শীতের দিনে
শামসুদ্দীন মালেক
শীত আসলে সূর্যি মামা
দেরিতে ওঠে রোজ,
শীত এড়াতে বুড়া বুড়ি
তাপের করে খোঁজ।
শিশির কণা ঘাসে ঘাসে
দেখতে লাগে ভালো,
মুক্তার রূপ নেয় তারা
যখন পায় আলো।
ভাপা পিঠার জুড়ি নেই
কে না খেতে চায়,
মায়ের হাতের পিঠা খেতে
গাঁয়ে ছুটে যায়!
শীতের দিনে দেখি গাঁয়ে
ভিন পাখিদের ঝাঁক,
নিঝুম রাতে রাস্তা ঘাটে
খেঁকশিয়ালের হাঁক।
শীত এলে
ফাতেমা জান্নাত
শীত এলে থরথর
কেঁপে উঠে গা
রোদ পেতে উঠোনেতে
হাঁটি পা পা।
শীত এলে যায় পাওয়া
ফলমূল যতো
লাল শাক পুঁই শাক
খাই আরো কতো।
খেজুরের রস খাই
আরো খাই পিঠা
জিভে পানি যায় এসে
স্বাদ তার মিঠা।
শীত এলে কুয়াশায়
ভরা চারদিক
রোদ ওঠে সবখানে
করে চিকচিক।
বাবুই পাখি
খালিদ হাসান
বাবুই পাখি বাসা বানায়
তাল গাছের মাথায়
কী অপূর্ব বিনুনি তার
চিকন চিকন পাতায়।
রাতে তাতে থাকে না বাবুই
যদি আসে ঝড়
ঝড়ের কবলে পড়ে যদি
ভেঙে যায় ঘর।
বাসার সাথে যাবে তখন
নিজের দেহ-প্রাণ
সোনার স্বপ্ন ভেঙে হায়!
হবে খান খান।
তাই বাবুই রাতের বেলা
থাকে ঘরের বাইরে
তার মতো এমন দুঃখী
জগতে আর নাইরে।
বই
সুমাইয়া শারফিন
বিদ্যা তুমি দুষ্টু অতি
ধরতে নাহি পারি ভাই,
তোমার দ্বারাই জীবনটাকে
আলোকিত করতে চাই।
তুমিই পারো সাজাতে সবার
অগোছালো জীবনটাকে,
তুমিই পারো ছিনিয়ে দিতে
হারানো সব পূর্ণতাকে।
সৃষ্টির কল্যাণে
মুনাওয়ার হোসাইন
আমি আজ তিক্ত-বিরক্ত-অনুরক্ত, সৃষ্টির
কল্যাণে সর্বদা সিক্ত।
অন্ধকারে আলো প্রজ্বলিত করতে আমি
দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
শোষিত-বঞ্চিত-দারিদ্র্য পীড়িত
মানুষের নিষ্ফল আকুতিতে আমি
মর্মাহত।
বিলিয়ে দিতে চাই কল্যাণে সারা
জীবন ওমর-আবু বকরের মত।
হতে চাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে,
অত্যাচারিতের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।
বিচলিত নই আমি, যদিও জানি,
কাটাতে হবে সংগ্রামে সারা
জীবন ভর।
ক্ষেপে গেছে আজ দু-হাত-পা,
জেগেছে আমার অন্তরাত্মা।
ভাঙতে হবে অত্যাচারের যতসব
কারাগার, বলেছেন সেই অদৃশ্য সত্তা।
আমি আজ এসেছি আগ্নেয়গিরির
অগ্নুৎপাত নিয়ে এক আলোকিত জীব।
ছড়িয়ে দিতে উত্থিত আজ সব লাভা
আমার, গড়তে সুখের দ্বীপ।
দুষ্টু খোকা
-এম এ এইচ সাবু
মিষ্টি হাসির দুষ্টু খোকা
চালাক চতুর নয়তো বোকা
ভরা মুখে হাসে সুখে
কান্না করে একটু দুখে।
সারা দিনে ব্যস্ত কাজে
সকাল দুপুর কিংবা সাঁঝে
কাজ নয়তো অকাজ করে
খুশির যেন বৃষ্টি ঝরে।
শীত
আজিম হোসেন
খুব কুয়াশায় ভাপা পিঠা
একটু গরম একটু মিঠা,
শীতের চাদর গায়ে দিয়ে
এদিক-সেদিক না তাকিয়ে
চল্রে খেতে চল্-
দুষ্টু ছেলের দল।
মায়ের হাতের পিঠা-পুলি
খেতে তাইতো দু’হাত তুলি,
শুকনো পাতায় আগুন জ্বেলে
দল পাকিয়ে সকল ছেলে।
নিটল মনের বল-
দুষ্ট ছেলের দল।
হাঁড়ি পাতা খেজুর গাছে
রসের মুধর স্বাদ যে আছে,
এক নিমিষেই জিভে আসে জল
গাছে উঠার পাই যে অসীম বল।
ভয় কাটিয়ে চল্-
দুষ্ট ছেলের দল।
লাল টুকটুক বরই ডালে
পুকুর-নদী-ডোবা-খালে,
যখন-তখন যেথায়-সেথায়
মন ছুটলে খুঁজে কে আর পায়!
চল্রে ছুটে চল্-
দুষ্ট ছেলের দল।
রীতির হাল
আল জোবায়ের
গরিব বলে শান্ত কিশোর রিকশাচালক
ধনীর দুলাল দুষ্ট হলেও মিষ্টি বালক!
দুঃখীর বাছা অর্ধাহারে অনাহারে
জীর্ণশীর্ণ থাকবে পড়ে পথের ধারে;
বিত্তশালীর তনয় ঘুমায় মস্ত খাটে
পেট পুরে খায় ফূর্তি জমায় খেলার মাঠে!
দীনের ছেলে চারণভূমে মাঠে-ঘাটে
ভোজ্যের আশায়; নেইকো সুযোগ মিশতে পাঠে!
গরিব ছেলের কাটবে জীবন অবহেলায়
ধনীর খোকার যত্ন-আদর হর্ষলীলায়!
ধনীর ছেলেই এসপি সচিব মন্ত্রী হবে
ঐ সে দীন-গরিব ছেলে পথেই রবে!
এই কি ধরার সুশীল জাতির সাম্য নীতি;
ভদ্র সমাজ গায় সদা যে ন্যায়ের গীতি?
আর কত কাল থাকবে বহাল এমন রীতি,
দীন-দুঃখী আর বিত্তশালীর অসঙ্গতি;
ঠিক ততকাল স্বপ্ন দেখা রূপের ছবি
ঝাঁপসা রবে, উঠবে না ঠিক আলোর রবি।
মিলে-মিশে
আব্দুল মাজেদ
তোমরা যারা বাপ-মা হারা
ভয় পাবে না কভু,
সবার জন্য আছেন সদা
সর্বদ্রষ্টা প্রভু।
পিতার আদর পাওনি যারা
তাদের জন্য বলি,
রাসূল ছিলেন পিতা হারা
ছোট্ট ফুলের কলি।
ধনীক শ্রেণির লোকদেরকে
করি অনুরোধ,
অন্তরেতে জাগ্রত কর
মানুষ্যত্ব বোধ।
তোমরা তাদের দেখে রেখো
কর না কভু হেলা,
তোমাদের সাথে থাকতে দিও
করতে দিও খেলা।