ভয়ংকর এক মেজাজী দানব জেনারেল ভুয়াংচং!
পুরো নাম জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং।
হিং¯্রতা, নির্মমতা আর ভীষণতর বদমেজাজের জন্য চিয়াংনিয়াং সেনাবাহিনীতে তার জুড়ি মেলা ভার। সর্বক্ষণ নেশায় টইটুম্বুর হয়ে থাকে। দেখতে মেথরপট্টির ডাস্টবিনের গলিজ-স্তুপে নাক ডুবিয়ে পড়ে থাকা পামরের মতোই লাগে।
সে তার নাদুসনুদুস-গাট্টাগোট্টা শরীর নিয়ে অনেকটাই বেসামাল। সারাক্ষণ ঘোঁৎ ঘোঁৎ আওয়াজ তুলে উইঘুরদের চিরতরে নিপাৎ করার ভাবনাতেই তার সময় কেটে যায়।
যদিও এরই মধ্যে জানোয়ারটা কয়েকটি উইঘুর শিশুকে কুচিকুচি করে কেটে, তাদের গোশত দিয়ে স্যুপ রান্না করে রসনা মিটিয়েছে। তবু তার ধ্যান-জ্ঞানই হলো- উইঘু, উইঘু আর উইঘু। তার কজ্বায় উইঘু মুক্ত আর ইহুদি যুক্ত সিচিয়াং প্রদেশ চাই-ই চাই।
তার এ বদ-কাজের ইনন্ধনদাতারা তো চিয়াংনিয়াং-এর মসনদে বহাল তবিয়তেই আছে। তো! নো চিন্তা, ডু ফুর্তি!!
আর এই ফুর্তির সাধ মেটাতে হাজার হাজার উইঘুকে ঘর-বাড়ি ছাড়া করে, ধরে ধরে বিশালকায় বন্দিশালাগুলোতে ভরেও যেনো জানোয়ারটার মনে শান্তি নেই। গোটা উইঘুর-জাতিকে ঝাড়ে-বংশে নিশ্চিহ্ন করে সেখানে অভিশপ্ত ইহুদিদের বসতি গড়তে পারলেই তার শান্তি!
উইঘুর নিধনের জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র, নিষ্ঠুর আক্রমণ, উইঘুরদের বাড়ি-ঘর লুটপাট, জ্বালাও-পোড়াও চালিয়েই যাচ্ছে। গণহত্যা চালিয়েও জেনারেল ভুয়াংচং-এর দুচোখের ঘুম হারাম। কী করে ইহুদির গোলামীতে নিজেকে ধন্য করবে, তাই নিয়ে নিত্যনতুন চক্রান্ত ফেঁদেই চলেছে।

এই তো সেদিনও নিজে সামনে দাঁড়িয়ে থেকে তিন শ ত্রিশজন উইঘুর নারী-পুরুষ আর বালক-বালিকাকে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে উল্লাস করলো। আনন্দের চোটে বোতলে বোতলে মদ গিলে কী উন্মাদনাই না করলো। তাতেও জানোয়ারটার আত্তি মিটেনি। সেদিন তার নরখাদকীয় তৃপ্তি মেটাতে ফুটফুটে গোলাপের মতো তরতাজা নিষ্পাপ একটি উইঘুর শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়া থেকে ছিনিয়ে নিয়ে জীবন্ত অবস্থায় ফুটন্ত-গরম পানিতে ফেললো। তারপর লবণ, নানাবিধ সুগন্ধী মশলা আর শুকরের রক্ত দিয়ে সেদ্ধকরে স্যুপ বানিয়ে পান করলো। তবু, তবুও তিয়াস মেটেনি এই নরখাদকের।
আজ আবার সেনা-গেরিসনের লনে সেনা অফিসার নামক একপাল ইহুদি হায়েনাকে নিয়ে কর্পোরাল মিটিং-এ বসেছে। আলাপ-আলোচনার একপ্রান্তে নেশায় ঢুলুঢুলু পিটপিটে চোখ তুলে কমান্ডিং অফিসার ব্রিগেডিয়ার অং সান জিয়াং-এর উদ্দেশ্য করে মুখ খুললো- উইঘুররা তো উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। আবার ওরা ধর্মকর্ম করে আমাদের মহান নেতার প্রতিষ্ঠিত সমাজতান্ত্রিক চেতনার বুকে ঘৃণাভরা লাথিও মেরে চলেছে। সৃষ্টিকর্তা বলে একজনকে বিশ্বাস করে তার আরাধনার জন্য মসজিদও বানিয়েছে। এ সব করে তারা আমাদের প্রভুত্বের ওপর কষিয়ে থাপ্পড় বসিয়ে দিচ্ছে। তাছাড়া আচার-আচরণ, সভ্যতা-ভব্যতায় আমাদের নষ্ট সমাজব্যবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই চলেছে। শিক্ষা-দীক্ষায় আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। ওদের চারিত্রিক মাধুর্যতায় মুগ্ধ হয়ে আমাদের নাস্তিক্যবাদি জনগোষ্ঠীর অনেকেই ইসলামের দিকে ঝুকে পড়ছে। কেউ কেউ ওদের অনুসারি হয়ে ওদেরই মতো ধর্মকর্ম শুরু করেছে। এসব তো আর বরদাশত করা যাচ্ছে না। উপর থেকে নির্দেশ এসেছে এই জাতিকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।

জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং একটানা বগবগিয়েই চলছিলো। হঠাৎ তার বগবগানির মাঝে ঝাঁটার বাড়ি মেরে কর্পোরাল ক্যাপ্টেন মিজানং সান সিয়ং জানতে চাইলো- সরি স্যার, উপরের নির্দেশ মানে! ঠিক বুঝতে পারলাম না।
এবার জেনারেল ভুয়াংচং ক্ষিপ্ত শারমেয়র মতো খেঁকিয়ে উঠে বললো- তোমার তো দেখছি কোটমার্শাল হয়ে যাবে। উপরের নির্দেশ মানে কী তা জেনেও না জানার ভান করছো নাকি? বুঝতে পারছো এটা কতো বড়ো অপরাধ? তুমি এই প্রশ্ন তুলে সরাসরি আমাদের মহান পলিটব্যুরোকে চ্যালেঞ্জ করে বসে আছো! না, না, তোমাকে খুব সন্দেহ হচ্ছে। তুমি আবার মুসলিম বিশ্বের কারও এজেন্ট হয়ে পড়নি তো!… তো, তোমাকে ছাড় দিলেই আমার না আবার কোটমার্শাল হয়ে যায়…।
কথাগুলো বলতে বলতেই কখন যে জেনারেল ভুয়াংচং-এর হাতে পিস্তল উঠে গেছে! তা কেউ টের পাবার আগেই তার আঙুলের চাপ পড়লো ট্রিগারে। চোখের পলকেই ট্রিগার ডাউন হতে একটা বুলেট ব্যারেল আউট হয়ে গেলো। সাইলেন্সারের কারণে কোনো শব্দ হলো না। তবে বুলেটটা সরাসরি কর্পোরাল ক্যাপ্টেনের কপাল ফুটো করে মাথার পেছন দিয়ে বেরিয়ে গেছে। অনেকটা শ্লো-মোশানে লুটিয়ে পড়েছে ক্যাপ্টেন।

ভুয়াংচং-এর ইশারায় একজন ব্রিগেডিয়ার টেনে-হেঁচড়ে কর্পোরালের লাশটাকে সামান্য দূরে সরিয়ে নেয়। সাথে সাথে অদূরে অবস্থানরত আর্টিলারি ইউনিটের মেডিকেল টিমের একটা অদ্ভূত আকৃতির অ্যাম্বুলেন্স থেকে একজন আপাদমস্তক মুখোশধারি লোক নেমে আসে। একটা বায়োনিক লেজারগান হাতে সে কর্পোরালের লাশের পাশে এসে দাঁড়ায়। তারপর লেজারগানটা লাশের দিকে তাক করে ট্রিগার টিপে দেয়।
ব্যস! চোখের পলকেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠা আগুন নীলআলো ছড়িয়ে লাশটাকে গিলে খায়। কিন্তু কী আশ্চর্য, কর্পোরাল ক্যাপ্টেনের লাশের একচিমটি ছাইও অবশিষ্ট থাকে না।
জেনারেল ভুয়াংচং-এর হাতের ইশারায় মুখোশধারি লোকটা প্রায় উড়ে উড়ে চলা পায়ে ফিরে গিয়ে উঠে পড়ে অ্যাম্বুলেন্সে। যেন কিছুই হয়নি- এমন মুড নিয়ে জেনারেল ভুয়াংচং বেশ শান্ত এবং ঠা-া দৃষ্টি বুলিয়ে নেয় উপস্থিত সামরিক অফিসারদের ওপর। তারপর আবার মুখ খোলে- দেখেছো? টিকটিকি ঢুকে পড়েছে আমাদের মাঝে। এসব এভাবেই শেষ করে দেবার নির্দেশ মেনে চলছি। তোমরাও সাবধান থাকবে। তো এবার বলো, কিভাবে- কোন পদ্ধতি এ্যাপ্লাই করলে আমরা সহজে উইঘুরদের শেষ করতে পারবো?
এতক্ষণে ব্রিগেডিয়ার হোয়াং সিং ইউ একটু নড়েচড়ে বসলো। মাথা হেলিয়ে বললো- স্যার, পলিটব্যুরোর নির্দেশ আমরা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলছি। এ পর্যন্ত দশলাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দিশালায় ঢুকিয়েছি। লাখ খানিককে জানে মেরেছি। অসংখ্য ঘর-বাড়ি মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছি। হাজার হাজার শিশুকে কিডন্যাপ করে মগজধোলাই ঘরে দিয়েছি। সেখানে তাদের মোটের ওপর নাস্তিক এবং ধর্মত্যাগী বানিয়েছি। ওদের মডারাইজ করছি। ধর্মবিশ্বাস থেকে সরিয়ে এনেছি। তাছাড়া…
বলতে গিয়ে থেমে যায় ব্রিগেডিয়ার হোয়াং সিং ইউ। এতে কুতকুতে চোখে কাতুকুতু শরীরে বেশ আয়েশ করে নির্যাতনের কথা শুনতে থাকা জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং-এর ঘোর কেটে যায়। সে অনেকটা লাথি খাওয়া ন্যাড়া কুকুরের মতো কোঁকিয়ে উঠে বলে- আহ্! থামলে কেনো ব্রিগেডিয়ার, শুনতে তো বেশ কাতুকুতু লাগছিলো। বাকিটা বলো, আহা! আমার যে তর সইছে না।

জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং-এর আগ্রহ দেখে ব্রিগেডিয়ার হোয়াং সিং ইউ’র মুখে একটু বাঁকা হাসি খেলে যায়। সে লোভাতুর কুকুরের মতো একবার জিভ দিয়ে ঠোঁট দু’টো চেটে নিয়ে বলে- আমাদের সোনার টুকরো সেনা জওয়ান আর লেলিয়ে দেওয়া ক্যাডাররা উইঘুরদের বাড়িতে বাড়িতে ঢুকে পড়ছে। তাদের হাজার হাজার মা-বোন এবং কন্যাদের অসম্মান করেছে। বুড়ো-বুড়িদের টুকরো টুকরো করে কেটে প্যাট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে ছাই করে দিয়েছে।
কিন্তু বিদেশী মিডিয়া হঠাৎ করে আমাদের এই মহান অভিযানের কথা জেনে ফেলেছে। তারা আমাদের সমালোচনায় মেতে উঠেছে। আমাদের কা-কারখানার ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব আর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমাদের শত্রুদের উসকে দিচ্ছে। বিশ্বসংঘও রাগ-গোস্যা করে বিবৃতি দিচ্ছে। দুনিয়াজুড়ে আমাদের জারিজুরি সব ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। তারা আমাদের…
জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং হাত তুলে ব্রিগেডিয়ারকে থামিয়ে দিয়ে বলে- আরে রাখো তোমার বিশ্বসংঘ। ওটা তো আমাদের দুশমনদের পা-চাটা গোলাম। অবশ্য আমাদেরও গোলাম। তবে আমাদের দুশমনদের কথায় একটু বেশি-ই নাচানাচি করে আর কি! ওটাকে ডাস্টবিনে ফেলে রাখো। তবে অতিশয় গোপনে এবং নিজেদের ঘাড়ে দোষের বোঝা না তুলে সাবধানে চলো। আরও সায়েন্টিফিক উপায়ে কিভাবে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানো যায় তাই নিয়ে এখন ভাবতে হবে।

