মানুষের চোখের রক্ষাকবচ হিসেবেই চশমার আবিস্কার। দৃষ্টিহীনতার বিভিন্ন পর্যায়ে চিকিৎসা স্বরূপ চশমা ব্যবহার করা হয়। এখন অবশ্য এটা ফ্যাশনের অংশ হয়ে গেছে। সম্প্রতি এর সাথে যোগ হয়েছে স্মার্ট চশমা। গবেষকেরা স্মার্ট ইলেকট্রনিক গ্লাস তৈরি করেছেন, যা কোনো ব্যক্তির মস্তিষ্কের তরঙ্গ ও শরীরের নড়াচড়া শনাক্ত করতে পারবে। এর পাশাপাশি একই চশমা দিয়ে চোখের নড়াচড়ার মাধ্যমে ভিডিও গেম নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। আইএএনএসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ‘এসিএস অ্যাপ্লায়েড ম্যাটেরিয়াস অ্যান্ড ইন্টারফেসেস’ সাময়িকীতে এই গবেষণা সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। মস্তিষ্ক বা চোখ থেকে বৈদ্যুতিক সংকেত পরিমাপকারী ডিভাইসটি মৃগী রোগ এবং ঘুমের সমস্যা শনাক্ত করার পাশাপাশি হিউম্যান-মেশিন ইন্টারফেসগুলোতে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তবে এই পরিমাপ পেতে ত্বক এবং সেন্সরের মধ্যে একটি স্থির শারীরিক যোগাযোগ প্রয়োজন, যা অনমনীয় ডিভাইসগুলোতে পাওয়া কঠিন।
কোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি দল নরম, পরিবাহী ইলেকট্রোডকে ই-চশমায় যুক্ত করেন, যা তারবিহীন উপায়ে মস্তিষ্ক এবং চোখের সংকেতকে পর্যবেক্ষণ করতে পারে। এ ছাড়া এটি শরীরে নড়াচড়া শনাক্তের পাশাপশি হিউম্যান-মেশিন ইন্টারফেস হিসেবেও কাজ করত পারে। গবেষকেরা বলেছেন, চশমার ফ্রেম তৈরিতে তাঁরা থ্রিডি প্রিন্টার ব্যবহার করেন। এরপর সে ফ্রেমে কান ও চোখের কাছে নমনীয় ইলেকট্রোড যুক্ত করেন। এ ছাড়া তাঁরা এতে মোশন বা ইউভি সেন্সিংয়ের জন্য তারহীন সার্কিট বসান। যখন সেন্সরে নির্দিষ্ট ঘনত্বের অতি বেগুনি রশ্মি (আলট্রা ভায়োলেট রে বা ইউভি লাইট) ধরা পড়ে, তখন লেন্স রং পরিবর্তন করে সানগ্লাস বা রোদচশমার কাজ করে।
এ চশমা পরা কোনো ব্যক্তির নড়াচড়া বা সে পড়ে গেল কি না, তা মোশন ডিটেক্টর ধরতে পারে। চশমা যে মস্তিষ্ক-তরঙ্গ ধারণ করে, তা বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে কাজে লাগে। এ ছাড়া চোখের নড়াচড়ার মাধ্যমে ভিডিও গেম খেলা যাবে এ চশমার মাধ্যমে। গবেষকেরা বলেছেন, ই-চশমা ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা বা ভার্চুয়াল রিয়ালিটি অ্যাপ্লিকেশনগুলোর জন্য দরকারি হতে পারে। সুতরাং বলাই যাচ্ছে, ফ্যাশন এবং স্বাস্থ্যসেবা একসাথেই পাওয়া যাবে এ স্মার্ট চশমায়।

Share.

মন্তব্য করুন