আনন্দ-শঙ্কা
সাজজাদ হোসাইন খান

হাসি ছিলো বাঁশি ছিলো আনন্দ ছিলোরে
কাননের কানাগলি শুষে সব নিলোরে।
প্রজাপতি ডানা ছিলো আকাশের নয়নে
স্বপ্নের সোনারোদ ফুলঝুরি অয়নে।

গগনের অগণন তারা রোজ কাঁদেরে
চাঁদ বুঝি পড়ে বাঁধা শকুনের ফাঁদেরে।
প্রভাতের ছাদে ওড়ে মেঘ মেঘ পাখিরা
তাই আজ ঘুম ঘুম শিউলির আঁখিরা।

আসমানে ঈদ নাই নিদে শুধু ডঙ্কা
দিবস যামিনী ঘোরে দুরু দুরু শঙ্কা?

দাও সেই ছেলে
আবদুল হালীম খাঁ

আমাদের দেশে প্রভু দাও সেই ছেলে,
দেশ ধন্য হবে যাদের পরশ পেলে।
জীবন হবে যাদের-পুণ্য কর্মময়,
আল্লাহকে ছাড়া কারো নাহি করে ভয়।
শৌর্য বীর্যে যারা হবে মহাপ্রাণ,
ফুলের মতন দেশে ছড়াবে সুঘ্রাণ।
দীনতা-হীনতা যাদের ছুঁবে না চরণ,
মানুষ মানুষের জন্য এই সদা পণ।
জ্ঞানে মানে গুণে যারা হবে আলোকিত
মিথ্যার দাপটে কভু নাহি হবে ভীত।
সাহস আর আশাতে ভরা প্রাণ মন
মানুষ হতেই হবে-এই যাদের পণ।
অন্যায়ের কাছে যারা নাহি হবে নত
সত্যের পথে হাঁটবে বীরের মত।
সকল মিথ্যার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে রুখে
অন্যায় দেবে না হতে কখনো সম্মুখে।
জাতির কল্যাণ যাদের জীবনের গান
মহৎ আদর্শ পথে দীপ্ত তাজা প্রাণ।
সেই ছেলে দাও প্রভু, আমাদের দেশে,
অন্যায় অন্ধকার সব যাবে ভেসে।

ঈদের ছড়া
আশরাফ পিন্টু

ঈদের বাজার জমজমাট
পথঘাট
নতুন পোশাক কিনছে সব
কলরব।
শার্ট-প্যান্ট, কোট-টাই
অনেক ভাই
তাকিয়ে দ্যাখে ন্যাংটা টোকাই
শরম নাই!

ঈদের চাঁদ
হেলাল আনওয়ার

গগন কোণে আপন মনে
উঠলো হেসে ঈদের চাঁদ
ভালোবাসার নিবিড় ছোঁয়ায়
গড়বো সবাই প্রেমের ছাদ।

মনটি খুলে হাসবো সবাই
হিংসা ভুলে থাকবো সব
দুঃখগুলো ভাসিয়ে দেবো
সবাই সুখের তুলবো রব।

কেউ রবে না বঞ্চিত আজ
কেউ হবে না স্বার্থপর
সবাই মিলে গড়বো আবার
স্বপ্ন ভরা সুখের ঘর।

কারো সাথে থাকবে না আর
ক্রোধ কিংবা হিংসা ভেদ
কারো মনে রাখবো নাতো
কোনো রকম রাগের খেদ।
ঈদের দিনে শপথ নেবো
হাসবো মোরা চাঁদের মতো
চাঁদের আলো ছড়িয়ে দেব
দুঃখীর কাছে অবিরত।

সকালের হাওয়ায়
ফজলুল হক তুহিন

সকালের হাওয়ায়
বসে বসে দাওয়ায়
চারপাশ দেখি কতো সুন্দর
কোমল সফেদ আলো
উজালা করেছে ভালো
নেচে ওঠে হেসে ওঠে অন্তর।

গাছের সবুজ মায়া
সারাদিন দেয় ছায়া
আনন্দে ভরে যায় এই মন
আকাশে মেঘের ঘুড়ি
ঘুরে ঘুরে মারে তুড়ি
শতো রঙ বদলায় সারাক্ষণ।

পাখিদের কলরব
ওড়াউড়ি উৎসব
প্রাণে প্রাণে বয়ে যায় শিহরণ
এই ভাবে কাটে দিন
জাগে স্বপ্ন রঙিন
মাঝে মাঝে বৃষ্টির জাগরণ।

