মহাকাশ নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহ অনেক। তারা জানতে চায় পৃথিবী, চাঁদ, মঙ্গল গ্রহ ইত্যাদি সম্পর্কে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নিয়েও রয়েছে কৌতূহল। এটি আসলে কী, কোথায় অবস্থিত, বানাল কে, সেখানে নাকি মানুষ মানে নভোচারীরা থাকে মাসের পর মাস। কিভাবে? এই প্রশ্ন অনেকেরই। প্রশ্ন আরো বেড়েছে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও তার ভাইয়ের মহাশূন্যে বেড়াতে যাবার খবরে। তারা অবশ্য মহাকাশ স্টেশনে যাননি। তারা অল্প সময়ের জন্য মহাশূন্যে যান এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে আসেন। এ জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন এক কথায় মহাকাশের বিস্ময়। এটি একটি বাসযোগ্য কৃত্রিম উপগ্রহ। মডিউলার স্পেস স্টেশন।

মডিউলভিত্তিক মহাশূন্য স্টেশন। মডিউল হচ্ছে মহাশূন্যযানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নভোচারীরা গিয়ে সেই স্টেশনে একটানা ছয় মাস এমনকি এক বছরও থাকেন। এর ইংরেজি নাম ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন, সংক্ষেপে আইএসএস। এটি পাঁচটি মহাকাশ গবেষণা সংস্থার একটি সমন্বিত প্রকল্প। পাঁচটি সংস্থা হলেও এর সাথে যুক্ত আছে ১৫টি দেশ। এই পাঁচটি সংস্থা হচ্ছে: রুশ মহাকাশ সংস্থা- রসকসমস, মার্কিন মহাশূন্য সংস্থা- নাসা, জাপানি মহাকাশ অনুসন্ধান সংস্থা -জাক্সা, কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি- সিএসএ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা-ইএসএ। এর অন্তর্ভুক্ত ১১টি দেশ। সেগুলো হলো: যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, স্পেন, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম ও নরওয়ে। ব্রাজিল সরাসরি অংশ না নিয়ে নাসার সাথে স্থাপিত অন্য একটি চুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের স্থাপনায় কাজ করে যাচ্ছে।

আইএসএস পৃথিবীর কক্ষপথের নিচের দিকে অবস্থিত। অন্যান্য সাবেক মহাকাশ স্টেশনের মত এটিও খালি চোখে পৃথিবী থেকে দেখা যায়। অবাক করার মত ঘটনা হলেও এটা সত্যি। নিজ নিজ এলাকা দিয়ে কখন উড়ে যাবে নাসার ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে যে কেউ চাইলে দেখতে পারে। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব গড়ে ৪০০ কিলোমিটার (২৫০ মাইল)। এটি গড়ে ৯৩ মিনিটে একবার এবং প্রতিদিন ১৫ দশমিক ৫ বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীতে করা সম্ভব নয় বা কঠিন এমন কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণা সেখানে করা হয়ে থাকে। এটি মাইক্রোগ্র্যাভিটি এবং স্পেস এনভায়রনমেন্ট রিসার্চ ল্যাবরেটরি হিসেবে কাজ করে। এস্ট্রোবায়োলজি বা জ্যোতির্বিজ্ঞান, এস্ট্রোনমি বা নক্ষত্র বিজ্ঞান, মেটিওরোলজি বা আবহাওয়া বিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে সেখানে গবেষণা করা হয়।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন দুটি অংশে বিভক্ত। একটি রাশিয়া পরিচালিত রাশিয়ান অরবিটাল সেগমেন্ট (আরওএস) ও অন্যটি ইউনাইটেড স্টেটস অরবিটাল সেগমেন্ট, যা পরিচালনা করে আমেরিকা ও অন্য কয়েকটি দেশ। রাশিয়া ২০২৪ সাল পর্যন্ত আরওএসের কাজ চালাবে, এর পর তারা প্রস্তাবিত নতুন রুশ স্পেস স্টেশন অপসেক নির্মাণ করবে আর এতে আইএসএসের সেগমেন্ট ব্যবহার করবে। ১৯৯৮ সালে আইএসএস মহাকাশে পাড়ি দেয় এবং ২০০০ সাল থেকে দীর্ঘ মেয়াদে সেখানে নভোচারীরা অবস্থান করতে শুরু করেন। রাশিয়ার বাইকোনুর কসমোড্রোম থেকে ৩১ অক্টোবর ২০০০ সালে নভোচারীদের নিয়ে এটি উড্ডয়ন করে। নভোচারীসহ মহাকাশে টিকে থাকার অনন্য রেকর্ড গড়েছে আইএসএস। ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে প্রায় ২৩ বছর। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন, বর্তমানে রাশিয়ার মীর স্টেশন টিকেছিল প্রায় দশ বছর (৯ বছর ৩৫৭ দিন)। রাশিয়া এটিকে ত্যাগ করলেও ২০৩০ পর্যন্ত এটি টিকে থাকার কথা।

