ঈদের দিন আব্বুর সাথে গ্রামের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে ঘুরতে বের হই

আমি বন্দরনগরী চট্টগ্রামের লাল দুর্গ খ্যাত স্বনামধন্য চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র। আব্বুর হাত ধরে প্রথম যে স্কুলে পা রেখেছিলাম সেটা হচ্ছে ‘প্রি কলেজিয়েট স্কুল’। এই স্কুলে আমি প্রথম শ্রেণিতে পড়েছিলাম। পরের বছর পি.টি.আই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। এখানে আমি আবার প্রথম শ্রেণী থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করি। পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হই এই কলেজের স্কুলে। মজার ব্যাপার হলো- আমরা চার ভাইয়ের মধ্যে চারজনই চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। বড়ো দুই ভাই ইতিমধ্যেই স্কুল-কলেজের গন্ডি পার হয়েছেন। বড়ো ভাইয়া এখন ঢাকার পিজি হাসপাতালে এবং মেজ ভাইয়া চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত আছেন। আর ছোট ভাই এই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ছে। আমার বন্ধুরা আমাকে এবং আমার ছোট ভাইকে যখন একসাথে দেখে তখন ভালোবেসে আমাদের ‘কলেজিয়েট পরিবার’ বলে ডাকে।
স্কুলে থাকাকালীন আমার সবচেয়ে ভালো লাগে যখন বন্ধুদের সাথে গল্পরত থাকি। ক্লাসে প্রায় সবাই আমার বন্ধু। তারপরও যাদের কথা না বললেই নয়, তারা হলো- সালমান, দেওয়ান, আদনান আর আহনাফ। এরা আমার সবচাইতে কাছের বন্ধু। যাই হোক, আপাতত আমার লক্ষ্য এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় সর্বোত্তম রেজাল্ট করা। এরপর স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। তারপর জীবনের লক্ষ্য অনুযায়ী আমার ইচ্ছে হলো ডাক্তার হওয়া। তার চেয়ে বড়ো লক্ষ্য হলো- একজন সৎ এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠা। আর এটাই আমার ধ্যান-ধারণার মূল। জীবনের এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমাকে যারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তারা হচ্ছেন- আমার আব্বু আম্মু এবং আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ। তাদের সাহায্যে আমি আমার জীবনের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
পবিত্র রমজান মাস প্রায় শেষ হতে চললো। এইতো আর কয়েকদিন পরই আমাদের সামনে উপস্থিত হচ্ছে মুসলমানদের সর্বোত্তম উৎসব ‘ঈদুল ফিতর’। প্রতিবারের মতো এবারও আমরা আমাদের গ্রামের বাড়িতেই ঈদ উদযাপন করবো। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আপনজনদের সাথে ঈদ উদযাপন করতে আমার খুব ভালো লাগে। আরো ভালো লাগে তখন- যখন ঈদের দিন আব্বুর সাথে গ্রামের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে ঘুরতে বের হই। ঈদের পরপরই শুরু হবে অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা। আমাদের বিদ্যালয়ে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরের অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষাকে অধিকতর গুরুত্ব দিচ্ছেন শিক্ষকরা। তাই মনে হচ্ছে অন্যান্য বারের চেয়ে এবারের ঈদের আনন্দটা একটু কমই হবে। কারণ সময় যেহেতু খুবই কম তাই পড়াশোনা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা একেবারেই সম্ভব নয়। এখনো এই পড়াশোনাতেই খুব বেশি ব্যস্ত। তাই আরো অনেক কিছু তোমাদের সাথে শেয়ার করার ইচ্ছে থাকলেও আজ আর পারছি না। সবার জন্য শুভ কামনা রইলো। আর আমার জন্য সবাই দোয়া করবে। আল্লাহ হাফিজ।

মোহাম্মদ জাওয়াদ আরহাম
নবম শ্রেণি (বিজ্ঞান বিভাগ)
চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, চট্টগ্রাম

