অপেক্ষার পালা শেষ করে এসে গেল আরেকটি বিশ্বকাপ ক্রিকেট। ব্যাট-বলের লড়াইয়ে নেমে বিশ্বসেরার মুকুট পরার প্রতিযোগিতা চলবে দেড় মাস জুড়ে ইংল্যান্ডে। ১৭৭৫ সালে শুরু হওয়া বিশ্বকাপের এটি ১২তম আসর। এবারের বিশ্বকাপে অংশ নেবে ১০টি দল।
যদিও এ নিয়ে সমালোচকরা অনেক কথা বলছেন। ২০০৭ বিশ্বকাপে দল ছিলো ১৬টি। ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল ১৪ দল; কিন্তু সেখান থেকে আরো কমিয়ে এবার ১০ দলের বিশ্বকাপ করছে আইসিসি। যাই হোক সেই আলোচনায় আমরা যাবো না।
এবারের আসরে অংশ নেবে বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ের সেরা ৮ দল সরাসরি খেলার সুযোগ পেয়েছে, বাকি দুটি দল- ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তানকে আসতে হয়েছে বাছাই পর্ব খেলে।
প্রথম রাউন্ডে দলগুলো লিগ পদ্ধতিতে সবাই সবার বিপক্ষে খেলবে। সেখান থেকে পয়েন্ট তালিকার সেরা চার দল খেলবে সেমিফাইনালে। ৩০ মে দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার খেলা দিয়ে পর্দা উঠবে বিশ্বকাপের। ফাইনাল হবে ১৪ জুলাই।

আবার এলো বিশ্বকাপ । আহমেদ ইবনে হাবিবআবার এলো বিশ্বকাপ । আহমেদ ইবনে হাবিব

দল পরিচিতি

বাংলাদেশ

অধিনায়ক : মাশরাফি বিন মর্তুজা, কোচ : স্টিভ রোডস
১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশ প্রথম খেলেছিল বিশ্বকাপে। সেবার নতুন দল হিসেবে পাকিস্তানকে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল আকরাম, বুলবুলরা। এবার আবারো ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ, তবে বাংলাদেশ আর সেই নবীন দল নেই। আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তি আর প্রত্যাশা নিয়ে তারা যাবে বিশ্বকাপ খেলতে। ওয়ানডেতে অনেক দিন ধরেই ভালো করছে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপে নিয়মিত খেলছে ১৯৯৯ সাল থেকে, এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ। গত বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছিল মাশরাফি বাহিনী। গত কয়েক বছর ধরে ওয়ানডের পারফারম্যান্সও ভালো। যদিও দেশের বাইরে ম্যাচ জেতার অভ্যাস কম এখনো। তবু ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেলে র‍্যাংকিংয়ে ৭ নম্বরে থেকে সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে তারা।
মাশরাফির নেতৃত্বে দলটি দারুণ উজ্জীবিত। দলের সেরা পারফরমার অরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ব্যাট কিংবা বল হাতে দলকে টেনে নিতে পারেন সাকিব। আছেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীমের মতো দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান। সেই সাথে আছেন তরুণ সাইফউদ্দিন, লিটন দাস আর গত বিশ্বকাপে জোড় সেঞ্চুরি করা অভিজ্ঞ সেনানী মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বোলিংয়ে পেসার মাশরাফি আর মোস্তাফিজের সাথে সাকিবের স্পিন দলের সবচেয়ে বড় শক্তি। গত বিশ্বকাপে নক আউট পর্ব আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনালে খেলা বাংলাদেশ এবারের বিশ্বকাপেও খেলতে নামবে ভালো কিছুর প্রত্যাশায়।