আইএসএস ২০২৫ সাল পর্যন্ত পরিচালনার মতো তহবিল সংগ্রহ হয়েছে। এর পর চাঁদ ও মঙ্গলে অভিযান চালানোর স্বার্থে এবং নাসার বাজেট সংস্থানে ঘাটতির কারণে হয়তো এটিকে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনার দিকে যেতে হয়েছে। এমনটাই বলছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। সেই ক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়ে কেউ কেউ সেখানে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। ১৯৮৪ সালে আমেরিকার প্রস্তাবিত স্পেস স্টেশন ফ্রিডম ধারণার ওপর ভিত্তি করে আইএসএস প্রোগ্রাম তৈরি করা হয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন/ রাশিয়াও তখন মীর-২ স্থাপনের জন্য অনুরূপ প্রস্তাব দিয়েছিল। তখন স্থায়ীভাবে মনুষ্যবাহী আর্থ অরবিটাল স্টেশন নির্মাণের কথা বিবেচনা করা হয়। আইএসএস কিন্তু প্রথম স্পেস স্টেশন নয়। এটি ক্রুদের থাকার ব্যবস্থা সংবলিত নবম স্পেস স্টেশন। সোভিয়েত আমলে ও পরে রাশিয়ার উদ্যোগে একই লক্ষ্যে স্যালিউট, আলমাজ এবং মীর স্টেশন ও আমেরিকার উদ্যোগে স্কাইল্যাব নির্মিত হয়েছিল। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের হিসাব মতে, দুটি মহাকাশ স্টেশন পৃথিবীর কক্ষপথে অবস্থিত: আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (কর্মক্ষম ও স্থায়ীভাবে বাস করার উপযুক্ত) এবং চীনের তিয়াং-২ (কর্মক্ষম, কিন্তু তখনও সেটা স্থায়ীভাবে বাসযোগ্য হয়ে ওঠেনি)। পূর্ববর্তী মহাকাশ স্টেশন হিসাবে আলমাজ এবং স্যালিউট সিরিজ, স্কাইল্যাব, মীর, এবং তিয়াং-১ এককভাবে ছিল। বিশেষ করে মীরের কথা কমবেশি সবারই জানা। চীন সম্প্রতি মহাকাশ কর্মসূচিতে বেশ এগিয়েছে। তারা এ বছরই কয়েকটি সফল অভিযান পরিচালনা করেছে। অতি সম্প্রতি তারা তাদের মহাকাশ স্টেশনেরও যথেষ্ট উন্নতি করেছে। তারা সেখানে বসবাসের সুবিধা সৃষ্টি করছে। তিনজন নভোচারী ইতোমধ্যে সেখানে পাড়ি জমিয়েছেন। চীন দেখাতে চায় তারাও মহাকাশ কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যেতে সক্ষম।

মহাকাশ স্টেশনটি কত বড়?
স্পেস স্টেশনটিতে পাঁচটি বেডরুম রয়েছে। এর দুটি বোয়িং ৭৪৭ জেটলিনাকে ধারণ করার মতো আয়তন রয়েছে। পৃথিবীতে মহাকাশ স্টেশনটির ওজন প্রায় এক মিলিয়ন পাউন্ড হতো। কিন্তু মহাকাশে ওজন কম। এর সৌর অ্যারের প্রান্তগুলো থেকে পরিমাপ করা হলে স্টেশনটি শেষ অঞ্চলগুলোসহ একটি ফুটবল মাঠের সমান। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান এবং ইউরোপ থেকে প্রাপ্ত পরীক্ষাগার মডিউলে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

মহাকাশ কেন্দ্রের অংশগুলো কী কী?
কয়েকটি গবেষণাগার ছাড়াও যেখানে নভোচারীরা বিজ্ঞান গবেষণা করেন, সেখানে মহাকাশ স্টেশনের আরও অনেক অংশ রয়েছে। প্রথম রাশিয়ান মডিউলগুলোতে স্পেস স্টেশনটির কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় বেসিক সিস্টেমগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। তারা ক্রু সদস্যদের জন্য থাকার জায়গাও করেছিল। ‘নোডস’ নামে পরিচিত মডিউলগুলো স্টেশনের অংশগুলোকে একে অপরের সাথে সংযুক্ত করে রাখে। উপরের ছবিতে মহাকাশ কেন্দ্রের ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফিগারস তুলে ধরা হয়েছে। মহাকাশ স্টেশনের চারদিকে প্রসারিত হলো সৌর অ্যারে। এই অ্যারে বৈদ্যুতিক শক্তি সরবরাহের জন্য সূর্য থেকে শক্তি সংগ্রহ করে। অ্যারেগুলো দীর্ঘ ট্রাসের সাথে স্টেশনে সংযুক্ত থাকে। ট্রাসের উপর রেডিয়েটার রয়েছে যা স্পেস স্টেশনটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

