বাড়ি থেকে রাগ করে তপু আসে পথে
ফিরবে না ঘরে আর মোটে কোনোমতে।
আব্বুটা বদরাগি আম্মুও সেই
তার প্রতি ভালোবাসা একদম নেই।
গল্পের বই কিনে দেয় না তো তাকে
সারাক্ষণ দুইজন চোখে চোখে রাখে!
দিনে দুষ্টুমি হলে সন্ধ্যায় মার
কোনো কিছুতেই তারা দেয় না’ক ছাড়।
আজও দিলো মার তাই রাত্তিরে ঘরে
ফিরবে না। গেলে যাবে অপুদের ঘরে;
কিংবা কাটাবে রাত বটগাছ তলে
খায় খাক ভূত এসে হাউমাউ বলে!

বটতলে এসে ঠিক বসে বসে ভাবে
এইখানে র’বে নাকি বাড়ি চলে যাবে!
ভয় ভয় লাগে তার গায়ে দেয় কাঁটা
এই গাছে থাকে ভূত, এক ঠোঁট ফাটা।

চোখের পাতায় তার ঘুম নেমে আসে
ঝলমলে পরী দ্যাখে তার দুই পাশে।
বাড়িটাও ঝলমলে বাদশাহী ঢঙে
ফুলের বাগানে ফুল নানারূপ রঙে!
নেচে নেচে তার পাশে গায় কেউ কেউ
পরীদের পাখনাতে রূপ খেলে ঢেউ।
কেউ আনে ফুল আর কেউ দেয় ফল
কেউ দেয় চোখ জুড়ে ঘুমের আঁচল।
নিঝঝুম নিশী-রাত বিরাট মহল
কোত্থাও নেই কোনো পুলিশ টহল।
সবখানে মায়া মায়া জোছনার ঢল
বিরাট দীঘির বুকে জল টলমল।
তার পাশে আছে এক নীলাভ মিনার
মিনারটা ছুঁয়ে আছে জলের কিনার।
একটা ভবন যার সুনসান দশা
দরজায় নেই কোনো সিক্যুরিটি বসা।
বলে গেল নীলপরী এসে কানে কানে
দেখেছ কি এইরূপ তুমি কোনোখানে?
সহসাই তপু যায় বিরাট সে ঘরে
গিয়ে দ্যাখে কতকিছু রাখা থরেথরে!
সেই ঘরে একপাশে খাস কামরায়
অঘোরে ঘুমায় পরী, রূপ চামড়ায়!
নীলপরী বলে- ‘এই কন্যার সাথে
বিয়ে দেবো তোমাকেই, আজ এইরাতে!’

সহসাই ঘুম ভাঙে আব্বুর ডাকে
চেয়ে দেখে চারিদিকে কত পাখি ডাকে।
কত ফুল ফুটে আছে বুনো গাছে গাছে
কিন্তু পরীর দেশ নেই মোটে কাছে।
কই গেল কোলাহল পরীদের চুম্
কই গেল বিয়ে আর তাক-ঢুম-ঢুম!
তপু যায় বাড়ি ফিরে মনে জাগে ব্যথা
মনে পড়ে রাত্তিরে বিবাহের কথা।
বিশ্বাস জন্মেছে ভূত নেই গাছে
আছে শুধু জোছনার স্বপ্নেরা পাছে।

Share.

মন্তব্য করুন