কোভিড-১৯ মূলত চারটি শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ। এর পূর্ণরূপ আমাদের জানা। Co= Corona, Vi= Virus, D= Disease, 19= 2019 সব মিলিয়ে দাঁড়ায়- কোভিড-১৯, একটি অসুস্থতা। যা এক ধরনের ভাইরাস পরিবাহী। যার নাম করোনা এবং যা ২০১৯ সনে চিহ্নিত হয়েছে। অর্থাৎ করোনা নতুন কোনো ভাইরাস নয়। পৃথিবীতে এ ভাইরাসের অস্তিত্ব আগেও ছিল। চলমান ভাইরাসটি ২০১৯ সনে চিহ্নিত হয়েছে। হয়তো বিশ^ এর আগেও এ ভাইরাসের মুখোমুখি হয়েছে।

ভাইরাসটি ২০১৯ সনের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান প্রদেশে চিহ্নিত হয়। অত্যল্প সময়ের ব্যবধানে তা বিশ^ময় ছড়িয়ে পড়ে। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে এ ভাইরাসের সংক্রমণ বিশ^বাসীকে হকচকিয়ে দেয়। মৃত্যুমুখে পতিত হতে থাকে অজস্র বনি-আদম। মৃত্যুর মিছিল প্রতিনিয়ত দীর্ঘতর হতে থাকে। এক দেশের মৃত্যু আরেক দেশকে ছাড়িয়ে যায়। পশ্চিমা বিশে^র উন্নত ও প্রাযুক্তিক অনেক দেশই মুত্যুপুরীতে পরিণত হয়। বিশ^নেতাদের চোখ কপালে উঠে। চোখের সামনে সর্ষে ফুল বিষণ্নতার ছবি আঁকে। বিশ^ অর্থনীতিতে মন্দা ও ধ্বসের ছাপ স্পষ্ট হয়। মানুষে-মানুষে, দেশে-দেশে তৈরি হয় মনোসামাজিক দূরত্ব। পরস্পরকে করে বৈরী মনোভাবাপন্ন। ভাইরাসের উৎস সন্ধানে চলে পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়িও। অভিযোগের দৌরাত্ম্য গড়ায় আদালত পর্যন্ত।

যা হোক, ক্ষুদ্র ও অদৃশ্য এ ভাইরাস তামাম পৃথিবীকে করে দিশেহারা। অনেকটা স্থবিরও। বিশ^কে ফেলে এক অসীম ভাবনায়। প্রতিরোধ, চিকিৎসা, প্রতিষেধক উদ্ভাবনে তৎপর হয় বিশ^সমাজ। দেশে দেশে শুরু হয় সম্মিলিত এবং একক-উদ্যোগ ও গবেষণা। প্রাথমিক প্রতিষেধক হিসেবে মাস্ক পরিধান, দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদির কথা বলা হয়। কিন্তু রোগের সংক্রমণ, প্রাদুর্ভাব, বিস্ফোরণ চলতেই থাকে। পরিশেষে আবিষ্কৃত হয় টিকা। কিন্তু রক্ষা তাতেও হয় না। ইতোমধ্যে করোনা তার চরিত্র ও প্রকৃতি পরিবর্তন করতে শুরু করে। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

