ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে উৎসব। ঈদ আসছে আসছে করে, এসেই আবার ঝুপ করে কিছু বোঝার আগেই চলে যায় কেন? ঈদটা অনেকদিন থাকে না কেন? ঈদগুলো এত দ্রুত শেষ হয়ে যায় কেন? আসলে ঈদের আনন্দটাকে যদি কয়েকদিনের জন্য ধরে রাখা যেত তবে কি দারুণ মজাই না হতো। এমন ভাবনা আমাদের ছোটবেলায় মনের কোণে প্রায়ই কাজ করতো। ছোটবেলার এই চিন্তাটা ছোটবেলাতেই উড়িয়ে দিয়েছিলো আমার ছোট মামা। ছোট মামা কিন্তু ছোট ছিল না, আমাদের চাইতে অনেক বড় ছিল। একবার সে এল আমাদের বাসায় ঈদ করতে। কোরবানীর ঈদের চাঁদ দেখা হয়ে গেছে। ঈদের বাকী আর মাত্র সপ্তাহখানেক। এবার মামা আমাদের সাথে ঈদ করবে, এই নিয়ে মামার সাথে নতুন জামাকাপড় কিনতে যাওয়া নানান জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার চিন্তা মাথার ভেতর ঘুরছে। মামা শুনে বলল, ঘুরতে তো সারা বছরই যেতে পারবি, জামাকাপড় তো সারা বছরই কিনতে পারবি। কিন্তু ঈদের আনন্দ কি সারা বছর পাবি? মামাকে বললাম, সারা বছর ঘোরা আর ঈদের সময় ঘোরা কি এক হল? সারা বছর জামাকাপড় কেনা আর ঈদের সময় জামাকাপড় কেনা কি এক হল? শুনে মামা বলল, না, এক না, ঈদে নতুন জামাকাপড় পরে ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা। তবে আমি তোকে বুঝাতে চাচ্ছি, ঈদ মানে শুধু নতুন জামাকাপড় পড়া আর ঘুরতে যাওয়াই না। ঈদের আসলে অন্যরকম একটা মজার আয়োজন আছে, যেটার শুরু ঈদেরও অনেক আগে থেকে। জিজ্ঞেস করলাম কি রকম। মামা বলল, এই যেমন রোজার ঈদের আনন্দ ত্রিশদিন রোজা রাখার মধ্যে, রোজার আনন্দ সবাই মিলে একসাথে সেহরী ও ইফতার করার মধ্যে, দলবেঁধে খতম তারাবীর নামাজ পড়ার মধ্যে। তেমনি কোরবানীর ঈদের আনন্দও পশু কেনা ও এর লালন পালনের মধ্যে। কথাটা পুরোপুরি বুঝতে না পেরে বললাম, রোজার ঈদ না হয় বুঝলাম একমাসের রোজা, সেহরী, ইফতার তারাবীর আনন্দের মধ্য দিয়ে শুরু।

