কী সুন্দর ধানের শীষ! একটা ধানের গাছ হাতে নিয়ে পাকা ধানের শীষে হাত বোলাতে বোলাতে অবাক নয়নে দেখছে আজিজা। শহুরের পরিবেশে বড় হওয়া আজিজা কখনো এতো কাছ থেকে ধানের শীষ দেখেনি। লকডাউনের সুবাদে এবার গ্রামে এসে সেই সুযোগ পেলো। দাদু আজিজার আগ্রহ লক্ষ করে কাছে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার কাছে যে ধানের শীষ আছে তাতে কয়টা ধান বা শস্য আছে? আজিজা গুনে গুনে বললো, ‘দাদু এটাতে একশত ধান আছে।’ আচ্ছা এবার বলো তো কয়টা ধান থেকে এই একশত ধান হলো? আজিজা কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললো, ‘একটা ধান থেকে।’
দাদু মুচকি হেসে বললেন, ‘না, উত্তর সঠিক হলো না।’ কেন? জানতে চাইল আজিজা। তবে শোনো! একটা ধানের বীজ থেকে প্রথমে একটি গাছ হয় তারপর সেই গছের গোড়া থেকে আরো ছয়-সাতটা গাছ হয়। প্রত্যেকটা গাছে তোমার হাতের এ ধানের শীষের মতো শীষ হয়। এবার বলতো দেখি একটা ধানের বীজ থেকে কয়টা ধান হতে পারে?’ আজিজা চিন্তা করতে লাগলো ‘যদি একটা গাছের গোড়া থেকে সাতটা গাছ হয়, তবে সাতটা শীষ! প্রত্যেক শীষে যদি একশত করে ধান হয় তবে সাতশ! পেয়েছি! দাদু একটা ধান থেকে সাতশ ধান হয়।’ দাদু মাথা নেড়ে বললেন, ‘এবার সঠিক উত্তর দিয়েছ দাদুভাই।’ কিন্তু আজিজা অনেক আশ্চর্য হলো একটা ধান থেকে সাতশত ধানের উৎপন্ন হয়! কী বিশাল ব্যাপার!
দাদু বললেন, ‘এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, “আল্লাহর রাস্তায় দান করার উপমা হলো একটি শস্য যা থেকে সাতটি শীষ বের হয় এবং প্রতিটি শীষে একশত করে শস্য থাকে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে আরো বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।” (সূরা বাকারা : ২৬১)। দাদু বললেন, ‘একটি শস্য দানার মতোই আল্লাহ তায়ালা দানের প্রতিদান দিয়ে থাকেন।’ আজিজা আরো আশ্চর্য হয়ে বললো, ‘তার মানে এক টাকা দান করলে প্রতিদান হিসেবে সাত শত টাকা দানের সাওয়াব পাওয়া যাবে?’ দাদু বললেন, ‘হ্যাঁ! তার চেয়েও বেশি পাওয়া যাবে।’
‘কিভাবে বেশি পাওয়া যাবে দাদু!’
‘বলছি, শোনো! রমজান মাসে প্রত্যেক ভালো কাজের প্রতিদান সত্তর গুণ বৃদ্ধি করা হয়। তার মানে যদি কেহ রমজানে দান করে তাহলে এক টাকার বিপরীত (৭০০দ্ধ৭০); মানে ঊনপঞ্চাশ হাজার টাকার সমান সাওয়াব পাবে। তারপর আল্লাহ যাকে ভালবাসেন তাকে আরো বাড়িয়ে দিবেন। আজিজা বললো, ‘তাহলে তো রমজান মাসে বেশি বেশি করে দান করা দরকার!’
হ্যাঁ ঠিক বলেছ, আমাদের উচিত সব সময়ই দান করা কিন্তু রমজানে বেশি বেশি করে দান করলে বেশি বেশি করে আল্লাহ নেকি দিবেন। তাই রমজানে বেশি দান করা উচিত। আজিজা প্রতিদিন টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে জমা করবে আর আগামী রমজানে তা দান করবে বলে ঠিক করলো। তার সিদ্ধান্তে দাদুও অনেক খুশি হলেন এবং দোয়া করলেন।

Share.

মন্তব্য করুন