পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত থেকে ফিরে এসে সাব্বিরের সে কী আনন্দ! আনন্দে সে লাফালাফি করতে লাগলো। বকুল বেগম ফ্রেশ হয়ে বেডরুমে এসে বসলেন।
মাইনুল ইসলাম টিউশনি শেষ করে এইমাত্র বাসায় ফিরেছেন। তিনি স্ত্রী বকুল বেগমকে উদ্দেশ করে বললেন,
– তোমাদের ঘুরাঘুরি কেমন হয়েছে? সাব্বিরকে দেখে তো মনে হচ্ছে ও খুব মজা পেয়েছে!
বকুল বেগম একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,
– ভালোই। তবে দুঃখের বিষয় আজ এমন বন্ধের দিনেও তোমাকে আমরা পাশে পেলাম না।
– অফিসের কাজের জন্য গত কয়েকদিন ধরে টিউশনিতে ঠিকমতো যেতে পারিনি। তাই আজ বন্ধের দিন গিয়ে পুষিয়ে দিয়েছি। তুমি রাগ করো না।
– ঠিক আছে, তোমাকে আর ন্যাকামো করতে হবে না। এরপর কিন্তু এমন এক্সকিউজ চলবে না। বলে দিচ্ছি।
– আচ্ছা ঠিক আছে। আর এমনটি হবে।
– মনে থাকে যেনো। এখন যাও ফ্রেশ হয়ে নাও। রেডি করছি।
– ধন্যবাদ।

পরদিন সকালে অফিসে এসে বসতেই মাইনুল ইসলামের মোবাইলে কল আসে।
– ভাইয়া, আমি মনোয়ার।
– কিরে কেমন আছিস তুই?
– আলহামদুলিল্লাহ ভালো। কিন্তু তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।
– বল।
– আমি কলেজ থেকে শিক্ষা সফরে যেতে চাই। আমার বন্ধুরা সবাই যাচ্ছে।
– কত টাকা লাগবে?
– তুমি এ মাসের হোস্টেল খরচের সাথে শুধু পাঁচ হাজার টাকা বাড়িয়ে পাঠিও।
– আচ্ছা, আমি পাঠিয়ে দেবো। এ নিয়ে চিন্তা করিস না, ভাই। মন দিয়ে পড়াশোনা করিস কিন্তু।
– আচ্ছা, ভাইয়া।

দেখতে দেখতে কুরবানির ঈদ ঘনিয়ে এলো।
একদিন বকুল বেগম রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এসে ব্যস্ত গলায় স্বামীকে লক্ষ করে বললেন,
– এই শোন, আমাদের বাজার শেষ। ক’দিন পরই তো কুরবানির ঈদ। এবারের ঈদে আমাদের ভাগ বাড়িয়ে দিও। আরেকটা কথা। তোমাকে না জানিয়ে গতকাল আমি একটি ডিপফ্রিজের অর্ডার করে এসেছি। কী ভালো হয়েছে না?
স্ত্রীর কথায় মাইনুল ইসলাম নির্বাক হয়ে অপলক চোখে তাকিয়ে থাকেন কিছুক্ষণ।
এরপর স্বামীর চোখের সামনে হাতটা নেড়ে নেড়ে কৌতুক চোখে তাকিয়ে বকুল বেগম বললেন,
– এই, তুমি কোনো কথা বলছো না কেনো? আমার কথায় কি তুমি রাগ করেছো? দেখো একটা ডিপফ্রিজ আমাদের অনেক আগে থেকে প্রয়োজন ছিল। আজ নয় কাল করতে করতে আর কেনা হলো না। এ যুগে শুধু নরমাল একটা ফ্রিজে কি হয়? পাশের বাসার ভাবীদের তিনটা ফ্রিজ আছে, বুঝেছো?
– তাই বলে এখন! সামনে ঈদ। কতো কী খরচ! তার উপর ফ্রিজ। বাড়িতে আমার বাবা-মা আছেন। তাদেরও ঈদ। সব মিলিয়ে আমার যে অবস্থা তা তোমার ভাবা উচিত ছিল। ছোটোখাট চাকরি করি। মাস শেষে যে বেতন পাই তা দিয়ে সংসার খরচ চালাতে যেখানে হিমশিম খাই সেখানে এমন বাড়তি চাপ না দিলেও পারতে।
– সামান্য একটা ফ্রিজের জন্য এতোগুলো কথা শুনতে হবে ভাবিনি। বলি ফ্রিজ কি আমি আমার বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি? তোমার সংসারেই তো থাকছে।
– তুমি আবার রাগ করছো কেনো? আমি কি ওসব ভেবে বলেছি? শুধু সময়টা বিবেচনা করতে বলেছি। বেতন আর বোনাস মিলে যে টাকা আমার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে তাতে তোমার সবকিছু দিয়ে কুরবানি দিতে পারব কিনা ভাবছি।
– ও নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। ফ্রিজের টাকা আমি বড় আপার কাছ থেকে ধার নিয়ে নেবো। আগামী মাসে দিলেই চলবে।