কিন্তু কোরবানীর ঈদ তো একদিনেই শেষ। মামা বললেন, আর কথা না বলে চল, একটা প্ল্যান করে ফেলি। মামার প্ল্যান শুনে মনটা কেমন কেমন করে উঠলো। আমরা গরু কোরবানী দেই আমাদের বাড়ীর পাশের আরো দুই পরিবারের সাথে, তাদেরকে আমি, চাচা চাচী বলি, ওই দুই পরিবারে আমার দুই বন্ধু জুবায়ের ও তানিম। যেহেতু আমরা এই তিন পরিবার একসাথে কোরেবানী দেই তাই মামার কথামতো মামার প্ল্যানটা আমি তামিম ও জুবায়েরকে বলি। জুবায়ের খুশিতে লাফিয়ে ওঠে, আর তামিম ভয়ে থাকে বাবা মা যেতে দেবে কিনা। যাই হোক গরু কেনার দিন চলে এলো। এবার আর শুধু বড়োরা মানে বাবা চাচারাই গরু কিনতে যাবে না, মামা ঠিক করলো সাথে আমরাও যাব। চাচারা প্রথম ছোটখাটো আপত্তি জানালেও পরে সিদ্ধান্ত হল আমরাও সাথে যাব। সবাই একসাথে দল বেঁধে হাটে গেলাম। কমলাপুরের বিশাল গরু ছাগলের হাট। কত রঙের বর্ণের গরু। লাল, কালো, সাদা, ধূসর, মিশ্র, বড়, ছোট, মাঝারি। কত মানুষজন, কত প্যান্ডেল, আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি আর হাটছি। মামা পকেট ভর্তি বুট বাদাম কিনে একটু পর পর আমাদের দিচ্ছে, আর বলছে, খাবি, হাঁটবি, দেখবি, শুনবি, বুট বাদাম চাবানোর সাথে হাটে ঘাটে মাঠে এভাবে বেড়ানোর মজাই আলাদা। আমরা তখন দেখছি আর নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছি যে, গরুর হাটে এত বছর কাদা, নোংরা পানি, গোবরে একাকার হয়ে থাকতো, দূর থেকে দেখে মুখ সিটকে নিতাম, ঢোকার কোন ইচ্ছাই হতো না, মামার প্ল্যান অনুযায়ী সেই আমরাই সেই নোংরা কাদা, পানি, গোবরসহ আরো বিচিত্র ময়লা পায়ে মেখে বড়দের সাথে সমান তালে পা মিলিয়ে চলছি। গরুর দরদাম করা দেখছি। মাঝে মাঝে নিজেদের মতামত বড়দের কাছে প্রকাশ করছি। কোন গরুটা দেখতে কেমন, কেন ভালো লেগেছে, স্বাস্থ্যবান লম্বা নাকি মাঝারি এইসব নিজেদের মাঝে আমরা বলাবলি করে বড়দের জানাচ্ছি। এরই মধ্যে অনেকে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছে এবং গরু যাওয়ার জায়গা ফাকা করে দেয়ার জন্য হাঁক দিচ্ছে, এই গরু গরু, সইরা সইরা…।

এরকম হাঁক শুনে আমরা সরে দাঁড়াচ্ছি। আর লোকজন চারপাশ থেকে জানতে চাচ্ছে, কত হইছে ভাই? গরু কেনাদের মধ্য হতে কেউ দাম বলে দিচ্ছে। চারপাশে মানুষের কথাবার্তা- গরু-হাম্বা-হাম্বা, গরু বিক্রেতাদের দর হাঁকাহাঁকি সব মিলিয়ে পুরো গরুর হাটটা কোলাহলমুখর হয়ে আছে। এইসব শুনতে শুনতে আর দেখতে দেখতে আমরা ছোটরাও তখন হাটের পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নিয়ে কাউকে গরু কিনে নিয়ে যেতে দেখলে জিজ্ঞাসা করছি, কত দাম। দাম শুনে আমরা নিজেদের মধ্যে ভালো হয়েছে না ঠকা হয়েছে এ নিয়ে কথা বলি, মামা শুনে বলেন, কোরবানীর গরুর দাম নিয়ে ভালোমন্দ বলতে নেই। কেনা হয়েছে, কোরবানী হবে, তাতেই শুকরিয়া আদায় করা। এরপর থেকে আমরাও গরু কেনার দাম শুনে আলহামদুলিল্লাহ বলা শুরু করি। এভাবেই বুট বাদাম খেতে খেতে পচা নোংরা কাদা পানি শরীরে মেখে চলতে চলতে একসময় আমাদের গরু কেনা হয়ে যায়। সাদা গরু। গরু কিনে আমরা একটা প্যান্ডেল ঘেরা ছাউনীর কাছে দাঁড়াই। ছাউনীর নিচে দেখি আমাদের মত আরো অনেকেই গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে গরুর হাসিল দিতে হয়। হাসিল কি জিনিস? জিজ্ঞাসা করতেই ছোটমামা বলল, গরুর হাটের জন্য নির্দিষ্ট অংকের টাকা। যা কিনা গরু যে কেনে তাকে পরিশোধ করতে হয়। হাসিলের কাগজ নিয়ে আমরা হাট থেকে বের হয়েছি, সিদ্ধান্ত হল গরুর সাথে ছোট মামা, তামিমের বাবা ও একজন ভাড়া করা লোক যাবে।

