ছোট্ট বন্ধুরা! এমন একটা সময়ের কথা মনে কর যখন হরফ তৈরি হয়নি। কোন বর্ণ বা ফন্ট ছিল না। ছিল না কোন শব্দ বা উচ্চারণ! হ্যাঁ, আমি প্রাগৈতিহাসিক যুগের কথা বলছি। মানে ইতিহাস লেখার আগের যুগ। ইতিহাস কিভাবে লিখবে, লেখার অক্ষরই তো ছিল না।
এখন তোমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, তাহলে কিভাবে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করতো? কিভাবে মায়ের কাছে মনের কথা, চাহিদার কথা, আবদার জানাতো? মায়েরা আবেগ অনুভূতি জানতো? এখন মা তোমাদেরকে কত রকম গল্প, ছড়া, কবিতা শুনায়, ঘুমপাড়ানির গান গেয়ে ঘুম পাড়ায়। তখন কী করতো? তখন আকার-ইঙ্গিতে কথা বলতো। বোবা মানুষের মতো। হাত দিয়ে দেখিয়ে, বোবা, বাক-প্রতিবন্ধীরা যেমন হাত দিয়ে ইশারা করে, আর মুখে অ-অ শব্দ করে। এভাবেই চলে, বহু যুগ। পরবর্তী সময় এর কিছুটা উন্নতি হয়। ছবি এঁকে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে। মনে কর, হরিণ শিকারে যাবে। হরিণের ছবি এঁকে বন্ধুদেরকে দেখাতো। পাখি শিকারে যাবে জঙ্গলে, জঙ্গলে পাখির ছবি এঁকে দেখাতো। মাছ ধরতে যাবে সমুদ্রে, মাছ এঁকে বন্ধুদেরকে দেখাতো।
একটি শিকারের ঘটনা তারা এভাবে প্রকাশ করলো :
তিন বন্ধু হরিণ শিকারে গেল। ছবি আঁকলো তিনটা মানুষের ছবি। তীর হাতে তারা পাহাড়ে গেল তারা তিনটা হরিণ শিকার করলো তিনদিন পাহাড়ে ছিল। তিনদিন পর তারা বাড়ি ফিরলো। এমনিভাবে তারা শিকারের ঘটনা লিখে রাখলো।
একবার বাপ-বেটা জঙ্গলে গেল শিকারের উদ্দেশ্যে। ঘরে খাবার নেই। বাবা হঠাৎ জঙ্গলে একটি হরিণ দেখতে পেল। হরিণটিও বেশ নাদুশনুদুশ। খেতে বেশ সুস্বাদু হবে। কিন্তু ভুলক্রমে শিকারের অস্ত্রটা আনেনি। এখন কী করবে চিন্তায় পড়ে গেল। হঠাৎ বুদ্ধি এলো, সে গাছের পাতা ছিঁড়ে নিলো। কাছেই কাঁটাঅলা একটা গাছ ছিল। গাছ থেকে একটা কাঁটা ভেঙে নিলো এবং কাঁটা দিয়ে পাতার মাঝে, তার লম্বা বাঁশের আগায় ত্রিভুজ আকৃতি শক্ত পাথর ঘষে সুচালো করে সে বর্শা তৈরি করে। সেই বর্শার ছবি এঁকে ছেলের হাতে দিয়ে বাড়ি যেতে বললো। ছেলে বাড়ি গিয়ে মায়ের হাতে দিলো। মা পাতার মাঝে ছবিটা দেখেই বুঝতে পারলো। ঘরের কোনায় রাখা বর্শার ছবি। বর্শাটা ছেলের হাতে দিলো। ছেলে বর্শা নিয়ে দৌড়ে এসে বাবার কাছে দিলো। বাবা হরিণটা শিকার করে বাড়ি নিয়ে এলো এবং মহা আনন্দে পুড়িয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এক সাথে বসে মজা করে খেলো। মানে আকার-ইঙ্গিতের পরে ছবি এঁকে মনের ভাব প্রকাশ করতো।
