পুকুরের পাড় ঘেঁষেই কলাগাছের ঝাড়। কাঁদি কাঁদি কলা ঝুলছে। সবুজ। গাঢ় সবুজ। ফজর শেষে দাদা আর নাসিফহাঁটতে হাঁটতে পুকুরপাড়ে দাঁড়াল। কী শীতল পরিবেশ চারদিকে! পুকুরের পানিতে কলাপাতার ছায়া পড়েছে।
মনোরম! মনোহর!
নাসিফ হঠাৎ নড়েচড়ে দাঁড়াল। উফ! পিঁপড়ে কামড় দিয়েছে পায়ে। দাদাও রেহাই পাননি শেষমেশ। তাকিয়ে দেখল পাশেই পিঁপড়ের বিশাল ঢিবি। নাসিফ বলল, এখনই পিষিয়ে দেবো এদের। দাদা বললেন, না- থামো। পিঁপড়েরও সংসার আছে। সমাজ আছে। তাই নাকি? হ্যাঁ! তাহলে শোনো-
হাজার হাজার প্রজাতির পিঁপড়ে আছে পৃথিবীতে। প্রত্যেক প্রজাতিতেই সাধারণত তিন ধরনের পিঁপড়ে থাকে। রানী। সৈনিক। শ্রমিক। এদের মধ্যে শুধু রানী পিঁপড়েরই পাখা থাকে। তার কাজ হচ্ছে ডিম পাড়া। আর কোনো কাজ নেই তার। ছেলে পিঁপড়েরা সৈনিক। মেয়েরা শ্রমিক। ওরা মানুষের মতোই সামাজিক প্রাণী। দলবেঁধে থাকে। একেক বস্তিতে রানী পিঁপড়ে সাধারণত একটিই। কিন্তু সৈনিক ও শ্রমিক থাকে লাখ লাখ। কোটি কোটি! মজার বিষয় হচ্ছে, একটা পিঁপড়া নিজের ওজনের চেয়ে বিশ গুণ ভারী জিনিস বহন করতে পারে।
নাফিস বলল, এত কিছু জানলে কী করে? জানবো না! পিঁপড়ের কথা তো কুরআনেও আছে। হাদিসেও আছে। তাহলে একটি মজার গল্প শোনো!-
একবার বৃষ্টির জন্য প্রার্থনার উদ্দেশ্যে সোলায়মান (আ) লোকদের নিয়ে বের হলেন। পথ চলতে গিয়ে দেখলেন- একটি পিঁপড়া চিৎ হয়ে শুয়ে পা-গুলো আকাশের দিকে তুলে বলছে, ‘হে আল্লাহ! আমরা তোমার সৃষ্টির অংশ! আমরা তোমার দেয়া জীবিকার ওপর নির্ভরশীল। হয় তুমি আমাদের পানি দাও। নয় ধ্বংস করে দাও।’ পিঁপড়ের কথা শুনে সোলায়মান (আ) লোকদের বললেন, ‘ফিরে যাও! অন্যের দোয়ার বদৌলতে তোমাদের পানির ব্যবস্থা হয়ে গেছে! (ইবনু আবি শাইবাহ)।
পিঁপড়েও দোয়া করে আল্লাহর কাছে! সুবহানাল্লাহ! নাফিস ভাবল, সবার কাছেই শেখার আছে। এমনকি পিঁপড়ের কাছেও!

Share.

মন্তব্য করুন