মাহিন দেখ কে আসছে আমাদের মহল্লায়! নূরের কথায় চোখ তুলে তাকালো ওহ মাহিম এ যে রাজন। ঐ ছেলেটা যে আমাদেরকে খেলার মাঠে অপমান করছিল। নূর মাথা নেড়ে সায় দিতেই পাশ থেকে সাজিদ বললো, চল বেটাকে আজ একটা ধোলাই দিয়ে দেই। মাহিন মন থেকে নতুন কোনো ঝামেলা করতে চায় না কিন্তু নূর ও সাজিদের অতি উৎসাহী মনোভাব ও পরামর্শে ছেলেটাকে ধরে আনতে বললো। ছেলেটা তাদেরকে দেখে অনেক ভয় পেয়ে গেল। নূর ও সাজিদ গিয়ে তাকে ধরে নিয়ে এলো। সে ঐদিন ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য হাতজোড় করে মাফ চাইতে শুরু করলো। মাহিন এ নিয়ে তেমন উৎসাহ না দেখালেও নূর ও সাজিদ নাছোড়বান্দা। তারা মাহিনকে চাপ দিতেছে ছেলেটাকে ধোলাই দিতে।

হঠাৎ সেখানে মহল্লার বড়ভাই জুবায়ের এসে উপস্থিত হলো। জুবায়ের খুবই মেধাবী ছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। মহল্লার সবাই তাকে সম্মান করে। জটলা দেখে জুবায়ের খানিকটা এগিয়ে আসায় ছেলেটার ভয় আরো বেড়ে গিয়ে চেহারা ভয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে বারবার। জুবায়ের এসে সবার কথা শুনে বললো, শোনো মাহিন! যারা তাদের কৃতকর্মের জন্য মাফ চায় তাদের মাফ করতে হয়। আর মাফ করার ক্ষেত্রে শয়তান তোমাকে বাধা দিবে, কেননা শয়তানের কাজ হলো ঝগড়া বাধানো। এ প্রসঙ্গে পবিত্র আল কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা বিনয় ও ক্ষমাপরায়ণতার নীতি গ্রহণ কর, লোকদের সৎকাজের উপদেশ দাও এবং মূর্খদের এড়িয়ে চল। শয়তান যদি তোমাকে কুমন্ত্রণা দেয় তবে আল্লাহর কাছে আশ্রয় কামনা করো। তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী।” (সূরা আরাফ ১৯৯-২০০)।

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি না বুঝে অন্যায় করলে তার ওপর প্রতিশোধপরায়ণ না হয়ে ক্ষমা করে দিতে। তাকে সৎকাজের উপদেশ প্রদানের মাধ্যমে ভালো মানুষ হওয়ার সুযোগ করে দিতে উৎসাহিত করা হয়েছে। মূর্খ ও জ্ঞানপাপীদের থেকে সাবধান হতে বলা হয়েছে। শয়তান চায় না তুমি ক্ষমা করে দাও, সে জন্য শয়তান নিজে বা তোমার বন্ধুদের মাধ্যমে তোমার অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়ার চেষ্টা করে। তাই সবসময় মূর্খদের এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। নূর ও সাজিদকে লক্ষ্য করে বললেন, পুরাতন একটা বিষয় নিয়ে ক্ষমা চাওয়ার পরও এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি। এটা তোমাদের দোষ নয়, শয়তান তোমাদের অন্তরে কুমন্ত্রণা দিয়ে পরিস্থিতি তৈরি করেছে । তাই এই ধরনের মানসিকতা যখনই তৈরি হয় তখন আল্লাহ বলেছেন যেন আউজুবিল্লাহ পড়ে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে। নূর ও সাজিদ তাদের ভুল বুঝতে পেরে স্যরি বললো। তারা লজ্জিত হয়ে এমনটি কখনো হবে না বলে ওয়াদা করল। এরই মধ্যে নামাজের সময় হওয়ায় বড় ভাই জুবায়ের সবাইকে নিয়ে মসজিদে গেলেন।

Share.

মন্তব্য করুন