‘তা হরিণটার কী হলো?’
‘কোনদিকে যেন পালিয়ে গেছে।’
‘বাঙালিরা পাহাড়ে হরিণ শিকার করে বলে তো শুনি নাই!’
শওকত বললো, ‘আমরা আসছিলাম আমাদের বন্ধু দোকালার সঙ্গে। ওরা শিকারে আসার সময় আমাদের তিন বন্ধুকে নিয়ে আসছিলো।’
‘পুরো দলে কতজন ছিলা তোমরা?’
‘বারো-চৌদ্দজনের কম না।’
‘বাঙালি তোমরা তিনজন?’
‘হ্যাঁ।’
‘আগেও আসছিলা শিকারে?’
‘না।’
‘কোন বাড়ি তোমাদের?’
‘ছড়ার ওপারের শফিক মিস্ত্রির বাড়ির পাশে, রাকিবদের বাড়ি। ও আমার কাজিন হয়।’
‘তোমার বাবার নাম কী?’
‘আশরাফুল ইসলাম।’
‘ও। আচ্ছা আচ্ছা! তোমরা তো শহরে থাকো, না?’
‘হ্যাঁ।’
‘তা এই যে শিকারে আইসা জঙ্গলে ঢুইকা গেলা, এইটা কি ভালো হইছে? এইটা তোমার কত বড় ভুল কাজ হইছে তা কি বুঝতে পারতেছো? বনে শুধু হরিণ থাকে না, বাঘ-ভালুকও থাকে, অন্য জিনিশও থাকে। তা জানো?’
শওকত হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে থাকলো। তার যে বিরাট বোকামি হয়েছে, তা সে বুঝতে পেরেছে। বললো, ‘একটা হরিণের পিছে পিছে…।’
‘তোমার নাম কী?’
‘শওকত।’
‘পুরা নাম বলো।’
‘শওকত মাহমুদ।’
‘আরে এইটুকুই? আর নাই?’
লোকটার গলায় কিছুটা জেরার ঢঙ এসে গেছে। কিছুটা থমথমে তার গলা। শওকত তার পুরো নাম আবার বললো, ‘শওকত মাহমুদ। এটুকুই।’
‘ও।’ লোকটা মনে মনে আওড়ালো, ‘শওকত শওকত শওকত…।’ তারপর কী যেন ভেবে পকেট থেকে এক টুকরো কাগজ বের করে কিছু একটা টুকে নিলো লোকটি। শওকতের দিকে ফিরে বললো, ‘দ্রুত এই বন থেকে বের হয়ে যাও। হিং¯্র জীব-জন্তুর সামনে পড়লে উপায় নাই। এইখানে তো খালি হাতে আসা যায় না। প্রস্তুতি নিয়া আসতে হয়। তোমরা যে চাকমাদের সঙ্গে হরিণ শিকারে আসছো তারা কি খালি হাতে আসছে? তাদের কাছে বন্দুক ছিলো না?’
‘ছিলো।’
‘এই দ্যাখো, আমার কাছেও বন্দুক আছে।’ বলেই লোকটি তার চাদরের ভেতর থেকে বন্দুকটা দেখালো।
‘দেখছো?’ লোকটির গলার স্বর থমথমে। এই যে বন্দুক দেখানোর ঢঙ, এর আড়ালে একটা প্রচ্ছন্ন হুমকি আছে। একটা নিষ্ঠুর ভাব আছে। লোকটার চেহারায় চাপা ক্রোধ। চোখ দু’টো প্রায় লাল হয়ে আছে।
‘যাদের সঙ্গে শিকারে এসেছো, সেই চাকমাদের কারো নাম মনে আছে?’
‘উমম… মোডাই চাকমা না যেন কী। আমার ভালো মতো মনে নেই।’
একটু থেমেই আবার বললো, ‘আচ্ছা আঙ্কেল, আসি তাহলে।’ বলতে তার গলাটা কেঁপে গেল।
‘পেছনে তাকাবা না। দৌড়…!’