অস্ট্রেলিয়া

অধিনায়ক : অ্যারন ফিঞ্চ, কোচ : জাস্টিন ল্যাঙ্গার
বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া এবারের আসরেও নামবে ফেবারিট হিসেবে। সব মিলে ৫ বার বিশ্বকাপ জিতেছে দলটি। তবে গত এক বছর ধরে বিশ্ব ক্রিকেটে সময়টা ভালো যাচ্ছে না অস্ট্রেলিয়ার। বল টেম্পারিংয়ের দায়ে দলের সেরা দুই তারকা স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার নিষিদ্ধ হওয়ার পরই দলটির পারফরম্যান্সে ভাটা পড়ে। ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়েও নেমে গেছে ৫ নম্বরে। তবে পেশাদার দল অস্ট্রেলিয়া আবার ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিশ্বকাপের আগে। ফেব্রুয়ারিতে ভারতের মাটিতে ভারতকে হারানোর মত কঠিন কাজ তারা করেছে অনায়াসে। এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাকিস্তানের বিপক্ষেও দেখা গেছে তাদের দাপট। তাই দলটি যে আবার সঠিক রাস্তায় চলে এসেছে তা বলতে কোন বাধা নেই। সবচেয়ে বেশিবার বিশ্বকাপ জিতেছে তারা। এবারো শিরোপার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাদের হিসাবে রাখতে হবে। ব্যাটিংয়ে অ্যারন ফিঞ্চ, উসমান খাজা, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলরা দারুণ ফর্মে আছেন। মিচেল স্টার্ক আর প্যাট কামিন্সের বোলিং জুটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে দেখা দেবে যে কোন দলের জন্য। আবার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ায় ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভ স্মিথকে দেখা যেতে পারে বিশ্বকাপের মাঠে। সব মিলে তাই সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়নদের কাতারেই আছে অস্ট্রেলিয়ার নাম।

ইংল্যান্ড

অধিনায়ক : ইয়ন মরগান, কোচ: ট্রেভর বেলিস
এবারের বিশ্বকাপের আগে যে দলটিকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে সেটি স্বাগতিক ইংল্যান্ড। একে তো নিজস্ব আবহাওয়ায় খেলবে দেশটি, তা ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের সেরা দল তারা। দলটি গত কয়েক বছরে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছে। ২০১৮ সালের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ড সফর করে তিনটি দেশকেই হারিয়েছে।
আবার নিজেদের মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ ম্যাচ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছে। হারিয়েছে ভারতকে। ২০১৭ সালে দুইবার হোয়াইটওয়াশ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে, হারিয়েছে পাকিস্তানকে। যার ফলস্বরূপ তারা এখন ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ের এক নম্বর দল।
ব্যাটিং, বোলিং সব দিকেই বেশ ভারসাম্যপূর্ণ দল ইংল্যান্ড। ইয়ন মরগান, অ্যালেক্স হেলস, জো রুট, জেশন রয়, জশ বাটলার দারুণ ফর্মে আছেন। বাউন্সি পিচে গতির ঝড় তুলবেন ক্রিস ওকস, মার্ক উড ও বেন স্টোকস। সাথে আছেন লেগস্পিনার আদিল রশীদ। অলরাউন্ডার বেন স্টোকস আর মইন আলী- ব্যাট বল দুই ভূমিকাই দলের জন্য অবদান রাখতে পারবেন। গত দুই যুগের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ এবারই হতে পারে ইংলিশদের। অতীতে তিন বার ফাইনাল খেলেও বিশ্বকাপ জেতা হয়নি দলটির। এবার সেই স্বপ্ন ধরা দিতে পারে দলটির এমনটাই বলছেন ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা।

ভারত

অধিনায়ক : বিরাট কোহলি, কোচ : রবি শাস্ত্রী
বিরাট কোহলির ভারত আছে ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ের দুই নম্বরে। আগে বলা হতো ভারতের বোলিং সেক্টর দুর্বল।
কিন্তু সেই দিন এখন অতীত। আইসিসির ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ের সেরা ১০ বোলারের মধ্যে ৩ জনই ভারতের। পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ আছেন এক নম্বরে। তার সাথে থাকবেন ভুবনেশ্বর কুমার, মোহাম্মাদ শামি। এই তিন পেসারের সাথে স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা, কুলদ্বীপ যাদব, কেদার যাদব, যুযুবেন্দ্র চাহালের মধ্যে যে কোন দু’জন থাকবেন দলে। আছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার হারদিক পান্ডিয়া। বাউন্সি পিচের সুবিধা নিতে চার পেসার আর দুই স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজাতে পারে ভারত।
১৯৮৩ ও ২০১১ এর বিশ্বকাপ জয়ী ভারত ব্যাটিংয়ে বরাবরই সেরা। কোহলি নিজেই বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান। শেখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, অম্বতি রাইডুর সাথে আছেন অভিজ্ঞ ফিনিশার এমএস ধোনি। সর্বশেষ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হওয়া ছাড়া তাদের সাম্প্রতিক ফর্ম অন্যদের চেয়ে ভালোই বলা চলে।

