প্রভাতের পাখি
সাজজাদ হোসাইন খান

ক.
দিন যায় রাত আসে দিন গেলে রাত
ঘুরে ফিরে হররোজ আসে রে প্রভাত
প্রভাতের চোখে নাচে খুশির সুরুজ
আসমানে হাঁটে যেন রাঙা তরমুজ।
রাখো ধরে অন্তরে প্রভাতের পাখি
সবুজ-লালেতে রোজ করো মাখামাখি।

খ.
শিউলি ফুলের উড়না যখন ওড়ে
শিশির ঝরা নিশির গালে ভোরে।
হলুদ বোঁটার স্বপ্ন তখন লোটে
শীতল হাওয়ার গীতল বাঁশির ঠোঁটে।
সেই ঠোঁটে আজ বক্ষ মিলাও চুপে
ফুটবে দেখো হাসি নানান রূপে।

শীতে হই সমব্যথী
হাসান হাফিজ

এলো শীত ভীতিসহ চারিদিক কাঁপিয়ে
হামলে পড়েছে জাড় ঠা-ায় ঝাঁপিয়ে।
ওম নাই ওম চাই ওম কোথা পাই
ঠকাঠক কাঁপুনিতে চোখে ঘুম নাই।
উত্তুরে হিম হিম জোরালো বাতাস
শীত মানে গরিবের শঙ্কা তরাস।
যারা ধনী তারা শীতে স্বস্তি আরামে
ফূর্তিতে টাপুটুপু যতো শীত নামে।
গরম পোশাক জামা খানা দানা ভালো
শীত মানে জম্পেশ খুশি জমকালো।
কাবু নাজেহাল যারা আশপাশে আছে
মানবিক বোধ নিয়ে ছুটে যাই কাছে,
দুস্থেরা কোথা পায় লেপ কম্বল
কী দিয়ে লড়াই করে, নাই সম্বল।
হি হি কাঁপে দিনরাত জবুথবু শীতে
এমন ব্যাপারও আছে এর বিপরীতে।
শীতে মেলে রকমারি সুস্বাদু সবজি আনাজ
মজাদার পিঠেপুলি রসালো সে নিয়ম রেওয়াজ।
দুখী মানুষের পাশে একযোগে যদি সবে মিলে
সমব্যথী হতে পারি তবে ঠিকই দেখো তিলে তিলে
কমিয়ে ফেলতে পারি গরিবের কষ্ট করুণ
যা কিনা রচিত হয় আগ্রাসী শীতের দরুন।
ভেদাভেদ দূর হোক চিরতরে, আমরা মানুষ
একে অপরের তরে, হোক সেই বোধ জ্ঞান হুঁশ।
মানুষ মানুষ হোক সেরকমই করা যাক আশা
সম্ভব বহু কিছু যদি থাকে প্রীতি ভালোবাসা।

মায়ের স্মৃতি
মাহমুদুল হাসান নিজামী

বুকের ভেতর উথলে ওঠে কষ্ট নদীর ঢেউ
সব অভিমান যাহার সাথে চলে গেল সেও।
কোন চাওয়ায় ছিলো নাতো যাহার কাছে – না;
সেইতো সবার প্রিয় ধন মা জননী মা।
যে সব কথা হলে মনে নামে শুধু কান্না
সেই কত দিন হয়ে গেলো পাই না মায়ের রান্না।
কাঁদছে স্মৃতির লিচুতলা কাঁদছে মায়ের পিঁড়ি
কাঁদছে মায়ের খাট পালং কাঁদছে ঘরের সিঁড়ি।
চুলোর পাশে মায়ের হাতের খেতাম চিতল পিঠা
গরম গরম পিঠার সাথে খেজুর রসের মিঠা।
সেই কতদিন মা-মনিটায় আর যে দেখি না
কোথায় গেলে মাগো আবার ফিরে এসো না।

