ভিডিও আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে মিশে গেছে। স্মৃতি সংরক্ষণ থেকে শুরু করে সাংবাদিকতা পর্যন্ত সবখানেই বেড়েছে ভিডিওর ব্যবহার। কেউ ভিডিও বানাচ্ছি, কেউ ভিডিও দেখছি। আর ভিডিও তৈরিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভিডিও এডিটিং তথা ভিডিও সম্পাদনা। সাধারণত এসব কাজ কম্পিউটারেই করা হয়। তবে এগুলো এখন পকেটে থাকা ফোনেই করা সম্ভব। মোবাইল সাংবাদিকতা জনপ্রিয় ও গুরুত্ববহ হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সামান্য কয়েকটি ক্লিকে ভিডিও তৈরি করাটাও এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। ভিডিও এডিটিংয়ের বেশ কিছু অ্যাপ নিয়ে এবারের আলোচনা। ভিডিও জার্নালিজমে যোগ দেয়ার কথা ভাবলে এই টুলগুলো ব্যবহার করে দেখতে পারো। এগুলো দিয়ে পথেঘাটেও খুব দ্রুত সহজে ভিডিও এডিটিং করা যায়।

কিনেমাস্টার (KineMaster)
এই মোবাইল এডিটিং সফটওয়ার আইফোন ও আন্ড্রয়েড ফোনে ব্যবহার করা যায়। এতে মাল্টিপল লেয়ার, অডিও নিয়ন্ত্রণ, থিম ও রঙ নিয়ন্ত্রণসহ অনেকগুলো এডিটিং ফিচার রয়েছে। তবে এসব ব্যবহার করতে হলে পয়সা খরচ করতে হবে। বিনা পয়সায় ভিডিও এডিট করলে তাতে এক ধরনের বিশেষ চিহ্ন দিয়ে দেবে সফটওয়ারটি। পেশাদার কাজে এটি ব্যবহার করতে প্রতি মাসে দিতে হবে ৪.৯৯ মার্কিন ডলার।

স্প্লাইস (Splice)
গো-প্রো ক্যামেরা প্রস্তুতকারকদের তৈরি এই সফটওয়ারটি আইফোনে ব্যবহার করা যায়। এটি বিনামূল্যেই পাওয়া যাবে, ব্যবহার করাও সহজ। অন্যান্য এডিটিং সফটওয়ারের সব সুবিধা এতে রয়েছে। ব্যবহারকারীরা এটি দিয়ে ক্লিপ ট্রিম ও ক্রপ করতে পারবে এবং যোগ করতে পারবে ইফেক্ট, টাইটেল, ট্র্যানজিশন ও মিউজিক। তবে আন্ড্রয়েড ফোনে এটা ব্যবহার করা যাবে না।

কুইক (Quik)
এটাও গো-প্রোর তৈরি। কিন্তু স্প্লাইসের ছোট সংস্করণ। এটা আন্ড্রয়েড ফোনে ব্যবহার করা যায়। পথ চলতে চলতে দ্রুত এডিট করার জন্য এটা দারুণ অ্যাপ। তবে এটা দিয় বিভিন্ন ধরনের কাজ করার অপশন কম। এটা ব্যবহার করতে কোনো টাকা খরচ হবে না।

স্মার্টফোনেই হবে ভিডিও এডিটিংঅ্যাডবি প্রিমিয়ার ক্লিপ (Adobe Premiere Clip)
অ্যাডবি এডিটিং সফটওয়ারের নির্মাতারা এই ফ্রি অ্যাপটি তৈরি করেছেন। এটা অ্যাডবি এডিটিং সফটওয়ারের সঙ্গেও ব্যবহার করা যায়। আবার আলাদাভাবেও ব্যবহার করা যায়। এতে নিজস্ব পছন্দে বা অটোমেটিক অপশন দিয়ে এডিট করা সম্ভব। ফ্রি এই অ্যাপটি আইফোন ও আন্ড্রয়েড দুটোতেই ব্যবহার করা যায়।

ম্যাজিস্টো (Magisto)
এই অ্যাপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (artificial intelligence) ব্যবহার করে কাজ করে এবং আগের স্টাইল অনুসরণ করে নতুন ভিডিও তৈরি করতে পারে। তোমাকে শুধু যেসব ক্লিপ ব্যবহার করতে চাও সেগুলো আপলোড করতে হবে। এর এডিটিং নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, তাই অভিজ্ঞরা এটা পছন্দ না করলেও নতুনদের জন্য এটা খুব কার্যকর। এটা ফ্রি পাওয়া যায়, আবার টাকা দিয়েও কেনা যায়। আইফোন আর আন্ড্রয়েড দুটোতেই চলবে।

পাওয়ার ডিরেক্টর (Power Director)
এই অ্যাপ আইমুভি সফটওয়ারের মতো। কিন্তু, এটা শুধু আন্ড্রয়েডে চলে। এতে সব ধরনের জরুরি ফিচার রয়েছে, যা ট্রিম, ট্র্যানজিশনসহ বিভিন্নকাজ করা যায়। এটি ব্যবহার করতে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট ফি দেয়া লাগবে।

আইমুভি (iMovie)
এটা শুধু আইফোনে ব্যবহার করা যাবে। মোবাইলে এডিটিং করার সফটওয়ারের মধ্যে এটা অন্যতম সেরা। আইমুভি ব্যবহার করা সহজ। এর বেসিক ভার্সনটি ফ্রি পাওয়া যায়।

লুমা ফিউশন (LumaFusion)
আইফোনে ব্যবহারের জন্য ১৯.৯৯ ডলারের বিনিময়ে পাওয়া যাবে লুমা ফিউশন। এতে ডেক্সটপে এডিটিংয়ের সব সুবিধা পাওয়া যাবে। ইউজাররা মাল্টি ট্র্যাক এডিটিং করতে পারবে এবং যোগ করতে পারবে এনিমেশন, ইফেক্ট, টাইটেলসহ অনেক কিছু।

Share.

মন্তব্য করুন