স্ত্রীর কথায় দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মাইনুুল ইসলাম আস্তে করে বললেন,
– তা-ই। ঠিক আছে। তুমি যা ভালো মনে করো।

এ কথা বলে মাইনুল ইসলাম উদাসী মনে ঘরের বাইরে পা বাড়ান। বাইরে বিস্তৃত খোলা আকাশ। একটু আগে যেখানে তার শরীর থেকে প্রায় দম বেরিয়ে যাচ্ছিল এখন বাইরের মৃদু হাওয়া প্রাণের সঞ্চার করেছে যেনো। মাইনুল ইসলাম যতোই এগুচ্ছেন তার কাছে মনে হচ্ছে প্রকৃতি তাকে কাছে ডেকে বলছে, ‘এতো কী ভাবছো! যা হবার তা তো হবেই। ওসব বাদ দাও। নিজেকে আমার কোলে মেলে ধরো। জীবনের পরম সৌন্দর্যকে উপভোগ করো। দেখবে জীবন কতো সুন্দর!
মাইনুল ইসলাম প্রকৃতির এমন উদাত্ত আহ্বানে এক পা দুই পা করে এগিয়ে যায়। এরই মধ্যে প্যান্টের পকেটে থাকা মোবাইল ফোনটা বেজে ওঠে। ঝটপট কানের কাছে ধরতেই ওপার থেকে ভেসে আসে,
– হ্যাঁ, কে? মাইনুল? কেমন আছিস, বাবা?
– হ্যাঁ, আমি বাবা। ভালো আছি, তো তোমাদের কী খবর?
– আমরাও ভালো আছি। কিন্তু—।
– আবার কিন্তু কী, বাবা?
– কী করে যে তোকে কথাটা বলি!
– সমস্যা নেই, বাবা। বলে ফেলো।
– ঈদে তোর অনেক খরচ। আমি জানি তোর একজনের ইনকাম। তার ওপর এখানে ও সেখানে ঈদ। সবমিলিয়ে তোর বর্তমান অবস্থাও ভালো থাকার কথা নয়। তবু তোকে না বলে পারছি না। তোর ছোটবোনের শ্বশুরবাড়ি থেকে বারবার চাপ আসছে। বিয়ের সময় ওকে যে এক ভরি সোনা দেয়ার কথা ছিল সেটা এবারই দিতে হবে। বাবা, আমি তোর দেয়া প্রতি মাসের টাকা থেকে দু’ হাজার করে প্রতি মাসে রেখে দিতাম। আজ দেখলাম ৫৮ হাজার টাকা হয়ে গেছে। এখন সোনার দামও বেশি। বলি কী তুই যদি এবার কিছু টাকা বাড়িয়ে দিতি তাহলে এই ঝামেলাটা থেকে মুক্তি পেতাম।

