ঈদ শব্দটার সাথেই যেন নতুন কাপড়ের রঙ মিশে আছে। তবে অবশ্যই তা সবুজ রঙ। গাঢ় সবুজ। আসলে সবুজ রঙটাও যে কত বিচিত্র হতে পারে, প্রকৃতির দিকে তাকালেই তা চোখে পড়ে। কোনোটা হালকা, কোনোটা আবার গাঢ়। কোনোটা হালকাও নয়, গাঢ়ও নয়। এক গাছের সবুজের সাথে অন্য গাছের সবুজ কখনোই মিলে যায় না। মহান আল্লাহ কতই না নিপুণ শিল্পী! Ñএ ভাবনাগুলো তারিকের।
সবুজের প্রতি তারিকের এক অন্যরকম আকর্ষণ আছে। বাইরে বেরোলেই তার চোখ সবুজের সৌন্দর্য খুঁজে ফেরে। যেখানে সবুজ নেই, সেখানে সে যেন প্রাণ খুুঁজে পায় না। এ কারণে শহরের চেয়ে গ্রামটাই তার বেশি পছন্দের। তার পোশাকের প্রিয় রঙও সবুজ। সে জেনেছে, রাসূল সা: সবুজ রঙ ভালবাসতেন। তাই সে মনে করে, সবুজের প্রতি তার এ ভালোবাসা, রাসূলের প্রতি ভালোবাসার শামিল।
প্রতি ঈদের মতো, এবারও সে গাঢ় সবুজ রঙের একটি পাঞ্জাবি কিনেছে। অনেক সুন্দর। এ কারণেই তার কাছে ঈদের রঙ সবুজ! কী অদ্ভুত!
ঈদের একদিন আগে আব্বু বললেন, তোমাকে এবার ঈদগাহে কথা বলতে হবে। তুমি যে কুরআন-হাদিস শিখছো, তা মানুষের কাছে পৌঁছানোর যোগ্যতা এই ছোটবয়স থেকেই অর্জন করা উচিত। কী আর করা। আব্বুর কথা তো ফেলে দেয়া যায় না। তাই সে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করল। হাদিসের একটি বই খুলে সে মনোযোগের সাথে পড়ছে। কী আলোচনা করবে, তা নিয়ে ভাবছে। পড়তে পড়তে একটি হাদিস সামনে এলো তার। হাদিসে ‘সবুজ’ শব্দটি দেখেই সে আরও আগ্রহের সাথে তা পরখ করল। যেখানে রাসূল সা: বলেছেন, “যে মুসলিম কাপড়হীন কোনো মুসলিমকে কাপড় পরাবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরাবেন। ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ালে আল্লাহ তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন। আর পিপাসার্ত কাউকে পানি পান করালে আল্লাহ তাকে মোহর করা বোতল থেকে পানি পান করাবেন।” (আবু দাউদ ও তিরমিজি)
তারিক ভাবল, তার ঈদের জামাটাও তো সবুজ। আচ্ছা, জান্নাতের সবুজ পোশাক কি এর চেয়েও উত্তম নয়? অবশ্যই। তাহলে এ জামাটাই সে দান করে দিবে তার বয়সী এমন কাউকে, যার কোনো ঈদের পোশাক নেই। আর বিনিময়ে তার জন্য আল্লাহ প্রস্তুত করবেন এমন পোশাক, যা কখনোই পুরনো হবে না। মলিন হবে না। থাকবে উজ্জ্বল, চিরসবুজ।
Share.