লক্ষ্য একটাই- বুয়েট

ছোটকালে ভাবতাম আর মাকে জিজ্ঞেস করতাম- ‘আচ্ছা মা, তোমার ইচ্ছে কী?’ মা বলতেন-‘তোর মতো আরেকবার ছোট হওয়া।’ চুপ করে অবাক হয়ে মা’র দিকে তাকিয়ে থেকে ভাবতাম- মা মনে হয় কিছুই জানে না! কারণ আমার ইচ্ছেটা ছিলো বড়ো হওয়া। বড়ো হলে অনেক মজা। দাদার মতোন ঘুরতে পারবো, বন্ধুদের বাড়িতে আনতে পারবো আর সাইকেল নিয়ে একলা ওই দূরের রাস্তাটায় যেতে পারবো। আর এতো এতো সুযোগ থাকতেই মা বলে কিনা- বড়ো থেকে ছোট হবে!
এভাবেই চলছিলো। গ্রামের মাটির গন্ধে এবং মায়ের আঁচলের ছায়ায় বড়ো হতে থাকলাম। একদিন হটাৎই সবাই শহরে চলে আসলাম। প্রথমে নতুন পরিবেশে মেতে উঠলেও একসময় তীব্র বিতৃষ্ণা জেগে উঠলো শহর নামক এই যান্ত্রিক সমাজের প্রতি। এখানে নির্মল বাতাস নেই। নির্মেঘ আকাশ নেই। প্রাণের ভেতরও প্রাণ নেই যেন! রাস্তায় চার চাকার বিচিত্র সব যন্ত্রের হুংকারে অতীষ্ট হয়ে উঠলাম। সময় পেলে ভাবতাম গ্রামের ওই পুকুরটার কথা। স্কুলে যাওয়ার সময় জংলার ধারে ব্যাগ রেখে বন্ধুদের সাথে বিলে নেমে মাছ ধরার কথা। বাঁশঝাড়ের মড়মড় শব্দে ভয় পেয়ে মায়ের আঁচলের নিচে লুকিয়ে পড়ার কথা। এভাবেই সময়গুলো চলে যেতে থাকলো।
একসময় আরো কয়েকটা শীত চলে গেলো। আমিও বড়ো হতে লাগলাম। এখন বেশ মানিয়েও নিয়েছি পরিবেশের সাথে। ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে টিকে গেলাম ‘চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়’ এ। মাঝে মাঝে যেতে থাকলাম বিতর্ক ক্লাবে। একপর্যায়ে বিতর্ক করতে থাকলাম স্কুলের প্রধান দলের দলপতি হয়ে। এর বাইরে সব কিছু হয়ে উঠলো জগাখিচুড়ি। পড়াশোনার চাপ আর সবার উচ্চ রকমের আশায় কৃত্রিম মানব হলাম। এই স্যার থেকে ওই স্যার, টেস্টপেপার আর নোটের মধ্যে মুখ গুঁজে সৃজনশীল প্রশ্ন খুঁজতে খুঁজতে খুব যতœ করে হারিয়ে ফেলতে লাগলাম নিজের সৃজনশীলতা! হারিয়ে ফেললাম ছোটবেলার সেই ছোটো তূর্যকে। তাও একদ- ভাবার সময় পেতে নাজেহাল অবস্থা। কম্পিটিশন আর কম্পিটিশন। সকালের সেই সূর্যটাও অচেনা হয়ে গেলো। সবার কাছে সজীবতা না পেলেও একটা কথা ঠিকই শুনতে পাই- ‘বাবা, ১৩০০ তে নাম্বার ১২০০ এর উপরে থাকবে তো?’ আমি জবাব দিতে পারি না। শুধু চুপ করে থাকি। হুম। চোখ বন্ধ করে জাগিয়ে তুলি সেই ছোটবেলাকে। মা’র কথা ভাবি, আর মনে মনে বলি-‘আরেকবার যদি ছোটো হতে পারতাম!’ একটা বার যদি ওই পঁচা ডোবার পাশে বসে ওদের সাথে হাতে হাত রেখে বলতে পারতাম- ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ/নাইন টেন টেলিস্কোপ…।’ কিংবা ‘সুলতানা বিবিয়ানা/সাহেব বাবুর বৈঠকখানা…।’
যাই হোক, সময়ের তালে চলছি। মাথার মধ্যে ডানা ঝাঁপটায় বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন। আমি খুব ভালো স্টুডেন্ট না, তবে আত্মবিশ্বাসটা অনেক বেশি। মা-বাবার মুখে হাসি হয়ে ফোটার চেষ্টা করছি। দেশটাকে দেখে খুব মায়া হয়; এখনো আমরা অন্ধকারেই রয়ে গেছি। একটা সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে এদেশের প্রত্যেককে নিজ নিজ জায়গা থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। আমি আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করে যাই, জ্ঞানের মশাল জে¦লে সমাজকে আলোকিত করার।