এতক্ষণ কেবল দু’চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সবার কথা গিলে যাচ্ছিলো কর্নেল হায়েনাং ওচিচিং উইসা। সে এবার বেশ মুডের সাথে বললো- স্যার, সে কথা ভেবেই আমি আমাদের দেশের রত্নতুল্য মহাবিজ্ঞানী জিজিয়াং কুতুয়াং-এর সাথে একটা সিটিং করে এসেছি। অবশ্য আপনি আমাকে আগেই একটা উপায় খুঁজতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাই আর কী…
জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং-এর যেনো তর সয় না। সে একটু নড়েচড়ে বসে। তারপর চোখের পাতা বিশ্রীভাবে নাচিয়ে জানতে চায়- তা কী উপায় বের করলে?
– স্যার, উপায় একটা হয়েছে। সে এক দারুন উপায়! তোফা উপায়!! এবার যদি এই এ্যাসাইনমেন্টে আমরা সাকসেস হতে পারি তো দুনিয়াবাসীকে বেওকুফ বানাবো। গোটা উইঘুর জাতির শেকড় উপড়ে ফেলবো। কিন্তু আমাদের শত্রুরা কিছু বুঝতে পারবে না। মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকতে বাধ্য হবে। ওদিকে আবার মুসলিম বিশ্বের মাথামোটা নেতারাও বরংতো আমাদের মায়াকান্না শুনে সমবেদনা জানাতে থাকবে। তাছাড়া হঠাৎ জেগে ওঠা তিন-চারটা মুসলিম দেশের অতি জেহাদী নেতারাও গ্যাস বেরিয়ে যাওয়া বেলুনের মতো চুপসে যাবে। আর আমরা খ্যামটা নেচে, রঙিন বোতল সেবন করে, বগল বাজিয়ে ফুর্তি করবো।
এবার জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং সত্যি সত্যি উত্তেজনায় ফেটে পড়ে- আরে আরে, সে আবার কোন্ ক্যারিশমা? বলি বিজ্ঞানী কী এমন মহার্ঘ্যরে সন্ধান দিলো তোমাকে? জলদি বলো, আমার তো আর তর সইছে না।
– বলছি স্যার, বলছি। আমাদের বিজ্ঞানী এবার মারাত্মক এক ‘ভাইরাস-বোমা’ আমাদের হাতে তুলে দেবেন। তা একবার ছড়িয়ে দিতে পারলে ভয়াল রোগ সারা সিচিয়াং প্রদেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। এ অসুস্থতার কোনো চিকিৎসা নেই। কাতারে কাতার উইঘুর মুসলিম লাশ হয়ে রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়িতে বাড়িতে পড়ে থাকবে। ওদের লাশ সৎকার করার মানুষও বেঁচে থাকবে না। মহামারি ছড়িয়ে পড়বে। তাতে কয়েকদিনের মধ্যেই গোটা সিচিয়াং উইঘুরশূন্য হয়ে যাবে। তখন বিশ্ববাসীও আতংকের সাথে ভাববে যে, এটা এক ভয়ংকর মহামারি। যার কারণে সিচিয়াং-এর জনপদ মানবশূন্য হয়ে পড়েছে। বিশ্বসংঘও কোনো ক্লু খুঁজে না পেয়ে আঙুল চুষতে থাকবে। হা হা হা…
জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং নিজেকে আর সামলাতে পারে না। হাততালি দিতে দিতে উল্লাস প্রকাশ করে বলে ওঠে- সাব্বাস, ব্রিগেডিয়ার! এবার একটা কাজের মতো কাজ হবে। ওউফ! উইঘুরদের নানা কৌশলে মারতে মারতে আমরা টায়ার্ড হয়ে গেছি। কিন্তু এই ভয়াবহ ভাইরাস মানে জীবাণুু অস্ত্র ব্যবহার করবো কেমন করে। এতে আমাদের সেনারা আক্রান্ত হয়ে পড়বে না?
– সে কথা আমিও ভেবেছি স্যার। মহাবিজ্ঞানীকে সে কথাও বলেছি।
– তো?
– তিনি যা বললেন, তাতে আমি সেটিসফাইড।
– তার মানে?
– স্যার! আমরা ওই ভাইরাস গভীররাতে একযোগে শত শত আল্ট্রাসনিক এসএসডি ড্রনের সাহায্যে পুরো সিচিয়াং প্রভিন্সের উপর ছড়িয়ে দেবো। এতে আমাদের আর্টিলারি ডিভিশনের একটি সেনাকেও অংশ নিতে হবে না। কেবল আমাদের রাডার সেকশনটা চালু রেখে সবকিছু সুপার ডায়াফেরিক রিমোর্টের সাহায্যে অপারেশনটা চলবে। ব্যস, তাতেই কেল্লা ফতে।
– কিন্তু ওই জীবাণু অস্ত্রের রি-এ্যাকশন তো আমাদের পুরো দেশেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। তখন উপায়?
– ডোন্ট ওরি স্যার, ডোন্ট ওরি।

– আহা! বিস্তারিত খুলে তো বলবে, নাহলে বুঝবো কেমন করে?
– আমাদের প্রধান বিজ্ঞানী জিজিয়াং কুতুয়াং বলেছেন, রিমোট-কন্ট্রোলড আল্ট্রাসনিক এসএসডি ড্রনগুলো জীবাণু অস্ত্র ড্রপ করে দেবার পর মোটের ওপর ১৫ দিনে পুরো সিচিয়াং-এর উইঘুর গোষ্ঠী একেবারে খতম হয়ে যাবে। জীবাণু অস্ত্র ছড়িয়ে দেবার প্রথম ৪ দিনে উইঘুরা প্রথমে প্রচ- শুষ্ককাশিতে আক্রান্ত হবে। পরবর্তী ৪ দিনে তাদের শরীরে জ্বরের প্রকোপ বেড়ে মাত্রা অতিক্রম করবে। তার পরবর্তী ৪ দিনে সমস্ত শরীরে ভয়ংকর র‌্যাশ আত্মপ্রকাশ করবে এবং শেষ ৩ দিনে কোনোরকম চিকিৎসা নেবার আগেই তারা শ্বাসরোধ হয়ে প্রচ- কাঁপুনি উঠে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে।