স্পেস স্টেশনের বাইরে রোবোটিক হাত বা বাহু লাগানো হয়েছে। স্পেস স্টেশন তৈরিতে সহায়তা করতে রোবট হাতগুলো ব্যবহার করা হয়। অনেক সময় নভোচারীদের বিভিন্ন কাজে তাদের থাকার কক্ষ বা গবেষণাগার থেকে বের হয়ে যেতে হয়। এটাকে বলে স্পেস ওয়াক বা মহাশূন্যে পদচারণা। নাম পদচারণা হলেও ছবিতে দেখা যায় তারা স্পেস কস্টিউম বা মহাশূন্যের উপযোগী পোশাক পরে হাওয়ায় ভেসে ভেসে চলছেন। মহাশূন্যে বস্তুর ভর পৃথিবীর তুলনায় কম বলে এ অবস্থা। পৃথিবীতে ভারি বস্তু মাটির দিকে ধাবিত হয়। মহাকাশে ভর কম হওয়ায় এটা হয় না। তাই নভোচারীদের বলতে গেলে হাওয়ায় ভেসে ভেসে চলতে হয়।

নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াও অনেক সময় স্পেস স্টেশনের ত্রুটি মেরামতে নভোচারীদের স্পেসওয়াকে যেতে হয়। আগেইহাত বা বাহুর কথা বলেছি। যখন মহাকাশচারীরা বাইরে স্পেসওয়াকে যান তখন এই বাহুগুলো কাজে লাগে। ফলে তারা চারপাশেও যেতে পারেন। অন্যান্য হাত বা বাহু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালায়। মহাকাশচারীরা বাইরের দিকে খোলা বিমান দিয়ে স্পেসওয়াকে যেতে পারেন। এই স্টেশনে আছে ডকিং পোর্ট। ডকিং পোর্টগুলো অন্য মহাকাশযানকে মহাকাশ স্টেশনে সংযোগ করার সুযোগ করে দেয়। পোর্ট দিয়েনতুন ক্রু এবং দর্শনার্থীরা যাতায়াত করেন। নভোচারীরা রুশ সোয়ুজ-এর মহাকাশ স্টেশন থেকে ওড়েন। রোবোটিক মহাকাশযান সেখানে পণ্য সরবরাহ করার জন্য ডকিং বন্দর ব্যবহার করে।

কেন স্পেস স্টেশন গুরুত্বপূর্ণ?
মহাকাশ স্টেশনের কারণে মানুষের পক্ষে মহাকাশে অবিচ্ছিন্ন উপস্থিতি সম্ভব হয়েছে, জানা সম্ভব হয়েছে অনেক অজানা তথ্য। প্রথম ক্রু যাওয়ার পর থেকেই মানুষ প্রতিদিন বা নিয়মিত মহাকাশে বাস করে। স্পেস স্টেশনটির পরীক্ষাগারগুলো ক্রু সদস্যদের এমন গবেষণা করার অনুমতি দেয় যা অন্য কোথাও করা যায়নি। এই বৈজ্ঞানিক গবেষণা পৃথিবীর মানুষের উপকার করে। এমনকি মহাকাশ গবেষণা দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হয়। ফলাফলগুলো হলো স্পিনফস নামে পরিচিত পণ্য। মানুষ দীর্ঘকাল ধরে মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে বেঁচে থাকলে শরীরে কী ঘটে তাও বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা করেন। নাসা এবং এর অংশীদাররা কিভাবে একটি মহাকাশযানকে ভালোভাবে চালিত রাখতে হয় তা শিখেছে। এই সমস্ত পাঠ ভবিষ্যতের স্থান অনুসন্ধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নাসা বর্তমানে অন্যান্য জগৎকে অন্বেষণ করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। স্পেস স্টেশন প্রথম ধাপগুলোর মধ্যে একটি। আগের চেয়ে আরও বেশি মহাকাশে পৌঁছে যাওয়া মানব মিশনের জন্য প্রস্তুত করতে নাসা মহাকাশ স্টেশনে শেখা জ্ঞান ব্যবহার করবে। দেখা যাচ্ছে শুধু নভোচারীদের ভ্রমণই মহাকাশ স্টেশনের কাজ নয়, সেই সাথে আছে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা।