সব্যসাচী চৌধুরী তূর্য
দশম শ্রেণি (বিজ্ঞান বিভাগ)
চট্টগ্রাম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়
চট্টগ্রাম

চোখ বন্ধ করলে গ্রামের ঈদগাহটাই ভেসে ওঠে সবার আগে

ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে একে অপরের সুখ-দুঃখে শরিক হওয়া। ঈদ মানে ভালোবাসা আর মায়া-মমতার সুতোয় সবাইকে বেঁধে ফেলা। ঈদ মানে বন্ধুদের খোঁজ নেয়া। ঈদ মানে বড়োদের শ্রদ্ধা করা, সম্মান করা, সালাম করা এবং বিনয়ী হওয়া; এটাই আমার কাছে ঈদ। ঢাকা শহরের বাসিন্দা হওয়ায় ঈদটা গ্রামে করতেই উৎসাহ বোধ করি। এবারের ঈদটাও টাঙ্গাইলে করবো। ঈদের আনন্দ সবার সাথে ভাগ করে নেবো। আমি রোজা রাখলাম না, নামাজ আদায় করলাম না, আব্বু-আম্মুসহ গুরুজনের কথা মান্য করলাম না- এমতাবস্থায় ঈদ মানে কিন্তু খুশি নয়। অন্তত আমার কাছে তাই মনে হয়। আমার ঈদের পাঞ্জাবি রমজানের আগেই কিনে রেখেছি। রোজা রেখে মার্কেটে যেতে কষ্ট লাগে বলে। অবশ্য রোজা রেখে মার্কেটে যাওয়ার মাঝেও আনন্দ আছে। তাই বাকি যা যা লাগবে তা রোজার মধ্যেই কিনবো বলে ভেবেছি। ঈদের দিন সবাই মিলে মাঠে নামাজ আদায় করতে যাবো। নামাজ শেষে বড়োদের সালাম করবো এবং বন্ধুদের সাথে কোলাকুলি করবো। আনন্দ ভাগাভাগি করে নিবো সবার সাথে। এইতো আমার ঈদ! আমার আনন্দ। চোখ বন্ধ করলে গ্রামের ঈদগাহটাই মনের পর্দায় ভেসে ওঠে সবার আগে।