২.
ব্রিগেডিয়ার হোয়াং সিং ইউ’র মুখে প্রধান বিজ্ঞানীর পরিকল্পনার কথা শুনে জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং-এর মন ভরে না। সে ফের পাগলা শুকরের মতো ঘোঁৎ ঘোঁৎ শব্দ তুলে মাথা ঝাকায়। চোখের টকটকে লাল মণি ঘুরিয়ে ব্রিগেডিয়ারের মুখের ওপর স্থির করে। দাঁতে দাঁত ঘষে হিং¯্রতার সাথে হুংকার ছাড়ে- আহ! আমি তো এতো ফিরিস্তি শুনতে চাইনি। তোমার কাছে জানতে চাইছি আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপারটি বিজ্ঞানীব্যাটা কিভাবে নিশ্চিৎ করবে?
জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং-এর জংলী-শুকর প্রকৃতি সম্পর্কে ব্রিগেডিয়ার আগের থেকেই সাবধান। তাই হঠাৎ জেনারেলকে দাঁত খিচিয়ে উঠতে দেখে ভেতরে ভেতরে খানিকটা ভয় পেয়ে যায়। তারপরও নিজেকে কৌশলে রক্ষার জন্য খানিকটা কৈফিয়তের স্বরে বলে- একটু শান্ত হোন স্যার! আমি সবই বলছি। ইয়ে, মানে মহাবিজ্ঞানী কুতুয়াং বলেছেন, ৭২ঘণ্টা পেরোনোর সাথে সাথে আবারও রাতের অন্ধকারে, একইভাবে ড্রনের সাহায্যে ‘এন্টি-করোনাল ডেফিসিয়েন্সি’ নামের একধরণের রাসায়নিক অস্ত্র ছড়িয়ে দেওয়া হবে পুরো সিচিয়াং প্রভিন্সের আকাশে। তা-ই ২৪ঘণ্টার মধ্যে ‘জীবাণু অস্ত্রের ভাইরাস’কে একেবারে নিশ্চিহ্ন করবে। সিচিয়াংকে আমাদের পুরোপুরি দখলে নেবার জন্য উপযুক্ত বানিয়ে ফেলবে। আর সবচেয়ে মজার কথা হলো কি স্যার!…
– আহ! আবার ভণিতা!! ওসব ছেড়ে সরাসরি বলে যাও, শুনে বেশ পুলকিত হচ্ছি।
– ওক্কে স্যার, সেকথাই বলছি। আমাদের মহাবিজ্ঞানী কুতুয়াং বলেছেন, এই জীবাণু অন্ত্র কেবল সিচিয়াং-এর উইঘুর নিপাতেই কাজে লাগবে তা কিন্তু নয়। এই অস্ত্র দিয়ে আমরা আমাদের শত্রুদেরও উচিৎ শিক্ষা দিতে পারবো। আর ওই আরব বিশ্বের মাথামোটা নেতাদের তো এক চান্সেই পদানত করে ফেলা যাবে। হা হা হা…
ব্রিগেডিয়ারের সাথে সাথে জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচংও দাঁত কেলিয়ে প্রাণভরে হেসে ওঠে। তারপর একটু দম নিয়ে বলে- এবার এর মাহাত্মটা বলো তো শুনি। আমাদের মহাবিজ্ঞানী কুতুয়াং এই নারকীয় জীবাণু অস্ত্রের আইডিয়াটা পেলো কেমন করে?

– সে কথাই তো বলছি স্যার! মিস্টার জিজিয়াং কুতুয়াং বললেন, এই ডেভিলিয়ান আইডিয়াটা তিনি নিয়েছেন মূলত ‘রেসিডেন্ট ইভিল’ নামের একটি সায়েন্স ফিকশন সিনেমা রিসার্স করে। তিনি আমাদের মিলিটারি হাইকমান্ডের বাইরে একথা প্রকাশ না করার শর্তে- মানে ‘অব দ্যা রেকর্ড’ হিসেবে জানিয়েছেন, ওই হলিউডি সুপারহিট ছবি ‘রেসিডেন্ট ইভিল’-এর রয়েছে ছয়টি সিরিজ। যা কি-না দফায় দফায় মুক্তি পেয়েছিল বিগত দু’দশকে।