কোভিডের মরণ ছোবলে বিশ^ ব্যবস্থাপনা নাকানি-চুবানি খায়। আর সেটিকেই মহাসুযোগ হিসেবে পেয়ে যায় ইন্টারনেট ওয়ার্ল্ড বা আন্তর্জাতিক বিশ^। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় মানুষ ইন্টারনেটমুখী হতে বাধ্য হয়।
ভাইরাস সংক্রমণ ভীতিতে অনেক দেশেই ঘোষিত হয় স্বল্প-দীর্ঘমাত্রার লকডাউন। অভ্যন্তরীণ-আন্তর্জাতিক সড়ক, নৌ ও আকাশ পথের যোগাযোগেও আসে কঠোর বিধি-নিষেধ। স্কুল-কলেজ-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এমতাবস্থায় বৈশি^ক বাণিজ্য, যোগাযোগ, লেনদেনে বেড়ে যায় ইন্টারনেট নির্ভরতা। শিক্ষা-দীক্ষায় ভর করে দূর শিক্ষণের অনুশীলন। সারা দুনিয়ায় অনলাইন বেইজড পড়ালেখার প্রভাব এবং এ নিয়ে প্রতিযোগিতা ও আত্মপ্রাসাদের ঢেকুর তুলতে দেখা যায় শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের। নির্ভেজাল সত্যি এটিই যে, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এখন ইন্টারনেট নির্ভর।

করোনা মহামারীতে ইন্টারনেটের ব্যবহার ও অনিবার্যতা বেড়ে গেছে অনেক বেশি। স্কুল পর্যায়ের ক্লাস-পরীক্ষা সব চলছে অনলাইনে। এই চাপ সামলাতে গুগল হিমশিম না খেলেও তার ব্যবহার ও অনুসন্ধানকারীর সংখ্যাধিক্যতায় পৌঁছেছে উত্তুঙ্গে। বিদেশি ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন বলছে- প্রতি সেকেন্ডে চল্লিশ হাজার অনুসন্ধানের জবাব দিচ্ছে গুগল। সে হিসেবে প্রতিদিন গুগল জবাব খোঁজে প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন। বড় পরিশ্রমী গুগলের কাজ-কারবার। আমরা যারা এতদিন আন্তর্জাতিকতার (ইন্টারনেটের) বাইরে ছিলাম তারাও আজ আন্তর্জালিকতার ফাঁদে আটকে গেছি। এতদিন যার বিরোধিতা করেছি আজ তাকেই আলিঙ্গন করছি। এই আন্তর্জালিকতার অশরীরী জাল প্রতিদিন তার আয়তন বৃদ্ধি করছে। ছড়িয়ে পড়ছে শহর হতে গ্রামে, গ্রাম হতে গ্রামান্তরে, দূর হতে বহুদূরে।

আন্তর্জালিকতার ব্যবহার, সুবিধা গ্রহণ, কল্যাণময়তার অসংখ্য ফটক বিদ্যমান। এর আবিষ্কার সে অর্থেই। তবে এর ক্ষতিকর প্রভাবও সমাজে নেহাত কম নয়। বিশেষত কিশোর সমাজ নানা কারণে আজ আন্তর্জালিকতার মোহে বন্দি। এই মোহ কখনও-বা তাদের জীবনে ডেকে আনছে ভয়াবহ বিপর্যয়। জীবনকে করে তুলছে বিপন্ন। এক অন্ধকারাচ্ছন্নতার আবেশে আচ্ছাদিত হচ্ছে তাদের কচি মন, সতেজ জীবনের নির্মলতা। আমাদের নিবন্ধের মূল গন্তব্য সেদিকেই।

বৈশি^ক হিসেবে সতেরো মাস, আমাদের হিসেবে চৌদ্দ মাসেরও বেশি সময়ব্যাপী দেশের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা-বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ। অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষাকার্যক্রম চলছে ঢিমেতালে। উচ্চ মাধ্যমিকের মতো সুবৃহৎ পাবলিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারীদের দিতে হয়েছে অটো পাস বা অটো মূল্যায়ন। এ নিয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকের রয়েছে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া-মিশ্রক্রিয়া। যদিও বিষয়টি ছিল পরিস্থিতির অনিবার্যতা। বড় কথা হলো, গত শিক্ষাবর্ষের পুরোটা এবং বর্তমান শিক্ষাবর্ষের অর্ধেকটা আমাদের সন্তানরা স্কুল আঙিনা থেকে অনেক দূরে। দীর্ঘদিন তারা ঘরমুখী। ঘরের বাইরে করোনার প্রকোপ। গৃহবন্দিত্বই তাদের নির্মম বাস্তবতা।