শীত আসে শীত যায়
ফজলুল হক তুহিন

শীত আসে শীত যায়
শীত আসে আবারও
শীতে রোজ প্রীতি ভোজ
পিঠাপুলি খাবারও।

শিশিরের ভেজা ঘাসে
রোদ হাসে ঝিকমিক
কুয়াশার ভাঁজ ভেঙে
ভোর হয় দিকদিক।

খেজুরের রসে রসে
পায়েসের মিঠে স্বাদ
রাতের আকাশে জ¦লে
জোছনার গোল চাঁদ।

হাত মুখ ফেটে যায়
হিম হিম হাওয়াতে
চাদরের ওম আসে
ডিমগুলো খাওয়াতে।

এবারের শীতে আমি
পাখি হবো উড়ে উড়ে
ইশকুল ছেড়ে যাবো
দিগন্তে ঘুরে ঘুরে।

রোহিঙ্গা
রেদওয়ানুল হক

রোহিঙ্গারা ভাই আমাদের
রোহিঙ্গারা বোন
রোহিঙ্গাদের খাচ্ছে চিরে
জন্তু আজব কোন?
ঐ দেখো ঐ হিংস্র ওরা
কেমন ভয়ঙ্কর
মানবতার বিনাশ চেয়ে
বলছে জয়ঙ্কর।
রোহিঙ্গারা ভাই আমাদের
রোহিঙ্গারা বোন
রোহিঙ্গাদের শোকের ভারে
কাঁপছে আকাশ শোন!
কাঁপছে আকাশ কাঁপছে বাতাস
কাঁপছে নদী-নালা
ভাবছি বসে কলম ঘষে
আসেই যদি বালা!
আসেই যদি ভাসেই যদি
আমাদেরও দিন
কেমন করে সইবো তখন
কষ্ট সীমাহীন।
রোহিঙ্গারা ভাই আমাদের
রোহিঙ্গারা বোন
রোহিঙ্গাদের বাঁচাতে আজ
একত্রিত হোন।

নতুন দিনের গান
খাদিজা আন্জুমান

আমরা হব গন্ধ বণিক
বকুল গোলাপ ফুল
গন্ধ রসে হৃদয় সবার
করবো ভাবাকুল।

আমরা হব সোনার দানা
হাজার ফসল ফল
আমরা চাষির উর্বর ভূমি
স্বপনের বীজতল।

আমরা হবো উদার আকাশ
দখিন হাওয়ার সুখ
ছড়িয়ে দেব সুখের সুবাস
ভরতে সবার বুক।

আমরা হব আশার মেঘ
চাতক চাওয়া ঢল
বৃষ্টি বাদল ফুল ফসলে
রাখবো মনে বল।

আমরা হব সূর্য-সাথী
শক্তি তাপাধার
আলো জ্বেলে মুছে দেব
সকল অন্ধকার।

আমরা হব নতুন প্রভাত
নতুন দিনের গান
সোনার সন্তান, সফল মানুষ
দীপ্ত নওজোয়ান।

শীত সমাচার
আব্দুল হাকিম

তোমরা তো বেশ ভালোয় আছো
শান্তি সুখের পরশে
হাড়কাঁপানো শীতে দেখো
কেমন জড়সড় সে।

ফুটপাথে-ই রাত কেটে যায়
ছাদও নেই যে উপরে
আগুন জ্বেলে উষ্ণতা নেয়
তোমরা নাও কোট-স্যু পরে।

তোমার বাড়ির কাজের মেয়ে
ঢেঁকিতে ধান নিত্য ভানে
কষ্ট করে এই শীতে সে
দাঁড়াও পাশে বিত্তবানে।

নতুন না হয় বাদই দিলাম
পুরান দাও ঐ কুটিরে
দেখো চেয়ে কাপড় বিনে
খাচ্ছে লুটোপুটিরে!

Share.

মন্তব্য করুন