শওকতের ভয় করছে। তবু সে ভয় চেপে রাখার চেষ্টা করছে। যেন সবকিছু স্বাভাবিকই আছে। লোকটি তাকে দৌড় দিতে বললেও সে দৌড় দিলো না। বরং বড় বড় পা ফেলে হেঁটে গাছপালার আড়ালে চলে গেলো।

রহস্যের ইঙ্গিত

মধুর মাথাটা বেশ কিছুদিন ধরেই ঠিক নেই। ঠিক নেই মানে ঠিক নেই। তার নামের সাথে পাগলা শব্দটাও জুড়ে গেছে ইতোমধ্যে! খুব বেশি লোক যে তাকে পাগল বলে- তা না। এলাকার কোনো বয়স্ক মানুষ তাকে পাগল বলে না। যারা বলে তারা নিতান্তই ছেলে মানুষ, অল্প সংখ্যক। বড়োরা ভালোবাসে, ¯েœহ করে, আফসোস করে ওর জন্য। আফসোসটা আরো আগে থেকেই করে, যখন তার গবেট হবার ব্যাপারে কারোরই কোনো সন্দেহ থাকেনি। প্রত্যেক ক্লাসে ঠেকে ঠেকে সে যখন ক্লাস সেভেনে উঠেছে, তখন তার বয়স সহপাঠীদের চাইতে পাঁচ-ছয় বছর বেশি! নাকের নিচে গোঁফের রেখা দেখা দিয়েছে, থুতনিতে দাড়ি। চেহারা সুন্দর বলে খারাপ লাগছিলো না। কিন্তু খারাপ হয়ে গেল তার মাথাটাই! কে জানে, ক্লাসে বারবার ফেল করার মধ্য দিয়েই হয়তো তার উপসর্গ শুরু হয়েছিলো। কারোরই কিছু বোঝার উপায় ছিলো না তখন। সবার তিরস্কার-ভর্ৎসনাও তাকে মানসিক যন্ত্রনা দিয়েছে নিঃসন্দেহে। যখন তার পাগলামিটা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে তখন থেকে অনেক জায়গায় নিয়ে চিকিৎসাদিও করেছে মধুর বাবা, সমির মাস্টার। এতে মধু কিছুটা সুস্থ হলেও কিছুদিন পর আবার যেইসেই। অবশ্য মাঝেমাঝে কিছুদিন সে ভালোই থাকে। তারপর আবার শুরু হয় তার উল্টাপালটা বকাঝকা। কিন্তু সেসব কথা নিতান্তই ভালো মানুষের মতো। নতুন কোন লোক হলে কিছুক্ষণ একটানা ওর সঙ্গে কথা না বললে কিংবা কেউ বলে না দিলে বুঝতেই পারবে না যে সে পাগল। অনেকটা ভাবের কথাবার্তা বলে সে। মাঝেমাঝে কথা বলতে বলতে হু-হু করে কেঁদে ওঠে। সবসময় রাস্তাঘাটে ঘোরেও না। এরকম অবস্থার কারণে তার একটা অন্য নাম ফেটে গেছে- পীর পাগলা! মুরব্বিরা বলে- কার সঙ্গে কী আছে বোঝা যায় না। কোনো ভালো জি¦নের আছরও হতে পারে। সেটা হলে তার অনেক ক্ষমতা। বলা চলে এভাবেই পাড়াময় মধুর একটা ইমেজ দাঁড়িয়ে গেছে। কেউ তার সঙ্গে দুষ্টুমি-ফাজলামি করে না। বড়রা শুধু আফসোস করে ছেলেটার জন্য।
