লুবাবা। ভোর হলেই কান পেতে থাকে। অপেক্ষা করে। মায়ের ঘর থেকে ভেসে আসা সুরে কখন দুলে উঠবে সে। নতুন পাতার মতো! কচি লাউয়ের ডগার মতো! ফজর শেষে মা কুরআন তেলাওয়াত করেন। প্রতিদিন। ছোট আওয়াজে। লুবাবার মনে হয়, সারা ঘরে একটি ভ্রমর গুণগুণ করছে! মায়ের তেলাওয়াত তার কাছে এতটাই ভালো লাগে। এতটাই মধুর লাগে!
লুবাবাও কুরআন তেলাওয়াত করতে পারে। সহিহ্ভাবে। মায়ের কাছেই শিখেছে। কিন্তু সে সবসময় তেলাওয়াত করে না। মা তার আলসেমি ধরে ফেলেছেন। একদিন তাকে বললেন, তোমাকেও তেলাওয়াত করতে হবে। তাহলে তুমি হবে কমলালেবুর মতো!
কমলালেবুর মতো! এর মানে কী? একটু অবাকই হলো লুবাবা। মা বললেন, তাহলে শোনো। মহানবী (সা) বলেছেন- “একজন মুমিন, যে কুরআন তেলাওয়াত করে- সে কমলালেবুর মতো! যার চমৎকার ঘ্রাণ, চমৎকার স্বাদ! আরেক মুমিন, যে কুরআন তেলাওয়াত করে না- সে খেজুরের মতো! যার ঘ্রাণ নেই কিন্তু স্বাদ মিষ্টি! অপরদিকে একজন মুনাফিক, যে কুরআন তেলাওয়াত করে- সে যেন সুগন্ধি গাছ। ঘ্রাণ থাকলেও স্বাদ নেই। আবার যে মুনাফিক কুরআন তেলাওয়াত করে না, সে-তো মাকাল ফল! ঘ্রাণহীন, তেঁতো! (বুখারি, মুসলিম)
মা বললেন, ভাবো তো- কী দাঁড়িয়েছে এবার! কুরআন পড়লে যে কেউ সুরভিত হতে পারে। এমনকি মুনাফিকও! আবার মুমিন হওয়ার পরও কুরআন তেলাওয়াত না করলে সে থাকে সুবাসহীন। আর কুরআন তেলাওয়াতকারী মুমিন তো কমলালেবু! স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়!
কী অনুপম উপমা! লুবাবা মুগ্ধ। ইচ্ছে করে, কুরআন তেলাওয়াতে বসে যেতে এখনই! আর প্রতিটি নিঃশ্বাসে টেনে নিতে সুরের সৌরভ!

Share.

মন্তব্য করুন