মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. সবসময় হাসি মুখে থাকতেন। যেকোনো মুহূর্তে যে কেউ দেখতো তাঁকে, দেখতো তাঁর মুখে ছড়িয়ে আছে মুচকি হাসির রেশ। ঠোঁটের কোণায় হাসির রেখা জেগে থাকতো বলে তাঁকে সবসময় সতেজ মনে হতো। মজার বিষয় হলো, তাঁর সঙ্গী যাদের বলা হয়- সাহাবী, তাঁরা যখন তখন রাসুলের চেহারার দিকে চেয়ে থাকতেন। তাকিয়ে থাকতেন এক দৃষ্টিতে। কেউ কেউ দীর্ঘ সময় চোখের পলকও ফেলতেন না। তাকিয়ে থাকতেন তারা। দেখতেন কোনো অবস্থায় মহানবী সা. এর মুখ থেকে হাসির রেখা মিলিয়ে যাচ্ছে না। যায় না। এমনকি তাঁর প্রতি কেউ অন্যায় করলেও তিনি তা হাসি মুখে এড়িয়ে যেতেন। কেউ বিরক্ত করলেও তাঁর আচরণে পরিবর্তন হতো না।

একদিনের ঘটনা। সাহাবী হযরত আনাস রা. রাসুল সা. এর সাথে হাঁটছিলেন। রাসুলের গায়ে একটি চাদর ছিলো। চাদরটি নাজরান নামক শহরের। এ শহরের চাদর বিশেষ সৌন্দর্যপূর্ণ ছিলো। রাসুলের চাদরটি ছিলো একটু মোটা। হঠাৎ একজন বেদুঈন তাদের পিছু নিলো। বেদুঈন হলো আরবের সেই সব লোক যারা নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় বাড়ি বা ঘর নির্মাণ করতো না। তো, এ বেদুঈনটি রাসুলের কাছে আসার জন্য বেশ দ্রুত গতিতে ছুটে আসছিলো। একসময় পৌঁছে গেলো রাসুলের কাছে। পৌঁছেই সে আকস্মিক রাসুলের চাদরটি ধরে বেশ জোরেই টান দিলো। জোরে টান দেবার কারণে রাসুলের পিঠ কিছুটা উন্মুক্ত হয়ে গেলো। এতোটা জোরে টান দিলো যে, রাসুলের পিঠে চাদরের ঘষায় দাগ বসে গেলো।

টান দিয়ে ব্যথা দিয়ে চুপ থাকলো না বেদুঈনটি। সে খুব অভদ্রভাবে রাসুলকে বললেন- হে মুহাম্মদ (রাসুল শব্দটিও বললো না সে)!
তারপর রাসুল সা. কে বললো- তোমার কাছে যে সম্পদ আছে তার থেকে আমাকে কিছু দিতে বলো।
রাসুল সা. তার দিকে ফিরলেন। ফিরলেন তো মুচকি হাসি দিয়েই। এরপর বেদুঈনটিকে কিছু সম্পদ দিয়ে দিতে একজনকে নির্দেশ দিলেন। তাঁর নির্দেশে কিছু সম্পদ দেয়া হলো তাকে। সুবহানাল্লাহ!
কত মহান চরিত্রের অধিকারী ছিলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.। কতটা উদার মনের মানুষ ছিলেন। কতটা ধৈর্যশীল ছিলেন তিনি। ছিলেন একজন মহান বীর পুরুষ। তাই এসব বিরক্তিকর বিষয়ও হাসিমুখে মোকাবিলা করতেন তিনি।

Share.

মন্তব্য করুন