আমার সঙ্গে দেখা হলে মধু ঠিক আগের মতোই ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করে। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় ইশকুল-পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে সে বরং ভালোই করেছে। এখন সে চাপমুক্ত, শাসনমুক্ত; তিরস্কার সইতে হয় না কারোর। একা একা গান করে। গান সে ভালোই গায়। এই এলাকায় দুইটা ছেলের দুইটা বিশেষ গুণ আছে। মধুর গান আর দোকালার বাঁশি। কাকতালীয় হলেও সত্য- দুইজনই তাদের ক্লাসমেটদের চেয়ে বয়সে বড়। দোকালা আমাদের সঙ্গে পড়ে আর মধুর তো এই অবস্থা। তবে দোকালার ফেল করার ইতিহাস নেই। রোল একটু নিচের দিকে থাকে, এই যা।
জসিমদের পুকুর পাড়ে মধুর কথা শোনা যাচ্ছে। আজগুবি সব কথাবার্তা। সেখানে মধুর কাছে আরো কেউ একজন আছে বলে মনে হলো। খেয়াল করে দেখলাম শওকত। আরে শওকত! শিকার থেকে এসে কত জায়গায় খুঁজলাম আজ ওকে। পাহাড়েও তো ডাকাডাকি করলাম কত। কোথায় গিয়েছিলো ও? পুকুরের দিকে হাঁটা ধরলাম। কাছাকাছি গিয়ে শুনি- মধু বলছে, ‘পাহাড় কারো থাকবে না। মানুষ থাকবে না। পাখি থাকবে না। থাকবে না মানে থাকবে না। বন্দুক নিয়ে ঘুরে বেড়ায় ওরা। সব পাহাড়ে গুলি করে দেবে!’
কী সব আজগুবি কথাবার্তা। হাস্যকর তো বটেই। কিন্তু শওকতটা মনোযোগ দিয়ে শুনছে তার কথা। তার চেহারায় মোটেও হাসি নেই। মধুকে সে জিজ্ঞেস করছে, ‘কারা ঘুরে বেড়ায় মধু ভাই?’
মধু শওকতের কোনো কথাই গায় মাখছে না। সে নিজের মতো করেই বলে যাচ্ছে, ‘এ প্লাস বি হোলস্কয়ারের সূত্র জানো? সূত্র জানলে কেমন করে অঙ্ক করা যায়- জানো? ওইরকম সূত্র আছে।’
‘তা, সূত্র তুমি জানো মধু ভাই?’
‘মনে নাই আমার, কিচ্ছু মনে নাই। আচ্ছা হ্যাঁ হ্যাঁ মনে পড়েছে। পরে বলবো তোকে।’
শওকতের চেহারা গম্ভীর, সিরিয়াস মুডে আছে সে। আমি কাছে গিয়ে শওকতের পিঠে হাত রেখে, ‘কিরে শওকত!’ শওকত আমার দিকে তাকালো। কিছুই বললো না। আবার সে মনোযোগী হলো মধুর দিকে। মধুর আর কথাবার্তায় আগ্রহ নেই। সে হাসি হাসি মুুুখ করে আমার দিকে চেয়ে আছে। বললো, ‘কিরে মানিক, কই থিকা আসলি? কেরুম আছোস?’
‘ভালো আছি মধু ভাই। বাড়ি থিকা আসলাম। আপনি কেমন আছেন ভাই?’
‘এ হে হে, ভালা।’
আমি শওকতের দিকে মনোযোগী হলাম। বললাম, ‘কিরে শওকত, কই গেছিলি?’
‘আছিলাম এদিকেই।’
বুঝলাম, কিছু একটা চেপে যাচ্ছে সে। তার চেহারা কিছুটা চিন্তাগ্রস্থ, বিমর্ষ। শুধ বললাম, ‘তোকে অনেক খোঁজাখুঁজি করলাম।’
শওকত এ কথারও কোনো জবাব দিলো না।
বললাম, ‘কী করবি?’