মাইনুল ইসলাম কোনো কথা না বলে আনমনে ভাবতে লাগলেন। এখন কী হবে! এতো টাকা আমি কোথায় পাব! কোনো তো উপায় দেখছি না।
ছেলের কোনো প্রতি-উত্তর না পেয়ে ওপার থেকে সিরাজুল ইসলাম আবার বললেন,
– হ্যালো! কথা বলছিস না কেনো? হ্যালো, আমাকে কি শোনা যাচ্ছে না?
মাইনুল ইসলাম স্বাভাবিক হয়ে আস্তে করে জবাব দিলেন,
– না মানে ইয়ে, বাবা। ও নিয়ে তুমি চিন্তা করো না। আমি দেখি কী করতে পারি!
– না, পারলে থাক, বাবা। তোর বোন হয়তো আরো কিছুদিন ওদের বকা খাবে। পরে সব ঠিক হয়ে যাবে। তুই বেশি টেনশন নিস না। আমি বুঝি, বাবা। তোর একজনের ইনকামের ওপর আমাদের সবার রিজিক। শেষে তোর যদি কিছু হয়ে যায়!
– না, বাবা এভাবে বলছো, কেনো? আমি তো তোমারই সন্তান। তুমি সারাজীবন নিজে খেটে খেটে নিজের বাবা-মা, ভাইবোনের মুখে আহার জুগিয়েছিলে। তুমিই তো শেখালে নিজকে পুড়ে পুড়ে কিভাবে আপনজনের মুখে হাসি ফোটাতে হয়। এ নিয়ে তুমি কোনো চিন্তা করো না। আমি যেভাবে পারি ম্যানেজ করব।
– ঠিক আছে, বাবা। ভালো থাকিস।
– তুমিও ভালো থেকো, বাবা।
মোবাইলের কল কেটে যেতেই মাইনুল ইসলাম আবার বাসার উদ্দেশে রওনা দিলেন। কদমে কদমে হিসাব করতে লাগলেন। সবমিলিয়ে বেতন আর বোনাস, টিউশনি মিলে ৫১ হাজার পাবো। কুরবানির জন্য বিশ বিশ চল্লিশ হাজার টাকা। আর বাকি থাকে এগারো হাজার টাকা। কমপক্ষে আরও ত্রিশ হাজার টাকা দরকার। কী যে করি!
বাসায় পৌঁছতেই একমাত্র ছেলে সাব্বির দৌড়ে এসে বাবার গলা জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো,
– আব্বু, সবাই গরু কিনে ফেলেছে। আমাদের গরু কিনবে না?
ছেলের হাত দুটো ধরে বুকে টেনে নিয়ে মাইনুল ইসলাম বললেন,
– কিনব, বাবা।
– কখন কিনবে?
– আর কয়েকদিন পর।
– ঈদের তো আর বেশি দিন বাকি নাই!
– তাতে কী হয়েছে? আমরা তার আগে গরু কিনব। এখন বলো এই ঈদে তোমার কী চাই?
– আমার জন্য একটা সুন্দর লাল জামা কিনবে। আর হ্যাঁ, গরুও কিন্তু লাল রঙের হওয়া চাই।
– ঠিক আছে, বাবা।

ঘড়িতে রাত বারোটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিট। সাব্বিরকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে স্বামীর পাশে শুয়ে পড়েন বকুল বেগম। তখনও মাইনুল ইসলাম সটান হয়ে শুয়ে আছেন। রাত দশটায় শুয়েছেন। রাতের খাবার খাওয়ার জন্য কতো করে ডেকেছেন বকুল বেগম। কিন্তু খিদে নেই বলেই শুয়ে আছেন। শুয়ে থাকলে কী হবে! তার চোখে ঘুম নেই। একটু পরপর খাটের ওপর এপাশ-ওপাশ করছেন। দেখে বোঝা যাচ্ছে- ভীষণ টেনশনে আছেন।
বকুল বেগম বেশ কয়েকবার তার কাছে যেতে গিয়েও ফিরে এসেছেন। তিনি জানেন, পুরুষ মানুষের মন মেজাজ ভালো থাকলে কারোর জন্য নিজের জান পর্যন্ত দিয়ে দিতে পারে। আবার উত্তেজিত হয়ে গেলে মুহূর্তে সবকিছু ওলট-পালটও করে দিতে পারে।

