো যুদ্ধবিমান পরিচালনাকারী গোষ্ঠীকে। ব্রিটেনে এসব বিমান বা বিমান পরিচালনাকারী দেরকে রয়াল ফ্লাইং ক্রপস বলা হতো।
যে বৈমানিকরা যুদ্ধবিমান বা জঙ্গিবিমান চালান তারা স্বাভাবিকভাবেই, দক্ষ, কৌশলী, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। কেননা তারা সামান্য ভুল করলে মৃত্যু অবধারিত। স্কোয়াড্রন লিডাররা সাধারণত এসব বিমান চালান। আকাশে শত্রু বিমানের সঙ্গে যে যুদ্ধ চলে তার নাম ডগ ফাইট। এক পর্যায়ে একজন কাবু হয়ে পপাত ধরণীতল। অথবা যুদ্ধে ক্ষান্ত দিয়ে ডেরায় ফিরে আসতে হয়। দক্ষ বৈমানিকরা তাদের বিমানকে সোজা, আঁকাবাঁকা, খাড়া বা উলম্বভাবে চালনা করতে সক্ষম। সে এক দেখার দৃশ্য বটে। যুদ্ধের সিনেমায় তার কিছুটা দেখা যায়। ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বা কামানোর গোলা ও রকেট নিক্ষেপে শত্রু পক্ষের বিমান ঘায়েল করা হয়। জঙ্গিবিমান থেকে গোলা বা বোমা নিক্ষেপ করে শত্রু পক্ষকে নিমেষে কাবু করা যায়। জাপানের হিরোশিমায় যে পরমাণু বোমা ফেলা হয়েছিল তার নাম লিটল বয়। এটা কোড নেম। অনেক সময় অপারেশনাল কোড নেম ব্যবহার করা হয়। ৬ আগস্ট, ১৯৪৫ সাল, স্থানীয় সময় সকাল ৮:১৫ মিনিট, ইউএস বি-২৯ যুদ্ধবিমান এনোলা গে ‘লিটল বয়’ নামে একটি পারমাণবিক বোমা ফেলে হিরোশিমায়। হামলাটি আনুমানিক ৩ লাখ ৫০ হাজার জনসংখ্যার শহরটিকে ধ্বংস করে দেয়। নিহত হয় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ। তিন দিন পর নাগাসাকি শহরে ফেলা হয় আরো একটি পামাণবিক বোমা, যার নাম ফ্যাটম্যান। সেখানে মারা যায় আরো বেশি মানুষ। অনেকে আহত হয়। আহত এবং তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পরবর্তীতে আরও হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। পারমাণবিক বোমা হামলার এটাই প্রথম ও শেষ ঘটনা। দুটোকে এক হামলা ধরা হয়। ১৫ আগস্ট জাপান পরাজয় স্বীকার করে নেয়। বিমান হামলার এটাই সাফল্য। কিন্তু ক্ষতির দিক হলো বিপুল প্রাণহানি। পার্ল হারবার বিমান যুদ্ধ ইতিহাসের আরেকটি নাম করা বিমানযুদ্ধ। সিনেমায় এর কিছুটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
যুদ্ধ বিমান বা ফাইটার প্লেন, ফাইটার এয়ারক্র্যাফট শব্দগুলো মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে প্রচলিত। ১৯০৬ সালে কার্যকর বিমান আবিষ্কারের পর থেকে বিমান নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলতে থাকে। পরবর্তীতে বিমানকে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা শুরু হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে মূলত ভূমিতে অবস্থিত বস্তুসমূহের উপর আক্রমণ চালানোর জন্য যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে মূলত কাঠের ফ্রেমে তৈরি বিমান ব্যবহার করা হতো। যার সর্বোচ্চ বেগ ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে যেসব যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হতো সেগুলো মূলত লোহার ফ্রেমে তৈরি। এদের বেগ সর্বোচ্চ ৪০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা পর্যন্ত দেখা যায়। প্রথমে এক ইঞ্জিনের বিমান দেখা গেলেও পরবর্তীতে দুই ইঞ্জিনচালিত বিমানের প্রচলন ঘটে। ১৯৬০ এর দশকে এয়ার টু এয়ার মিসাইল মেশিনগানের একক আধিপত্যকে থামিয়ে দেয়। টার্বোজেট এর ব্যবহার এবং পরবর্তীতে তা বন্ধ করে দেয়া, নতুন প্রযুক্তি (যেমন রাডার) এর ব্যবহার এবং এ সংক্রান্ত গবেষণা যুদ্ধবিমানকে বর্তমান পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।

ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম বিমানযুদ্ধ
সময়টা ১৯৪০ সালের মাঝামাঝি। ইউরোপে তখন গ্রীষ্মকাল, কিন্তু নাৎসি জার্মানির জন্য সময়টা ছিল বসন্তের চেয়েও চমৎকার। কিছুদিন আগে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মিত্রশক্তিকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেছে তারা। মাত্র ৪৬ দিনের যুদ্ধে গোটা ফ্রান্স নাৎসিরা দখল করে নিয়েছিল। একের পর এক রণাঙ্গনে সাফল্য দেখতে দেখতে তাদের আত্মবিশ্বাস তখন তুঙ্গে। সোভিয়েত রাশিয়া তখনও হিটলারের সঙ্গে বিবাদে জড়ায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সতর্কভাবে ইউরোপের এই গণ্ডগোল থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখেছিল। ফলে নাৎসিদের দৃষ্টি তখন ক্ষয়িষ্ণু ব্রিটেনের প্রতি। ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ ইউরোপের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। তাই আকাশপথে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করা ছাড়া ব্রিটেন দখল করা একরকম অসম্ভব। সেই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনাকে সফল করতে ১৯৪০ সালের জুলাই মাসে লুফৎওয়াফো ব্রিটেন হামলা শুরু করল। ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম এই বিমানযুদ্ধ ‘ব্যাটেল অব ব্রিটেন’ নামে পরিচিত।

ব্যাটেল অব ব্রিটেনের পটভূমি
১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯, নাৎসি বাহিনীর পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্য দিয়ে ইউরোপে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলো। অবশ্য হঠাৎ করেই যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল এমনটা নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ জানতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে তারও দুই দশক আগে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মান ও অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় জোট মিত্র শক্তির কাছে পরাজিত হয়। যুদ্ধের পর দুই পক্ষের মধ্যে ভার্সাই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুসারে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসেবে জার্মান সাম্রাজ্যকে বিপুল পরিমাণ গোল্ড রিজার্ভ মিত্রশক্তির হাতে তুলে দিতে বাধ্য করা হয়। ছিনিয়ে নেয়া হয় জার্মান সাম্রাজ্যের কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ভূখণ্ড। উপরন্তু যুদ্ধ চলাকালীন সময় আফ্রিকায় সবগুলো কলোনি হারিয়েছিল জার্মান সাম্রাজ্য। ফলে রিক্ত, নিঃস্ব জার্মান সাম্রাজ্য থেকে অধুনাসৃষ্ট জার্মান রিপাবলিকে শুরু হলো চরম অচলাবস্থা। এদিকে ১৯২০ এর দশকের শেষ দিকে সারা পৃথিবীতে শুরু হওয়া ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’ অর্থাৎ ‘বৈশ্বিক মহামন্দা’ জার্মানবাসীর দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলল। ধূমকেতুর মতো হিটলারের উত্থানের মধ্য দিয়ে আবার সুদিন ফিরে আসতে শুরু করল জার্মানির। শক্ত হাতে হাল ধরে হিটলার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বদলে ফেললেন জার্মানির চেহারা। ফলস্বরূপ ১৯৩৮ সালে টাইমস ম্যাগাজিন এডলফ হিটলারকে ‘দ্য পার্সন অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করে।
তবে জাত্যভিমানি হিটলার জার্মানির অবস্থা একটু স্থিতিশীল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হারানো জার্মান সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার এবং বিশ্বব্যাপী জার্মানদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। হিটলার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন। পরাজিত এই যোদ্ধা বাকি জীবন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মান সাম্রাজ্যের পতনের কারণ হিসেবে জায়নিস্ট ইহুদি এবং কমিউনিস্টদের দায়ী করতেন। সে যা-ই হোক, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের হুমকি উপেক্ষা করে হিটলার ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর পশ্চিম পোল্যান্ড আক্রমণ করে বসলেন। উদ্দেশ্য জার্মান সাম্রাজ্যের হারানো অংশ ফিরে পাওয়া। মাত্র দুদিন পরেই অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর ব্রিটেন ও ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তবে দুই সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিম পোল্যান্ড নাৎসি জার্মানির কাছে আত্মসমর্পণ করে। এরপর ১৯৪০ সালের এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে একে একে ডেনমার্ক, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়াম নাৎসি জার্মানির কাছে আত্নসমর্পণ করল। ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৪০ সালের মে মাস পর্যন্ত চলা ঘটনাপ্রবাহে মারাত্মক তিক্ত হতে থাকে জার্মান ও ফরাসি-ব্রিটিশ মিত্রশক্তির সম্পর্ক এবং অবশেষে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। হিটলারকে শায়েস্তা করতে ধুঁকতে থাকা ফ্রান্সের সাহায্যে এগিয়ে আসল ব্রিটেন। ৩ লক্ষ ব্রিটিশ সৈন্য এবং ২,৫০০ ট্যাংক পৌঁছাল ফ্রান্সে। কিন্তু এত কিছুর পরও মাত্র ৪৬ দিনের মাথায় পতন ঘটল ফ্রান্সের। তবে সেখানে অবস্থানরত মিত্রবাহিনী ইউরোপের মূলভূমি ছেড়ে নিরাপদে ব্রিটেনে চলে আসতে পেরেছিল।
সম্প্রতি আমরা যুদ্ধবিমানের ব্যবহার দেখছি রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে। ভবন বাড়িঘর ধ্বংস হচ্ছে, মানুষ বিশেষত শিশুরা মারা যাচ্ছে অন্য দিকে ইসরাইলি বাহিনী প্রতিদিনই নিরীহ ফিলিস্তিনিদের মারার জন্য জঙ্গিবিমানের সাহায্যে হানা দিচ্ছে। শহীদ হচ্ছে অনেকে। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সাথে চার ফ্রন্টে যুদ্ধ করছে বিদ্রোহী ও স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকামীরা। বিমান তাদের বিমান হানায় সব কিছু হারিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান। তাইওয়ান আর চীনের মধ্যে চলছে যুদ্ধের মহড়া। সেখানেও ব্যবহার হচ্ছে আধুনিক সব জঙ্গিবিমান।