‘বাড়ির দিকে যাবো।’ বলেই আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো। দু’জন হাত মিলালাম। শওকত বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করলো। শওকতের অবস্থাটা কিছুই বুঝতে পারলাম না। শুধু এটুকু বোঝা গেল- কিছু একটা ঝামেলা আছে। ফলে ওর সঙ্গে কথা বলার বা কোথাও যাওয়ার কোনো চেষ্টাই করলাম না। আমি বরং জসিমদের বাড়ির দিকে যাই।

বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। পড়ার টেবিলে বসে সারাদিনে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে থাকলো শওকত। তার প্রথমেই মনে হলো জঙ্গলে দেখা হওয়া লোকটার কথা। লোকটার গায়ে চাদর। চাদরের নিচে বন্দুক। বন্দুক দিয়ে যে শুধু পশু শিকার করে- তেমনটা মনে হয়নি। মনে হয়েছে লোকটা অন্যকিছু করে। লোকটার চোখেমুখে এক ধরনের নিষ্ঠুরতার ছাপ ছিলো। লোকটা যে তাকে বন্দুক দেখিয়েছিলো তার মধ্যেও এক ধরনের হুমকি ছিলো। কিন্তু কেন? বনে তার কাজটা কী? এমুহূর্তে লোকটির আরেকটি কথা মনে পড়লো তার- ‘বনে শুধু হরিণ থাকে না, বাঘ-ভালুকও থাকে, অন্য জিনিশও থাকে।’ এই অন্য জিনিশটা কী? অন্য যে কোনো জিনিশই হতে পারে, কিন্তু লোকটি যখন বলছিলো তখন তার চোখেমুখে এক ধরনের ক্রোধ আর রহস্য খেলা করছিলো। কী সেই অন্য জিনিশ? গায়ে কাঁটা দিলো শওকতের।
কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকার পর তার চোখ পড়লো টেবিলে রাখা শ্যাওলা ধরা জিনিশটার ওপর, যেটা সে বন থেকে কুড়িয়ে পেয়েছিলো। লোকটার সঙ্গে দেখা হওয়ার একটু আগেই জিনিশটা সে পকেটে রেখে দিয়েছিলো। এবার সে জিনিশটার প্রতি মনোযোগী হলো। একটা পুরনো কাপড় দিয়ে মুছে শ্যাওলাটা পরিস্কার করতে গিয়ে মনে হলো এটা বহু বছরের পুরনো জিনিশ। দীর্ঘকাল মাটিতে থেকে কোথাও কোথাও ক্ষয়ে গেলেও জিনিশটার আদলটা ঠিক আছে বলেই মনে হয়। কোনো অংশই ভাঙাচোরা নয়। ভেতরটা ফাঁপা এবং নিচের দিকটা সমান। টেবিলে বা মেঝেতে বসিয়ে রাখা যায়। উপরের চূড়ার দিকটা সুঁচালো। জিনিশটা কী- তা নিয়ে ভাবার চাইতে জিনিশটা কীসের, সেটাই শওকতের কাছে মূখ্য বিবেচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি জিনিশটা দামি কিছু হয়! এরকম কিছু হওয়া কি অসম্ভব? একবার ভাবলো, জিনিশটা সে আন্টিকে দেখাকে, রাকিবের আম্মুকে।
আচ্ছা বাড়িতে রাকিবের কোনো সাড়া নেই কেন? গেলো কই ও? সন্ধ্যায় বাড়িতে ফেরার পর কারো সঙ্গে দেখা না করেই চুপচাপ ঘরে এসে ভাবতে বসে গিয়েছিলো শওকত। এখন তার মনে হলো সকালের শিকারের কথা। রাকিব তো শিকারে যায়নি, তবু তার কাছে খবর থাকার কথা। তাছাড়া মানিকের সাথে দেখা হলেও শিকার নিয়ে কোনো কথা হয়নি। জসিম এবং দোকালার সঙ্গেও দেখা হয়নি! সারাটা দিনই কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্য দিয়ে কেটে গেছে। জসিমদের খোঁজ নেয়া দরকার, শিকারের কী হলো তাও জানা হয়নি; আগে রাকিবের সঙ্গে দেখা করা চাই। আচ্ছা, রাকিবটা কি বাড়িতে নেই নাকি! এরকম সময় তো বাড়িতেই থাকে।
ঘর থেকে বাইরে বেরোলো সে। উঠোনে দাঁড়িয়ে ডাকলো, ‘রাকিব, রাকিব!’ কোথায় রাকিব? কোনো জবাব নেই তার। সে আবার ডাকলো, ‘আন্টি, আন্টি!’ জবাব নেই। ঘরের ভেতরে আলো জ¦ললেও দরজায় তালা মারা। কী হলো, সবাই একসঙ্গে কোথায় গেলো? এখনই তার খেয়াল হলো, সে যখন বাড়িতে ঢুকেছে তখন থেকেই বাড়িতে কাউকে দেখছে না। একটা ঘরে তালা মারা হয় না, বাহির থেকে শেকল টানা থাকে। ওই ঘরটাতেই রাকিব আর সে থাকে, ওটাই ওদের পড়ার ঘর। এখন তার মনে হলো- অনেক্ষণ ধরেই বাড়িতে কেউ নেই। কোথায় গেলো সবাই? পাশের বাড়িতে?
