একদিনের ঘটনা। সময়টি এশার নামাজের মুহূর্ত! মহানবী সা. নামাজে দাঁড়ালেন। তিনি ইমাম। সব সাহাবী পেছনে কাতারবদ্ধ। নামাজ শুরু হলো। ঠিক এ সময় হযরত ফাতেমা রা. এর দুই ছেলে হাসান ও হোসাইন মসজিদে প্রবেশ করলো। মহানবীর নাতি দু’জন। তখনো তারা শিশু। নামাজের বিষয় আশয় জানে না কিছুই। ফলে তারা নামাজরত সাহাবিদের ভেতর দিয়ে হেঁটে হেঁটে নানাজি রাসূল সা.-এর কাছে পৌঁছে গেলো।
যখন মহানবী সা. সেজদায় গেলেন অমনি হাসান ও হোসাইন তাঁর পিঠে চড়ে বসলো।
রাসূল সা. সেজদায় যতক্ষণ থাকার ছিলেন। যখন সেজদা থেকে উঠবেন ঠিক তখন তাদের দুজনকে আলতো করে কোমল ভাবে নামিয়ে পাশে বসিয়ে দিলেন। আবার যখন সেজদায় গেলেন দু’জন আগের মতো আবারও পিঠে চড়ে বসলেন। রাসূল সা. আবারও সেজদা থেকে ওঠার সময় কোমল হাতে সরিয়ে পাশে বসিয়ে দিলেন। এভাবেই তিনি নামাজ শেষ করলেন। নামাজ শেষ করে তিনি দু’জনকেই কোলে বসালেন। আদর করলেন।
অবস্থা দেখে হযরত আবু হোরায়রা রা. এগিয়ে এলেন রাসূল সা. এর কাছে। বললেন- হে আল্লাহর রাসূল আমি দুজনকে এদের মায়ের কাছে রেখে আসি?
মহানবী সা. বললেন না। এরা থাক এখানে। তিনি দু’জনকে কোলে বসিয়ে আরও আদর করলেন। আকাশে তখন মেঘের আনাগোনা ছিলো। কিছুক্ষণ পর আকাশে হঠাৎ বিজলি চমকালো! রাসূল সা. তখন দুই নাতিকে বললেন- যাও যাও, তোমাদের মায়ের কাছে ঘরে যাও। দু’জন মহানবীর কোল থেকে উঠে দৌড়ে চলে গেলো মায়ের কাছে।
শিশুদের প্রতি রাসূল সা. এমনই কোমল ছিলেন। এমনই দয়ালু ছিলেন।
আমাদের সমাজে এখন শিশুরা মসজিদে গেলে কিছু লোক তাদের প্রতি চড়াও হয়! কাতারে দাঁড়ালে তাদের ঠেলে পাঠিয়ে দেয়া হয় পেছনে। চোখ রাঙিয়ে রূঢ় ভাষায় কথা বলে লোকেরা। এটি রাসূল সা. এর নিয়মের বিরুদ্ধ- কাজ। এটি অন্যায়। বরং শিশুদের দেখলে তাদের আদর সোহাগ করে কাতারে দাঁড় করিয়ে দিতে হবে। কেননা মসজিদে শিশুরা না এলে আগামী দিনের মুসল্লি কোথায় পাবে মসজিদ। সুতরাং মসজিদে শিশুদের বিষয়ে মহানবীর নীতি মানতে হবে আমাদের।

Share.

মন্তব্য করুন