নাইসা আম্মুর সাথে রিকশায় করে স্কুল থেকে ফিরছে। রাস্তার মোড়ে আসতেই তাদের রিকশা থেমে গেল। বিশাল একটা মিছিলের মতো যাচ্ছে। সামনের সারিতে নাইসার বয়সী অনেকগুলো ছেলে। তাদের বুকে প্লাকার্ড ঝুলানো।
প্লাকার্ডের লেখাগুলো মিলিয়ে পড়লো নাইসা। তাতে লেখা, ‘আহলান সাহলান মাহে রমজান।’ সে তার আম্মুকে জিজ্ঞেস করলো এটা কী? আম্মু জবাব দিলেন, ‘এটা রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়ে একটা র‌্যালি।’ নাইসা জানতে চাইল, ‘আম্মু রমজান কী?’ আম্মু বললেন, ‘আগে আমরা বাসায় যাই তারপর তোমাকে সবকিছু বলবো কেমন।!’
রিকশা আবার চলতে শুরু করলো, বাসায় পৌঁছেই নাইসা জামা কাপড় পাল্টে ফ্রেশ হয়ে আম্মুর ঘরে অপেক্ষা করতে লাগল। নাইসার আম্মু এক গ্লাস দুধ নিয়ে নাইসার হাতে দিলেন এবং পাশে বসলেন। এবার নাইসা বললো, ‘আম্মু বলো না এবার রমজান কী?’ আম্মু বলতে শুরু করলেন, ‘রমাদান হলো আরবী বছরের নবম মাস। এ মাস অন্যান্য মাসের চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ নাইসা অবাক হয়ে জানতে চাইলো, ‘কেন? তিনি পবিত্র কুরাআনের সূরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াত তেলাওয়াত করে বললেন, ‘এমাসে আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রিয় নবী সা. এর ওপর পবিত্র কুরআন নাজিল করেছেন।’ নাইসা আবারো প্রশ্ন করলো, ‘আচ্ছা আম্মু আমরা যে কুরআন পড়ি এই কুরআন?’ আম্মু হেসে
দিয়ে বললেন, ‘হ্যাঁ এই কুরআনই তো! এই কুরআন নাজিলের মাসকে আল্লাহ বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন। কেননা কুরআনের আলোকে আমরা সবকিছু বুঝতে পারি। কোনটা সরল সঠিক পথ আর কোনটা খারাপ বা মন্দ পথ। এইকুরআন আমাদের সরল পথ দেখায়, মুক্তির পথ দেখায়। এজন্য আমাদের প্রিয় নবী সা. এমাসে সবচেয়ে বেশী কুরআন পড়তেন। শুধু তাই নয়। এমাসে আল্লাহ তায়ালা প্রাপ্ত বয়স্ক ও সক্ষম মুসলমানদের উপর সিয়াম বা রোজা পালন করাকেও ফরজ করেছেন। সেই সাথে একাট রাত দিয়েছেন, ‘লাইলাতুল কদর’। যে রাতে ইবাদত করলে এক হাজার রাত ইবাদত করার চেয়ে বেশী সাওয়াব আল্লাহ দান করবেন। কুরআনের জন্যই এই মাসের এতো মর্যাদা, এতো কদর। আর সেজন্যই র‌্যালিতে সবাই এ মাসের পবিত্রতা রক্ষা করতে স্লোগান দিয়েছে, যাতে সবাই আল্লাহর ইবাদতের পরিবেশ ঠিক রাখে।
নাইসা মনে মনে ভাবলো, পবিত্র কুরআনের জন্য যদি এমাসের এতো বেশী মর্যাদা হয়, তবে কুরআন যে পড়বে তার মর্যাদা নিশ্চয় অনেক অনেক বেশী হবে! সে সিদ্ধান্ত নিলো, এই রমজানে সে অনেকগুলো রোজা রাখবে আর আম্মুর মতো কুরআন পড়াটাও শিখে নেবে।

Share.

মন্তব্য করুন