‘কি রে, তোরা কই? ওঠ ওঠ ভূমিকম্প হচ্ছে তো।’ বাদলমামুর চিৎকার শোনা যায়।
আচমকা ঘুম থেকে জেগে ওঠে ইভান।
‘কোথায় ভূমিকম্প মামা?’
ছোটন বলে, ‘তাহলে কি সুনামি?’
খুব হাসতে থাকে ইভান।
‘সমুদ্রের নিচের ঝড়কে তো সুনামি বলে, এখানে সমুদ্র কোথায় ছোটকা?’
মামু ভয় পেয়ে বলেন, ‘একদম ডেঁপোমি করবি না, এতটুকু পুঁচকে ব্যাটা, যেন সবজান্তা বৈজ্ঞানিক।’
ছোটকা অবাক হয়ে বলেন, ‘বাড়িটা হঠাৎ কেঁপে উঠল কেন?’ বাড়িওয়ালা তিনতলা থেকে নেমে এসেছেন। ফ্যাকাশে মুখ।
‘কি, হলোটা কি শুনি? ভূমিকম্প? সারা বাড়ি কেঁপে উঠল যে-’
অভীক-ইভান ওরা চার তলায়, বাড়িওয়ালা তিনতলায়। ওপর থেকে কিসের এত বিকট আওয়াজ হলো, ভেবে পান না বাড়িওয়ালা আলমগীর সাহেব।
‘আমি হার্টের রোগী। এই আছি এই নেই। এত আওয়াজ কি সইতে পারি?’
ছোটাছুটির পর সবাই বুঝতে পেরেছে, এ ভূমিকম্প নয়। খাটের ওপর দাঁড়িয়ে অভীকের ব্যায়ামের কসরত চলছে।
হেলথ ইজ ওয়েলথ- কথাটি বুঝিয়ে বলতে গিয়ে ইংরেজি স্যার বলেছেন, স্বাস্থ্যই জীবনের সব কিছু। ব্যায়াম করে স্বাস্থ্য ঠিক রাখবে।
বাবা গজগজ করেন, ‘স্যার কি একটি কথাই বলেছেন আর কিছু বলেননি? সেগুলো মনে নেই?’
ঠাম্মা বিড়বিড় করে বলেন, ‘ঘর নষ্ট বড় ভাই পাগল।’
অভীকদা কি পাগল? ব্যায়াম করলে তো একটু-আধটু আওয়াজ হবেই, এ নিয়ে সবার এত মাথাব্যথা কেন?

এক্সারসাইজের পর যে কতকিছু খাওয়া দিতে হয়, মা এই ভেবে ভেবে হয়রান। পেয়ারা, টম্যাটো, জলপাই, আমলকী, শশা, কামরাঙা রকমের খাবার দিতে দিতে মা ক্লান্ত।
ফ্রিজে আপেল আছে, কেটে খাও-তা নয়, দেশি ফল খেতে হবে, দেশের জিনিসকে অবহেলা করতে নেই। মা রেগে বলেন, বনে-বাদাড়ে ৮ দেশি ফল আছে, সব খুঁজে এনে খাও, বেতফলটাই বা বাকি থাকে কেন?
সবার কথা শুনে ভীষণ মন খারাপ ইভানের। অভীকদাদা শরীর সারাবার জন্য কত কিছু করে, তাও তো ওর চোখে হ্যারি পটারের মতো লটর-পটর চশমা উঠেছে।
অভীদাদাকে যখন স্কুলের বন্ধুরা মি. ইয়াহু বলে ডাকে, ইভুর ছোট্ট বুকের ভেতরটা আনন্দে ভরপুর হয়ে ওঠে। দাদা বাড়িতে-রাস্তায় হেঁটে যেতে যেতে জুডো-ক্যারাটে অভ্যেস করে। ফ্লাইং ঘুষি পাকিয়ে বাতাসে ছুঁড়ে দেয়।
ইভুর বেশ লাগে দেখতে। ওরেব্বাস, দাদা যেন ছোটখাটো এক কুস্তিগীর। ও নিজে হাড়গিলার মতো দেখতে হলে কি হবে, অভীদাদা কাছে থাকলে ওর বুকের ভেতরটা একরাশ সাহসে গমগম করে।
দাদাকে দেখে দেখে ইভুও আজকাল এক্সারসাইজ করা শিখেছে।
ফাঁকা ঘর পেলেই বড় আয়নার সামনে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ চালাতে থাকে সে। দাদা যেমন মনে করে ঠিক তেমনই।
খুব গোপনে এসব করে সে, কেউ যেন দেখে না ফেলে। মা দেখে ফেললে তো ঝাঁঝিয়ে উঠবেন, ওহ বড় ভাইকে খেতে দিতে দিতে হয়রান, তোমাকে আবার হাতি-ঘোড়া কি দেব শুনি? পড়া নেই শোনা নেই, শুধু স্বাস্থ্য রক্ষা।
ছোটকা নির্ঘাত বলবে, সবাই দেখে যাও মি. তেজপাতার কা-! মামুর মুখোমুখি হলে বলবেন, কি ব্যাপার মি. টিনটিন, শইলডা ভালা?
মনে মনে এসব কথা নিয়ে ঘোঁৎ ঘোঁৎ করে ইভু, ঠিক বুনো ষাঁড়ের মতো। ঘোঁৎ ঘোঁৎ করবে না? ছোট বলে কি ওর রাগ নেই? শইলডা ভালা না মন্দ তাতে তোমার হবেটা কি?