বর্তমানে কারা আছেন?
কী করছে আইএসএস?
মহাশূন্য স্টেশনটির ধারণক্ষমতা ৭ জন। বর্তমানে আছেনও ৭ নভোচারী। তারা হলেন নাসাতথা আমেরিকার মেগান ম্যাকআর্থার, মার্ক ভেন্ডে হেই ও শেন কিমবরো, রাশিয়ার পিওতর দুবরব ও ওলেগ নভিটস্কি, ফ্রান্সের থমাস প্যাসকুয়ে এবং জাপানের আকিহিতো হোশিদে। সয়ুজ এমএস-১৮ মিশনে গত ৯ এপ্রিল মহাকাশে পাড়ি দেন ওলেগ, পিওতর ও ভেন্ডে হেই। আর ২৩ এপ্রিল স্পেসএক্স ক্রু-২ মিশনে মহাকাশ স্টেশনে যান শেন, মেগান, আকিহিতো ও থমাস। এ দু’টি আইএসএস ফ্লাইটের নাম হচ্ছে যথাক্রমে ৬৪এস ও টিবিএ। এগুলো ছিল ১০২ ও ১০৩তম অভিযাত্রা। এ বছর (২০২১) আরো ৪টি এবং ২০২২ সালে ৬টি মিশন মহাকাশ স্টেশনে যাবে বলে পরিকল্পনা করা আছে।
নাসা সূত্র জানাচ্ছে, সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে ‘এক্সপিডিশন ৬৫’ পরিচালিত হয়েছে। এই অভিযানে গত ১৬ ও ২০ জুন স্টেশনের ক্রুরা দু’দিন স্পেসওয়াকের মাধ্যমে কিছু গবেষণামূলক কাজ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন। নভোচারীরা হলেন টমাস প্যাসকুয়েট ও শেন কিমবরো। প্রথম দিন তারা সাত ঘণ্টা ১৫ মিনিটের মহাশূন্যে পদচারণার মাধ্যমে এক জোড়া রোল আউট সোলার অ্যারে মেরামত করেন। দ্বিতীয় দিনে তারা পি-৬ ট্রাস সেগমেন্ট নামের অরবিটিং ল্যাবের সোলার অ্যারে স্থাপনের কাজ করেন।

এছাড়া ১৭ জুন নাসার ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার মেগান ম্যাক আর্থার ও মার্ক বেন্ডে হেইসহ উক্ত চার নভোচারী স্পেসস্যুট কম্পোনেন্টগুলো পরীক্ষা করেন এবং গ্রাউন্ড স্টেশনের সঙ্গে এক কনফারেন্সে অংশ নেন। কমান্ডার আকিহেতো হোশিদে ওষুধপত্র পরীক্ষা করেন এবং কিছু মেরামতির কাজ করেন। মি. ভেন্ডে হেই ব্যাকটেরিয়া কিভাবে মাইকোগ্র্যাভিটির দ্বারা এফেক্টেড হয় সে বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালান। নভোচারী পিওতর দুবরভ ইমিউন সিস্টেমে মাইক্রাগ্র্যাভিটির প্রভাব পরীক্ষা করে দেখেন এবং এবং তার স্বদেশী রসকসমসের ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার ওলেগ নভিটস্কি রুশ অংশের বিভিন্ন অংশের যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করেন।

এ পর্যন্ত কারা গেছেন মহাশূন্য স্টেশনে?
২০২১ সালের ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত ১৯টি দেশের ২৪৯ জন ব্যক্তি এই মহাশূন্য স্টেশনে গেছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন গেছেন একাধিকবার। ৮৩ জন গেছেন দু’বার করে, ৩২ জন গেছেন ৩ বার করে, ৫ জন গেছেন ৪ বার করে, এবং এরও বেশিবার গেছেন দু’জন। ২৪৯ জনের মধ্যে আমেরিকার রয়েছেন ১৫৫ জন, রাশিয়ার ৫১ জন, জাপানের ১০ জন, কানাডার ৮ জন, ইতালির ৫ জন, ফ্রান্সের ৫ জন ও জার্মানির ৩ জন। বেলজিয়াম, ব্রাজিল, ডেনমার্ক, গ্রেট ব্রিটেন, কাজাকিস্তান, মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, সুইডেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের একজন করে নাগরিক এই স্টেশনে গেছেন। নারী নভোচারী গেছেন ৩৫ জন। এখনো এক নারী আছেন, তার নাম মেগান। ক্রু বা মনুষ্যবিহীন কয়েকটি মহাশূন্যযান সেখানে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে গেছে।
সবচেয়ে বেশি দিন থেকেছেন নাসার বিজ্ঞানী পেগি হুইটসন। তিনি থেকেছেন ৬৬৫ দিন। ২০১৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তার এই রেকর্ড তৈরি হয়।

Share.

মন্তব্য করুন