মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ১১৪টি সূরা। এর একটির নাম সূরা আল কাহাফ। কাহাফ শব্দের অর্থ গুহা অথবা পাহাড়ের গুহা। একবার ক’জন যুবক একটি গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলো। নিয়েছিলো এক অত্যাচারী শাসকের ভয়ে। যুবকেরা ছিলো ঈমানদার। তাদের ঈমান বাঁচাতেই ঢুকে পড়েছিলো গুহার ভেতর। একসময় তারা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। অবশ্য মহান আল্লাহ তায়ালা ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের। এক ঘুমে কেটে গেলো ১৯৬ বছর। ঘটনাটি ছিলো রোমের এফিসোস নগরীতে। এটি ছিলো ফিলিস্তিনের কাছাকাছি একটি নগর।

এই সূরার আয়াত সংখ্যা ১১০টি। ১০৯ নম্বর আয়াতটি পড়বো আমরা। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের নবীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন- তুমি বলো, আমার রবের প্রশংসার কথা লেখার জন্য যদি সমুদ্র কালিতে পরিণত হয় তাহলে সেই সমুদ্র শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমার রবের কথা শেষ হবে না। বরং যদি আরও আরও সমুদ্র পরিমাণ কালি আনি তবুও তা যথেষ্ট হবে না। অর্থাৎ অসংখ্য সমুদ্রও যদি কালি হয় সেসব কালিও শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু মহান প্রতিপালকের প্রশংসার কথামালা শেষ হবে না।

ইস! কি বিস্ময় কথা। কি অদ্ভুত বাণী। একবার কল্পনা করা যাক, একটি সমুদ্রের সমস্ত পানি কালি হয়ে গেছে! সে কালিতে লেখা হচ্ছে মহান আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা বাণী। লিখতে লিখতে একসময় সমুদ্র সমান কালি ফুরিয়ে গেলো! সম্ভব! কি করে সম্ভব! এমন অসম্ভবের জায়গায় আমাদের মহান আল্লাহ তায়ালা বলছেন আরও অসম্ভবের কথা। বলছেন- যদি সমুদ্রের কালি শেষ হয়ে যায় আরও আরও সমুদ্র কালি করলে তাও শেষ হতে পারে। কিন্তু আল্লাহর কথা লিখে শেষ করার উপায় নেই! হায় আল্লাহ! কি অসম্ভব বিস্ময় জাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। পৃথিবীর কোনো মানুষের কল্পনায় ধরবে কি এমন বিস্ময়! না কোনো মানুষও কল্পনাও করার যোগ্যতা রাখে না। একজন সত্যিকার কবি অনেক দূর অনেক কিছু কল্পনা করতে পারেন। কিন্তু এখানে কবির কল্পনাও সহসা ব্যর্থ হয়ে যাবে। ঠেকে যাবে সমস্ত কল্পনার গতি। শুধু বিস্ময় প্রকাশ করা ছাড়া মানুষের আর কোনো সাধ্য নেই এখানে।

আমাদের উচিত মহান রবের প্রশংসার কথামালা নিয়ে ভাবা। তাঁর বিশালত্ব নিয়ে চিন্তা করা। আমাদের চারিদিকে মহান আল্লাহ তায়ালার কত নান্দনিক সৃষ্টি রেখেছেন তিনি। সুতরাং এসবের জন্য আমারা তাঁর শুকরিয়া আদায় করবো। তাঁর প্রশংসা করবো এবং তাঁকে ধন্যবাদ জানাবো।

Share.

মন্তব্য করুন