ঈদের আগের কথা, রাতে ইশার নামাজ পড়ে একটু অলস ঘুরাঘুরির ইচ্ছা হলো, কিন্তু একা একা ঘুরাঘুরি আর বাঘের মুখে কলার ছড়ির সমান, নো ইন্টারেস্ট। হঠাৎ করে এক বন্ধু এসে বললো এই চলতো একটু ঘুরে আসি! আমি হেসে উঠে মনে মনে বলতে লাগলাম ‘খাপের খাপ আব্দুল্লাহর বাপ’ আমিও বললাম চল! একটু হাঁটাহাঁটির পর ফুরফুরে মন নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলাম।
বাড়ির গেটে ঢুকতে না ঢুকতেই ছাগলের ভ্যা ভ্যা আওয়াজ শুনতে পেলাম, তার ভ্যা ভ্যা আওয়াজে পুরো বাড়ি ভ্যাভ্যান্নিত, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট কাকা বললো! তোর বোনের আকিকা দিবো বলে কিনে আনলাম, ছাগলটা দেখতে বেশ সুন্দর গায়ের রঙ গন্দম বর্ণ, মাঝে মাঝে সাদা ফুটা, উঁচু লম্বা ও বেশ, মাথায় দু’টি কুঁকড়ানো শিং পিছন থেকে দেখতে যেন হরিণের মতো আর সামনে থেকে দেখতে এক নবাব ছাগল।
বাস্তবতাও এমন সে শুধু দেখতেই নবাব নয় সভাবেও নবাব, গাছের কচিপাতা দিলে নাক সিটকায় আর বুড়ো পাতা দিলে কড়মড় করে খায়,
ঘাস খায় না তাতে ময়লা থাকে বলে, খায় না কচি পাতা দন্ত দেশে টের পায় না বলে, গমের ভুসি আর ভাত খেতে বড়োই পছন্দ করে তবে তার গর্দান মুবারক নিচে করে খাবে না, টুল বা উঁচু পিঁড়ে দিয়ে পবিত্র মুখ শরিফের কাছাকাছি করে দিতে হবে, নয়তো নবাবজাদা খাবেনই না।
ও আর চলাফেরা, তাতো আরো আশ্চর্য! বৃষ্টির দিনে কাদা তো থাকবেই, কিন্তু নবাবজাদা মনের ভুলেও তা পাড়াতে রাজি নন, বরং তার পা উঁচু করে সিগন্যাল করে আমি কাদার উপর থেকে হাঁটতে রাজি নই। শোয়ার কথা আর কী বলবো? মাটিতে শয়ন করতে মোটেই পছন্দ করে না সিঁড়িতে ভালো মানের ছালাগালিচা বিছিয়ে দিলে তারপর সিঁড়িতে রাজপুত্রের সিংহাসনে টেক লাগানোর মতো টেক লাগিয়ে শয়ন করে। তবে তার এই বিচিত্রতা দেখে আমরা সবাই আনন্দ উপভোগ করি কেউই বিরক্ত বোধ করি না। কিন্তু ভাবি মানুষের মতো ছাগলেরও রুচি-বোধ আছে কি!

Share.

মন্তব্য করুন