অন্যরকম দাওয়াত
সবুজে সবুজে ভরে গেছে বাড়িটা। চারদিকে গাছ আর গাছ। ফলের গাছ। ফুলের গাছ। ঔষধি গাছ। খালিদের কাছে মনে হয়, এ যেন এক সবুজ দ্বীপ! আর এ দ্বীপ গড়ে উঠেছে বাবার হাতেই। খালিদ সেই ছোট্টবেলা থেকেই দেখে আসছেÑ সবুজের সাথে বাবার মিতালী। নতুন নতুন গাছের চারা কিনে আনেন প্রায়ই। বলতে গেলে প্রতিদিনই। এ যেন তার নেশা!
বাবা প্রায়ই বলেন, সবুজ দেখতে নাকি তার ভালো লাগে। ভীষণ ভালো! সবুজের দিকে তাকালে চোখ শীতল হয়। মন সতেজ হয়। ঝরঝরে থাকে কল্পনার জগত! এসব শুনতে শুনতে, দেখতে দেখতে খালিদও এখন সবুজের বন্ধু। নতুন কোনো গাছের চারা পেলেই সে ছুঁয়ে দেখে। প্রতিটি পাতা! প্রতিটি কা-!
তাদের বাড়ির আঙিনা জুড়ে সারা বছরই কোনো না কোনো ফুল ফুটে থাকে। নানা রঙের। ভিন্ন ভিন্ন ঘ্রাণের। আরও আছে প্রায় সব ধরনের দেশি ফলের সমাহার! রঙ-বেরঙের প্রজাপতি, মৌমাছি ও পাখিরা তাই বেড়াতে আসে সেখানে।
ঘর থেকে বের হলেই হাতের ডান পাশে একটি পেয়ারা গাছ। অনেক পেয়ারা ধরেছে এবার। আজ খালিদ ভালো করে চোখ বুলালো গাছে। পেকে আছে বেশ ক’টা। কিন্তু এ কি! পাখিরা তো খবর পেয়ে গেছে! ক’জন মিলে বেশ মজা করেই পেয়ারা খাচ্ছে। খালিদ ঢিল ছুঁড়ে মারল। আর তারা উড়ে গিয়ে বসল অন্য একটি গাছের ডালে। বাবা দেখে বললেন, খালিদ! পাখিদের তাড়িয়ে দেয়া একেবারেই উচিত হয়নি! Ñকেন?
Ñকারণ, মহানবী (সা) বলেছেন, “যদি কোনো মুসলিম একটি গাছ রোপণ করে অথবা কোনো শস্য উৎপাদন করে এবং তা থেকে কোনো মানুষ, পাখি কিংবা পশু আহার করে, তাহলে তা উৎপাদনকারীর জন্য সাদাকাহ হিসেবে বিবেচিত হবে!” (বুখারী, মুসলিম)।
খালিদ তো অবাক! এখন তার ইচ্ছে করছে পাখিগুলোকে ডেকে আনতে। বলতে ইচ্ছে করছেÑ পাখিরা শোনো, আমাদের পেয়ারা গাছে তোমাদের দাওয়াত! তোমরা এসো! বারবার এসো! প্রতিদিনই এসো!
আবু মিনহাল