ভার্সিটির ট্রেনের অপেক্ষায় ষোল শহর রেলস্টেশনে বসে আগুনে ছ্যাঁকা বাদাম মর্দন করতে করতে খাচ্ছে নাবিলা।
কিছুক্ষণ পর একটি ছোট্ট বালিকা কয়েকটি বেলি ফুলের মালা নিয়ে
নাবিলার কাছে এসে বলে, ‘আপা, ফুলের মালা নিবেন?’ নাবিলা ফুলের মালাগুলো তার হাত থেকে নিয়ে এদিক ওদিক নেড়ে চেড়ে দেখে বলে, ‘হ্যাঁ, নিব। দাম কত?’
– একটা দশ টাকা।
নাবিলা মেয়েটিকে একশত টাকার একটা নোট দিয়ে ফুলের মালা সবগুলো কিনে নিল। ফুলের মালা নিতে না নিতে স্টেশনে ভার্সিটির ট্রেন এসে থামে। তাই নাবিলা কাঁধের ব্যাগটি নিয়ে দৌড়ে চলে যাচ্ছে ট্রেনের দিকে। হঠাৎ, পেছন থেকে ফুল বিক্রেতা মেয়েটি ডাক দিয়ে বলে, ‘আপা, আপনার টাকার ব্যাগ ফেলে গেছেন।’ নাবিলা মেয়েটির দিকে আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে থাকে। মেয়েটির হাত দু’টি তার দুই হাত দিয়ে জড়ো করে ধরে বলে, ‘আমি তো জানি না আমার টাকার ব্যাগ এখানে পড়ে গেছে। হয় তো পরে খুঁজে না পেলে ভাবতাম, কোথাও পড়ে গেছে। কিন্তু তুমি তো চাইলে ব্যাগটি রেখে দিতে পারতে?’
– না আপা বলেন কী! আপনার টাকা কেন আমি রেখে দিব? নাবিলা মেয়েটিকে আর কিছুই বললো না, ব্যাগটি নিয়ে চলে গেল।
নাবিলা ভার্সিটি থেকে ফেরার পর দেখে রেলস্টেশনের একপাশে অনেক মানুষ ভিড় করে আছে। নাবিলা কোনো রকম সেই ভিড়ের মধ্যে ঢুকে দেখে একটি বালিকার দেহ ট্রেনের চাকার আঘাতে দ্বিখ-িত হয়ে পড়ে আছে। মেয়েটির চেহারায় চোখ পড়তেই নাবিলা যেন নিজেকে সামলাতে পারছে না। রেললাইনের ধারে পড়ে থাকা নিথর দেহটি সেই ফুল বিক্রেতার যে তার টাকার ব্যাগ ফিরিয়ে দিয়েছিল।

গ্রাম : বামন ডাঙ্গা, ইউনিয়ন : চরতী, উপজেলা : সাতকানিয়া, জেলা : চট্টগ্রাম

Share.

মন্তব্য করুন