তাতে জৈব রাসায়নিক অস্ত্র এবং জেনেটিক্যাল মিউটেশন কীভাবে মানব সভ্যতার ধ্বংস ডেকে আনবে তা দুর্দান্তভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ওই সায়েন্স ফিকশন এবং হরর থ্রিলার ‘রেসিডেন্ট ইভিল’ সিনেমায়। তাতে কুতুয়াং গভীরভাবে লক্ষ্য করেছেন, গোপন গবেষণাগারে তৈরি ‘টি’ ভাইরাস ক্লোনিং প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন প্রাণী ও মানুষের উপর প্রয়োগ করে প্রথমে তাদের জিনগত অভিযোজন ঘটানো হয়। তারপর তাদের হিংস্র দানবে পরিণত করে সাম্রাজ্য বিস্তারের চক্রান্ত করে একটি বেসরকারি সংস্থা। কিন্তু দুর্ঘটনাবশত এই গবেষণা বুমেরাং হয়ে যায়। কোটি কোটি মানুষ ‘টি’ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ‘জম্বি’তে পরিণত হয় এবং গবেষকদের দোষেই মানব সভ্যতা প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় দুনিয়া থেকে। হা হা হা। ওরা তো সায়েন্স ফিকশন সিনেমা বানিয়েছে, আমরা তা বাস্তবে বানিয়ে উইঘুর আর আমাদের দুশমন দেশগুলোর উপর ছড়িয়ে দেবো।
– ওয়াও! এতো মারাত্মক ব্যাপার-স্যাপার হে!! তাহলে আর বিলম্ব কেনো?
– ঠিক বিলম্ব বলা যাবে না স্যার! এজন্য যে বিপুল বাজেটের প্রয়োজন তার তো আগে সংস্থান করতে হবে।
– ধুরো! এটা একটা ব্যাপার হলো। সুপ্রিম কমান্ডের মাধ্যমে পলিটব্যুরো থেকে পুরো বাজেটের অনুমোদন নিয়ে নেবো। প্রধান বিজ্ঞানীকে পুরোদমে রিসার্চ চালিয়ে যেতে বলো। আমি তাকে অর্ডার করছি জানিয়ে দাও।

৩.
হঠাৎ সমস্ত চিয়াংনিয়াং জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে একটি অজানা ভাইরাস। ঘরে ঘরে জ্বর, মাথাব্যথা, খুশখুশে কাশি, গলাব্যথা আর কাঁপতে কাঁপতে মৃত্যু! কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না ভাইরাসটিকে। চিয়াংনিয়াং থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস দেখতে দেখতেই এশিয়া জুড়ে মহামারীর আকার নিচ্ছে। লাফিয়ে বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। আক্রান্ত হতে বাদ নেই ইউরোপ, আমেরিকার কিছু দেশও। কেউ কেউ অনুমান করে বলছে, বিমানযাত্রীদের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। আতঙ্ক ছড়িয়েছে সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে দক্ষিণ আফ্রিকাতেও।
এই ঘটনায় ‘রেসিডেন্ট ইভিল’ সিনেমার ভয়ানক প্রতিফলনই দেখতে পাচ্ছেন চিয়াংনিয়াং-এর বিজ্ঞানীরা। তাদের মাথা কাজ করছে না- আসলে ভাইরাসটি এদেশে এলোইবা কেমন করে! এরই মধ্যে বার বার বৈঠক করেও জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং আর তার সহযোগীরা কোনো সূত্রই আবিষ্কার করতে পারছে না। আসলে তো তারাই চেয়েছিলো এমন একটি মারাত্মক ভাইরাস বানাতে। আর তা দিয়ে উইঘুরদের বংশ নির্বংশ করে পুরো সিচিয়াং প্রদেশ নিজেদের দখলে আনতে। কিন্তু ফাঁকতালে কাজটি করলো কারা? তাও আবার সিচিয়াং-এর উইঘুরদের ওপর হামলাটা না চালিয়ে উল্টো চিয়াংনিয়াংকেই ঘায়েল করে ফেলেছে!

৪.
কঠোর নিরাপত্তার মাঝে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে মহাবিজ্ঞানী জিজিয়াং কুতুয়াং বেশ বিরক্তি প্রকাশ করে বললো- অসভ্য ইহুদীদের গোয়েন্দারা বলেছে, রহস্যময় ‘আননোন ভাইরাসের’ চাষ করেছে চিয়াংনিয়াং-এর গোপন সামরিক গবেষণাগার। অর্থাৎ তারা আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। আবার মার্কিন পত্রিকাও এই দাবিকেই সমর্থন করেছে। আমার মনে হয়…
মহাবিজ্ঞানী জিজিয়াং কুতুয়াং কথা শেষ করার আগেই জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং তার লাল টকটকে চোখের মণিদুটো বিজ্ঞানীর চোখ বরাবর স্থির করে খেঁকিয়ে ওঠে- আপনার কী মনে হয় বা না হয়, ওসব শুনে আমার আর কাজ নেই। আমি এরইমাঝে জানতে পেয়েছি, ইহুদীদের জীবাণু অস্ত্রের বিশেষজ্ঞরাও বলেছে, এই ভাইরাসের জন্মদাতা আমাদের জৈবরাসায়নিক মারণাস্ত্র তৈরির কারখানা ‘বায়ো-সেফটি লেভেল-২০’ ল্যাবোরেটরি।