এবার আমার স্বপ্নের কথা বলি। বেঁচে থাকার তাগিদে মানুষকে স্বপ্ন দেখতে হয়। স্বপ্ন আছে বলেই তো আমরা বেঁচে থাকার প্রেরণা পাই। আমি যেমন কল্পনাবিলাসী, তেমনি বাস্তববাদী। এমন করতে খুব ভালো লাগে আমার। হুট করে অচেনা কোথাও হারিয়ে যেতে খুব ইচ্ছে করে। কিন্তু চেনা জগতে সহজেই হারিয়ে যাওয়া যায় না। ঢাকা শহরের বাসিন্দা হওয়ায় ঢাকার ইট-পাথরের জীবনটা এখন আর বাজে লাগে না। হুট করে কখনো শহরের বাইরে গেলে সবুজের সমারোহ দেখে সহজেই মুগ্ধ হতে পারি। তবে আমার কলেজ ক্যাম্পাসটাও দারুণ। ক্যাম্পাসে ঢুকলে মনেই হয় না যে, আমি ঢাকা শহরের ভেতরে আছি। আমি আমার কলেজকে খুব ভালোবাসি। এই কলেজ আমাকে জীবন ও তার বাস্তবতা সম্পর্কে শিখিয়েছে। নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। সর্বোপরি, স্বপ্ন পূরণের সর্বোত্তম পথ দেখিয়েছে।
যদি কেউ জিজ্ঞেস করে, কী করতে তোমার ভালো লাগে? কিছু না ভেবেই এক বাক্যে বলি- লেখালেখি। আমি একজন শখের লেখক। শখের বশে লিখি। যতোটুকু লিখি, তারচে অনেক বেশি কল্পনা করি। কল্পনায় হারিয়ে যাওয়া খুব সহজ। আমি যখন বড়ো হবো এবং নিজের জন্য নিজে একটা বাড়ি তৈরি করবো, তখন সে বাড়ির একটি কামরায় বসে আমি শুধু কল্পনা করবো। মানে, সেখানে শুধু কল্পনা করার জন্যই একটা রুম থাকবে। আমার আরো অনেক স্বপ্ন আছে। তবে ভালোভাবে পড়াশোনা করে বাবা-মায়ের স্বপ্নটাই আগে পূরণ করতে চাই। আর তাঁদের স্বপ্ন যখন পূরণ হবে, তখন সবাই জানবে এবং বলবে- ‘হ্যাঁ, ইনিই জহিরুল ইসলাম রাফি।

জহিরুল ইসলাম রাফি
একাদশ শ্রেণি (বিজ্ঞান বিভাগ)
নটরডেম কলেজ, ঢাকা

মনে মনে ভাবি একদিন সবাইকে দেখিয়ে দেবো

স্বপ্ন সবাই দেখে। স্বপ্ন ঘুমের মধ্যে দেখা হলেও এ পি জে আব্দুল কালামের মতে- ‘স্বপ্ন তা নয়, যা ঘুমের মধ্যে দেখা হয়। স্বপ্ন হলো তা, যার জন্য ঘুমানো যায় না।’ সবারই এমন স্বপ্ন রয়েছে। প্রতিটি মানুষই স্বপ্ন দেখে সে জীবনে অনেক কিছু করবে, বড় হবে। আমিও এর বাইরে নই। স্বপ্ন আমিও দেখি। কিন্তু আমার স্বপ্ন মনে হয় অন্য সবার থেকে আলাদা। কেউ কেউ স্বপ্ন দেখে বড় ডাক্তার হবে। দেশের সেবা করবে। গরীবদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করবে। আবার কেউ কেউ স্বপ্ন দেখে স্বনামধন্য ইঞ্জিনিয়ার হবে। এগুলো সবাই নিজ থেকে দেখে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বাবা-মা তাদের সন্তানদের উপর স্বপ্নগুলো চাপিয়ে দেন। সন্তান চায় খেলোয়াড় হতে কিন্তু বাবা-মা চান ডাক্তার হোক। কিন্তু আমার বেলায় আমি পূর্ণ স্বাধীনতা পেয়েছি। আমার বাবা-মা তাদের স্বপ্ন আমার উপর চাপিয়ে দেননি। এজন্য তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

প্রথমেই বলেছি আমার স্বপ্ন অন্যদের চেয়ে আলাদা। আর দশজনের মতো ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন আমি দেখি না। আমি স্বপ্ন দেখি আমি একদিন বড়ো একজন অভিনেতা হবো। অনেক বড়ো অভিনেতা। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে একটি কোচিং সেন্টারের বিদায়ী অনুষ্ঠানে আমি প্রথম অভিনয় করি। সেই থেকে অভিনয়ের প্রতি আমার ভালোলাগা শুরু। এর কয়েক বছর পর স্কুলে অভিনয় প্রতিযোগিতায় প্রথম হই। তারপর উপজেলা পর্যায়ে সেরা অভিনেতা পুরষ্কার পাই। এতে করে আমার অভিনেতা হওয়ার আকাক্সক্ষা আরো বাড়তে থাকে। পরিবার থেকেও সাপোর্ট পাওয়া শুরু করি। এরপর কয়েকজন বন্ধু মিলে শর্টফিল্ম করা শুরু করি। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে থিয়েটারে মনোনিবেশ করার ইচ্ছে আছে। থিয়েটার করে নিজের দক্ষতা বাড়াবো। তারপর আস্তে আস্তে একদিন বড়ো অভিনেতা হবো। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরবো নিজের অভিনয়ের মাধ্যমে। বিশ্বের কাছে নতুন এক বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিবো।