বিশ্বের সেরা কয়েকটি যুদ্ধবিমান
কার অস্ত্রভাণ্ডার কত সজ্জিত তা সব সময়েই কোনও না কোনওভাবে শক্তিধর দেশগুলো প্রমাণ দিয়ে চলেছে। তা সেনা, বিমান সেনাবা হোক নৌসেনা। সে রকমই বিশ্বের সেরা কয়েকটি যুদ্ধবিমানের ছবি ও সাধারণ তথ্য নিচে দেয়া হলো।
এফ-৩৫ লাইটনিং ২ : বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক যুদ্ধবিমান। আধুনিক যুদ্ধের কথা মাথায় রেখেই এটি তৈরি। এটি ব্যাপক ধ্বংসের ক্ষমতা রাখে।
এফ ২২ রাপটার (আমেরিকা) : আমেরিকার ফায়ার পাওয়ারে এটিও একটি মেশিনারি। এটি ব্যাপক ধ্বংসের ক্ষমতা রাখে।
ইউরো ফাইটার টাইফুন (জার্মানি, ইংল্যান্ড, ইতালি, স্পেন) : ইউরোপের কয়েকটি দেশের হাতে থাকা এই যুদ্ধবিমান শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করতে বেশ কার্যকর।
এসইউ ৩৫ ( রাশিয়া) : কোল্ড ওয়ারের দিনগুলোতে আমেরিকার সাথে পাল্লা দিয়ে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন বর্তমানের রাশিয়া ব্যাপক ফায়ার পাওয়ার অর্জন করে। এটা তারই একটি এবং কার্যকর জঙ্গিবিমান।
এফ ১৫ ঈগল (আমেরিকা) : এটাও আমেরিকার আরেকটি বিমান। যুদ্ধে ব্যাপক সাফল্য তার।
এসইউ ২৭ (রাশিয়া) : রাশিয়ার বিমান বহরের আরেকটি কার্যকর বিমান। এর ফায়ার পাওয়ারও সমীহ করার মতো।
রাফায়েল (ফ্রান্স) : অপর বিশ^শক্তি ফ্রান্সের জঙ্গিবিমান এটি। তাদের প্রধান ফায়ার পাওয়ার।
মিগ ৩৫ (রাশিয়া) : এটিও রাশিয়ার বিমান বহরের আরেকটি কার্যকর বিমান। এর ফায়ার পাওয়ারও সমীহ করার মতো। বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মিগ ২১ বিমান ব্যবহার হয়েছিল। করেছিল মিত্রপক্ষ- ভারত ও বাংলাদেশের বিমান সেনারা। মূলত ভারতই ব্যহার করে।
এফ ১৬ ই (আমেরিকা) : আমেরিকার একটি কার্যকরী বিমান। এর যুদ্ধকৌশল সমীহ করার মতো।
জে ১০ (চীন) : আকাশযুদ্ধে এখন চীন একটি বড় শক্তি। এটি তাদের ফায়ার পাওয়ার হিসেবে সেরা।
এফ ১৮ (আমেরিকা) : আমেরিকার আরো একটি অত্যাধুনিক জঙ্গিবিমান। ফায়ার পাওয়ারে সেরা।

আরো কয়েকটি কার্যকর জঙ্গিবিমান
আগে যা বলা হয়েছে এর বাইরেও আরো কয়েকটি কার্যকর জঙ্গিবিমান রয়েছে। তার মধ্যে এখানে চারটির কথা বলছি। এখানে ছবিতে সর্ব বামে আছে এফ-১৬ ফাইটং ফ্যালকন বিমান। একবারে নিচে আছে পি-৫১ ডি মুসতাং জঙ্গিবিমান। সবার উপরে আছে এফ-৮৬ স্যাবর এবং ডানে এফ-২২ র‌্যাপ্টর বিমান। এগুলো আমেরিকার বিভিন্ন জেনারেশনের বিমান।

যুদ্ধবিমান নিয়ে গবেষণা ও নির্মাণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। উন্নত দেশগুলো তাদের প্রাধান্য বজায় রাখতে কোটি কোটি ডলার বা রুবল ব্যয়ে এসব তৈরি অব্যাহত রেখেছে। এখানে বিস্তারিত বলার সুযোগ কম। মোটামুটি চিত্র তুলে ধরা হলো।

Share.

মন্তব্য করুন