ঈদ
আবদাল মাহবুব কোরেশী

মেঘ গুড়গুড় সকাল দুপুর
ঝরনা বহে কলকলে
বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর
নৃত্য করে শতদলে।
দখিন হাওয়া, পুবাল হাওয়া
বাজনা বাজায় জামতলে
পদ্ম হাসে শাপলা হাসে
কালোদীঘির কাল ঢলে।
চাঁদের হাসি, তারার হাসি
শুকতারাটা ঝলমলে
ফুলের বনে প্রজাপতি
খোকন হাসে খলখলে।
দোয়েল কোয়েল ফিঙে হাসে
হাসে দেখো বুলবুলি
বনের হরিণ মৌমাছিরা
ময়ূর হাসে প্রাণ খুলি।
খুশির বানে বাঁধ ভেঙেছে
আজকে কেন? যাই বলে-
ধনী-গরিব হাসছে কেন?
কারণ আজই ‘ঈদ’ বলে।

মা
যাকিউল হক জাকী

মায়ের কাছে যাব আমি
এইতো আমার সাধ
ঘুমের মাঝে চমকে উঠে
করছি আর্তনাদ।

মা তো আমায় ছেড়ে গেছেন
বছর কয়েক হায়
আর পাব না মায়ের আদর
মনটা কেঁদে যায়।

সকাল বিকাল রাখত খবর
ছেলের কী যে হলো
ভাল থেকো সুস্থ থেকো
কী খেয়েছো বলো!

এখন আমায় আর বলে না
কেমন আছ বাবা
নামাজ কালাম ঠিক রাখবে
সময়মত খাবা।

রবের কাছে তাইতো বলি
মা কেমন আছে
আমার মাকে শীতলছায়ায়
রেখো তোমার কাছে।

চাঁদের গাড়ি
রেদওয়ানুল হক

চাঁদের গাড়ি আসলো বাড়ি
জানান দিতে ঈদ
যাও ভুলে যাও দ্বন্দ্ব এবং
মন্দ যতো জিদ।

যাও ছুটে যাও সবার সাথে
গোলাপ বেলি জবার সাথে
আনন্দ আজ মেলছে ডানা
একসাথে এক হৃদ।

যাও হেসে যাও দলে দলে
আল্লাহ মহান বলে বলে
থাকবে না আর কোথাও কোনো
একটুখানি খিদ!

চাঁদের গাড়ি আসলো বাড়ি
জানান দিতে ঈদ
ভাঙতে হবে জীর্ণতা আর
অলস কালো নিদ।

এ দেশ আমার
মোস্তফা মাহাথির

বুকে আমার মিশে আছে সোঁদা মাটির ভাঁজ
এদেশ আমার মায়ের আঁচল সবুজ জায়নামাজ।
এদেশ আমার স্বপ্ন-খামার সুখ যে নিরন্তর
ছয়টি ঋতুর রূপে ভরা মাঠ-নদী-প্রান্তর।
গল্পে শোনা অনুভূতির হারানো শৈশব
কেউ কি জানো এইদিনে গেলো যে কই সব?
কোথায় গেলো গোল্লাছুট আর রাখালি সুর-গান
সবই এখন হৃদয়পুরের উথলে ওঠা বান।
এখন আমার চোখে নাচে ইশ্টেডিয়াম-মাঠ
জিপিএ-টা গোল্ডেন আর ভার্সিটিতে পাঠ।
আমার চোখের আলোক-লোকে ভাসে নদীর বাঁক
এদেশ আমার ভালোবাসা আনন্দ নির্বাক!
আমার মতো হাজার স্বপ্নে ওঠে কলরব
দেশ-মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে আনন্দ উৎসব।

তার পরিচয়
সোনিয়া সাইমুম বন্যা

দ্বাদশ চাঁদের জোছনা নহরে প্লাবিত আকাশ বুক,
সুরভিত শত স্বপ্নের কোলে দল মেলে হাসে সুখ।
বাতায়নে তাই দোল দিয়ে বুঝি দখিনা বাতাস বয়,
ধরণীর মাঝে অপার তিয়াসা পেতে তার পরিচয়।
ভেঙে ভেঙে পড়ে অন্ধকারের বন্ধ জমাট খিল,
মরীচিকা নয় মরু মাঝে আজ জোছনার ঝিলমিল।
পুষ্পিত সব কুড়িতে কুড়িতে সৌরভ বিনিময়,
কে এলো মরুতে, সবুজের গানে, স্বাপ্নিক নির্ভয়?
ধূলি ধূসরিত মরু আফতাব উতরোল কার টানে?
তামাম জাহান মঞ্জুর হয়ে ওঠে বুঝি তার শানে।
মরু ঈগলের ডানার নিস্বনে তারই আগমনি সুর,
সারা পৃথিবীতে চমকায় সেই দ্বাদশ চাঁদের নুর।
তার ভালোবাসা মুছে দেয় গ্লানি ঘুচে যায় পরাজয়,
তারই নামে পড়ে দরূদ ¯্রষ্টা, নিখিল বিশ্বময়।
তিনি প্রিয় নবী ধরণীর মাঝে কাক্সিক্ষত উপহার,
দ্বাদশ চাঁদের জোছনায় লেখা পরিচিতি মেলে তার।

