মা সিজদায় গেলেই সে হয়ে যায় এক দুরন্ত ঘোড়সওয়ার! মায়ের পিঠে চড়ে আর নামার খবর নেই! কোনোদিন কিছু না বললেও আজ একটু ধমকই দিয়ে বসলেন মা! নাবিল কেঁদে ফেলল তখন! পাশের ঘর থেকে নাবিলের বাবা ছুটে এলেন। সব শুনে তিনি হাসলেন। বললেন, শোনো- এ ধরনের ঘটনা রাসুল (সা) এর সাথেও ঘটত। কিন্তু তিনি বিরক্ত হতেন না। বরং বিষয়টা বেশ উপভোগ করতেন! উপভোগ করতেন? হ্যাঁ! মহানবী (সা) শিশুদের ভালোবাসতেন! খুব! যে ভালোবাসার কোনো তুলনা হয় না! তাহলে শোনো-
একদিন তিনি মাগরিব বা ইশার সালাত পড়ানোর জন্য ঘর থেকে বের হলেন। হাসান অথবা হোসাইনকে তিনি বহন করছিলেন। এরপর তিনি সামনে গেলেন এবং তাকে পেছনে রাখলেন। সালাতের মধ্যে তিনি একটি দীর্ঘ সিজদা করলেন। [বর্ণনাকারী বলেন]- আমি আমার মাথা উত্তোলন করলাম আর দেখতে পেলাম সিজদারত অবস্থায় রাসুল (সা) এর কাঁধে একটি শিশু। আমি সিজদায় ফিরে আসলাম। যখন রাসুল (সা) সালাত শেষ করলেন, তখন লোকেরা বলল- হে আল্লাহর রাসুল (সা)! নিশ্চয়ই আপনি সালাতের মধ্যে একটি দীর্ঘ সিজদা করেছেন। আমরা মনে করেছি- হয়তো কোনো কিছু হয়েছে অথবা আপনার কাছে ওহী আসছে। তিনি বললেন, এগুলোর কোনোটাই হয়নি। তবে আমার একটি সন্তান আমার পিঠে আরোহণ করেছিল। আমি তার প্রয়োজন পূরণ না করে তাড়াহুড়ো করতে অপছন্দ করলাম।” (নাসায়ী, আহমদ)।
হাদিসটি শুনে অবাক হলেন নাবিলের মা- মাহফুজা সায়মা। বললেন- আমি ভেবেছিলাম শিশুরা এমন করলে হয়তো সালাতের কোনো ক্ষতি হয়! কিন্তু মহানবী (সা) শিশুদের প্রতি এত উদার ছিলেন!জানাই ছিলনা!-হ্যাঁ! শিশুরাই আগামি। জান্নাতের ফুল। এ ফুলদের ভালোবাসতে হবে। তাহলেই তারা একদিন সুরভি ছড়াবে। বললেন নাবিলের বাবা! নাবিল তাকিয়ে আছে বাবা-মায়ের দিকে! যদিও সে কিছুই বুঝেনি- তবুও মনে হয় অনেক কিছু বুঝেছে সে! বাবা-মা দু’জনেই জড়িয়ে ধরলেন তাকে। আর রাসুলের শেখানো ভালোবাসায় ভরিয়ে দিলেন তার সবুজ মন।
Share.