আবার বেশ ঘটা করে মিডিয়ায় তারা একথাও ছড়িয়ে দিয়েছে যে, অসাবধানতাবশত নাকি আমাদের এই গবেষণাগার থেকেই ছড়িয়েছে মরণঘাতী ‘আনননোন ভাইরাস’-এর সংক্রমণ। ওরা বেশ জোরালোভাবে বলেছে, আসলে জৈবরাসায়নিক অস্ত্রের উপর গবেষণা করতে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে চিয়াংনিয়াং-এর বিজ্ঞানীরা। ওদের ওয়েবসাইটে সেনা গোয়েন্দাদের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রচার করেছে, সেনাবাহিনীর ব্যাপক আধুনিকীকরণ, ছাঁটাই প্রক্রিয়া ও প্রযুক্তিগত মানোন্নয়ন করছে চিয়াংনিয়াং। চলছে জীবাণুঅস্ত্র এবং রাসায়নিকঅস্ত্র নিয়েও গবেষণা। এরই অঙ্গ হিসেবে ‘সার্স’ জাতীয় ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছে চিয়াংনিয়াং-এর সামরিক বাহিনীর গবেষণাগার।
একটানা কথাগুলো বলে রাক্ষসের মতো দু’গাল ফুলিয়ে দম ছাড়ে জেনারেল। তারপর আবার বলে, ইহুদীর বাচ্চারা আমাদের নামে বদনাম ছড়াচ্ছে ‘সার্চ ভাইরাস’ গবেষণার কথা বলে। আমি তো জানি সার্সের পুরো নাম হলো, সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম। ওটা তেমন শক্তিশালী কিছু নয়। জ্বর, হাঁচি, কাশি, শরীরে অসহ্য ব্যথার মতো উপসর্গ থাকে এই রোগে। অবশ্য এটারও শেষ পরিণতি হচ্ছে মানুষের ভয়ংকর মৃত্যু।
মহাবিজ্ঞানী কুতুয়াং তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলে- হ্যাঁ, সার্সের মতোই আরেকটি নতুন ভাইরাস আমরা বানাতে চেয়েছি। তা হবে আরও মারাত্মক এবং সার্স থেকেও দশগুন শক্তিশালী। কিন্তু সে গবেষণাটা আমরা তো শুরুই করতে পারলাম না। অথচ মার্কিন সংবাদপত্র আর শয়তান ইহুদীরা দাবি করেছে, আমরা নাকি শত্রুদেশ দখল করতে আর বিনা রক্তপাতে শত্রুদের খতম করতে অনেকদিন ধরেই জীবাণু অস্ত্র নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছি। আবার বলেছে, আমরা নাকি পার্টির হাইকমান্ডের নির্দেশেই এই গবেষণা চলাচ্ছি।
এবার জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং পুরো কক্ষ ফাটিয়ে একটি হাঁচি দিয়ে নাকের ডগা ডলতে ডলতে বললো- শুধু কি তাই? ওরা রস করে বলেছে, আমাদের এই গবেষণা যে দুর্ঘটনাবশত বুমেরাং হয়ে যাবে এবং দেশজুড়ে মহামারীর আকার নেবে তা নাকি আমরা ভাবতেই পারিনি।

প্রধান বিজ্ঞানী জিজিয়াং কুতুয়াং চোখ বড় বড় করে বলে- ইয়েস স্যার! ওরা আরও দাবি করেছে, রহস্যময় এই ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে আমাদের গোপন গবেষণাগার থেকেই। শয়তানরা আরও জানিয়েছে, এই ‘আননোন ভাইরাস’কে আমরা তৈরি করেছি মারণাস্ত্র হিসেবেই। ওদিকে ওদের নাটেরগুরু ইসরাইলও একই সুরে সুর তুলেছে, বিশ্বের সব দেশকে জব্দ করতে আর চাপে রাখতেই নাকি সবচেয়ে শক্তিশালী এই জীবাণু অস্ত্র বানিয়েছি আমরা। ওরা আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বলেছে, ‘বায়ো-ওয়ারফেয়ার’ বা জীবাণু-যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছে চিয়াংনিয়াং।
জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং আবারও ভয়ংকর এক হাঁচি ঝেড়ে বলে ওঠে- ওরা বলেছে, চিয়াংনিয়াং-এ জিনের কারসাজিতে এমন ভাইরাস তৈরি করা হচ্ছে যা মিসাইল, ড্রোন, বোমা বা সামান্য একটি পেন অথবা ঘড়ির মধ্যে দিয়েই ছড়িয়ে দেওয়া যায় শত্রুর ভূখ-ে। সেই ভাইরাসের দাপটে ২৫ দিনের মধ্যেই মৃত্যু মিছিলে উজাড় হয়ে যেতে পারে একটি বড় শহর অথবা একটি প্রদেশ।

