নানা সম্ভাবনার দেশ আমাদের বাংলাদেশ। এখানে ষড়ঋতুর পালাবদল আমাদের যেমন নানা উপসর্গ উপহার দেয় ঠিক তেমনি প্রকৃতির অপার কৃপায় নানান খনিজসম্পদ উপহার দিয়ে থাকে। যেমন- তেল, গ্যাস, চুনাপাথর কয়লা, বালি ইত্যাদি আমাদের জীবনের প্রয়োজন মেটায়। এখানে মাঠ ভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ, গোয়াল ভরা গরু, হাওর-বাঁওড়, নদ-নদী, পাহাড়-টিলা বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখি সবুজ সবুজ বনজসম্পদ সবই যেন আকাশ ছোঁয়া সম্ভাবনার উজ্জ্বল প্রতীক। শুধু এ সম্ভবনাকে সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে পারলে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ যে উন্নয়নের মডেল হবে তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। বন্ধুরা, এমনি এক সম্ভাবনার অমূল্য সম্পদ ‘পাম’। অর্থাৎ অয়েল পাম। বাংলাদেশের অর্থনীতি বিকাশে অয়েল পাম নিঃসন্দেহে বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে। বন্ধুরা, তোমরা কি জানো পাম বা পাম চাষ কী? না জানা থাকলে তাড়াতাড়ি নিজেকে প্রস্তুত করে নাও। আজ পাম বা পাম চাষ নিয়ে তোমাদের সাথে বিস্তর কথা হবে। জানা হবে ‘পাম কি’? বাংলাদেশের অর্থনীতি বিকাশে কিইবা তার প্রয়োজন।

পাম কী:
পাম হলো এক প্রকার বৃক্ষ জাতীয় ফুলেল উদ্ভিদ। ইংরেজি ভাষায় (Palm Tree) বলা হয়। পৃথিবীতে প্রায় ২,৬০০ জাতের পাম গাছ দেখতে পাওয়া যায়। পাম গাছ থেকে তেলসহ নানা প্রকারের প্রয়োজনীয় দ্রব্য তৈরি করা হয়। এ জন্য পৃথিবী জুড়ে পাম গাছ ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। পরিবেশবান্ধব এ গাছটি খেজুর গাছের ন্যায় মনে হলেও সে কিন্তু খেজুর গাছ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ফুল ও ফল দেখতে খুব সুন্দর। খেজুর ফলের ন্যায় পাম ফলও জটবাঁধা গোল এবং খুব শক্ত হয়। পাম গাছের ফল প্রক্রিয়াজাত করে যা পাওয়া যায় তাকে পাম তেল বলে। পাম ফলের মাংসল ও বীজ হতেও তেল পাওয়া যায়। মাংসল অংশ হতে যে তেল পাওয়া যায় তার নাম পাম তেল, আর বীজ (কার্নেল) হতে যে তেল পাওয়া যায় তার নাম পাম কার্নেল তেল। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের শতকরা ৮০ ভাগ পাম তেল উৎপাদন করে থাকে।

পাম গাছের ইতিহাস :
ইতিহাস থেকে জানা যায়, পাম তেলের আদি নিবাস বা উৎস হলো পশ্চিম আফ্রিকা। মালয়েশিয়ায় ১৯১০ সালে Scotsman William Sime এবং Henry Darby নামের দুই ভদ্রলোক পাম চাষের প্রথম প্রবর্তন করেন। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে প্রথম দফা পাম বীজ মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা হয় এবং সে বীজ থেকে ঢাকা বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রথম চারা উৎপাদন করা হয়। ১৯৭৯ সালে মালয়েশিয়া ও নাইজেরিয়া থেকে সরাসরি পাম গাছের চারা এনে সর্বপ্রথম দেশের কক্সবাজার এবং সিলেট বন বিভাগকে ছয় মাস বয়সের চারা রোপণের জন্য সরবরাহ করা হয়। ১৯৮১ সালে কক্সবাজারে ৩২৫ একর, চট্টগ্রামে ২৭৯ একর এবং সিলেটে ১৮০ একর মিলে মোট ৭৮৪ একর জায়গা পাম চাষের আওতায় আনা হয়।