নিউজিল্যান্ড

অধিনায়ক : কেন উইলিয়ামসন, কোচ : গ্যারি স্টেড
ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ের ৩ নম্বর দল নিউজিল্যান্ড। গত বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলেছে তারা। দলে আছেন বেশ কয়েকজন পারফরমার। কেন উইলিয়ামসন বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। এ ছাড়া দলে আছেন রস টেলর, মার্টিন গাপটিলের মতো তারকা। টেলর বর্তমানে ব্যাটসম্যানদের ওডিআই র‍্যাংকিংয়ে আছেন ৩ নম্বরে। বোলারদের র‍্যাংকিংয়ে ট্রেন্ট বোল্ট আছে দুইয়ে। সাম্প্রতিক ফর্মই দল হিসেবে নিউজিল্যান্ডকে র‍্যাংকিংয়ের তিন নম্বরে নিয়ে এসেছে। তবুও ফেবারিটের কাতারে তাদের অনেকেই রাখতে চাইছে না কারণ বড় আসরে শুরুতে ভালো খেলেও শেষ দিকে পা পিছলে যাওয়ার অভ্যাস আছে দলটির।

দক্ষিণ আফ্রিকা

অধিনায়ক : ফাফ ডু প্লেসিস, কোচ : ওটিস গিবসন
দক্ষিণ আফ্রিকার সম্পর্কে প্রচলিত আছে যে, বিশ্বকাপে এসে প্রথম পর্বে দারুণ খেলবে; কিন্তু নকআউট পর্বে গিয়ে সহজ ম্যাচে হেরে যাবে। বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা হয়নি কখনো। গতবার অনেকটা ‘কপাল দোষে’ সেমিফাইনালে হেরেছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের কাছে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপেও সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ‘জেতা ম্যাচ’ তারা হেরে যায় তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে। ৪ বলে ১ রানের সহজ সমীকরণ তারা মেলাতে পারেনি। সেই থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার নামের সাথে যুক্ত হয়ে যায় চোকার্স উপাধি।
এবারো দলটি যথারীতি দারুণ ফর্মে আছে। অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে হারিয়েছে ঘরের মাঠে। কুইন্টন ডি কক, ফাফ ডু প্লেসিস ও হাশিম আমলা দারুণ ফর্মে আছেন। বোলিংয়ে লেগস্পিনার ইমরান তাহির ও পেসার কাগিসো রাবাদা আছেন ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ের চার ও পাঁচে। তাদের সাথে থাকবেন ‘স্টেইন গান’ খ্যাত ডেল স্টেইন। আর ফিল্ডিংয়ে তো তারা সব সময়ই বিশ্বসেরা। সব মিলে ভারসাম্যপূর্ণ দল দক্ষিণ আফ্রিকা। শুধু নকআউট পর্বে গিয়ে ¯ড়বায়ুর পরীক্ষায় টিকে থাকতে হবে খেলোয়াড়দের।

পাকিস্তান

অধিনায়ক : সরফরাজ আহমেদ, কোচ : মিকি আর্থার
পাকিস্তানকে নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা সবচেয়ে কঠিন কাজ। এই দলটি কখন কী করে বসে নিজেরাও জানে না। যে কারণে তাদের বলা হয় আনপ্রেডিক্টেবল দল। তবু গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার কারণে ইংলিশ কন্ডিশনে তাদের ভালো দল হিসেবেই ধরতে হবে। ফখর জামান, বাবর আজম, শোয়েব মালিক, মোহাম্মাদ হাফিজ, সরফরাজসহ দারুণ কিছু ব্যাটসম্যান আছে দলে। দলের সবচেয়ে বড় ভরসা মিডল অর্ডার (বাবর, মালিক, হাফিজ)। ‘উইকেট টেকার’ হিসেবে খ্যাত হাসান আলীর সাথে মোহাম্মাদ আমির ও শাহীন শাহ আফ্রিদির পেস বোলিংয়ের পাশাপাশি শাদাব খান আছেন লেগস্পিনার হিসেবে। হাফিজ আর শোয়েব মালিকের অফ স্পিনও সুবিধা দেবে দলটিকে। কোচ মিকি আর্থার দায়িত্ব নেয়ার পর দলটি বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং ও ফিল্ডিংয়েও উন্নতি করেছে। ১৯৯২ এর চ্যাম্পিয়ন ও ১৯৯৯ এর রানার্সআপরা গত কয়েকটি বিশ্বকাপে ভালো করতে পারেনি। এবার তরুণ আর অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে গড়া দলটিকে ঘিরেই প্রত্যাশার চাপ পাকিস্তানি সমর্থকদের।