রাত একটা। স্বামীর দিকে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দিয়ে কাছে যেতেই মাইনুল ইসলাম বলে উঠলেন,
– একটু দূরে থাকো। এখন আমার মন ভালো নেই।
– কেনো কী হয়েছে?
– ও তুমি বুঝবে না।
বকুল বেগম অভিমানী কণ্ঠে বলতে লাগলেন,
– তোমার সংসারে এসে আমার জীবনটাই শেষ হয়ে গেছে। না পেয়েছি টাকা-কড়ি। না পেয়েছি স্বামীর সোহাগ। যখনই তোমার কাছে কিছু চেয়েছি নিজেকে ভিখারির মতো মনে হয়েছে। আবার একটু উষ্ণতা চাইতে অপমানিত হয়েছি।
– এমন করছো কেনো?
– কী আর করব? সবই আমার কপাল। কতো ভালো ভালো প্রস্তাব এসেছিল। কী বুঝে বাবা-মা তোমার মতো রোবটের সাথে আমায় বেঁধে দিলেন। এখন না পারছি পালিয়ে যেতে, না পারছি থাকতে।
– এতোই যখন ভাবছো তাহলে আমার জীবন থেকে চলে যাও না। রোবটের সাথে থেকে কী লাভ? চলে গেলে তুমি নিজে ভালো থাকবে। হয়তো আমিও ভালো থাকব।
– কী বললে! আমি চলে গেলে তুমি ভালো থাকবে। আচ্ছা, ঠিক আছে।
এই কথা বলে বকুল বেগম আঁচলে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে লাগলেন। মাইনুল ইসলাম কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে রইলেন। মাঝে মধ্যে স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে তার বলতে ইচ্ছে করছে,
– বকুল, একটু আগে তোমাকে যা বলেছি তা আমার মনের কথা ছিল না। জীবন সংসারের টানাপড়েনের মাঝে পড়ে আমি কূলহারা মাাঝির মতো শুধু উদ্দেশ্যহীনভাবে বৈঠা বাইছি। তুমি ঠিকই বলেছো আমি মানুষ নই; আস্ত একটা রোবট।

রাত যতই গভীর হচ্ছে বকুল বেগমের মন ততই শক্ত হচ্ছে। সকালে সাব্বিরকে নিয়ে বাপের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিতেই মাইনুল ইসলাম তার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। অসহায়ের মতো বকুল বেগমের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কিছু বলতে গিয়ে আবার থেমে যান। বকুল বেগম রাগত স্বরে বলে উঠলেন,
– সামনে দাঁড়ালে কেনো? সরে যাও। তোমাকে মুক্ত করতে আমি চিরদিনের জন্য এ বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছি। আর কোনোদিন তোমায় বিরক্ত করতে আসব না। সাব্বিরকেও নিয়ে যাচ্ছি। তোমার পথে আর কোনো কাঁটা থাকলো না। এবার তুমি নিশ্চিন্তে জীবনযাপন করতে পারবে।
মাইনুল ইসলাম অশ্রুভেজা চোখে সাব্বিরের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। সাব্বির দৌড়ে এসে বাবার গলা জড়িয়ে ধরে। ছেলেকে আদর করে আবার বলতে লাগলেন,
– আমাকে ছেড়ে যেও না। আমি তোমাদের সবাইকে ভালোবাসি।
পাশ থেকে বকুল বেগম বলে উঠলেন,
– না, তুমি আমাদের ভালোবাসো না। বলো একসময় ভালোবাসতে। এখন তো সারাক্ষণ নিজেকে নিয়ে পড়ে থাকো। গতকাল সন্ধ্যায় সামান্য একটা ফ্রিজের জন্য কতগুলো কথা শুনিয়ে চলে গেলে। রাতে না খেয়ে শুয়ে পড়লে। এতো করে সাধলাম। তুমি খেলে না। বিছানায় শুয়ে একা একা কী যেনো ভাবলে। সেই দশটা থেকে রাত একটা নাগাদ আমার দিকে একবারও ফিরে তাকালে না। তবু নিজের সব রাগ ছেড়ে তোমার কাছে গেলাম। কিন্তু তুমি আমার সাথে শুধু শুধু দুর্ব্যবহার করলে।
এই কথা বলে বকুল বেগম আবার কেঁদে ওঠেন।

মাইনুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন,
– আসলে তোমরা কেউই আমাকে বুঝতে চাওনি। কুরবানির ঈদ। অনেক খরচ। তার উপর তোমার ডিপফ্রিজ কেনা। এতো এতো চাপের মাঝে বাড়ি থেকে আবার টাকার চাপ। আমেনার শ্বশুরবাড়ি থেকে সোনার গয়নার জন্য নাকি চাপ দিচ্ছে। সেখানে গয়না বানানোর জন্য কমপক্ষে আরও ত্রিশ হাজার টাকা পাঠাতে হবে। ওদিকে মনোয়ারের হোস্টেল খরচের সাথে শিক্ষা সফরের জন্য অগ্রিম ফি পাঠাতে হবে। কিন্তু এতো টাকা আমি কোথায় পাবো? এসব নিয়ে গতকাল আমি খুব টেনশনে ছিলাম।

এরপর দু’চোখের জল ছেড়ে দিয়ে মাইনুল ইসলাম স্ত্রীর দিকে হাত বাড়িয়ে দিতেই বকুল বেগম তার বুকের ভেতর ঠাঁই করে নিলেন।
মাইনুল ইসলাম আবার বললেন,
– চারিদিকের চাপে আমি দিনদিন রোবটের মতো হয়ে গেছি। একথা ঠিক। কিন্তু আমারও একটা মন আছে। আমারও ইচ্ছে করে তোমাদের নিয়ে একটু ঘুরে আসি। জীবনের সোনালি সুন্দর মুহূর্তগুলো উপভোগ করি। কিন্তু সারাক্ষণ নানান টেনশনে পড়ে তা আর হয়ে ওঠে না। মনটা একটু শান্তি খুঁজতেই আরেকটা টেনশন এসে যায়।

বকুল বেগম স্বামীর চোখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলতে লাগলেন,
– আসলেই তো। আমরা কেউই এতোদিন তোমার বিষয়টি খেয়াল করিনি। শুধু নিজেদের যখন যা প্রয়োজন তাই চেয়ে নিয়েছি। তুমি কোথা থেকে ম্যানেজ করেছো তা ভাবিনি। দিন শেষে তুমি ঠিকই জোগাড় করে দিয়েছো। আমরা শুধু তোমাকে ভুলই বুঝে গিয়েছি। তোমার এই রোবোটিক আচরণের জন্য অনেকাংশে আমরা দায়ী। তুমি আমাকে ক্ষমা কর। আর কোনোদিন তোমার মনে কষ্ট দেবো না। আজ থেকে সংসারের জন্য যা করব আমরা দু’জনে আলোচনা করেই করব।
স্ত্রীর কথায় এতোক্ষণে মাইনুল ইসলামের মুখে হাসি ফোটে ওঠে। সাব্বিরও ততক্ষণে বাবা-মায়ের বুকের ভেতর জায়গা করে নেয়।

Share.

মন্তব্য করুন