এনায়েত রসুল ১৯৫৩ সালের ১২ জুন বিক্রমপুরের ধাইদা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্বনামধন্য শিশুসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলীর পুত্র। লেখাপড়া করেছেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে। ১৯৬৫ সালে একটি ছড়া লেখার মাধ্যমে লেখালেখির জগতে তার বিচরণ শুরু হয়। প্রথম ছড়াটি ছাপা হয় ‘জুনিয়র রেডক্রস’ পত্রিকায়। মূলত সব বয়সী পাঠকদের জন্যই লেখেন তিনি। তবে শিশুসাহিত্যিক হিসেবেই বেশি পরিচিত। ‘এক মায়ের গল্প’র জন্য ১৯০৮ সালে মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন এনায়েত রসুল। এরপর গুরুত্বপূর্ণ আরও অনেক পুরস্কার ও পদকে ভূষিত হন তিনি। সম্প্রতি কিশোর পাতার পক্ষে কবি মেজবাহ মুকুলের মুখোমুখি হয়ে নিজের সাহিত্যকর্ম ও শিশুকিশোরদের নানা বিষয়ে কথা বলেন খ্যাতিমান এই কথাশিল্পী।

আপনার কৈশোরকাল কেমন ছিল?
আলহামদুলিল্লাহ, চমৎকার কৈশোর কাটিয়েছি আমি। পারিবারিক, সামাজিক এবং সমমনা বন্ধুদের সহানুভূতিশীল মানসিকতার কারণে খুবই ভালো কেটেছে সেই সময়টা। আমার আব্বা-আম্মা যেমন আমাকে কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে রেখেছিলেন, তেমন বন্ধুদের সঙ্গে স্বাধীনভাবে মেলামেশার সুযোগও দিয়েছেন। তবে লক্ষ রেখেছেন, আমাদের কোনো আচরণে অন্য কারো কোনো ক্ষতি যেন না হয়। নিজেরাও যেন ভুল পথে না চলি।

আচরণের কোন দিকগুলো খেয়াল রাখতেন আপনার বাবা-মা?
আমার বাবা-মা সব সময় চাইতেন আমি যেন কোনো কিছু নিয়ে একগুঁয়েমি না করি। চিৎকার করে নিজের দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে চেষ্টা না করি। খুব উচ্চ ভলিউমে রেডিও-টিভি ছাড়াও তারা পছন্দ করতেন না। আর চাইতেন আমি ভালো বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা করি। কাপড় ইস্ত্রি ও বাড়ির জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখার প্রতিও তারা আমাকে উৎসাহ দিতেন। আর সবচেয়ে বেশি লক্ষ রাখতেন পাড়ার ছোট-বড় কারো সঙ্গে বেয়াদবি করছি কিনা, সেই দিকে।

কৈশোরে কী কী স্বপ্ন দেখতেন?
আমার আব্বা মোহাম্মদ নাসির আলী স্বনামখ্যাত শিশুসাহিত্যিক ছিলেন। আমাদের বাসায় সে সময় পল্লীকবি জসীমউদ্দীন, কবি গোলাম মোস্তফা, পল্লীগীতি গায়ক আব্বাসউদ্দীন, কবি আহসান হাবীব, কবি ফররুখ আহমদ, কবি মঈনুদ্দীন, অধ্যাপক নুরুল মোমেন, অধ্যাপক গোলাম সাকলায়েনসহ আরো অনেকে আসতেন। তাঁদেরকে দেখে আমার মনে হতো আমিও যেন তাঁদের মতো বড় সাহিত্যিক বা শিল্পী হতে পারি। কখনো কখনো বৈমানিক হতেও ইচ্ছে হতো।

তখন তাদের সাথে কেমন সময় কাটাতেন এবং সেই সময়টা কেমন লাগতো?
আমাদের ড্রইংরুমে বসে কবি-সাহিত্যিকরা যখন গল্প করতেন, গান গাইতেন বা কোনো প্রসঙ্গ নিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়তেন, আমি তখন অবাক বিস্ময়ে তাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। তাঁরাও যে অমন প্রাণখোলা হাসতে পারেন, তা দেখে অবাক হতাম। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থেকে খুব মনোযোগ দিয়ে তাঁদের কথা শুনতাম। তাঁরা বারবার চা আর পান খেতেন। আমাকে তখন ছুটে ছুটে ভেতরে গিয়ে মায়ের কাছ থেকে সেসব এনে দিতে হতো। খুব শিক্ষণীয় আর আনন্দময় ছিল সেই দিনগুলো।

