ক্রিকেট মানেই পরিসংখ্যানের খেলা। প্রতিটি বলেই রেকর্ড। তবে টেস্টের চেয়ে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে (ওডিআই) রেকর্ড হয় বেশি।
ওডিআইতে রানের দিক থেকে প্রথমদিকে রেকর্ডগুলো আবর্তিত হচ্ছিল ইয়ান চ্যাপেল, ডেনিশ অ্যামিশ ও কিথ ফ্লেচারের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত অ্যামিশ তার দুই প্রতিদ্বন্দ্বিকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছিলেন। ১৯৭৫ সালের জুনে তিনি ফ্লেচারের ৫৯৯ রানের রেকর্ডটি অতিক্রম করেন এবং ১৯৭৭ সালে গড়ে ৮৫৯ রানে ক্যারিয়ার শেষ করেন। চ্যাপেল ও ফ্লেচার যথাক্রমে ১৯৮০ ও ১৯৮২ সাল পর্যন্ত খেললেও তারা অ্যামিশের সাথে এঁটে ওঠতে পারেননি।
দুই বছর পর ১৯৮৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড সিরিজ কাপে গ্রেগ চ্যাপেল অ্যামিশের রেকর্ডটি করায়ত্ত করার পর আবার ত্রিমুখি লড়াই শুরু হয়। সেই সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজও অংশ নিচ্ছিল। পরের ম্যাচে গাব্বায় ভিভ রিচার্ডস ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭৭ বলে ৮৫ রান করে চ্যাপেলের ৮৬৭ রানের রেকর্ডটি ছাড়িয়ে যান। সেই সিরিজেই আরো দুবার রেকর্ডটি হাতবদল হয় এবং শেষ পর্যন্ত তা রিচার্ডসের কাছে যায় ১০৫৯ রানের সুবাদে। আর তিনিই হন একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে হাজার রান সংগ্রাহক।
গর্ডন গ্রিনিজ অল্প সময়ের জন্য এই রেসে প্রবেশ করেন এবং ১৯৮০ সালে সাত মাসের জন্য রেকর্ডটি হাতে রাখেন। তবে রিচার্ডস ৫ ডিসেম্বর শিয়ালকোটে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে আবার তা করায়ত্ত করেন। দুদিন পর চ্যাপেল তা আবার ফিরিয়ে নেন এবং তিন বছর তা হাতে রাখতে সক্ষম হন। ১৯৮৩ সালের এপ্রিলে ২৩৩১ রান করে অবসর নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত সেটি তার কাছেই ছিল।
রিচার্ড ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বরে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে সেটি নিয়ে নেন। আর এর পর সাতটি বছর সেটি ছিল তার অধীনে। ১৯৯০ সালের মার্চে তিনি সেটিকে ৬০৫১ রানে পৌঁছে দেন। রিচার্ডস ১৯৯১ সালের মে পর্যন্ত খেলেছিলেন। তার কাছ থেকে রেকর্ডটি নিয়ে নেন তারই টিমমেট ডেসমন্ড হেইন্স। ১৯৯০ সালে করাচিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে তিনি ভিভ রিচার্ডসকে ছাড়িয়ে যান। তিনি রেকর্ডটি চার বছর হাতে রাখতে পেরেছিলেন। ১৯৯৪ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনি শেষ ম্যাচটি খেলেন এবং তার রান দাঁড়ায় ৮৬৪৮।
১৯৯৮ সালের নভেম্বরে মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন প্রথম ভারতীয় হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বাধিক রান সংগ্রাহক হন। এর পর থেকে রেকর্ডটি ভারতের মাটি ছাড়েনি। আজহার ২০০০ সালের জুনে তার ক্যারিয়ার শেষ করেন ৯৩৭৮ রান নিয়ে। মাস্টার ব্লাস্টার শচিন টেন্ডুলকার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে আজহারকে ছাড়িয়ে যান।