তখনকার মানুষ, চাষাবাদ করতে বা ফসল ফলাতে জানতো না। চারিদিকে বন-জঙ্গল, নদী-নালা, সমুদ্র, পাহাড়-পর্বত। জঙ্গলে বন্যপ্রাণী, হরিণ, বাইসন, জেব্রা, ঘোড়া ইত্যাদি। গাছে গাছে নানারকম ফল, এইগুলোই তাদের খাবার। তারা বন্য প্রাণী শিকার করে আগুনে পুড়িয়ে খেত।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের বিখ্যাত শিল্পী জয়নুল আবেদীনের একটি ঘটনা আছে। তিনি একবার স্পেনে গিয়েছিলেন। তিনি স্প্যানিস ভাষা জানতেন না। হোটেলে খেতে গেলেন, কিন্তু খাবারের কথা বলতে পারছেন না। আবার হোটেলবয় ইংরেজি না জানায় বুঝাতেও পারছিলেন না। বোবা মানুষের মতো আকার-ইঙ্গিতে অনেক বুঝানোর পরও ব্যর্থ হলেন। এদিকে পেটের ক্ষুধায় জীবন যায়। কী করবেন, বুঝতে পারছিলেন না। হঠাৎ তার মাথায় চিন্তা এলো তিনি পকেট থেকে ড্রইং খাতা এবং পেন্সিল বের করে এঁকে দেখালেন। গরুর গোশত, সবজি, মাছ, মুরগি, ডিম, ভাত, চা, পানি খাবেন। আঁকার সাথে সাথে হোটেলবয় গরুর গোশত, মাছ, ডিম, সবজি, ভাত, পানি, চা এনে হাজির।
ছবির গুরুত্বটা নিশ্চয়ই বুঝেছ। ছবি হল, আন্তর্জাতিক ও সার্বজনীন ভাষা। যা যেকোনো ভাষার মানুষ সহজে বুঝতে পারে। শুধু তাই নয়, যে লেখাপড়া জানে না, সেও বুঝতে পারে।
বন্ধুরা, তোমরা হয়তো অনেকেই জান, মিসরকে মানব সভ্যতার দোলনা বলা হয়। পৃথিবীর সভ্যতা এখান থেকেই শুরু। এখন হয়তো বলবে সভ্যতা কী? সংস্কৃতির চরম উন্নতিই হলো সভ্যতা। আর সংস্কৃতি হলো ইংরেজিতে ‘কালচার’। আরবিতে ‘তাহজিব-তমদ্দুন’, মানুষের জীবনাচারের ক্রমোন্নতি, সভ্য হওয়া, মানুষের চালচলন, আচার-আচরণে মার্জিত হওয়া, পশু প্রবৃত্তি, হিংস্রতা, অমানবিকতা দূর করে মানবিক হওয়া, পরস্পর সৌহার্দ্যতা, একজনের বিপদে অন্যজন এগিয়ে আসা, মিলেমিশে বাস করা এবং সার্বিকভাবে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাওয়া। মিসরেই প্রথম সভ্যতা গড়ে ওঠে। পৃথিবীর প্রথম চাষাবাদ শুরু হয় মিসরেই। নীল নদকে কেন্দ্র করেই এই সভ্যতা গড়ে ওঠে। নীল নদের পানি সেচ করেই শুরু হয় চাষাবাদ, বীজ বপন, ফসল ফলানো। নীল নদের জলপথে ভিন্নদেশের লোকজন ব্যবসা-বাণিজ্য করতে এখানে আসতো। সে সূত্রে গড়ে ওঠে বাণিজ্য কেন্দ্র। বন্ধুরা, তোমরা হয়তো জানো, যে জায়গায় রাস্তাঘাট যত উন্নত সে জায়গার মানুষও তত সভ্য।
তোমরা হয়তো জানো, পথ বা রাস্তা হলো তিনটি। জলপথ, স্থলপথ বা সড়কপথ ও আকাশপথ তখন তো আকাশপথ ছিল না। ছিল না সড়কপথও। শুধু ছিল জলপথ। নদী ও সমুদ্রপথই ছিল সচল। বড় বড় নৌকায় পাল তুলে বাতাসকে কাজে লাগিয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে বাণিজ্য করতে যেত। ‘কলম্বাস’ আমেরিকা আবিষ্কার করতে গিয়েছিল এই জাহাজ দিয়ে জলপথেই। অর্থাৎ যে কথাটি বোঝাতে চাচ্ছি তা হলো, পৃথিবীর সভ্যতা মিসরেই গড়ে ওঠে। পৃথিবীর সাতটি আশ্চর্য জিনিসের মধ্যে মিসরে দুইটি আজও পৃথিবীর মানুষের কাছে বিস্ময় হয়ে আছে। একটি মিসরের পিরামিড, অপরটি ফারাউদের ‘মমি’। কাছাকাছি পাথুরে পাহাড় না থাকলেও এত বড় বড় পাথর কোথা থেকে কেমন করে এনে, ক্রেন না থাকার পরও একটি পাথরের উপর আর একটি পাথর কি করে বসালো! আর একটি হল কেমিক্যাল বা ঔষধ দিয়ে লাশ সংরক্ষণ করা। যে কারণে হাজার হাজার বছর ধরেও লাশগুলো সংরক্ষিত আছে। পচন ধরেনি, নষ্টও হয়নি।