স্কুল-কলেজমুখী কিশোরদের
মোটামুটি কর্মসূচি এরূপ:
দুই ঘণ্টার অনলাইন ক্লাস, ছয় ঘণ্টার ঘুম, দুই-তিন ঘণ্টার প্রাইভেট-টিউশনি, বাকি সময় কার্টুন, মুভি, গেমস কিংবা নিরানন্দ অলস বসে থাকা। অবশ্য গ্রামীণ ও অভাবী পরিবারগুলোতে এর ব্যত্যয় রয়েছে বৈকি। গত দেড় বছরে ধনী পরিবারগুলোর আট বছর ঊর্ধ্ব বয়সী প্রায় সকলেই খুলেছে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট।

বিগত সতেরো/আঠারো মাস বিশ^ মহামারী কাল হিসেবে চিহ্নিত। এ সময়ে আমরা হারিয়েছি অনেক কিছু। প্রায় অর্ধকোটি প্রাণহানি হয়েছে এ পৃথিবীতে। কম-বেশি সবাই হয়েছে ঘরমুখী। ঘরে ঘরে বেড়েছে মোবাইলের সংখ্যা, ব্যবহার, মোবাইলে খেলাধুলার পরিসর। করোনাকালে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা দেখা দিলেও মোবাইল ব্যবসা হয়েছে রমরমা। পিতা-মাতারা বাধ্য হয়েই সন্তানের হাতে তুলে দিয়েছে অ্যান্ড্রয়েড বা ল্যাপটপ। সন্তানের প্রাযুক্তিক প্রাগ্রসরতা বাবা-মাদের ফেলেছে বিপাকে। প্রায়শ সন্তানদের করেছে বিভ্রান্ত। পর্যাপ্ত অবসর তাদেরকে করেছে গেমমুখী। ফেসবুক, ইউটিউব, মেসেঞ্জারের প্রতি তাদের অতি আসক্তি অভিভাবকদের ভাবনায় ফেললেও সন্তানরা বাবা-মাকে বুদ্ধি ও কৌশলে বাগে আনতে সক্ষম হয়েছে। কারণ তাদের মোবাইল সুরক্ষা জ্ঞান অনেক বেশি। তারা কোন অ্যাকাউন্টে কী করছে? কার সাথে যোগাযোগ করছে? কী যোগাযোগ করছে? আমরা তার কিছুই ঠাহর করতে পারি না। অনলাইন ক্লাস চলাকালে নেটওয়ার্কের দোহাই দিয়ে ক্যামেরা অফ করে শিক্ষার্থীদের গেম বা ফেসবুকিং করার অভিযোগ ঘরে ঘরে। কিন্তু করার আছে কী? অতীব নিরুপায় আমরা, অভিভাবকরা।
আমার কয়েক ডজন বন্ধু/অভিভাবক তাদের সন্তানদের মোবাইল আসক্তির অভিযোগ করেছেন। এ অভিযোগ আমারও। কয়েকজন অতি সচেতন অভিভাবক তাদের সন্তানদের শেষ পর্যন্ত ডি-রেইল এর হাত হতে বাঁচাতে পেরেছেন বলে স্বস্তির বড় শ^াস নিয়েছেন। এসবের উৎসাহী শক্তি পাবজি কিংবা ফ্রি-ফায়ার। অথবা আমার না জানা অন্য কোনো গেমস।