ইসস্, আর কেউ যেন রোগা-পাতলা হয় না। বড় হলে ও অভীদাদার মতো জুডো-ক্যারাটে শিখবেই শিখবে। ইয়াহু হু হু হা হা বলে ঘুষি পাকিয়ে বাতাসে ছুঁড়ে দেবে।
হাড়গিলে কি বরাবর কেউ থাকে? ছোটকাও নাকি ছেলেবেলায় পাটকাঠির মতো ছিল। কথাটা অবশ্য ঠাম্মার মুখে শোনা। সেই ছোটকা এখন ডাম্বেল ভাঁজে, শরীর নিয়ে যে কত কসরৎ করে। এমন দশাসই চেহারা ছোটকার, দাদা ব্যায়াম করলে দোষ কোথায়?
মা-ঠাম্মা দু’জনেই গজগজ করেন।
করো আরো এক্সারসাইজ, করো অভী, খাটের ওপর উঠে লাফালাফি, এবার হয়েছে তো? বাড়িওয়ালা রেগে একসা হয়ে আছেন।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সেই সময়ে ইভান-ইভু দাঁড়িয়েছে। ব্যায়ামের কোনো নিয়ম-কানুন সে জানে না, তবু সে চেষ্টা করে।
যেই না ইভান দু’হাত গুটিয়ে বাইসেপ তৈরি করার চেষ্টা করছে অমনি ছোটকা কোত্থেকে ছুটে এসে খপ করে হাত চেপে ধরে।
– কি রে ইভু, বাইসেপ তেরি করছিস বুঝি? দারুণ তো!
দু’চোখ কপালে তুলে ছোটকা ফের বলে, ওরে-ব্বাস! ও কি সুপুরি না মার্বেল রে?। বাবা হুংকার ছাড়েন, বাইসেপগুলো সুপারি আর মার্বেলের মতো করেই তো বাড়িছাড়া করল দুই ছেলে।
অভীক আর ইভান দু’জন কাঠগড়ায় আসামি। মা বলেন, ব্যায়াম করা আর সারাদিন খাই খাই। অঙ্কুর, বের হওয়া ছোলা, শশা-গাজর-বীট-পেঁয়াজর সালাড দাও। কেন, বাড়িতে আর কারুর পেট নেই? খিদে বুঝি অভীরই লাগে? আর কারুর খিদে লাগে না?
মা দাদার কথাই বলল শুধু, ইভান তো সবে নবিশ।
বাড়িওয়ালা তিন তলায়, অভীরা চারতলায়। বাড়ি ছাড়ার নোটিশ জারি করেন তিনি। বাড়ি ছাড়ো, সাফাই করো ঘর-দোর। বাড়ি আমার কুস্তির মাঠ নয়। ভোরবেলা থেকে লাফালাফি, দাপাদাপি। এ শরীরে আর সয় না, ব্যায়াম করতে হয় নিজের বাড়িতে করো।

