ফাহাদ, মাহি ও মিতু তারা এক ভাই দুই বোন। তাদের মধ্যে সবার ছোট মিতু। নার্সারীতে পড়ে। মাহি পড়ে ক্লাস থ্রিতে আর ফাহাদ ফাইভে । তারা আজ সবাই রোজা রেখেছে। আব্বু সবার জন্য একটা করে চকলেট দেবেন ইফতারে বিশেষ উপহার হিসেবে। মিতু বরাবরই চকলেটের প্রতি একটু দুর্বল তাই ইফতারিতে চকলেট পাবে বলে নিষেধ করা সত্বেও রোজা রেখেছে। আব্বু অফিস থেকে আসার সময় তিনটা দামি চকলেট এনে ফ্রিজে রেখেছে।
দুপুরের পর সবাই শুয়ে আছে। মিতু মিটমিট করে তাকিয়ে দেখলো সবাই ঘুমুচ্ছে। সে চুপি চুপি রানড়বা ঘরে গিয়ে ফ্রিজ খুলে চকলেট বের করলো। তিনটি চকলেটই খেয়ে মুখ মুছে আম্মুর কাছে এসে ভালো মেয়ের মত শুয়ে পড়লো। আম্মু সব কিছু দেখেও না দেখার ভান করে রইলেন। ফাহাদের আব্বুকে আরো তিনটি চকলেট নিয়ে আসতে বললেন। খাবার টেবিলে ইফতার সাজানোর পর সবাইকে নিয়ে আব্বু বসলেন। একটু গম্ভীর সুরে জানতে চাইলেন ফ্রিজ থেকে কে চকলেট সরিয়েছে? ফাহাদ ও মাহি তো কেঁদেই দিলো। সবাই অস্বীকার করলো।
আব্বু বললেন, আচ্ছা বলতো আমরা কার ভয়ে রোজা রাখি? সবাই বললো আল্লাহর ভয়ে। তিনি বললেন, হা আমরা আল্লাহর ভয়ে রোজা রাখি। তিনি সব দেখেন ও শোনেন। তিনি মিথ্যা কথা একেবারেই পছন্দ করেন না। আমাদের নবীজির সা. ছোট বেলার নাম আলামিন ছিল। কারণ তিনি কখনো মিথ্যা বলতেন না। আর রোজা রেখে মিথ্যা বললে তো রোজাই হয় না। চুপি চুপি ভাই বোনদের চকলেট খেয়ে ফেলাটাও মন্দ কাজ। এমন কাজ করলেও রোজা হয়না। বুখারী শরীফের ১৭৭০নং হাদিসে আমাদের প্রিয় নবী বলেছেন, ‘রোজা রেখে মিথ্যা কথা বলা ও মন্দ কাজ পরিত্যাগ করতে না পারলে, তার উপোস থেকে রোজা রাখা আল্লাহর প্রয়োজন নেই।’
সামান্য চকলেটের জন্য আজ তোমরা মিথ্যা বলছো রোজা রেখে? মিতু মিটমিট করে বাবার দিকে তাকালো। বাবা কাঁদছেন। মিতু হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দিলো আর বাবার গলা জড়িয়ে বললো, সরি! বাবা ভুল হয়ে গেছে। আমি বুঝতে পারিনি, আমাকে মাফ করে দাও। প্লিজ বাবা, তুমি আল্লাহকে বলো আমাকে মাফ করে দিতে। আমি আর কখনো এমনটি করবো না। বাবা পকেট থেকে আরো তিনটি চকলেট বের করে সন্তানদের হাতে দিলেন এবং ইফতারের আগ মহূর্তে দোয়া করলেন মহান রবের কাছে।

Share.

মন্তব্য করুন