বাংলাদেশে পামচাষের গুরুত্ব:
সবদিক বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশে পাম চাষের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে পামচাষ আমাদের বেকার জনগোষ্ঠীর জন্য একটি কল্যাণময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বহন করে। তা ছাড়া চাহিদা অনুসারে এবং দেশের অথর্নৈতিক অবকাঠামো বিনির্মাণে পামের চাষ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। জানা যায়, আমাদের দেশে বর্তমান ভোজ্য তেলের চাহিদা প্রায় ১২ লক্ষ মেট্রিক টন। সেখানে আমরা দেশের চাহিদার মাত্র ১০ ভাগ তেল দেশে উৎপাদিত করতে পারি। বাকি ৯০ ভাগ তেলের জন্য আমাদের বিদেশের ওপর নির্ভর করতে হয়। দেশে পাম ও সয়াবিন তেল আমদানি করে প্রতি বছর যে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করা হয়, তা দিয়ে যদি পর্যাপ্ত পাম চাষ করা হয় তাহলে আমাদের ১২,০০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব। সে ক্ষেত্র বিবেচনা করলে আমরা অনায়াসেই পাম চাষের ওপর নির্ভর করতে পারি। আর যৌক্তিকতা বিবেচনা করলে আরো বলা যায় যে, বাংলাদেশের জলবায়ু আবহাওয়া ও প্রকৃতি পাম চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। মালয়েশিয়ায় উৎপাদিত পামের কাঁদি যেখানে সাধারণত ৪০ কেজির বেশি হয় না। সেখানে কিন্তু বাংলাদেশের উৎপাদিত পামের কাঁদির ওজন ৬০ কেজি থেকে ৬৫ কেজি হয়। যা নিঃসন্দেহে আশার দিক। এ ছাড়া বাংলাদেশে উৎপাদিত পামের ফল তুলনামূলক আকারে বড় এবং দানা তুলনামূলক ছোট। পাম থেকে তেল উৎপাদনের মাত্রার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার চেয়ে অনেক এগিয়ে।

পামচাষের জন্য আবহাওয়া ও জলবায়ু:
পামচাষের জন্য যে ধরনের আবহাওয়া ও জলবায়ু প্রয়োজন তা বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যমান বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন। পাম গাছ চাষের জন্য মোটামুটি তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ৩২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হলে ভালো। বাংলাদেশের গড় বৃষ্টিপাত ১৫০ সেন্টিমিটারের বেশি, তাই বাংলাদেশে পাম চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিদিন ৫ ঘণ্টা অথবা বার্ষিক মোট ২০০০ ঘন্টার সূর্যালোক দরকার। সমতল, ভারী এবং পানি ধারণক্ষম পলিমাটি পামচাষের জন্য আদর্শ। বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকা, অনাবাদি জমি, সড়ক-মহাসড়কের পাড়, পুকুরপাড় এবং অব্যবহৃত স্থানে পাম গাছ রোপণ করা যেতে পারে। প্রতি হেক্টর জমিতে ১২০টি থেকে ১৫০টি চারা অথবা ৯.৫ মিটার দূরে দূরে প্রতি হেক্টর জমিতে ১২৮টি চারা রোপণ করা যায়। বীজ হতে চারা তৈরি করতে এক বছর সময় লাগে। চারা রোপণের তিন থেকে চার বছরের মধ্যে ফল ধরে। রোপিত চারা ত্রিশ বছর বয়স পর্যন্ত ফল দিতে পারে। ৯.৫ মিটার দূরে দূরে চারা রোপণ করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক গর্ত করতে হবে। প্রতিটি গর্তের আকার ২দ্ধ২দ্ধ২ ঘন ফুট। প্রতিটি গর্ত জৈব সার দ্বারা ভরাট করতে হবে। জৈব সার শোধন করার জন্য একদিন (২৪ ঘণ্টা) তামাক পাতা ভেজানো পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতিটি গর্তে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ১০০০ গ্রাম টিএসপি এবং ৫০০ গ্রাম এমওপি সার প্রাথমিক মাত্রা হিসেবে প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে চারা রোপণের আগে অবশ্যই গতের্র জৈব সার বা কম্পোস্ট ভালোভাবে ওলট-পালট করে গ্যাস বের করে দিতে হবে যাতে চারা গাছের কোনো ক্ষতি না হয়। চারা রোপণের পর সবসময় মাটিতে যাতে পানি থাকে সে জন্য সেচ দিতে হবে। ইঁদুরের আক্রমণ রোধ করার জন্য শতকরা ২ ভাগ জিংক ফসফাইট বিষটোপ ব্যবহার করা যেতে পারে। গন্ডার পোকার আক্রমণে গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়। গোড়া পচা রোগ যা Ganoderma boninense নামক জীবাণুর আক্রমণে ঘটে। এ রোগের কারণে শতকরা ৫০ ভাগ পর্যন্ত ফলন কমে যেতে পারে। আইপিএম পদ্ধতিতে পোকাদমন ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আক্রমণ রোধ করা যেতে পারে। ব্যাগওয়ার্ম ও ক্যাটারপিলারের আক্রমণ রোধ করার জন্য জৈব বালাইনাশক; যেমনÑ ব্যাকটেরিয়া Bacillus Thuringensis ব্যবহার করে যেতে পারে।

