মায়ের নামে খোকার চিঠি
আমজাদ ইউনুস
ছোট্ট খোকা লিখল চিঠি প্রিয় মায়ের নামে
দু’ভাঁজ করে ভরল চিঠি রঙিন একটি খামে।
ওমা আমি তোমার বুকের মানিক ছোট্ট খোকা
কোথায় তুমি চলে গেলে বানিয়ে আমায় বোকা ।
কোথায় তোমার স্নেহের আঁচল দাও না আমায় ঢেকে
অশ্রু চোখে ব্যথা বুকে যাই যে তোমায় ডেকে।
যখন আমায় চোখ রাঙিয়ে দিতে ভীষণ বকা
নদীর পাড়ে বসে আমি কাঁদতাম একা একা।
আদর করে টেনে যখন নিতে তোমার কোলে
দৌড়ে যেতাম তোমার বুকে সকল দুঃখ ভুলে।
এখন কেন পাই না ওমা তোমার স্নেহ আদর
জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকি তোমার রেশমী চাদর।
এখনো তোমার মধুর স্মৃতি আমার চোখে ভাসে
ওমা আদর করো একটু বসে আমার পাশে।

হাসি
অনার্য আমিন
আজকে সবাই হাসি খুশি
সোনামনি বিড়াল পুষি
হাসছে দেখ খুকি
হাসছে সবাই হাসছে কাকা
হাসার কারণ আছে আঁকা
চাঁদ দিয়েছে উঁকি।
নতুন চাঁদে নতুন হাসি
আজ আনন্দে সবাই ভাসি
এই হাসিটা ঈদের
নতুন হাসি নতুন গানে
ছড়ালো আজ প্রাণে প্রাণে
চোখ হারানো নিদের।

হারিয়ে গেলো
খায়রুল আলম রাজু
হারিয়ে গেলো মিষ্টি অতীত মিষ্টি ছেলেবেলা,
হারিয়ে গেলো নদীর জলে কলা গাছের ভেলা।
হারিয়ে গেলো তপ্ত দুপুর হাতে নাটাই ঘুড়ি,
হারিয়ে গেলো ছোট্ট বোনের রঙিন কাচের চুড়ি।
হারিয়ে গেলো মাটির পুতুল হারিয়ে গেলো সই,
হারিয়ে গেলো মামার দেওয়া ধারাপাতের বই।
হারিয়ে গেলো মিষ্টি সকাল নদীর বুকে তরী,
হারিয়ে গেলো চাঁদের বুড়ি হারিয়ে গেলো পরী!
হারিয়ে গেলো রিমঝিমাঝিম বৃষ্টি দিনের গান,
হারিয়ে গেলো ছলাৎ ছলাৎ পানির কলতান।
হারিয়ে গেলো শিশির কণা মিষ্টি শীতের পিঠা,
হারিয়ে গেলো নদীর জোয়ার হলো সবি চিটা!
হারিয়ে গেলো মায়ের আদর বাবার হাতের ছোঁয়া,
হারিয়ে গেলো মামা বাড়ি চিড়া, নাড়ু, মোয়া!
হারিয়ে গেলো কিচিমিচি পাখির কলরব,
হারিয়ে গেলো সখা-সখি মিষ্টি অতীত সব।

রাত যে আমার ভীষণ প্রিয়
মেহেদী হাসান ভুঁইয়া
রাত যে আমার ভীষণ প্রিয়
চাঁদটা ওঠে যখন,
মনটা যতই খারাপ থাকুক
খুব ভাল হয় তখন।
অবাক হয়ে দূর আকাশে
দেখি তারার খেলা,
চাঁদটা তখন উঁকি দিয়ে
করে আলোর মেলা।
দুষ্টু মেঘে এসে যখন
চাঁদটাকে দেয় ঢাকি,
উদাস মনে ভাবি তখন
চাঁদ কি দিল ফাকি?
রাতটা আবার আসবে কখন
মন ছোটে তার পানে,
রাত যে আমার ভীষণ প্রিয়
কেহই কি তা জানে?
বৃষ্টিভেজা রাতে
মতিউর মিয়াজি
বৃষ্টিভেজা রাতে-
একটুখানি শখ জেগেছে মনে
একটু ভিজে চলতে ক্ষণে ক্ষণে
মন ভরে যায় যাতে।
বৃষ্টিভেজা রাতে-
কাদামাটি পা ছুঁয়ে দেয়
মনের কাদা, তা ধুয়ে দেয়
প্রশান্তি পাই তাতে।

পথশিশু
শাজাহান কবীর শান্ত
অগোছালো চুল খুলে সে
থাকে পথের পাশে,
দুষ্টু পথের দামাল ছেলে
তাইতো দেখে হাসে।
ময়লা জামার কলার ছেঁড়া
হাজার তালি তাতে,
কেউ বোঝে না মনের ব্যথা
নেয় না কেউই সাথে।
দাঁত মাজে না কেউতো আহা
দেয় না দু’টো টাকা,
কয়টা দিনের উপোস শরীর
যায় না রাখা ঢাকা।
খুশির দিনে তার মুখে খুব
কষ্ট সীমারেখা,
এই দিনেতে তার পাশে কি
তোমরা দিবে দেখা!
পথের শিশু নাম না জানা
যেথায় যেথায় থাকে,
ঈদখুশিটা ভাগ করে দাও
তোমার সাথে তাকে।

বলতে পারো
রিয়াজ মাহ‌‌‌‌‌‌মুদ
লাউয়ের মাচায় একটি ফড়িং
তিড়িং বিড়িং নাচে,
বলতে পারো এ ফড়িংটা
কার দয়াতে বাঁচে।
কার গুনগান গায় বসে
বুলবুলি রোজ বাগে,
সুর্য মামা রোজ প্রভাতে
কার ইশারায় জাগে
উড়ছে যে ওই প্রজাপতি
রংবেরঙের পাখা
কোন যাদুকর শিল্পির ছোঁয়ায়
এমন ছবি আঁকা।
ছবির মত এদেশ নিয়ে
আমরা কতই ভাবি,
ভেবেছ কি এমন ছবি
একেঁছে কোন কবি ।
বলতে পারো কার করুণায়
আসে নতুন দিন ?
সে যে আমার মহান মনিব
রাব্বুল আলামিন।
কে এলো ওই
ফরিদ আহমদ ফরাজী
বছর ঘুরে বারেক ফিরে
কে এলো ওই?
কে এলো ফের সাথে নিয়ে
জান্নাতি বই?
কে এলো ওই মোমিন ঘরে
আলো সাথে
হেরার রশ্মি জ্বলে দেখো
মায়ার সাথে।
ধনী-গরিব নাই ভেদাভেদ
সবার ঘরে
আসলো ফিরে গুনাহগুলো
মাপের তরে।
কে এলো ফের ঘরে ঘরে
কদর নিয়ে
হাজার মাসের চেয়ে অতি
আদর নিয়ে।
কে এলো ঐ ধরার মাঝে
শান্তি দিতে
আখেরাতের পুঁজি হয়ে
ক্লান্তি নিতে।

 

Share.

মন্তব্য করুন