মিসরীয়রা বিশ্বাস করতো মৃত্যু হচ্ছে একটা দীর্ঘমেয়াদি ঘুম। একদিন মৃতদের ঘুম ভাঙবে তখন যাতে নিজেদেরকে সহজে চিনতে পারে। এজন্য রাজাদের, মানে ফারাউদের কৃতিত্বপূর্ণ কাহিনী পিরামিডের গায়ে লিখে রাখতো, তাদের ব্যবহৃত আসবাবপত্র-সোনা-দানাগুলোও পিরামিডের ভিতরে দিয়ে দিত। যাক, যা বলছিলাম, মিসরই প্রথম বর্ণ বা ফন্ট আবিষ্কার করে। এবং ধারণা করা হয় যে, পিরামিডের গায়ে লেখাই প্রাচীন বর্ণ। এই বর্ণ বা হরফগুলোর নাম হাইরোগ্লিফিক বা চিত্রবর্ণ। এইগুলো কতগুলো ছবি। পরবর্তীতে এইগুলো পরিশীলিত হয়ে ‘হিরোটিক’ নাম দেয়া হয়।
আজকের পৃথিবীতে আমরা অসংখ্য ভাষা দেখি। দেখি নান্দনিকতায় সমৃদ্ধ হরফ। আর এইগুলো এমনিতেই হয়নি- লিপিকার বা শিল্পীদের হাতে পরিশীলিত হতে হতে এ পর্যায় এসেছে।
আরবি হরফ, ফন্ট বা লিপি কখন কিভাবে কোথায় হয়েছিল এ বিষয় অনেক মতভেদ আছে। তবে পবিত্র কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী হযরত আদম (আ.)-কে তৈরি করে মহান আল্লাহ তাকে অনেক জিনিসের নাম শিখিয়েছিলেন। অনুমান করা যেতে পারে যে, শেখানোর ভাষা ছিল আরবি। অনুমানের কারণ, কুরআনের ভাষা আরবি। বেহেস্তের ভাষাও হবে আরবি। আর এই ভাষায়ই জিবরাইল (আ.) কুরআনের বাণী নিয়ে রাসূল (সা.)-এর কাছে এসেছিলেন। ‘ইকরা বিসমি রাব্বিকাল্লাজি খালাক’- ‘পড় তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন ঘনীভূত রক্তপিণ্ড থেকে।’ (সূরা আলাক : ১-৪)
মহান আল্লাহ আদম (আ.)-কে সৃষ্টির পর প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আলআস্তু বি রাব্বুকুম’- আমি কি তোমার প্রভু নই? উত্তরে হযরত আদম (আ.) বলেছিলেন- ‘বালা’- জি।
এতে নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে মানবমুখে প্রথম উচ্চারিত ভাষা আরবি।
আদাবুল কিতাব গ্রন্থে, ক’আর আল আহবাজ থেকে বর্ণিত আছে, হযরত আদম (আ.) দুনিয়াতে এসে প্রথম মাটি দিয়ে আরবি এবং অন্যান্য ভাষার বর্ণ তৈরি করেছিলেন। অতঃপর এই হরফগুলো আগুনে পুড়িয়ে শক্ত করেন। কিন্তু হযরত নূহ (আ.)-এর সময় মহাপ্লাবনে আরবি হরফগুলো ছাড়া বাকি হরফগুলো সব পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। অতঃপর হযরত ইসমাইল (আ.)-এর হাতে সংস্কার সাধিত হয় এবং তার সন্তানেরা তা থেকে শিক্ষা লাভ করেন।
ঐতিহাসিক মাসউদীর মতে মদয়নের বনু মহাসিন গোত্র আরবি হরফ প্রথম ব্যবহার করেন এবং এই গোত্রের সমস্ত লোকজন লিখতে জানতো। এই গোত্রের লোকজনের নাম অনুসারেই আরবি হরফের নামকরণ করা হয়। ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, আরবি লিপি মূলত সামি বর্ণমালা থেকে উদ্ভ¢ব। মুসলিম ঐতিহাসিকদের কারো কারো মতে, আরবি লিপি প্রথম হিরায় উদ্ভব হয়। এবং সেখান থেকে মক্কায় ও হিজাজে আগমন ঘটে। আবার ঐতিহাসিক অনেকের মতে আরবি লিপি উদ্ভাবনের শহর ফিনিবশীদের শীর্ষ শহরে। আরবরা বেদুইন থাকায় তাদের এই লিখন পদ্ধতি বা লিপির উত্থান সম্পর্কে ধারণা ছিল না। সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে ইয়েমেনে অট্টালিকা শহর গড়ে ওঠে তখন তারা ফিনিকিদের লেখন পদ্ধতি প্রসারের ফলে আরবগণ এ পদ্ধতি আয়ত্ত করেন।