ফল সংগ্রহ ও তেল প্রস্তুত:
একটি পাম গাছ থেকে সারা বছরই পামফল পাওয়া যায়। ফিলিপাইনের আরবিএপি (RBAP) এর একটি প্রকাশনা অনুযায়ী জানা যায়, চারা রোপণের ২৬ মাস থেকে ৩০ মাসের মধ্যেই পাম গাছ ফসল সংগ্রহের পর্যায়ে পৌঁছে যায়। এক হেক্টর জমির পূর্ণবয়স্ক গাছে গড়ে বছরে কাঁদিসহ ১৯.১ টন ফল পাওয়া যায়। মাসে তিন বার বা ১০ দিন পর পর ফল সংগ্রহ করা ভালো। একটি পরিপক্ব পামগাছ থেকে কাঁদি কেটে গাছকে পুনঃপরিষ্কার করতে হবে। ফলগুলো পরিষ্কার করে একটি বড় পাত্রের মধ্যে ছেড়ে আগুন দিয়ে ফুটাতে হবে। এতে ফলগুলো বেশ নরম হয়। এবার নরম ফলগুলোকে হাতে বা অন্য যে কোন উপায়ে চাপ দিয়ে রস বের করতে হবে। তারপর পানি মিশ্রিত এ রসকে একটি পাত্রে রেখে চুলায় কিছুক্ষণ তাপ দিলে রসে বিদ্যমান পানি বাষ্পাকারে বের হয়ে যাবে এবং পাত্রের মধ্যে পাম তেল জমা থাকবে। এভাবে প্রাপ্ত তেল ছেঁকে বোতলজাত করে সংগ্রহ করে তা প্রয়োজনীয় রান্নাবান্নাসহ যেকোনো কাজে ব্যবহার করতে পারা যায়। তবে তেল সংগ্রহ থেকে ছয় মাস পর্যন্ত এ তেল ব্যবহার করাটাই ভালো।

পামতেলের স্বাস্থ্যগুণ ও পুষ্টিমান:
স্বাস্থ্যগত ও পুষ্টিমান বিবেচনা করলে পাম তেল বিটা ক্যারোটিনের সমৃদ্ধতম উৎস। পাম তেলে টোকোফেরল ও টোকোট্রায়েনল নামক দুই ধরনের ভিটামিন ‘ই’ অধিক পরিমাণে থাকে। পাম তেল সম্পূর্ণ কোলেস্টেরলমুক্ত। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ও সুখের দিক হচ্ছে খাদ্যে পাম তেল ব্যবহার করলে রক্তে কোন কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে না। আরো সুখের দিক হলো চীনে পাম তেল, সয়াবিন তেল, পিনাট তেল এবং শূকরের চর্বি (সবগুলোই সম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত) নিয়ে এক তুলনামূলক গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে যে পাম তেল দেহে উপকারী ‘এইচডিএল’ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় এবং ক্ষতিকর ‘এলডিএল’ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এবং পাম তেল রক্তের জমাট বাঁধার প্রবণতাকে রুখে দেয়। ফলশ্রুতিতে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটা হ্রাস পায়। আবার লাল পাম তেলে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন ‘ই’ থাকে। যা একটি গাজরের চেয়ে ১৫ গুণ এবং টমেটোর চেয়ে ৩০০ গুণ বেশি। পাম তেল ও অন্য তেল পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে ক্যানসারের মতো কঠিন ব্যামোর জীবাণু বিনাশ বা প্রতিরোধ করতে বিরাট কার্যকর ভূমিকা পালন করে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ভোজ্যতেলের মধ্যে ৫০ পিপিএম পর্যন্ত কোলেস্টেরল থাকলে তা কোলেস্টেরল মুক্ত তেল হিসেবে বিবেচিত হয়। পাম তেলের কোলেস্টেরল ৫০ পিপিএম-এর নিচে যা (১৩-১৯) পিপিএম-এর মধ্যে। অপরপক্ষে সয়াবিন তেলে (২০-৩৫) পিপিএম, সূর্যমুখী তেলে (০৮-৪৪) পিপিএম এবং সরিষার তেলে (২৫-৮০) পিপিএম কোলেস্টেরল বিদ্যমান।