কৈশোরে দেখা স্বপ্ন জীবনে কতখানি পূরণ করতে পেরেছেন?
আল্লাহর ইচ্ছায় কৈশোরে দেখা স্বপ্ন অনেকটাই পূরণ করতে পেরেছি। আমি আব্বার মতো শিশুসাহিত্যিক হতে চেয়েছিলাম। দয়াময় আল্লাহ আমাকে লেখার সামর্থ দিয়েছেন। আমি নিয়মিত লিখে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত আমার ১৮৭টি বই প্রকাশিত হয়েছে। সব শ্রেণীর পাঠকদের জন্য লিখলেও শিশু-কিশোরদের উপযোগী গল্প, কবিতা, ছড়া লিখতে আমার বেশি ভালো লাগে।

আপনি বলেছেন, ছোটবেলায় বৈমানিক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন, কিন্তু হতে পারেননি। কেন?
আসলে বিমান উড়ে যেতে দেখলেই আমার আকাশে উড়তে ইচ্ছে হতো। আর বৈমানিক না হলে সবসময় সেই সুযোগ পাওয়া যাবে না বলেই বৈমানিক হতে ইচ্ছে হতো। কিন্তু ইতিহাসের প্রতি আমি দুর্বল ছিলাম। তাই ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি নিয়ে এমএ করেছি।

কোনো দুরন্তপনার গল্প মনে পড়ে কি?
ছোটবেলায় খুবই শান্তশিষ্ট ছিলাম, তেমন নয়। দুষ্টুমি করতাম, তবে তা অন্য কারো মনে কষ্ট দিয়ে নয়। একটা দুষ্টুমির কথা মনে পড়ে, বাসায় মিলাদ পড়ানো হলে মিলাদ মাহফিল থেকে উঠে এসে আমি বিভিন্ন জনের জুতার ভেতর থেকে একটি করে মোজা বের করে অন্য একজনার জুতার ভেতর ভরে দিতাম- তার একটি মোজা ঢুকিয়ে রাখতাম আবার অন্য একজনার জুতার ভেতর। আর স্যান্ডেলকে একপাটি অন্য পাটির সাথে জোড় মিলিয়ে সাজিয়ে রাখতাম। এ কারণে মিলাদ শেষ হওয়ার পর সবার মাঝে তালগোল পাকিয়ে যেত, আর আমি সুবোধ ছেলের মতো দূরে দাঁড়িয়ে মজা দেখতাম। আর একবার স্কুল পালিয়ে ট্রেনে চড়ে নারায়ণগঞ্জ গিয়েছিলাম। সেসব কথা খুব মনে পড়ে।

নিপীড়ন কিশোর বিকাশের ক্ষেত্রে কতটা ক্ষতিকর?
নিপীড়ন শিশুর মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। নিপীড়নের কারণে একটি শিশু ধীরে ধীরে মানসিক দিক দিয়ে আপনজন থেকে দূরে সরে যায় এবং সমাজের প্রতি বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। এক সময় সে নিজেই নিপীড়ক হয়ে দাঁড়ায়।

কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে পিতা-মাতার কর্তব্য কী হতে পারে?
কৈশোরকাল কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও চারিত্রিক ভিত গড়ে তোলার সময়। তাই এ সময় পিতা-মাতাকে খুবই সচেতনতার সাথে আচরণ করতে হবে। সন্তানদের লাগাম যেমন টেনে রাখতে হবে, তেমন কিছুটা স্বাধীনতাও দিতে হবে। নিয়মিত খেলাধুলা করাতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে তারা যেন তাদের স্বাধীনতাকে বিপথে পরিচালনার সুযোগ না পায়। বই পড়া ও বিখ্যাতজনদের সাফল্য ও সততার কথা শুনিয়ে শিশুদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

আপনার সময় আর এখনকার সময়ের কিশোরদের মাঝে পার্থক্য কেমন দেখছেন?
আমার কৈশোরকালের সঙ্গে এখনকার কিশোর-কিশোরীদের কৈশোরকালের বিশাল পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। আর হওয়াটাই স্বাভাবিক। এখন ডিজিটাল যুগ- আমি কাটিয়েছি অ্যানালগ যুগ। আমরা আব্বা-আম্মা আর শিক্ষকদের প্রতিটি কথাকে বিশ^াস করতাম। তাদের পরামর্শগুলোকে নির্ভর করে মেনে নিয়ে সেভাবে চলতে চেষ্টা করতাম। এখনকার ছেলেমেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের পছন্দ মতো যুক্তি খুঁজে নেয়। বড়দের সব কথা বিনাবাক্যে মেনে নেয় না। তারা অভিভাবকদের অনুপযোগী ভাবে।