আমাদের নিকটজনদের অনেকেই কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। তাদের কেউ বাবার উত্তরসূরি হিসেবে ব্যবসার দেখভাল শুরু করেছে। কেউ মাঠে-ঘাটে জমি-জমার তদারকি করছে। আবার অনেকেই হতাশার ঢোক গিলছে নিয়মিত। বেকার হবার অসহ যন্ত্রণায় নিষ্পিষ্ট তারা। প্রকৃতই আমরা নিরুপায়। দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগই বা কোথায়? তাছাড়াও দীর্ঘদিন চাকরির বিজ্ঞপ্তি বন্ধ। আর করোনা আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অসহায়ত্ব আরো দুর্বিষহ।
বলছিলাম কিশোরদের কথা। যারা স্কুল বা সদ্য কলেজগামী তাদের কথা। তাদের মোবাইল চর্চা আজ প্রয়োজনের সীমানা ছাড়িয়ে অ্যাডিকশন বা আসক্তির পর্যায়ে পৌঁছেছে। সেটিই আমাদের জন্য হয়েছে মোবাইল ফোবিয়া। বাচ্চাদের পড়াশুনা আজ অ্যান্ড্রয়েড নির্ভর। এ নির্ভরতা কমাতে হবে। নতুবা নিকট ভবিষ্যতে অপেক্ষা করছে কৃষ্ণ অশনি। যা থেকে মুক্তি পাওয়া হবে দুষ্কর ও দুরূহ।

এ দীর্ঘ অন্তর্বর্তীকালে আমাদের স্কুল-কলেজ খোলা সম্ভব হয়নি নানা যৌক্তিতকায়। উন্নত দেশগুলোতেও আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা-বন্ধের দ্বৈত চরিত্র প্রত্যক্ষ করেছি। কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে প্রায়ই খোলা আবার বন্ধ এই অবস্থা আমরা বারবার দেখেছি। আমেরিকাতে একইসাথে দ্বৈত শিক্ষাব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে। অনলাইন এবং অফলাইন। অভিভাবকরা পছন্দ করছেন তার সন্তানের শিক্ষা মাধ্যম। ইন্ডিয়াতেও বন্ধ করা হয়েছে আবার খোলা হয়েছে। আবার বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে সেই যে বন্ধ করা হয়েছে আর খোলা হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একনাগাড়ে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে একগুঁয়েমি, একদেশদর্শিতা। সন্তানের জেদ নিবৃত্তার্থে অভিভাবক একসময় সন্তানের হাতে মোবাইল উঠিয়ে দেন। অভিভাবকের অসাবধানতা, নজরদারির অভাব, বাড়তি আস্থার কারণে সন্তান মোবাইলের বল্গাহীন ব্যবহারে মেতে উঠেছে। তাতেই হয়েছে সমূহ সর্বনাশ।

মোদ্দাকথা, করোনার কবলে বিশে^র ক্ষতি অনেক। তবে আমাদের দেশের স্কুলমুখী কিশোরদের ক্ষতি অপরিসীম। স্কুলবিমুখতা, মোবাইল নির্ভরতা, ঘরকুনো জীবন যাপন, অকর্মণ্যতা ইত্যাদি কারণে দেশের কিশোর-ছাত্র সমাজ ধ্বংসের প্রায় অতলান্তে।

সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা দেশের তালিকায় বাংলাদেশ প্রথম। স্বীকার্য যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া এ দুরবস্থার একমাত্র সমাধান নয়। তবে সমাধানের অনেকখানি। দ্বিতীয়ত, আমাদের সন্তানরা প্রাযুক্তিক হবে, মোবাইল ব্যবহারে স্বকীয় হবে এতে দোষের কিছু নেই। এর অর্থ এই নয় সে মোবাইল ব্যবহারে বল্গাহীন হবে। তৃতীয়ত, প্রয়োজনে সন্তানের হাতে অ্যান্ড্রয়েড দিলেও অন্ধ আস্থায় ইন্টারনেটের বিষাক্ত ছোবলের কথা ভুলে যাবেন না কোনো অভিভাবক। কারণ সেটিই বিপদের বড় কারণ। চতুর্থত, সারাদেশ ইন্টারনেটের সম্প্রসারিত জালের আবর্তে আসার আগেই এর উপযোগিতা সৃষ্টি ও প্রয়োগ প্রয়াস নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি করছে। পলিসির অক্ষমতা দুষ্টুদের সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করেছে।

