সাতক্ষীরার মানুষ
-মুহাম্মদ ইব্রাহিম বাহারী

এপারে গ্রাম ওপারে বন,
মাঝখানে নদী তার করে গর্জন।
ডোরাকাটা টাইগার হয় নদী পার,
মানুষ গ্রাস করে পেট ভরে তার।

এপারে মানুষ ওপারে বাঘ,
মাঝেমাঝে গ্রামে চলে হাঁকডাক।
বাঘের থাবায় কারো জীবন হয় শেষ,
তবুও মানুষ খোঁজে সুখ অনিমেষ।

সুন্দর মানুষ আর সুন্দরবন,
মিশে হয় একাকার করে আলিঙ্গন।
সাহসী মানুষেরা এই বাঁকে থাকে,
ইতিহাসের পাতায় নাম লিখে রাখে।

কত সুখ কত ভয় বাঘের আবাস,
সাতক্ষীরাবাসী ভাই, সাবাস! সাবাস!!

আমাদের দাদিজান
-মোরশেদা হক পাপিয়া

আমাদের দাদিজান
বলা কথা ভুলে যান
কী যে তারে কই?
বলে দাদি পান দে
দা টারে শান দে
খাবো ভাজা কৈ।

দিলে তারে খিলি পান
কান মলে দেয় টান
বলে কোথা দই?
দাদি খান দুধ-কলা
পাখি ডাকা ভোর বেলা
ভেজা মুড়ি খই।

এইটুকু হলে দেরি
করে থাকে মন ভারী
চুপ করে সই।
তবু তারে বাসি ভালো
তিনি যে জ্ঞানের আলো
তারে ঘিরে রই।
সারা দিন পাশাপাশি
দাদি যে প্রাণের বাঁশি
সুখ থৈ থৈ।

ইচ্ছে করে
-পথিক ইদ্রিস

আমার বড় ইচ্ছে করে
নীলাম্বরের মেঘ হতে
ঝড়ের প্রবল বেগ হতে
সব কালিমা ধুয়ে দিতে
ধরার বুকে ত্যাগ হতে।

আমার বড় ইচ্ছে করে
মেঘের জমাট পিল হতে
সে পিল ভেঙে শিল হতে
সে শিল ভেঙে সব জালিমের
শির বরাবর ড্রিল হতে।

আমার বড় ইচ্ছে করে
মেঘমালারই দল হতে
বৃষ্টি-বারির ঢল হতে
ক্রোধান্বিত ধরার গায়ে
মেঘের শীতল জল হতে।

মায়ের হাসি ফুলের মতো…
-খায়রুল আলম রাজু

শিশির মাখা সবুজ ঘাসে হিরের নকশিকাঁথা!
বাগান জুড়ে জুঁই-চামেলি সবুজ সবুজ পাতা;
আকাশ পাড়ে চৈতালি চাঁদ তারায় তারায় ভরা
পুকুর জলে শব্দ-বিহীন দুষ্টু বায়ুর ছড়া।
সাত-সকালে ফুলও পাখির নাশতা খাওয়ার ধুম
লাউ-কুমড়ো শজনে গাছে প্রজাপতির ঘুম…
বিকেল শেষে সবুজ ধরায় সন্ধ্যা রাতের শাড়ি…
ছাদের সীমা মেঘের দেয়াল লক্ষ-পরীর বাড়ি।

চুলের গোছায় সুভাস ফুলের, শিশির লুটোয় পায়ে,
উষার মৃদু লালচে আলো জড়িয়ে নিলাম গায়ে।
নিঝুম রাতের জোৎস্না মেখে দাঁড়িয়ে ছিলাম একা;
নদীর সাথে সাগর পথে স্বপ্নে হঠাৎ দেখা!
“বলল, আমায় চিংড়ি-বোয়াল, পাবদা-ইলিশ, তিমি…
দেখবে এসো, জলের নূপুর সুরের রিমিঝিমি!
তোমায় দেবো মুক্তো-ঝিনুক রঙিন জলের বাঁশি…
চাইলে দেবো ফুলের মতো শুধুই মায়ের হাসি।”

পাখির গানে
-আরিফুল ইসলাম সাকিব

গাছের ডালে পাখির গলায়
মিষ্টি মধুর গান,
মুগ্ধ হয়ে শ্রবণ করি
যায় জুড়িয়ে প্রাণ।

মুগ্ধ করা ঐ কোকিলের
কুহুকুহু সুরে,
ছন্দে-সুরে ভেসে ভেসে
যাচ্ছি বহুদূরে।

কিচিরমিচির ডাকা-ডাকি
রোজ সকালে শুনি,
পাখির মিষ্টি গানের সুরে
স্বপ্নের জাল বুনি।

খোকার জগৎ
-সাঈদুর রহমান লিটন

বিকেল বেলা পথের ধারে
ফড়িং ওড়ে গাছে,
ওড়ে ফড়িং ছোটে খোকা
তিড়িং বিড়িং নাচে।

নানা রঙের প্রজাপতি
রোজ খোকাকে ডাকে,
খোকার সাথে খেলে বেড়ায়
প্রজাপতির ঝাঁকে।

জোনাক জ্বলে রাত্রি হলে
জোনাক খেলার সাথি,
মিটিমিটি আলোর সাথে
খেলে সারা রাতি।

চাঁদের সাথে বন্ধু করে
জোছনা জলে ভিজে,
সবাই যখন ঘুমের ঘোরে
জাগে খোকা নিজে।

ভাঙা গলায় গল্প করে
কবে আসবে বাড়ি,
আসলে বাড়ি চাঁদ মামাজি
রোজ পাঠাবে গাড়ি।

Share.

মন্তব্য করুন