ভাড়া করা লোকটার দায়িত্ব থাকবে গরুটাকে বড়ি পর্যন্ত ঠিকঠাক মত পৌঁছে দেয়া। এই কথা শুনে আমরা ছোটরা ছোটমামার দিকে অসহায়ের মত তাকিয়ে আছি। কারণ, প্ল্যান ছিল গরুর সাথে আমরা ছোটরাও যাবো। ছোটমামা বড়দের বুঝালেন টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে গরু নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই। এতগুলো ভাগ্নে আর আমি থাকতে আপনারা কোন চিন্তাই করবেন না। আমি আর এইসব পালোয়ান মিলে গরুটাকে খুবই সুন্দরমতো নিয়ে যেতে পারবো। আপনারা নিশ্চিন্তে চলে যান। গরু কোরবানীর আগ পর্যন্ত এই গরু নিয়ে আপনাদের আর ভাবতে হবে না ইনশাআল্লাহ। জুনায়েদের বাবা জুনায়েদকে সাথে করে নিয়ে যেতে চাইলে, বাবা ওনাকে কি যেন বুঝালেন, তাতেই উনি হেসে উঠলেন আর যাওয়ার সময় আমাদের উদ্দেশ্যে বললেন, সাবধানে এসো। ছোটমামার সাথে আমরা তিনবন্ধু আমাদের গরু নিয়ে হেঁটে হেঁটে বিশ্বরোড ধরে চলছি। আমাদের গরু আমরা ছোটরাই নিয়ে যাচ্ছি, আহ সেকি উত্তেজনা। প্রথম দিকে গরুর রশি মামার হাতে ছিল, আর আমরা গরু থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে উত্তেজনা ও ভয়ে ভয়ে চলছিলাম। একটু পর ভয় চলে গিয়ে আনন্দ উত্তেজনায় আমরা গরুর রশি ধরে গরুর পাশাপাশি চলা শুরু করলাম। পাশ দিয়ে যাওয়া পথচারি, রিক্সাচালক, গাড়ীর লোকজন গরুর দাম জিজ্ঞাসা করছে, আর আমরা গর্বিত মুখে কে কার আগে দাম বলতে পারি সেই প্রতিযোগিতায় থাকি।

রাস্তার পাশে মাঝে মাঝে থামি, ফুটপাতে বসে জিরিয়ে নেই, পানি, কলা, কেক খাই। আবার ক্লান্তিহীন পথচলার আনন্দে গল্পে এগিয়ে যেতে থাকি। কখনো কখনো হঠাৎ করে বলা কওয়া নেই, গরুটা দাঁড়িয়ে পড়ে, চলতে চায় না। আমরা রশি ধরে টানাটানি করি। মামা দেখে হাসে তারপর গরুর লেজে মোচড় দিতেই গরুটা আবার চলতে শুরু করে। আমরা বুঝতে পারি, গরু হাঁটা বন্ধ হয়ে গেলে লেজে মোচড় দিতে হয়। এবার আমরাও মাঝে মাঝেই গরুর লেজে মোচড় দেই। এভাবেই একসময় আমাদের ভ্রমণ পথের শেষে আমরা গরু নিয়ে বাড়ি ফিরতেই দেখি, মা চাচীরা দরোজায় অপেক্ষমান। আমাদের অবস্থা তখন যুদ্ধজয়ী বীরদের মতো। এরপর আমরা প্ল্যান মত গরুর খড় ভূষি কিনে আনি। ভাতের মাড় রেডি করে নিজেরাই মামার নির্দেশ মত হাতে পলিথিন পুরে ভাতের মাড়ের সাথে লবন-খোইল-ভূষি মিশিয়ে গরুর সামনে দেই। ক্ষুধার্ত গরুটা সেই খাবার কি সুন্দর করে খেতে থাকে। আমরা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখি, গরুটা কি করে আমাদেরই হাতে তৈরী খাবার খাচ্ছে। দেখে আমাদের সে কি আনন্দ। আনন্দে আমরা একে অন্যের হাতে হাত মিলিয়ে আনন্দে তালি ফুটাই। গরুটার প্রতি আমাদের মায়া জন্মাতে থাকে। প্রতি বছর গরুর এইসব লালন পালনের দায়িত্ব থাকতো ভাড়া করা লোকদের উপর। এবার ছোট মামার প্ল্যান মতো সেই দায়িত্ব আমাদের হাতে। আমরা রাতের খাবার, নামাজ শেষ করে আবার গরুর কাছে চলে আসি।