অভী থেমে থেমে বলে, বাড়িওয়ালার মাথায় মারব নাকি চাঁটি?
ছোটকা বলে, চাঁটি নয় রে, গাট্টা মেরে আয়- তবে ব্যাটা টের পাবে।
মা তেতে উঠেন, যাও-গাট্টা-চাটি যা হোক মেরে এসো। ছাড়ার তা রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াই।

দুই.
এখানকার কাজ শুধু বাড়ি খোঁজা। বাদলমামু, ছোটকা, বাবা, খুঁজতেই থাকেন। মন মতো বাড়ি আর পাওয়া যায় না। মা একদিন বলেন, কি অত খোঁজাখুঁজি করছ? পরের বাড়িতে থাকতে আর ভাল লাগে না। কিনে ফেল বরং।
– কিনে ফেল-বললেই হলো? কত টাকা লাগবে সে খেয়াল আছে? তোমরা তো বলেই খালাস।
ছোটকা-মামু-ঠাম্মা সবাই বলে, সেই ভালো।
সত্যিই তো-চারপাশে ইট-কাঠ-পাথর দিয়ে বানানো আকাশ-ছোঁয়া ফ্ল্যাট।
অভী মুখ এইটুকুন করে বসে আছে। খাটের ওপর ব্যায়াম করার জন্যই শব্দ। তার জন্যই বাড়িছাড়া হতে হচ্ছে। ইভুকেও নাকি ট্রেনিং দিচ্ছে সে। এমন সব কথা বড়দের মুখে। ঠাম্মা চোখ পাকিয়ে মাঝে মাঝেই বলেন, বাঘের সাথে ফেউ শিয়ালী। বাঘ হলো দাদা, ফেউ শিয়ালী হলো ইভু।
যা হোক, তের তলায় ফ্ল্যাট পাওয়া গেল। ঠাম্মা চোখ কপালে তুলে বলেন, তের তলা? উঠব কি করে রে? আমার হাঁটুই তো ভেঙে যাবে।
ছোটকা বলে, কুছ পরোয়া নেই মা জননী, লিফট আছে।
অভী-ইভুর আনন্দ ধরে না লিফটের কথা শুনে। ইভু খুশিতে ভাসছে। বন্ধুদের কাছে গল্প করার মতো বেশ একটা ঘটনা।
মা কিছুটা মন খারাপ করেন।
আনলাকী থার্টিন, তের তলায় গিয়ে খারাপ কিছু হবে না তো? বাবা ফের হুংকার দেন, বাড়ি বিশ তলা, তের তলায় গেলে কি হবে শুনি? দুনিয়ার মানুষ থাকছে তের তলায়। টাকা-পয়সা যোগাড় করতে জেরবার হচ্ছি আমি। ভাগ্যিস রেডি ফ্ল্যাট পাওয়া গেছে, নয়তো কোন চুলায় যেতাম?

যা হোক, নতুন বাড়িতে ওঠে ওরা। পুরনো বাড়ি থেকে আসার সময় বাড়িওয়ালার দিকে ইভান তেরছা চোখে তাকায়। যেন বলে, এবার আমরা নিজেদের বাড়িতে যাচ্ছি। কেউ আর যখন-তখন চলে যেতে বলবে না। ইচ্ছেমতো হাত-পা ছড়িয়ে ব্যায়াম করব। যেমন খুশি থাকব। গেটের বাইরে এসে শেষবারের মতো গন্ধরাজ-জুঁই আর দোলন চাঁপার মিহি গন্ধ নিঃশ্বাস ভরে টেনে নেয়। পায়ের কাছে দু’তিনটে চড়–ই লাফালাফি করে। মাথার ওপরে বর্ষার মেঘভরা বিশাল আকাশটি মন খারাপ করে বসে আছে।

