শজনে ডাঁটা খেতে অনেকেই পছন্দ করি রান্না হিসেবে। কিন্তু এর উপকার কী তা আমরা কখনই ভাবিনি। তাহলে আজ জেনে নেবো কী এর উপকারিতা।
গাছটার বৈজ্ঞানিক নাম মরিংগা ওলেইফেরা। ইংরেজিতে গাছটিকে বলে মিরাকল ট্রি বা অলৌকিক গাছ। ইংরেজি এর আরো দু’টি নাম আছে-ড্রামস্টিক ও হর্সর‌্যাডিশ ট্রি।
এই গাছের প্রতি গ্রাম পাতায় গাজরের চারগুণ বেশি ভিটামিন এ, দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি পটাসিয়াম, কমলালেবুর চেয়ে সাতগুণ বেশি ভিটামিন, দইয়ের চেয়ে ২ গুণ বেশি প্রোটিন আছে।
চার হাজার বছর ধরে রন্ধন এবং চিকিৎসায় এ গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ৩০০ রকমের অসুখের চিকিৎসা হয় এই গাছ দিয়ে।
দক্ষিণ এশিয়ায় বহু বছর ধরে বাড়ির আনাচে-কানাচে, বনে-জঙ্গলে, পুকুরের ধারে এই গাছ দেখা যায়। সম্প্রতি সেনেগাল, মালির মতো আফ্রিকান দেশগুলোতে এর চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। চাষও খুব সহজ। গাছের একটা ডাল পুঁতে দিলেই হলো। এই গাছ বাড়েও খুব দ্রুত। দুই তিন বছরে ফুল দেয়। এর ফুল, পাতা, ফল সব কিছুই সুস্বাদু।
আমরা হয়তো কম-বেশি সবাই শজনের ডাল বা তরকারি খেয়েছি। কিন্তু শজনে পাতাও যে শাক হিসেবে খাওয়া যায়, এটা সবাই জানি না। শজনেপাতা ও শজনেতে প্রচুর আঁশ আছে, যা খাদ্যনালী ও অন্ত্রের পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার করে। বিশেষ করে তৈলাক্ত অনেক খাবার আমরা খাই, যার তেল রক্তনালীতে আটকে থাকে। সেগুলো বের করতে শজনে সাহায্য করে। শজনের মধ্যে আইসোথিয়োকাইনেটস নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে, যা গ্যাস্ট্রিক, আলসার এবং গ্যাস্ট্রিকজনিত ক্যানসার ঠেকাতে সহায়তা করে।
পানি বিশুদ্ধ করতে আমরা প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম নানা পদ্ধতি ব্যবহার করি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, শজনের দানা পানি বিশুদ্ধকরণে সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক উপায়।
শজনের দানা পানি দূষণ রোধ করে, পানিতে কোনো রকম দূষণীয় ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো অনুজীব উপাদান দ্রবীভূত হতে দেয় না।
আমেরিকা, নামিবিয়া, ফ্রান্স ও বতসোয়ানার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, শজনের আণবীক্ষণিক প্রোটিন উপাদান পানি বিশুদ্ধকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
একইভাবে শজনে শরীরকে বিশুদ্ধ রাখে। শজনেকে আজকের বিশ্বে ‘সুপার ফুড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

Share.

মন্তব্য করুন