গরুটা বসে আছে অলসভঙ্গীতে। আমরা দলবেঁধে খড় কিনে এনে গরুর মুখের সামনে রাখি। গরুটা খেতে থাকে। আমরা কাপড় দিয়ে গরুটার শরীর মুছে দেই। তারপর আমরা তিন বন্ধু মিলে আশেপাশের বাড়ির গরু দেখতে যেয়ে সেখানে আমাদের বন্ধুদের সাথে আমাদের গরু কেনা, সেই গরু নিজেদের বয়ে আনার গল্পের সাথে রাস্তাঘাটের কথা বলতে থাকি। আমাদের গল্প শেষ হয় না। রাত বাড়ে, ক্লান্ত শরীর নরম হয়। কিন্তু মনে আনন্দ শেষ হয় না। পরদিনের প্ল্যানের কথা মাথায় নিয়ে ঘুমাতে যাই। আনন্দ উত্তেজনায় ভোরেই ঘুম ভেঙে যায়। তিন বন্ধু একসাথে বের হই। এবার মামাকে ছাড়াই গরুর খাবার রেডি করে গরুটাকে খেতে দেই। মামা এসে দেখে অবাক হয়। এরপর এমন একটা কাজে মামা আমাদেরকে ডাকে। সেই কাজের কথা শুনে আমরা একে অপরের দিকে অসহায়ভাবে তাকাই। গরুর গোবর সাফ করার কাজ করতে হবে। ভাবতেই মনটা কেমন করে উঠে। মামা আমাদের ঝাকা দিয়ে বলে, একদিনেই বীরত্ব শেষ! হবে না, তোদের দিয়ে হবে না। কথাটা শুনে আমাদের অপমান হয়। আমরা তিন বন্ধুই সাথে সাথে হাত পলিথিনে পুরে গরুর গোবর পরিষ্কার করি। মামাই বেশীরভাগ কাজটা করেন, আমরা তার সহযোগী হিসেবে মামার নির্দেশই মেনে চলি। এলাকায় আরো নতুন নতুন গরু আসে আমরা দেখতে যাই। আমাদের গরু পালনের কথা অন্য বন্ধুদেরকে বলি। তখন ওরা আমাদের কথা শুনে মজা পেয়ে নিজেরাও নিজেদের গরুর কাজ নিজেরা করতে উৎসাহী হয়ে ওঠে। আমরাও ওদেরকে সাহায্য করি। বড়রা আমাদের আনন্দ দেখে বেশ মজা পায়। সাধারণত ছোটদের হাসিমুখ দেখে বাবা মা আপুরা যেরকম মজা পায়, আমরাও তাদের মুখে সেরকম আনন্দ দেখতে পাই। সন্ধ্যায় দলবেঁধে আমরা মুড়ি চানাচুর আর ঝাল কাচা মরিচে মিশিয়ে খেতে বসি। গরুর সাথে সময় দিতে দিতে আমাদের মন থেকে ঈদের নতুন জামাকাপড়, ও ঘুরাঘুরির কথা ভুলে যাই।