কিশোরদের এমন মনোভাবের কারণ কী বলে মনে করেন?
একেবারেই বিনা পরিশ্রমে, শুধু আঙুলের একটি ছোঁয়া বা চাপের মাধ্যমে এখন বিশে^র সব অজানা তথ্য চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঘরে বসে জীবন-জীবিকার প্রয়োজনকে বহুলাংশে মেটানো যায়। এসব কারণে এখনকার কিশোর-কিশোরীদের মাঝে এমন একটি ধারণা জন্মেছে যে, সবকিছুই সহজ লব্ধ। আমরা বা আমাদের অভিভাবকরা যে কত পরিশ্রমের বিনিময়ে তিল তিল করে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এই সমাজ গড়ে তুলেছি, এই যুগ হাতের নাগালে এনে দিয়েছি (প্রকৃতপক্ষে আল্লাহই যুগের স্রষ্টা), খুব কমসংখ্যক কিশোরই তা উপলব্ধি করে। সবকিছু সহজে পেয়ে যাওয়ার কারণে পূর্ববর্তী প্রজন্মের ত্যাগ ও শ্রমের প্রতি বর্তমান প্রজন্মের কোনো শ্রদ্ধা নেই- এমনই আমার ধারণা।

অনলাইন ক্লাসের জন্য স্মার্টফোন হাতে পেয়ে কিশোররা পড়াশোনা ছেড়ে গেমস্ খেলার দিকে ঝুঁকেছে এবং এতে মাত্রাতিরিক্ত আসক্ত হয়ে কয়েকজন কিশোর ইতোপূর্বে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটিয়েছে তারা! প্রশ্ন হলো- এই ভয়ঙ্কর আসক্তি থেকে ফেরাতে কিশোরদের জন্য কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে?
সব কিছুরই ভালো এবং খারাপ দিক রয়েছে- তেমন রয়েছে স্মার্টফোনে গেমস খেলা নিয়েও। স্মার্টফোন শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে এখন অতি প্রয়োজনীয় একটি মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আমার মনে হয়, মানসিক এবং চারিত্রিক অধঃপতন ডেকে আনে, এমন গেমস সহ সবকিছু প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা উচিত।

এই আধুনিক সময়ে শিশুরা বইবিমুখ হচ্ছে কেন?
আমার ধারণা, স্মার্টফোনে তারা আকর্ষণীয় এমন সব ভিডিও দেখতে সক্ষম হচ্ছে যা তাদেরকে বই পড়ার অভ্যেস থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। কিশোর বয়সীরা অশ্লীল ভিডিওর মাঝে আকর্ষণ খুঁজে পাচ্ছে। সেখানেই ওরা সময় ব্যয় করছে। এ কারণে বই পড়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না।

কিশোরদের বই পড়ার প্রতি মনোযোগী করতে কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে?
কিশোরদের বই পড়ার প্রতি উৎসাহী করে তোলার জন্য বাবা-মা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নানান কর্মসূচি হাতে নিতে পারে। তারা কোনো একটি বই সন্তান বা ছাত্রছাত্রীদের পড়তে দিয়ে তার ওপর প্রশ্ন করে পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে পারেন। বেড়াতে নিয়ে যাবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বই পড়ার প্রতি অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। জন্মদিন বা অন্য কোনো অনুষ্ঠানে বই, শুধু বই উপহার দেয়ার রেওয়াজের প্রচলন করতে পারেন। আমার ধারণা এভাবে প্রচেষ্টা চালালে কিশোর-কিশোরীদের মাঝেও বই পড়ার অভ্যাস ফিরে আসবে।

কিশোরদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কেমন হওয়া উচিত?
আধুনিক যুগের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চারিত্রিক, দৈহিক ও মানসিক জ্ঞান বৃদ্ধিতে সহায়ক শিক্ষাপদ্ধতির প্রচলন করা খুব প্রয়োজন।

বড় হতে হলে ও ভালো মানুষ হতে হলে কিশোরদের কী যোগ্যতা অর্জন করতে হবে?
জীবনে বড় এবং ভালো মানুষ হতে হলে প্রতিটি কিশোরকে মনোযোগের সাথে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। সেই সঙ্গে আচার-আচরণে মার্জিত হওয়া আয়ত্ত করতে হবে। অভিভাবক ও শিক্ষকদের কথা মেনে চলতে হবে।

