প্রাচীনকালের কাহিনি। এক রাজার বাড়িতে কাজ করতো বেড়াল ও ইঁদুর। বেড়াল রাজপ্রাসাদের কেয়ারটেকার। ইঁদুর হলো চাকর। রাজা ভীষণ রাগী আর একরোখা লোক। তিনি বেড়ালকে খুব পছন্দ করেন। রাজার খাদ্যভাণ্ডার দেখাশোনার দায়িত্ব বেড়ালের। দীর্ঘকাল ধরে বিশ্বস্ততার সঙ্গে এই কাজ করে আসছে সে। অন্যদিকে ইঁদুর করে ছোট চাকরি। সে অনেক গরিবও বটে।
একবার হলো কী, ইঁদুর ছোকরার এক চাকরানিকে খুব ভালো লেগে গেল। সেটাই কাল হলো তার। চাকরানি মেয়েটিকে সময় সময় নানা কিছু উপহার দিতে ইচ্ছে করে তার। কিন্তু হাতে টাকা-পয়সা নেই। অনেক ভেবেচিন্তে সে একটা দুষ্টু বুদ্ধি বার করলো। খাদ্যভাণ্ডারের ছাদ ফুটো করে ফেলল ইঁদুর। সেই ফোকর গলিয়ে নানারকমের শস্য চুরি শুরু করে দিল। সেগুলো চাকরানি মেয়েটিকে দিতে থাকলো।
মাসের শেষে ঘনিয়ে এল বিপদ। বেড়াল দেখে, ভাণ্ডারের অনেক শস্য গায়েব। এরকমটা তো কখনো হয়নি। ব্যাপার কী? রাজাকে হিসাব বুঝিয়ে দিতে হবে। বেড়াল পড়লো মহাভাবনায়। রাজা হিসাব চাইলেন। কাঁচুমাচু বেড়াল মুখ গোঁজ করে রইলে। এই খবর ছড়িয়ে পড়লো প্রাসাদময়। বেড়ালের এক বন্ধু গোপন খবর ফাঁস করে দিল। জানালো, সব সরিয়েছে ছোকরা ইঁদুর।
রাজার কাছে ইঁদুরের অপকর্ম বিষয়ে নালিশ করলে বেড়াল। রাজা রেগে আগুন। ডাকানো হলো চাকরানি মেয়েটিকে। তাকে বেদম মারপিট করা হলো। ইঁদুরের কী শাস্তি? সেই ভার তিনি দিলেন বেড়ালকে। তার আগে আরো একটা সিদ্ধান্ত নিলেন রাজা। তা হলো, ইঁদুর ও বেড়াল দু’জনেরই চাকরি নট। এই প্রাসাদে আর ঠাঁই নেই তাদের। বেড়াল ভাবছে, কী শাস্তি দেওয়া যায়? ইঁদুর ব্যাটাই যত নষ্টের গোড়া। ক্ষিপ্ত বেড়াল ইঁদুরকে ধরে এমন মারই মারলো যে, তাকে তক্ষুনি অক্কা পেতে হলো। মরে যাওয়ার পরেও রেহাই পেল না ইঁদুর। তাকে ভক্ষণ করলো বেড়াল।
এরপর থেকে বেড়াল যখনই কোনো ইঁদুর দেখে, তাকে মেরে না ফেলা পর্যন্ত শান্তি পায় না। সেই ধারা আদিকাল থেকে চলে আসছে এখন পর্যন্ত।

Share.

মন্তব্য করুন