কথাগুলো বলে আবারও দম নেয় জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং। তারপর কেমন যেন ফ্যাঁসফ্যাঁসে কণ্ঠে থিরথির করে কাঁপতে কাঁপতে বলে- কিন্তু ইহুদীদের প্রচার-প্রপাগান্ডা দেখে তো মনে হচ্ছে, ওরা কোনো না কোনোভাবে আমাদের গোপন পরিকল্পনার কথা জেনে ফেলেছে। এবং ওদের হাতে আগের থেকে মওজুদ থাকা ভয়ংকর জৈবরাসায়নিক অস্ত্র কোনো না কোনো এজেন্টের মাধ্যমে চিয়াংনিয়াং-এর বিভিন্ন প্রদেশে ছড়িয়ে দিয়েছে। না হলে এতো দ্রুত এখানে তা ছড়ালো কেমন করে?
বিজ্ঞানী জিজিয়াং কুতুয়াং প্রায় ঘেমে উঠেছে। সে মুখ তুলে কোনো কথাও বলতে পারছে না। বার বার কপালের ঘাম মুছে পিট পিট করে তাকাচ্ছে আর ঢোক গিলছে।
তার বিপরীতে বসা গোয়েন্দা প্রধান ব্রিগেডিয়ার অংমং চিংচাং মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো- স্যার, ‘ইলুমি-সেভেন’ নামে একটি সংস্থা কয়েক মাস যাবত চিয়াংনিয়াং-এর বিভিন্ন প্রদেশে কীসব যেনো সার্ভে ও গবেষণার কাজ করছিলো। কিন্তু দু’সপ্তাহ আগে আমরা যখন জীবাণু অস্ত্র সমৃদ্ধকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তারপর থেকেই তাদের এদেশ ছেড়ে পাততাড়ি গুটানো শুরু হয়। আমাদের গোয়েন্দারা ভেবেছে ওদের রিসার্সের কাজ শেষ বলেই অফিস গুটিয়ে নিচ্ছে। ৫ দিন আগে তাদের প্রধান অফিসটিও ক্লোজ হয়ে গেছে। এরপর তারা চিয়াংনিয়াং ছেড়ে চলে গেছে।
জেনারেল শুয়ারং কুত্তাংচিং ভুয়াংচং আবারও ভয়ংকর এক হাঁচি ঝেড়ে ভয়ংকরভাবে চিৎকার করে ওঠে- এসব কী বলছো হে ব্রিগেডিয়ার! ওরা কোন দেশ থেকে এসাইনমেন্ট নিয়ে এসেছিলো?
– স্যার, আমাদের কাছে যতদূর রিপোর্ট আছে, সে হিসেবে সংস্থাটি ইসরাইলের একটি ধর্মীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
– রাবিস! রাবিস গোয়েন্দা প্রধান তুমি। সব জেনেশুনেও ওদের আটকাতে পারলে না। কৌশলে শুভংকরের ফাঁকি মেরে পাখিসব উড়ে গেলো!

– প্রথমে আমাদের নজরদারি কড়াই ছিলো। পরে যখন জানা গেলো, উইঘুরদের ওপর আমাদের দলন-নিপীড়নে ওরা সন্তুষ্ট আর ওরাও চায় আমরা উইঘুদের শেষ করে দিই, তখন থেকে নজরদারি কমিয়ে আনা হয়েছিলো।
এবার রিতিমত হুংকার দিয়ে প্রচ- কাশতে কাশতে জেনারেল ভুয়াংচং কষে এক থাপ্পড় মারে টেবিলের ওপর। তারপর মৃদু কাঁপতে কাঁপতে ব্রিগেডিয়ার অংমং চিংচাং-এর দিকে রিভলবার তাক করতে করতেই বাম হাতে বুকের বাম পাশটা চেপে ধরে চেয়ারে বসে পরে। ততক্ষণে তার হাতের তালুর নিচ থেকে তাজা রক্তের ধারা নেমে এসেছে। ডান হাত থেকেও রিভলবারটা ঠাস করে ফ্লোরে পড়ে যায়। অমনি শাটাশাট অটোমেটিক ডুজার-গানের ব্যারেল টেনে চার-পাঁচজন সিকিউরিটি ঢুকে পড়ে সভাকক্ষে।

চোখের পলকে ব্রিগেডিয়ারের শরীরটাও ঝাঁঝরা হয়ে যায়। বুদ্ধিমান বিজ্ঞানী সিকিউরিটিদের জানায়- জেনারেল ভুয়াংচং আননোনভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় সবাইকে বাঁচানোর জন্য তাকে ব্রিগেডিয়ার শ্যুট করেছেন। তবে এরই মধ্যে এই সভাকক্ষেও ‘আননোন ভাইরাস’ ছড়িয়ে পড়েছে।
তার কথা শুনে সিকিউরিটিরা যার যার অস্ত্র ফেলে জ্ঞানশূন্য পাগলের মতো- ‘ভাইরাস’ ‘ভাইরাস’ বলে চিৎকার জুড়ে দিয়ে যে যে দিকে পারে পালিয়ে যায়। সাথে সাথে সম্পূর্ণ সিকিউরিটি ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়ে। সুযোগ বুঝে বিজ্ঞানী জিজিয়াংও নিরাপদে সরে পরে।

Share.

মন্তব্য করুন