এভাবেই ঈদের আগের রাতে গরুর প্রতি আমাদের খুব মায়া জন্মে যায়, আমাদের মন খারাপের কথা মামাকে বললে, মামা হেসে বলেন, এটাই তো স্বাভাবিক। আল্লাহ্র জন্য আমরা আমাদের এই মায়াটাকেই ত্যাগ করবো, এই ত্যাগই তো কোরবানী। আল্লাহ্র জন্যই সব খারাপ লাগা, মায়া লাগাকে ঝেড়ে ফেলে কোরবানীতে অংশগ্রহণ করবো। মামার কথা শুনে আল্লাহ্র জন্য আমাদের খারাপ লাগা মন ভালো হয়ে যায়। নতুন করে কোরবানীর উত্তেজনায় ঈদের দিনে ভোরে জেগে উঠি, গরুকে গোসল করাই সবাই মিলে। তারপর দলবেঁধে ঈদের নামাজ পড়তে যাই, নতুন পাজামা পাঞ্জাবী পরে। ইমাম সাহেব কোরবানীর ত্যাগ ও নিয়মকানুন নিয়ে কথা বলেন। বিশাল ঈদের জামাতে ধনী-গরীব, বড়-ছোট সবাই মিলে একসাথে নামাজ শেষ করে বাড়ি ফিরি। নতুন পাজামা পাঞ্জাবী বদলে পুরানা কাপড় পড়ে গরু কোরবানীতে অংশ নেই। সে এক দারুণ দৃশ্য। সবাই সবার গরুকে এক বিচিত্র কায়দায় বেঁধে রেডি করে দাঁড়িয়ে থাকে। হুজুর আশামাত্র সকলে মিলে এক এক করে গরুকে শুইয়ে দিলে আল্লাহু আকবার ধ্বনি মুখরিত চারপাশে কোরবানী হতে থাকে। আমরাও প্ল্যানমত বড়দের ফাঁক-ফোকর গলে নিজেদের হাতটা কোরবানীর সময় গরুর গায়ে রাখি। কোরবানীর পর গোস্ত বন্টনের কাজে আমরা বড়দের সাহায্য করতে থাকি। এরপর গরুর রক্ত বর্জ্য পরিষ্কারের করতে থাকি। ততক্ষণে গোস্ত বন্টন হয়ে ঘরে ঘরে চলে যায়, সেখান থেকে গরীব দুঃখী ও আত্মীয়-স্বজনের মাঝে গোস্ত বিলানোর কাজে লেগে যাই। এভাবেই দুপুর গড়িয়ে কোরবানীর গোস্তের রান্না করা ঘ্রাণ আমাদের নাকে এসে লাগে। ভূনা গোস্ত, ঝোল গোস্ত, গোস্তের কাবাবসহ আরো কত কতভাবে কোরবানীর গোস্ত খাওয়া। ছোট মামার কারণে আমরা সেই ঈদ থেকেই জেনেছিলাম, ঈদ মানে শুধু নতুন জামাকাপড় আর সেলামী পেয়ে ঘুরতে যাওয়ার আনন্দই না, ঈদ মানে ঈদের সমস্ত কাজে লেগে থাকার মাঝেই ঈদের মূল আনন্দ আর স্বাদ লেগে থাকে। সেই ঈদ থেকেই আমরা কোরবানীর গরু দেখাশুনার জন্য প্রতি ঈদে বেশ কিছু টাকাও পেতাম বড়দের কাছ থেকে।

সময়ে অনেক কিছুরই পরিবর্তন ঘটেছে। এখন মোবাইলের যুগে গরুর হাটের ছবি, গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার ছবি, গরুর লালন পালনের ছবি, কোরবানীর ছবি তুলে কিংবা ভিডিও করে, কাছে দূরে, দেশে-বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া যায়। যা দেখে অন্যরাও আনন্দ পেতে পারে। কিংবা নিজেদের হাসি-আনন্দের অভিজ্ঞতার কথা লিখে ছড়িয়ে দেয়া যায় অন্যের কাছে। ভাইবার, ইমো, ম্যাসেঞ্জার, ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েও ঈদের আনন্দকে আরো আনন্দমুখর করে নেয়া যায় অনায়াসে। আমাদের সেই বয়স থেকে আজো আমরা কোরবানীর সমস্ত কাজেই লেগে থাকি বলে আমাদের ঈদ হয় অনেক বড় এবং অনেক আনন্দের।

Share.

মন্তব্য করুন