উপমহাদেশের খ্যাতিমান আলেম, গবেষক, মওলানা শামসুল হুদা পাঁচবাগী বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টি করে মূলত একটি ভাষাই দিয়েছেন, সেটি হলো আরবি ভাষা। তবে পৃথিবীর আবহাওয়ার ভিন্নতার জন্য উচ্চারণের ভিন্নতা ঘটে; এতে ভাষাও ভিন্নতা লাভ করে। যেমন শীতপ্রধান দেশের মানুষ যা উচ্চারণ করে গরমপ্রধান অঞ্চলের মানুষ তা উচ্চারণ করতে পারে না। আরবের লোকেরা বলে, ‘তামারুন’ মানে খুরমা। শীতপ্রধান দেশ ইংল্যান্ডের মানুষ তামারুন বলতে পারে না তারা বলে ‘ট্রামার’ মানে খুরমা। এজন্যই ভাষা গবেষক ড. সুনীতি কুমারের মতে প্রতি পাঁচ মাইল অন্তর উচ্চারণ ও ভাষার পরিবর্তন হয়। বাংলাদেশের জেলাগুলোতেও উচ্চারণের ভিন্নতার জন্য ভাষার পার্থক্য আছে। নোয়াখালী, রংপুর, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফরিদপুর, বরিশাল, সিলেট, রাজশাহী ও মোমেনশাহীর মানুষের কথা একই রকম নয়। রোজ হাশরের ময়দানে ও জান্নাতে একই আবহাওয়া বিরাজ করবে। সুতরাং তখন সবাই একই ভাষায় কথা বলবে। আর সে ভাষা হলো, আল্লাহর প্রথম শেখানো ভাষা- আরবি। সুতরাং এই ভাষার মর্যাদা সব ভাষার ঊর্ধ্বে। এশিয়া ও ইউরোপীয় লিপিবিজ্ঞানীরাও একমত হয়েছেন যে, লিপির সাথে ঐশী বিষয়ের সম্পর্ক আছে। এটা আল্লাহর দান। তাই সারা দুনিয়ার সকল ধর্মের মানুষই ভাষাকে পবিত্র মনে করেন।
‘বাংলা লিপির উৎস ও বিকাশের অজানা ইতিহাস’ গ্রন্থে ড. এস এম লুৎফর রহমান লিখেছেন, ‘লিপি মানুষের সৃষ্টি এ কথা আংশিক সত্য পক্ষান্তরে আদি লিপি- যা দেখে মানুষ লিপি তৈরি করতে শিখেছে, তা শুধু আল্লাহরই দান।’
পবিত্র কুরআনে সূরা তুর, ২৭ নং পারায় প্রথম রুকুর আয়াত (১-৪) বলা হয়েছে, ‘কসম তুর পাহাড়ের ও সেই কিতাবের যাহা লিখিত আছে প্রসারিত পাতায় এবং বায়তুল মামুরে’ ইত্যাদি। সূরা ইউনূসের পঞ্চম রুকুর ৪৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘সকল জাতির জন্য একজন রাসূল ছিলেন’ এবং সূরা নহলে আল্লাহ বলেন, ‘এবং আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে কোন না কোন রাসূল পাঠিয়েছি’।
সূরা নহল ১৪ নং আয়াত ৪ নং রুকু-৩৬ আয়াত- ‘এসব রাসূলকে তাদের মাতৃভাষায় কিতাব দিয়েছি। সূরা ইবরাহীম পারা-১ রুকু-৪র্থ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি প্রত্যেক রাসূল (সা.)-কে তার মাতৃভাষাতেই ওহি পাঠিয়েছি। যেন সে সহজভাবে তাদের নিকট প্রকাশ করতে পারে’। এতে একটি বিষয় পরিষ্কার মানবসৃষ্টির পর থেকেই বর্ণ, ধর্ম, ভাষা শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ। লিপির সাথে ধর্ম, ধর্মতত্ত্ব, ধর্মক্রিয়া, ধর্মদর্শন এবং নবী-রাসূল ও পণ্ডিতদের সম্পর্কে আছে।

Share.

মন্তব্য করুন