আচমকা বুকের ভেতরটা ছলাৎ করে ওঠে। তবে ক্যাডবেরীতে কামড় দিয়ে দুঃখ ভুলে যায় ইভান।

তিন.
নতুন বাড়িতে এসেছে ক্লাসের বন্ধুরা- টিটো, মিতুল, সোহাগ, তানভীর।
মা ওদের জন্য ফুলকো লুচি করে রেখেছেন, পায়েস, কেক- কত কিছু। ইভুর বন্ধুরা আসবে, খাবে। মায়ের খুশির অন্ত নেই। ইগলু-কোন-ক্যাডবেরী-চকোবার তো রয়েছেই।
লিফটে চড়ে ছাদে গেল সবাই, হৈ-হল্লা করল। আবার নিচে নেমে এলো। চমৎকার খোলামেলা ছাদ, লিফট চড়ে দশবার ওঠানামা করো, থাই অ্যালুমিনিয়ামের জানালা- কি নেই? বন্ধুরা বলে, ইভু, তোরা বেশ আছিস।
যাবার বেলা টিটো হাত নেড়ে বলল, খুব এনজয় করলাম ইভু। তোদের বাড়ি থেকে আকাশটা দেখা যায় না- না রে? সোহাগ বলল, ইয়েস, ঠিক ধরেছিস, শুধু আকাশটাই হারিয়ে গেছে।
সন্ধ্যা নেমেছে।
পড়তে বসছে অভীদা, ইভুর সামনেও বইয়ের পাতা খোলা। পড়তে পারছে না। এ বাড়িতে এসে বুঝি আকাশটাকে হারিয়ে ফেলেছে? হ্যাঁ-তাই তো, টিটো সোহাগ ঠিক বলেছে। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে, জানালায় চোখ রেখে এক চিলতে আকাশ দেখতে পেল। চারপাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে আকাশ ছুঁয়ে থাকা ফ্ল্যাট। পুরো আকাশ নয় শুধু এক চিলতে আকাশ।