শওকত আরো জোর গলায় ডাকলো, ‘রা-কি-ব, রা-কি-ব…।’
‘শওকত বাসায় আইলা?’ পাশের বাড়ি সোমার আম্মু বললো।
‘জি আন্টি।’
‘ওরা তো সবাই তোমারে খুঁজতে বাইর হইছে। তুমি গেছিলা কই বাপ? বনে শিকারে গিয়া ওইখান থিকা আবার কই গেলা? সবাই তো চিন্তাভাবনা করতেছে। রাকিব আর ওর মা একটু আগেই তো তোমারে খুঁজবার গ্যাছে।’
‘কই গ্যাছে আন্টি?’
‘জসিমগো বাড়ির দিকে গ্যালো কিনা…? তুমি আরো দিন থাকনে ঘরে আইবা না? তুমারে কে কইছে বনে যাইবার? তুমি শহর থিকা আইছো, নতুন মানুষ- শিকারের কী বোঝো? বনে কতকিছু থাকে। আর তুমি গ্যাছো খালি হাতে শিকার করবার, ছুডু মানুষ! এইতা আর কইরো না বাপ। জসিমরে ডাইকা জিগাও- তোমার আন্টি ওইদিক গ্যালো কিনা।’
শওকত হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে, শিকারে গিয়ে তার হরিণের পিছু নেয়া ঠিক হয়নি। কত ভয়ানক কিছুই যে আজ হতে পারতো! পথ ধরে পাহাড়ের একটু ঢালে এসে গলা ছেড়ে ডাকলো সে, ‘জ-সি-ম, এই জ-সি-ম…!’
‘শও-ক-ত…! তুই বাড়িত আইছস? শও-ক-ত…!’
‘হ। রাকিবরে দেখলি? ও তোদের ওদিকে গ্যাছে?’
‘খাড়া, আমি দ্যাখতেছি। ও এদিকে কোথাও আছে, পাঠাইতেছি।’
শওকতের মাথা ঝিমঝিম করছে। শরীর নেতিয়ে পড়ছে ক্লান্তিতে, ক্ষুধা-তৃষ্ণায়। এখনই তার মনে হলো- সে দুপুরে খায়নি। তাছাড়া সারাটা দিনই তার বনে বনে কেটেছে। শরীরের কোথাও কোথাও ব্যথা করছে। কাঁটা গাছের আঁচড় লেগেছে শরীরে। দিনের সকল ধকল একসঙ্গে জেগে উঠেছে যেন।
গোসল করে এসে চেয়ারে বসে বন থেকে কুড়িয়ে আনা জিনিশটা আবারও দেখলো শওকত। নাহ, খুব ক্লান্ত লাগছে। কিছু খাওয়া দরকার। খাওয়ার ঘরের দরজা বন্ধ আছে। আন্টি বাড়িতে নেই। তাকেই খুঁজতে গিয়েছে। কী একটা অবস্থা! টেবিলে রাখা জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢেলে ঢকঢক করে দু’গ্লাস পানি পান করলো সে। তারপর বিছানায় শুয়ে পড়লো। শোয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অতলান্তিক ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেল সে।
[চলবে]

Share.

মন্তব্য করুন