একটি ছেলে ১৬ বছর বয়সে এসএসসি পাস করেছে।
পাস করার পর থেকেই সে ভাবতে শুরু করল, তার জীবনের পেশাগত লক্ষ্য। ছোট জীবনে তার লক্ষ্য খুব বেশি বড় ছিলো না, সে ভাবতো মানুষের সেবা করে, একটি ছোট জীবন গড়ে, আল্লাহর সন্তুষ্টি নিয়ে এ পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেবে সে। কী লাভ কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে, জাকাত না আদায় করে ধর্ম ও ইসলামহীন হয়ে।
পূর্বের লক্ষ্যটা বাদ দিয়ে সে সিদ্ধান্ত নিলো নিজেকে সে মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করবে। আর সেই লক্ষ্যে সে ভর্তি হলো দেশসেরা ম্যাটস আই, এইচ, টি ভর্তি কোচিং কর্নিয়াতে। দুই মাস ক্লাস করার পর ভর্তি পরীক্ষার তারিখ সামনে এলো তার। তারিখ শোনার পর থেকে তার ঘুম হারিয়ে গেল, মেসে থাকা কিছু ভাইয়ের উৎসাহে রাতের ঘুমকে হারাম করে দিয়ে পড়াশুনা করলো সে। একদিন তার কাক্সিক্ষত পরীক্ষার দিন এলো, তার ভর্তি রোল ৯৪১২৩৫ নিয়ে সে আল্লাহর ওপর ভরসা করে ভর্তি যুদ্ধে রওনা হলো। পরীক্ষা দিয়ে সে আরও চিন্তিত হলো, কারণ সে জানে না যে, সে এই লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে চান্স পাবে কি না, শুধু আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিল। এক ভাই বলল, তুমি এই দুর্নীতির যুগে টাকা ছাড়া চান্স পাবে না। তার বাবাও বলেছিলেন পরীক্ষার আগে, সে চান্স পাবে না। সে নফল নামাজ পড়ে তার রবের কাছে দোয়া করত। ৩দিন পর তার রেজাল্ট পেলো তাকে ওয়েটিংয়ে রাখা হয়েছে। সবাই শোনার পর বলল হবে না। সে আরও বেশি চিন্তিত হলো কারণ এই যুদ্ধকেসে বাঁচা-মরা হিসাবে ধরেছে। তার ওয়েটিংয়ের রেজাল্ট দেবে ১৫-২০ দিন পর। তার বন্ধুরা তাকে তাদের মতো বেসরকারিতে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিলো। কিন্তু তার বিবেকের পরামর্শে হাল ছাড়ল না। সে নিয়মিত নফল নামাজ পড়া চালিয়ে যেতো। অনেক মানুষ সফলতা আসার আগ মুহূর্তে তার ধৈর্য হারিয়ে ফেলে এবং সে পথ থেকে সরে যায়। এটা ঠিক না কারণ সফলতা আসার আগ পর্যন্ত ধৈর্য নিয়ে যারা ঠিক থাকতে পারে তারাই সফলতার মুখ দেখে। যদি এ মুহূর্তে সে বেসরকারিতে ভর্তি হতো তাহলে হয়তো তার সবকিছুই মাটি হয়ে যেত। তাহলে হয়তো তার সরকারিতে পড়ার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যেত। তার কাক্সিক্ষত মেসেজ পাওয়ার পর সেখান থেকেই সে নফল নামাজ পড়া বন্ধ করে দিলো না বরং তারপরও পড়তো। আসলে ধৈর্য ছাড়া কোনো কাজেই সফলতা লাভ করা যায় না। ধৈর্যই সফলতার পূর্বশর্ত ও চাবিকাঠি। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের ধৈর্যকে বাড়িয়ে দিন এবং প্রত্যেকটা কাজই ধৈর্য সহকারে করার তৌফিক দিন।

Share.

মন্তব্য করুন