এই সকল কুপ্রভাবের বলির পাঁঠা হয়েছে তরুণ সমাজ, কিশোর সমাজ। আগামী দিনের দেশ নির্মাতা, ভবিষ্যতের দেশ শিল্পী ছাত্র ও যুব সমাজ। ইন্টারনেটের অন্যায় ব্যবহার, অসতর্ক প্রয়োগ, দুর্বল নীতিমালা, দুষ্টুদের দৌরাত্ম্য কোনোটিই প্রত্যাশিত নয়। তবুও আন্তর্জালিকের মায়াবী জাল ছেয়ে ফেলেছে কিশোর সমাজকে। কারেন্ট জালে মাছ শিকারের মতোই আটকে ফেলেছে কিশোর মস্তিষ্কগুলোকে। এ থেকে রেহাই পেতে-
ক. যথাযথ নিয়ম মেনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার উদ্যোগ গ্রহণ (সীমিত আকারে বা শিফটিং করে হলেও)। যাতে কিশোরদের বিকাশমানতার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
খ. বাবা-মার দায়িত্বশীল আচরণ, মোবাইলের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ, প্রয়োজনে গেমস বিষয়ক অ্যাপস বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া।
গ. সন্তানের মোবাইল আসক্তি বন্ধে মোটিভেশনাল কাউন্সেলিং অব্যাহত রাখা।
ঘ. প্রয়োজনের বাইরে সন্তানকে মোবাইল থেকে দূরে রাখতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা।
ঙ. ইন্টারনেট কর্তৃপক্ষের তদারকি বৃদ্ধি, নগ্ন বিজ্ঞাপন প্রচার-প্রসার রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া।
চ. ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো সতর্ক, সচেতন, রুচিশীল ও পরিমিতিবোধ সম্পন্ন হওয়া।
সত্যি বলতে, আজকের দুনিয়ায় প্রয়োজনের চেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট। আজকের সোনামণি ছাত্রসমাজের সব থেকে বড় শিক্ষক ইন্টারনেট। আজকের ব্যবসা-বাণিজ্যের সর্বাধিক বড় বন্ধু ইন্টারনেট। আজকের দুনিয়ার পারস্পরিক যোগাযোগ কিংবা বিনোদনের অকৃত্রিম আকরও এই ইন্টারনেট।

বিগত শতাব্দীর মধ্য প্রহরে (পঞ্চাশের দশকে) যাত্রা শুরু করে আজ এক বিশাল মহীরুহে পরিণত এই ইন্টারনেট। তথ্যের আটলান্টিক, জ্ঞানের প্রশান্ত মহাসাগর এই ইন্টারনেট। যার যাত্রা শুরু হয়েছিল নিতান্ত মানবকল্যাণে। আজও তা অব্যাহত থাক মানবকল্যাণেই। আজীবন তা অটুট থাক মানবকল্যাণের উপাদেয় উপাদান হিসেবে।
ইন্টারনেটকে দোষারোপ নয়। বরং তার ব্যবহারে আনতে হবে পরিমিতি বোধ। ইন্টারনেটের ব্যবহারকে সুখময় করতে একইসাথে বাবা-মা ও কিশোর সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চেষ্টা করতে হবে। আগামী দশকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দায়িত্ব নিতে হবে কিশোর সমাজকেই। সে প্রস্তুতির স্বর্ণ সময় এখনই। আমাদের সবুজ কিশোররা কখনও পথ হারাবে না। যেকোনো চ্যালেঞ্জ গ্রহণে হবে ইস্পাতদৃঢ়। দেশ সুরক্ষায় হবে পর্বতসম। বাংলাদেশের সকল কিশোরের জন্য সবুজাভ শুভকামনা।

Share.

মন্তব্য করুন