হাসি! সুন্দর মুচকি হাসি। এ যেন তার ঠোঁটের অলঙ্কার। চেহারার সৌন্দর্য। এ হাসি তার মুখে লেগেই থাকে। সারাক্ষণ। ছোট চাচার এ বিষয়টি নাকীবের খুবই ভালো লাগে। খুব ভালো। কেউ তাকে গোমড়া মুখে বসে থাকতে দেখেনি কখনো। তবে, দাদাভাইয়ের মৃত্যুর পর চাচা অনেক কেঁদেছিলেন। এ ছাড়া তাকে আর কখনোই কাঁদতে দেখেনি নাকীব।
কোনো অপরিচিত মানুষের সাথে কথা বললেও চাচা প্রথমে একটি হাসি উপহার দেন তাকে। তারপর সালাম বিনিময়। তারপর অন্য কথা। তার ভেতরে যেন কোনো দুঃখ নেই। হৃদয়টা যেন ফুলের বাগান। তাই তার প্রতিটা হাসিতেই ঝরে পড়ে অতুল সুরভি। ভালোবাসার রঙ।
নাকীব ভাবছে, এ হাসির রহস্য তাকে জানতেই হবে। চাচাকে বলেই ফেলল মনের কথা। চাচা এবারও হাসলেন। চুমু খেলেন নাকীবের কপালে। এরপর বললেন, হাসবো না কেন বলো তো? এত সুন্দর পৃথিবীতে কি মন খারাপ করে থাকা যায়? একটু মুচকি হাসিতে যদি অন্য কেউ আনন্দ পায়, তাহলে তা তো অনেক কল্যাণের কাজ। মহানবী সা: বলেছেন, “তোমার ভাইয়ের সামনে তোমার মুচকি হাসি সাদাকাহ সমতুল্য।” (তিরমিজি)
সাদাকাহ! সাদাকাহ কী একটু বুঝিয়ে বলবে? বলল, নাকীব। ছোটচাচা বললেন, সাদাকাহ হচ্ছে দান। মহানবী সা: বলেছেন, কেউ যদি একটা খেজুর পরিমাণ বস্তুও সাদাকাহ করে, তাহলে আল্লাহ তা তার মালিকের জন্য লালন-পালন করেন। যেভাবে কেউ তার ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন-পালন করে এবং তার সওয়াবের পরিমাণ পাহাড় সমান হয়ে যায়। (বুখারি ও মুসলিম) সে হিসেবে একটি মুচকি হাসিও অনুরূপ সাদাকাহ! অনুরূপ মূল্যবান! পাহাড় সমান!
নাকীব তো অবাক। ভীষণ অবাক। একটি হাসি এত মূল্যবান হতে পারে! এ জন্যই কি কবি বলেছেন-
চাঁদের মতো মুচকি হাসির ঢেউ
ঠোঁটে যদি তুলতে পারো কেউ
ফুটবে নতুন ভালোবাসার ফুল
এক পলকে মুছবে হাজার ভুল!
আবু মিনহাল

 

Share.

মন্তব্য করুন