ঈদ এসেছে
মাহবুব এ রহমান

বছর ঘুরে এলো ফিরে
রমজানেরই ঈদ
সেই খুশিতে হারিয়ে গেছে
সবার চোখের নিদ।

আনন্দ আর খুশির নহর
বইছে সবার মনে
আমির-ফকির সব ভেদাভেদ
ভুলছে এই ক্ষণে।

ছোট-বড় সবাই মিলে
খুশিতে গান গায়
নতুন জামা পরছে সবে
যাবে যে ঈদগায়।

ঈদ
এম. মিজান রহমান

বছর ঘুরে আসলো আবার আনন্দেরই ক্ষণ
খুশিতে আজ আত্মহারা খোকা-খুকুর মন।
সিয়াম শেষে আসলো ফিরে নতুন চাঁদে ঈদ
মিষ্টি সুরের আজানেতে ভাঙলো সবার নিদ।

ঈদ এলো তাই খুশির দিনে ধরলো খুশির সুর
ইচ্ছে মতো ঘুরে বেড়ায় হারায় অচিনপুর।
ঈদ এলো ভাই জাগলো সবাই নতুন আহ্বানে
হিংসা বিভেদ ভুললো সবাই মাতলো আলিঙ্গনে।

ঈদের দিনে বন্ধনে আজ থাকুক প্রীতি জড়িয়ে
গীতির সুরে হৃদয়পুরে আনন্দ যাক ছড়িয়ে।
ঈদের দিনে সবার প্রাণে আসুক নতুন আলো
সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে থাকবো সবাই ভালো।

ঈদের দিনে খুশির ক্ষণে প্রীতির দুয়ার খুলে
বর্ণালি এই ধরার থাকি সকল ব্যথা ভুলে।
সিয়াম শেষে ঈদ এলো আজ খুকুর কবিতায়
খুশির বানে গল্প-গানে নতুন আঙিনায়।
কবিতা-১২
পরম পাওয়া
নাওশিন মুশতারী

ভাবছো মিছে
দুঃখ কিসে
সঙ্গী যখন প্রভু,
যতই বাধা
কিংবা ধাঁধা
ভয় কি লাগে কভু?
দেখছো আমায়!
কে আর থামায়
সত্য যখন জানি,
রবের দেয়া
পরম পাওয়া
সকল হুকুম মানি।

 

ঈদ আনন্দ
এম তাহের উদ্দিন

ভোর হল দূর হল
মুসলিম সবাই ওঠরে,
ঘুম ছেড়ে দেখ সবাই
ঈদুল ফিতর এল রে।

নতুন জামা পরে সবাই
ঈদগাহেতে যাবো,
মুসলিম সবাই এক হয়ে
ঈদের নামাজ পড়বো।

ধনী-গরিব সবাই মিলে
কোলাকুলি করবো,
হিংসা বিদ্বেষ অহঙ্কার
সবই মুছে নেব।

 

ইচ্ছে আমার
মরিয়ম নেছা ফরিদা

ইচ্ছে করে হতে আমার, শিল্পের আঁকা ছবি
ইচ্ছে করে যাই যে হয়ে উদাস মনের কবি।
ইচ্ছে করে ভাগ করে নিই সবার মনের কথা,
ইচ্ছে করে ভাগ করে নিই সবার সকল ব্যথা।
ইচ্ছে করে প্রজাপতির সাথে কথা বলি,
ইচ্ছে করে ফুটি আমি হয়ে ফুলের কলি।
ইচ্ছে করে এক নিমিষে বিশ্ব ঘুরে আসি,
ইচ্ছে করে ফোটাই আমি সবার মুখে হাসি।
ইচ্ছে করে, হতাম আমি প্রজাপতির ডানা,
আমার ইচ্ছে করতে পূরণ কে করেছে মানা?

Share.

মন্তব্য করুন