প্রাণী পোষার শখ তো অনেকেরই থাকে। কেউ কেউ আবার পোষা প্রাণীটিকে নিজের প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন। আজ তোমাদের জানাবো কয়েকজন বাঙালি সাহিত্যিকের পোষা প্রাণী সম্পর্কে।
কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একজোড়া কাঠবিড়ালি ছিল। বারান্দায় লোহার খাঁচার ভেতর কাঠবিড়ালির কিচিরমিচির শুনতে ভালোই লাগত শরৎবাবুর।
দার্শনিক, কবি ও কথাসাহিত্যিক আহমদ ছফাকে প্রায়ই ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলাকায় ডাস্টবিনের পাশে দাঁড়িয়ে কাকদের সাথে কথা বলতে দেখা যেত। কাক ছিল তার প্রিয় পাখি। একবার কিছুদিন একটা কাকের বাচ্চাকে তিনি খাঁচায় বন্দী করে রেখেছিলেন।
কবি নির্মলেন্দু গুণ শখ করে একটি ছাগল পুষতেন। ছাগলটিকে আদর করে মুখে তুলে কাঁঠাল পাতা খাওয়াতে ভালোবাসতেন তিনি।
নাট্যকার সেলিম আল দ্বীন কিছু মুনিয়া ও বাজারিগার পাখি কাঁটাবন থেকে কিনে নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি এলাকায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। তারপর পাখিগুলো সেই এলাকাতেই গাছে গাছে ঘুরে বেড়াতো। তিনি তার প্রিয় ছাত্রদের ডেকে এনে পাখিগুলো দেখিয়ে বলতেন, এগুলো আমার পাখি।
কবি রফিক আজাদের ছিল বড় সাইজের এলসেসিয়ান কুকুর। গলায় শিকল বেঁধে কুকুরটিকে নিয়ে মর্নিং ওয়াকে যেতেন কবি।
নাট্যকার মুনীর চৌধুরীর ছিলো মাছের প্রতি আগ্রহ। ছিপ ফেলে বড়শি দিয়ে পুকুরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাছ ধরতেন। বাসায় একটি সুবিশাল অ্যাকুরিয়াম ছিল সোনালি, রুপালি মাছে পূর্ণ।
কবি ফররুখ আহমদ বিড়ালের প্রতি দুর্বল ছিলেন। বেশ কয়েকবার কয়েকটি বিড়াল পুষেছেন তিনি।
জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ গাছপালা পছন্দ করতেন। তাঁর সৃষ্ট নন্দনকানন নুহাশপল্লীতে বেশ কিছু দুর্লভ গাছ রোপণ করেছিলেন। সেখানে তিনি হরিণ, গিনিপিগ, সারস, রাজহাঁসসহ নানা প্রজাতির পাখি ও প্রাণী নিয়ে একটি মিনি চিড়িয়াখানা তৈরি করেছিলেন।
হাল আমলের ঔপন্যাসিক ইকবাল খন্দকার। তাঁর আছে দৃষ্টিনন্দন ময়ূরপুচ্ছ লক্ষা কবুতর। লেখালেখি করার সময় কবুতরগুলোকে তার চারপাশে ঘুরঘুর করতে দেখলে খুব আনন্দিত হন তিনি।

আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহম্মদ সা. প্রকৃতি ও পশুপাখিদের ভালোবাসতেন। অকারণে গাছের পাতা ছিঁড়তে পর্যন্ত নিষেধ করেছেন তিনি। পাখির বাসা থেকে ডিম ও বাচ্চা এনে মা পাখিকে কষ্ট দিতেও নিষেধ করেছেন। বন্ধুরা, এসো আমরাও পশুপাখির প্রতি যত্নবান হই, ভালোবাসি।

Share.

মন্তব্য করুন