বড়দের সাথে কিশোরদের আচরণ কেমন হওয়া দরকার?
অবশ্যই মার্জিত ও অনুগত হওয়া দরকার।

সেই মার্জিত ভাষা ও ব্যবহার কিশোররা কিভাবে অর্জন করবে?
শিশুকিশোরদের সঙ্গে অভিভাবক, শিক্ষক আর আত্মীয়স্বজনরা ন¤্র ও মার্জিত ভাষায় কথা বললে তারাও সেই আচরণে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। প্রাথমিকভাবে পরিবার থেকেই মার্জিত ভাষা অর্জন ব্যবহার শুরু করতে হবে।

পিতা-মাতার কাছ থেকে কোন কিছু বায়না করে না পেলে, কিশোরদের একগুঁয়েমি করা কি ঠিক?
বায়না করে কোনো কিছু আদায় করতে না পারলে সুন্দর করে নরম ভাষায় তার দাবিকে বলবৎ রাখতে পারে। তবে সে জন্য তার উগ্র আচরণ করা উচিত নয়। আর বাবা-মা কেন তার সন্তানের বায়না পূরণ করতে পারছে না, সেই বাস্তব কারণটা কিশোরদের বুঝিয়ে বলা প্রয়োজন। কিশোরদেরও বাবা-মায়ের সামর্থ্য ও সমস্যাকে বুঝতে হবে।

কিশোররা কেমন স্বপ্ন দেখবে?
চরিত্রে মহৎ, কর্মক্ষেত্রে সৎ ও সফল মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখবে।

এ জন্য কেমন প্রস্তুতি নিতে হবে?
কিশোরদেরকে বর্তমান সময়ের চাহিদা সম্পর্কে সচেতন থেকে নিজেকে সেভাবে গড়ে তুলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হবে। সততা, আত্মসম্মানবোধ ও বাবা-মায়ের সামর্থ্যরে প্রতি আস্থা রেখে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। যাদের আচরণ মার্জিত ও নির্দোষ, তাদেরকে অনুসরণ করার জন্য অভিভাবকদের উৎসাহিত করতে হবে।

নাগরিক সচেতন হয়ে গড়ে উঠতে আমাদের কিশোরদের মননে কী শিক্ষা প্রয়োজন?
কৈশোরকাল থেকেই তাকে বোঝাতে হবে, সে কখনো এমন কিছু করবে না যাতে অপরের ক্ষতি হতে পারে। বরং সব সময় অপরের কল্যাণ চিন্তা তার কাজের বিষয় হতে হবে।

ছোটবেলায় মা-দাদি থেকে শোনা একটি শিক্ষণীয় গল্প বলনু।
মায়ের কাছে শোনা- অনেক দিন আগে ইরাকের এক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি নদীর পাড় দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। সে সময় তিনি দেখতে পান নদীর তীর থেকে একটু দূর দিয়ে একটি আপেল ভেসে যাচ্ছে। ক্ষুধার্ত ছিলেন বলে তিনি আপেলটি তুলে খেয়ে ফেলেন। পরক্ষণেই তাঁর মনে হয়, যার আপেল তার কাছ থেকে অনুমতি না নিয়ে আমি আপেল খেলাম কেন? এটা তো মহাপাপ। আপেলটি যার, তার কাছ থেকে আমাকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। এ কথা ভেবে সেই ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি স্রোতের উল্টো দিকে হেঁটে চলেন এবং কয়েক মাইল যাওয়ার পর একটি আপেলের বাগান দেখতে পান। বাগানের কয়েকটি গাছের ডাল নদীর উপর ঝুলে ছিল।

তিনি বুঝতে পারেন আপেলটি এই বাগানেরই কোনো গাছ থেকে পড়েছে। তখন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি বাগানে ঢুকে বাগানের মালিকের কাছে সব কথা খুলে বলেন আর ক্ষমা চান। সেই ব্যক্তির কথা শুনে বাগানের মালিক অবাক হয়ে যান। তিনি বলেন, আমার গাছ থেকে প্রতিদিন দু-একটি আপেল নদীতে পড়ে ভেসে যায়। আমি তা তাকিয়েও দেখি না। আর আপনি এতটা পথ হেঁটে আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য এসেছেন। এ তো সততার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মহান আল্লাহপাক অবশ্যই আপনাকে ক্ষমা করবেন। প্রত্যেকটি মানুষের এমন সৎ হওয়া প্রয়োজন।

আবার যদি কৈশোর ফিরে পাওয়া যায় তবে কী হতে চাইবেন?
পরোপকারী ধর্মপ্রাণ মানুষ হতে চাইবো।

Share.

মন্তব্য করুন