ছোট্ট বন্ধুরা তোমরা কি বিশ্বের সবচেয়ে দামি উদ্ভিদের নাম জানো? তাহলে বলছি শুনো মন দিয়ে। বিশ্বে একাধিক দামি জিনিস রয়েছে। কখনো কখনো সাধারণ জিনিস এতোটাই অসাধারণ ও ব্যয়বহুল হয় যে তাদের মূল্য বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে পড়ে।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাছ
বিশ্বে অসংখ্য অমূল্য উদ্ভিদ রয়েছে। তেমনই এক অমূল্য উদ্ভিদের নাম ও পরিচয় আজ তোমাদের জানাবো। এটি এমন একটি উদ্ভিদ, যখন এটি গাছে পরিণত হয় তখন তার কাঠের মূল্য এত বেশি হয় যে, যার ১০ কেজি কাঠের মূল্য এক কোটি টাকা। আসলে এই গাছটির নাম আমেরিকান ব্ল্যাকউড, এটি বিরল প্রজাতি উদ্ভিদের মধ্যে একটি। এই উদ্ভিদটি একটি পূর্ণাঙ্গ বৃক্ষে পরিণত হতে সময় লাগে ৫০ বছর। এটি বিশে^র ২৬টি দেশে পাওয়া যায়। মূলত এটি আফ্রিকা মহাদেশের মধ্য ও দক্ষিণ অংশে বেশি পাওয়া যায়। এসব গাছের উচ্চতা প্রায় ২৫ থেকে ৪০ ফুট হয়ে থাকে। নিশ্চয়ই খুব অবাক হচ্ছো!
যেহেতু এই গাছের সংখ্যা সীমিত এবং তাই এর দাম আকাশচুম্বী। আমরা যে আফ্রিকান ব্ল্যাকউড গাছের কথা বলছি তার দাম প্রতি কেজিতে প্রায় ৮ লাখ টাকা অর্থাৎ এই কাঠের এক কিলোর দামে তুমি একটি ভালো ব্র্যান্ডের গাড়ি কিনতে পারবে। অথবা তুমি তোমার পরিবারের সাথে বিশ^ ভ্রমণে বের হতে পারবে। আফ্রিকান ব্ল্যাকউড কাঠ দিয়ে বেশির ভাগ দামি পারফিউম, সাবান তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তবে এই কাঠ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। কেবল ধনীরাই তাদের ঘরকে আরো সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতে এই কাঠের আসবাবপত্র ব্যবহার করেন।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুল
ফুলটির বৈজ্ঞানিক নাম এপিফিলাম অক্সিপেটালাম। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও দুষ্প্রাপ্য ফুল। আমাদের অঞ্চলের মানুষের কাছে এই ফুল ব্রহ্মকমল নামে পরিচিত। এটি পার্বত্য ক্যাকটাস জাতীয় ফুল। শোনা যায়, এই ফুল রাতে ফুটে ও ভোর হওয়ার আগেই ঝরে যায়। তাই এর আরেক নাম ‘কুইন অব দি নাইট’ কোন দাম দিয়েই এই ফুল কেনা যায় না। পুষ্পপ্রেমীদের কাছে এই ফুল অমূল্য রতন।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফল
জাপানে এক ধরনের সুস্বাদু ফল পাওয়া যায়। যার নাম ইউবারি মেলন (তরমুজ) এ ফল দেখতে খুব একটা সুন্দর না হলেও দাম কিন্তু সোনার চেয়েও বেশি। ফলটি বাইরে থেকে দেখতে অনেকটা তরমুজের মতো, স্বাদে কমলালেবুর কাছাকাছি আবার ভেতরটা দেখতে কিছুটা মিষ্টি কুমড়ার মতো। ফল গোত্রে এটাই হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ফল।
এ ফলের যা দাম তা দিয়ে অনায়াসেই এক টুকরো জমি বা ভারী সোনার গয়না কিনে ফেলা যায়। জানা গেছে এক কেজি ইউবারি তরমুজের দাম ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এ ফলটি জাপানে বিক্রি হয় এবং এটি শুধুমাত্র সমাজের শীর্ষ স্তরের ব্যক্তিরাই কিনে থাকেন। কারণ এর দাম সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলটি সহজে পাওয়া যায় না। এক বিশেষ বর্গের মানুষ ইউবারি মেলন বিক্রি করেন। আগ্নেয়গিরি সৃষ্ট মাটি এবং অতিরিক্ত বর্ষণ এ ফল চাষের উপযুক্ত পরিবেশ। বিলাসবহুল খাবার এবং পানীয় যেমন- বার্বন, শ্যাম্পেন কোবে বিফের মতো এটি এক বিশেষ পরিবেশের মধ্যে ইউবারি অঞ্চলে চাষ করা হয়। এ ফল বড় হতে সময় নেয় ১০০ দিন।
জাপানে এটাই একমাত্র দামি ফল নয়। এমন আরো বেশ কিছু ফল, সবজি পাওয়া যায় যেগুলোর দাম লাখ টাকার উপরে।