কোথাও গাছপালা, লতাপাতা নেই। দেশলাইয়ের বাক্সের মত বাড়ি আর বাড়ি। চমৎকার বাহারী রঙের নকশাগুলো দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে এগিয়ে আসছে।
– কি গো, মন খারাপ করে আছ কেন, ইভু? গাল দু’টি ফুলে যেন ঢোল হয়ে আছে, ব্যাপারটা কি?
– টাইলস বসানো পুরো বাড়ি, থাই অ্যালুমিনিয়ামের চমৎকার সব। জানালা, রঙিন কাঁচ- তোমার ভাল্লাগে না?
– মোটেও নয়।
– কেন নয়? লিফটে চড়ে হুঁশ করে বারো তলায় যেতে পারো, বোতাম টিপে নিচে নেমে যেতে পারো। পুরনো বাড়িতে কি ছিল শুনি? বাড়িওয়ালা তো রেগেমেগে তাড়িয়ে দিয়েছে। সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঁ-হাঁ করোনি?
– ওসব ছাই আমি জানি না, আমি পুরনো বাড়িটার কথা শুধু ভাবতে চাই। পুরনো বাড়ির স্বপ্ন দেখতে চাই।
এক চিলতে আকাশ ফের চোখ ভরে দেখে ইভু। তুলোর মতো সাদা মেঘগুলো ভাসছে। মা বললেন, এগুলো বাহারী মেঘ, এ মেঘে বৃষ্টি হয় না, এখন আশ্বিন মাস, শরৎকাল।
এ সময় আকাশ কাচের মতো ঝকঝকে থাকে। ফুলের গন্ধমাখা হাওয়া বয়ে যায়। এখানে কিছুই টের পায় না ও।
নতুন বাড়িতে এসে এই প্রথম মন খারাপ করে ইভান।
পড়া শেষ করে, খেয়ে-দেয়ে এক সময় বিছানায় যায়। দেয়ালের দিকে মুখ করে শুয়ে থাকে ইভু। হাত দিয়ে চুপটি করে এক সময় জানালার কাচ সরায়। অভীদাদা পাশে শুয়ে আছে। ও ঘুমোলে একেবারে কাদা। একদম নড়াচড়া নেই। এত ব্যায়াম করলে পরিশ্রম হয় না? কোনো আওয়াজেই ওর ঘুম ভাঙে না।
ঘুমন্ত দাদার দিকে তাকিয়ে ভীষণ রাগ হতে থাকে ওর। পুরনো বাড়িটা তো ব্যায়ামবীরটার ধুপধাপের জন্য ছাড়তে হলো।
ফেলে আসা চারতলা বাড়িটির জন্য নিঝুম রাতে ভীষণ মন খারাপ হতে থাকে ওর। কেন এমন হয় ইভু বুঝতে পারে না। এ বাড়িটি ঝকঝকে নতুন সবকিছু রয়েছে এখানে, কিন্তু পুরনো বাড়িতে যেমন বিশাল আকাশটা দেখা যেত, এখানে তো তা দেখা যায় না।
টিটো সত্যি কথাই বলেছে। এখানে লিফট আছে, আকাশ নেই। এখানে ব্যালকনি আছে, পাখি নেই।
জানালার কাচের ভেতর দিয়ে দেখা আকাশের সাদা মেঘের কাছে বিষণœœ ইভু মনে মনে চিঠি লিখতে থাকে।
ওগো মেঘ, তোমাকে তো আমি আগের মতো দেখতে পাই না। কোথায় তোমরা হারিয়ে গেলে, বলো তো। তুমি আমার কথাগুলো চিঠির মতো করে নিয়ে যাও, প্লিজ।
বিশাল ছাদের মতো নীল আকাশকে বলো, খুব মনে পড়ে ওকে। কিচির-মিচির চড়–ই পাখিদের জানিও, ওদের গান শুনতে আমার বড় ইচ্ছে করে।
সেই চারতলা বাড়িটির কথা, -মেঘ তোমার মনে আছে তো? সত্যি বলছো মনে আছে? বেশ, চারপাশে লাগানো জুই-গন্ধরাজ আর দোলনচাঁপা গাছগুলোকে বলো, ওদেরকে খুব মনে পড়ে আমার। একটুও ভুলিনি। পাখিরা গাছে বসে দোল খেত, দেখেছ সব মনে আছে আমার।
এখানে ইট-কাঠ-পাথরের উঁচু উঁচু বাড়ি। আকাশকে যেন ছুঁয়ে ফেলছে ওরা। পুরনো বাড়ির সেই বিশাল চাঁদোয়ার মতো তারাভরা আকাশটিকে মনে পড়তে থাকে ইভুর। ভীষণ কান্না পেতে থাকে ওর। এমন তো ওর কখনোই হয়নি।
হঠাৎ কড়কড় সুরে গম্ভীর হয়ে রাগী মেঘ ডাকতে থাকে। শান্ত হাওয়া দুষ্টু হয়ে বইতে থাকে। মা যে বলে, শরৎকালের বাহারী মেঘে বৃষ্টি হয় না।
তাই বুঝি?
ঐ তো মেঘ ডাকছে, হাওয়া বইছে। ইভুর মনে মনে বলা দুঃখ নিয়ে মেঘেরা চিঠি নিয়ে ছুটে যেতে থাকে। ছুটে যাও মেঘ, আরো জোরে আমার চিঠি নিয়ে ছুটে যাও।
হ্যাঁ-শরৎকালেও বৃষ্টি হয়। অকাল বৃষ্টি। জানালা খোলা পড়ে থাকে তেমনই। বাদলা হাওয়ার ঝাপটা আসে। ফুলের মিহি গন্ধে ঘরটি ভরে যায়।
বড় বড় পাপড়ি ঘেরা ইভানের চোখের কান্না বৃষ্টির জলে ধুয়ে যেতে থাকে।

Share.

মন্তব্য করুন