আমার স্বপ্নের কথাটা যখন আমি কোন বন্ধুকে বলি, তখন তারা আমাকে হেসে উড়িয়ে দেয়। তখন আমার মনঃক্ষুণœ হলেও, মনে মনে ভাবি একদিন সবাইকে দেখিয়ে দেবো। আমি আমার স্বপ্নের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি। একদিন নিশ্চয় স্বপ্ন বাস্তব রূপ ধারণ করবে। আমি চাই, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ এভাবে নিজের দেশকে এগিয়ে নেয়ার স্বপ্ন দেখুক এবং তাদের স্বপ্ন বাস্তব হোক। সবার স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে গড়ে উঠুক স্বপ্নের বাংলাদেশ।

আলিফুল ইসলাম
দশম শ্রেণি (বিজ্ঞান বিভাগ)
ফুলগাজী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
ফুলগাজী, ফেনী

আমার গণিত ভালো লাগে

স্বপ্ন? হ্যাঁ, স্বপ্ন। প্রত্যেকেরই একটা স্বপ্ন থাকে। কারো স্বপ্ন ডাক্তার হবে, কেউ বলে ইঞ্জিনিয়ার হবে। আবার কেউবা চায় শিক্ষক হতে। হ্যাঁ, অন্য সবার মতো আমারও একটা স্বপ্ন আছে। আমিও তাদের ব্যতিক্রম নই। ছোটোবেলা থেকে আব্বু-আম্মু স্বপ্ন দেখাতেন ডাক্তার হওয়ার। তাঁরা বলতেন- ‘বড়ো হয়ে ডাক্তার হবি, আর গরিব মানুষের সেবা করবি।’ আমার ইচ্ছে- গরিব মানুষের সেবা করবো, কিন্তু ডাক্তার হয়ে নয়। আমার গণিত ভালো লাগে। তাই স্বপ্ন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। মানে, বুয়েটে পড়ার। পড়াশোনা শেষ করে দারুণ একটা চাকুরি করবো। আমার আরো একটা ইচ্ছে হলো, সবাইকে গিফট্ দিবো। তাই যখন চাকুরি করবো তখন সবাইকে অনেক অনেক গিফট্ দিবো।
তারপর একদিন আমার বিয়ে হবে এক রাজপুত্রের সাথে। একটা ছোট্ট বাড়ি এবং ছোট্ট একটা সংসার হবে আমাদের। সেখানে আমাদের ঘর আলোকিত করবে দুষ্টুমিষ্টি এক ছেলে বা মেয়ে। আমরা ওকে ইশকুলে ভর্তি করাবো। ও গধঃয এবহরঁং হবে, ইনশাআল্লাহ। তবে সারাদিনই শুধু বই পড়বে না। বাইরের জগৎটাকে চিনবে। সারা বিশ্বের সাথে পরিচিত হবে। তাকে নিয়ে পুরো পৃথিবীটা ঘুরে বেড়াবো আমরা। প্রত্যেকটি দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানবো। এভাবেই চলতে থাকবে আমাদের জীবন। আমরা সবাই মিলে কাজ করবো একটা সুন্দর পৃথিবীর জন্য। সেই পৃথিবীতে সুখে-শান্তিতে থাকবো আমরা। আল্লাহ চাইলে সবই হয়। আশা করি, আল্লাহ আমার স্বপ্ন সত্যি করবেন।

জায়মা জার্নাস তুষ্টি
একাদশ শ্রেণি (বিজ্ঞান বিভাগ)
সৃষ্টি কলেজ, টাঙ্গাইল

Share.

মন্তব্য করুন