পাম গাছের অন্যান্য ব্যবহার:
পাম গাছ থেকে আমরা শুধু পামফলই পাই না। তার থেকে আমরা পেয়ে থাকি আরো নানা প্রকার মূল্যবান সামগ্রী, যা আমাদের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারযোগ্য। এসব ব্যবহারযোগ্য জিনিসের কাঁচামাল হিসাবে পামের ভূমিকা অনন্য। সাবান, ডিটারজেন্ট, ফ্যাটি এসিড, ফ্যাটি অ্যালকোহল, গ্লিসারল উৎপাদনে পামের কাঁচামাল ব্যবহার করে একটি গুণগত পণ্য হিসেবে বিশ্বের বাজারে তা বাজারজাত করা হচ্ছে। তাছাড়া বিস্কুট, কেক, আইসক্রিমসহ বিভিন্ন প্রকার খাবার তৈরিতে পাম তেলের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। চর্বি উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবেও পাম তেল সকলের কাছে গ্রহণীয়। পাম তেল থেকে তৈরি হয় সলিড ফ্যাট যেমন বনস্পতি যা স্বাস্থ্যের জন্য উত্তম। কারণ পাম তেলকে হাইড্রোজিনেশন করার প্রয়োজন হয় না বলে এতে ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাটি এসিড থাকে না। পাম গাছের কাণ্ড, পাতা, ফলশূন্য কাঁদি ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকার দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন করা যায়। পাম গাছের পাতা ও ফলশূন্য কাঁদির আঁশকে প্রক্রিয়াজাত করে মধ্য ঘনত্বের ফাইবার বোর্ড ও চিপবোর্ড তৈরি করা যায়। একটি পরিপক্ব পামগাছের গুঁড়ি থেকে মূল্যবান আসবাবপত্র তৈরি করা যায়। পাম গাছের পাতা মাটিতে জৈব পদার্থ যোগ করে। এক টন পাম গাছের পাতা মাটিতে প্রায় ৭.৫ কেজি নাইট্রোজেন, ১.০৬ কেজি ফসফরাস, ৯.৮১ কেজি পটাশিয়াম ও ২.৭৯ কেজি ম্যাগনেশিয়াম যোগ করে।

শেষ কথা:
দেশের সার্বিক দিক বিবেচনা করে সারা বাংলাদেশে পামঅয়েল চাষ ছড়িয়ে দিতে সরকারকে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে এবং বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে পাম চাষাবাদের জন্য কাযর্কর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি সবাইকে পামঅয়েল গাছ চাষ সম্পর্কে ধারণা দিয়ে পাম চাষের প্রসার ঘটাতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এবং পার্বত্য এলাকার উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন যে সব রাস্তা আছে সে রাস্তার দুই পাশে পামঅয়েল গাছ লাগানো যেতে পারে। স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মন্দির ও হাসপাতালের অব্যবহৃত জায়গায়ও পাম চাষ করা যায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে অনাবাদি পতিত জমি, পাহাড়ি অঞ্চল, চরাঞ্চল ও উপকূল অঞ্চলে বৃক্ষরোপণ অভিযানের মাধ্যমেও পামঅয়েল চাষ করা যায়। একটি পরিবারে দুইটি পামঅয়েল গাছ চাষ করলে ওই পরিবারের সারা বছরের তেলের চাহিদা পূরণ হবে। প্রতিটি পরিবার যদি অয়েলপাম চাষে এগিয়ে আসে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের তেল আমদানি করতে হবে না। এসব প্রচারে বা প্রসারে সরকার বিভিন্ন মিডিয়ার সহায়তা নিতে পারে। সভা-সমাবেশ টক-শোতে পাম গাছের গুরুত্ব জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। বাংলাদেশ বছরে সাত লক্ষ টন পাম তেল আমদানি করে থাকে, যার মূল্য ১২ হাজার কোটি টাকা। আমরা যদি পামঅয়েল গাছ চাষের মাধ্যমে দেশে পাম তেলের উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারি, তাহলে দেশের ১২ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব। এছাড়া অধিক উৎপাদনে আমরা বিদেশে রফতানি করে আয়ও করতে পারি বৈদেশিক মুদ্রা। এ সব বাস্তব চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরতে পারলে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে পামগাছের বাগান গড়ে উঠবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

Share.

মন্তব্য করুন