শ্রীলঙ্কা

অধিনায়ক : লাসিথ মালিঙ্গা, কোচ: চন্ডিকা হাথুরুসিংহে
১৯৯৬ সালে চ্যাম্পিয়ন আর ২০০৭ ও ২০১১ সালের রানার্সআপ শ্রীলঙ্কা; কিন্তু কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, তিলকারত্নে দিলশানের বিদায়ের পর বিকল্প তারকা খেলোয়াড় খুঁজে পায়নি দ্বীপ দেশটি। যে কারণে দলটি অনেক দিন ধরেই নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে। দলে একগাদা নতুন ও অনভিজ্ঞ খেলোয়াড়। র‍্যাংকিংয়ে আছে ৮ নম্বরে। গত ২ বছরে অধিনায়ক পরিবর্তন হয়েছে কয়েক বার। বিশ্বকাপের আগে আবারো হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। মোট কথা এখনো তরুণদের নিয়ে গুছিয়ে উঠতে পারেনি দলটি। কোচ হাথুরুসিংহে সেই কাজটিই করতে চাইছেন। তবে বড় তারকা না থাকলেও সবার সম্মিলিত পারফরম্যান্সে জ্বলে উঠতে পারে দলটি। কারণ কোচ হাথুরুসিংহেকে তো বিবেচনা করা হয় অন্যতম সেরা কোচ হিসেবে। শীষ্যদের জ্বলে ওঠার মন্ত্রে তাতিয়ে দিতে পারেন তিনি। ফেবারিটের তালিকায় তাদের নামটি রাখছেন না ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ

অধিনায়ক : জেসন হোল্ডার, কোচ : রিচার্ড পাইবাস
বিশ্বকাপে ফেবারিট হিসেবে ধরা হচ্ছে না ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও। এক সময়ের দাপুটে দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনেক দিন ধরেই যেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নদের সুদিন হারিয়ে গেছে। তবে গত এক বছরে কিছুটা হলেও যেন নিজেদের ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে নেমেছে দলটি। ক্রিস গেইল ফর্মে আছেন। এই বিশ্বকাপের পর অবসরে যাবেন, তাই ভালো কিছু করার ক্ষুধা নিয়ে মাঠে নামবেন প্রতিটি ম্যাচে। এ ছাড়া ব্যাটসম্যান শাই হোপ ও অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডারও ফর্মে আছেন। দলে আছে একগাদা পাওয়ার হিটার। যারা শক্তি দিয়েই ম্যাচের চিত্র বদলে দিতে পারেন। দু’টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে তারা সাম্প্রতিক সময়ে। তাই দুর্বল বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অবহেলা করার সুযোগ নেই।

আফগানিস্তান

অধিনায়ক : আসগর আফগান, কোচ: ফিল সিমন্স
র‍্যাংকিংয়ে সবার নিচের দল আফগানিস্তান। তবে দলটিকে বিবেচনা করা হয় বিপজ্জনক দল হিসেবে। সাম্প্রতিক সময়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দলটি ভালো করছে। রশিদ খান বিশ্বের সেরা লেগ স্পিনার, পাশাপাশি স্লগ ওভারে দারুণ ব্যাটও করেন তিনি। যে কারণে ওয়ানডেতে অলরাউন্ডার র‍্যাংকিংয়ের এক নম্বরে এই আফগান। আরেক অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবি আছেন তিনে। হযরতুল্লাহ জাজাই ও মোহাম্মদ শেহজাদের উদ্বোধনী জুটি বিধ্বংসী হয়ে উঠে যে কোন বোলিং আক্রমণকে তছনছ করে দিতে পারে। তরুণ স্পিনার মুজিব উর রহমানও খেলছেন দুর্দান্ত।

গত দুই বছরে আফগানরা সাহসী ক্রিকেট খেলে সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়েছেন। যে কোন বড় দলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর ক্ষমতা আছে দলটির। গত এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে হারিয়েছে, ভারতের সাথে টাই করেছে। পাকিস্তানের কাছে হেরেছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে। তাই বিশ্বকাপে আফগানদের বিপক্ষে সাবধানে খেলতে হবে ‘বড়’ দলগুলোকে, নইলে বিপদ নেমে আসতে পারে!

Share.

মন্তব্য করুন