সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, তোমাদের জানাই অনেক অনেক শুভকামনা। আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী হিসেবে নিশ্চয়ই তোমাদের প্রস্তুতি পরিসমাপ্ত হয়েছে। এই পর্যায়ে এসে নিজের মনোবল বাড়ানোর জন্য এবং প্রশ্নপত্র হাতে নিয়ে সন্তুষ্টচিত্তে পরীক্ষা সমাপ্ত করার জন্য কিছু কথা বলতে চাই। খুবই অল্প সময় বাকি আছে পরীক্ষার। প্রথম পরীক্ষার জন্য দু’দিন বাকি রেখে দিনগুলোকে প্রতিটি বিষয়ের জন্য বরাদ্দ করে নাও; যেমন ইংরেজির জন্য দুদিন, গণিতের জন্য দুদিন অথবা একদিন। তোমার সুবিধা মনে হলে একই সাথে দুটি বিষয় নিতে পারো। তবে যে বিষয়ে তোমার ভীতি কাজ করে অবশ্যই সেই বিষয়কে প্রাধান্য দিতে হবে। সময় কম বিধায় বরাদ্দকৃত দিন কোনোমতেই নষ্ট করা যাবে না। রিভিশনের প্রথম গুরুত্ব মূল পাঠ্যবই। যেহেতু এই অল্প সময়ে পাঠ্যবই পুরোটা পড়া সম্ভব নয়, সেহেতু যে অংশগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোতে মনোসংযোগ করো। মনে রেখো এই রিভিশন তোমার সকল স্তরের প্রশ্নের জন্য বিশেষত জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তরে খুবই সাহায্য করবে।
বর্তমান পরীক্ষা পদ্ধতিতে প্রশ্ন কমন পড়ার বিষয়টি নেই। অতএব বিষয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের ‘কি পয়েন্ট’কে গুরুত্ব দাও। উদাহরণ স্বরূপ বাংলা বিষয়ে কোনো গদ্য চরিত্র নির্ভর : সে ক্ষেত্রে ওই চরিত্র নির্ভর বৈশিষ্টগুলোকে গুরুত্ব দাও। অনুরূপ দেশাত্মবোধক কবিতায় দেশত্মবোধকে গুরুত্ব দাও। যদি তোমার কাছে শ্রেণিকক্ষের বিষয় শিক্ষকের পাঠপ্রদানের কথাগুলো বা লেকচার টুকে রাখা থাকে সেগুলো অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে পড়ো। প্রতিটি বিষয়ে বিষয় শিক্ষকের নির্দেশনা সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ।
পড়ার পাশাপাশি লেখার বিষয়টিতে মনোযোগ রাখো। শ্রেণিকক্ষের কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে দ্রুত লেখার অভ্যাসটি কমে আসতে পারে। ঘড়ি ধরে এক একটি প্রশ্নোত্তর লিখে নিজেকে যাচাই করে নাও। পরীক্ষায় ব্যবহারের জন্য কোনো মতেই নতুন ধরনের কলম ব্যবহার করবে না। তুমি যে কলম দিয়ে লিখতে অভ্যস্ত সেই কলম দিয়েই পরীক্ষা দিতে চেষ্টা করবে। তবে একাধিক কলম সাথে রাখবে।
ওএমআর শিট খুব মনোযোগ দিয়ে ভরাট করবে, সম্পূর্ণভাবে ভরাট করবে। বহু নির্বচনী পরীক্ষায় প্রতিটি প্রশ্ন নম্বরের বিপরীতে ওএমআর-এর বৃত্ত ভরাট করছো কি না লক্ষ রাখবে। রচনামূলক উত্তরের খাতা পরিচ্ছন্ন রাখবে। ‘…নম্বর প্রশ্নের উত্তর’ এভাবে লিখে নিচে আন্ডারলাইন করবে। প্রতিটি প্রশ্নোত্তর শেষ হলে সমাপ্তি চিহ্ন বা একটি সোজা দাগ দেবে। একটি প্রশ্নোত্তরের পরে আরেকটি প্রশ্নোত্তর লিখতে হলে অন্তত তিন থেকে চার আঙুল ফাঁক রাখবে।
পরীক্ষার শেষে রিভিশন দিতে সময় না পেলেও একবার চোখ বুলিয়ে নেবে সকল উত্তর দিয়েছো কি না এবং খাতা বাঁধা অথবা পিনআপ ঠিকভাবে করেছো কি না। পরীক্ষার সরঞ্জাম যথা এডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, কলম ইত্যাদি ঠিকভাবে গুছিয়ে নেবে।
আরেকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো তোমার শরীর ও মন। এখন আহার এবং প্রয়োজনীয় বিশ্রাম ঠিকভাবে নেবে, কারণ পরীক্ষায় সুস্থতা খুবই জরুরি। পরীক্ষায় মনোসংযোগ করবে কিন্তু ভয় পাবে না। তোমাদের জন্য আমার পক্ষ থেকে অশেষ দোয়া ও আশীর্বাদ। পরিশেষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় বলতে চাই- ‘মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়’।

Share.

মন্তব্য করুন