ব্যাটসম্যান (দেশ) রান প্রতিপক্ষ ভেন্যু তারিখ ওডিআই
নং
জেএইচ এডরিচ (ইংল্যান্ড) ৮২ অস্ট্রেলিয়া মেলবোর্ন ৫ জানু, ১৯৭১ ১
আইএম চ্যাপেল (অস্ট্রেলিয়া) ১১৩ ইংল্যান্ড ম্যানচেস্টার ২৪ আগস্ট, ১৯৭২ ২
আইএম চ্যাপেল (অস্ট্রেলিয়া) ১৪৪ ইংল্যান্ড লর্ডস ২৬ আগস্ট, ১৯৭২ ৩
ডিএল অ্যামিশ (ইংল্যান্ড) ১৬৪ অস্ট্রেলিয়া বার্মিংহ্যাম ২৮ আগস্ট, ১৯৭২ ৪
ডিএল অ্যামিশ (ইংল্যান্ড) ৩০২ নিউজিল্যান্ড ম্যানচেস্টার ২০ জুল, ১৯৭৩ ৭
আইএম চ্যাপেল (অস্ট্রেলিয়া) ৩১৬ নিউজিল্যান্ড ক্রাইস্টচার্চ ৩১ মার্চ, ১৯৭৪ ১১
ডিএল অ্যামিশ (ইংল্যান্ড) ৩২২ ভারত লিডস ১৩ জুল, ১৯৭৪ ১২
কেডব্লিউআর ফ্লেচার (ইংল্যান্ড) ৩৩৮ ভারত দি ওভাল ১৬ জুল, ১৯৭৪ ১৩
কেডব্লিউআর ফ্লেচার (ইংল্যান্ড) ৪০০ নিউজিল্যান্ড ওয়েলিংটন ৯ মার্চ, ১৯৭৫ ১৮
ডিএল অ্যামিশ (ইংল্যান্ড) ৫০৯ ভারত লর্ডস ৭ জুন, ১৯৭৫ ১৯
কেডব্লিউআর ফ্লেচার (ইংল্যান্ড) ৫০৯ নিউজিল্যান্ড নটিংহ্যাম ১১ মার্চ, ১৯৭৫ ২৩
ডিএল অ্যামিশ (ইংল্যান্ড) ৬১৩ ইস্ট আফ্রিকা বার্মিংহ্যাম ১৪ জুন, ১৯৭৫ ২৭
ডিএল অ্যামিশ (ইংল্যান্ড) ৮৫৯ অস্ট্রেলিয়া দি ওভাল ৬ জুন, ১৯৭৭ ৪৪
জিএস চ্যাপেল (অস্ট্রেলিয়া) ৮৬৭ ও. ইন্ডিজ সিডনি ২১ ডিসেম্বর, ১৯৭৯ ৮০
আইভিএ রিচার্ডস (ও. ইন্ডিজ) ৮৮৩ ইংল্যান্ড ব্রিজবেন ২৩ ডিসেম্বর, ১৯৭৯ ৮১
জিএস চ্যাপেল (অস্ট্রেলিয়া) ৯১৯ ইংল্যান্ড সিডনি ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৭৯ ৮২
জিএস চ্যাপেল (অস্ট্রেলিয়া) ৯৫৩ ইংল্যান্ড সিডনি ১৪ জানুয়ারি, ১৯৮০ ৮৩
আইভিএ রিচার্ডস (ও. ইন্ডিজ) ৯৭১ ইংল্যান্ড অ্যাডিলেড ১৬ জানুয়ারি, ১৯৮০ ৮৪
আইভিএ রিচার্ডস (ও. ইন্ডিজ) ১০৫৯ ইংল্যান্ড সিডনি ২২ জানুয়ারি, ১৯৮০ ৮৭
সিজি গ্রিনিজ (ও. ইন্ডিজ) ১০৭৩ ইংল্যান্ড লিডস ২৯ মে, ১৯৮০ ৮৯
সিজি গ্রিনিজ (ও. ইন্ডিজ) ১১৩৩ পাকিস্তান করাচি ২১ নভেম্বর, ১৯৮০ ৯৩
জিএস চ্যাপেল (অস্ট্রেলিয়া) ১১৫৪ নিউজিল্যান্ড সিডনি ২৫ নভেম্বর, ১৯৮০ ৯৫
আইভিএ রিচার্ডস (ও. ইন্ডিজ) ১২১১ পাকিস্তান শিয়ালকোট ৫ ডিসেম্বর, ১৯৮০ ৯৬
জিএস চ্যাপেল (অস্ট্রেলিয়া) ১২১৩ নিউজিল্যান্ড মেলবোর্ন ৭ ডিসেম্বর, ১৯৮০ ৯৮
জিএস চ্যাপেল (অস্ট্রেলিয়া) ২৩৩১ শ্রীলংকা কলম্বো ৩০ এপ্রিল, ১৯৮৩ ৯৮
আইভিএ রিচার্ডস (ও. ইন্ডিজ) ২৪৫৭ ভারত জামেশেদপুর ৭ ডিসেম্বর, ১৯৮৩ ২২৯
আইভিএ রিচার্ডস (ও. ইন্ডিজ) ৬৫০১ ইংল্যান্ড জর্জটাউন ৭ মার্চ, ১৯৯০ ৬১৭
ডিএল হেইন্স (ও. ইন্ডিজ) ৬৫৩৭ পাকিস্তান করাচি ৯ নভেম্বর, ১৯৯০ ৬৩৯
ডিএল হেইন্স (ও. ইন্ডিজ) ৮৬৪৮ ইংল্যান্ড পোর্ট অ স্পেন ৫ মার্চ, ১৯৯৪ ৮৯০
এম আজহারউদ্দিন (ভারত) ৮৬৪৮ শ্রীলংকা শারজা ৬ নভেম্বর, ১৯৯৮ ১৩৬৬
এম আজহারউদ্দিন (ভারত) ৯৩৭৮ পাকিস্তান ঢাকা ৩ জুন, ২০০০ ১৬০০
শচিন টেন্ডুলকার (ভারত) ৯৪৩৩ নিউজিল্যান্ড নাইরোবি ১৫ অক্টোবর, ২০০০ ১৬৩৯
(এই পরিসংখ্যানে প্রথম সারির খেলোয়াড়টি রেকর্ড ভাঙেন এবং দ্বিতীয়জন রেকর্ডটির সমকক্ষতা বা অতিক্রম করেন। শচিন টেন্ডুলকার একদিনের ক্রিকেটে শেষ পর্যন্ত ১৮,৪২৬ রান করেছিলেন।)