শিশুদের মন বুঝা বা মনের চাহিদা বুঝতে পারা খুবই কঠিন। শিশুর মনোজগৎ বিকাশে অভিভাবকদের চেষ্টারও অন্ত থাকে না। বলা হয়ে থাকে, শৈশবের ভাবনাই পরবর্তী সময়ে শিশুর গতিপথ নির্ধারণ করে দেয়। সচেতন অভিভাবকেরা তাই শিশুর জন্ম থেকেই তাকে সবচেয়ে সুন্দর পরিবেশে রাখার চেষ্টা করেন। এ চেষ্টায় শতভাগ সফল হওয়া যে বেশ কষ্টসাধ্য, তা বলাই বাহুল্য। তবে এবার অভিভাবকদের জন্য এসেছে মস্ত বড় এক সুসংবাদ। তাঁদের উপকারে গবেষকেরা একটি স্মার্টফোন অ্যাপ নিয়ে এসেছেন। এর মাধ্যমে নতুন বাবা-মায়েরা তাঁদের শিশুর চিন্তা ও অনুভূতি সম্পর্কে জানতে পারবেন।

গবেষকেরা এরই মধ্যে অ্যাপটির নাম নির্ধারণ করে ফেলেছেন। বেবিমাইন্ড নামের অ্যাপটি শিশুর মনোজাগতিক উন্নতি সম্পর্কেও অভিভাবকদের সঠিক তথ্য দেবে। নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রতিদিন শিশুরা কী ভাবছে, তাদের মনের ভিতরে কী চলছে, সে ব্যাপারে অভিভাবকদের ভাবতেও অনুরোধ গবেষকদের। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্কের অধ্যাপক এলিজাবেথ মেইন্স বলেছেন, ‘শিশুদের নিয়ন্ত্রণে অ্যাপ ব্যবহারের বেশকিছু সুবিধা রয়েছে। এটি স্বল্প খরচের, সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং এরই মধ্যে কিছু মানুষের জীবনে এটি সম্পৃক্ত। কিন্তু আমরা চাই এ অ্যাপটি যেন অভিভাবক-শিশুর সম্পর্কে সুস্পষ্ট প্রভাব রাখতে পারে।’

নিরীক্ষার জন্য গবেষকেরা মায়েদের একটি দলের শরণাপন্ন হন, যারা শিশুর জন্ম থেকে শুরু করে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত অ্যাপটি ব্যবহার করেছেন। গবেষকরা মায়ের সঙ্গে শিশুর খেলাধুলা পর্যবেক্ষণ করেন এবং শিশুর ভাবনা ও অনুভূতির সঙ্গে অভিভাবকের সম্পৃক্ততা ব্যাপারে খোঁজখবর রাখেন। অংশগ্রহণকারী মায়েদের সঙ্গে অ্যাপ ব্যবহার না করা আরেক দল মায়ের তুলনা করা হয়। তাদের প্রত্যেকেরই ছয় মাস বয়সী সন্তান ছিল। অ্যাপ ব্যবহার করা মায়েদের সঙ্গে অ্যাপ ব্যবহার না করা মায়েদের বিরাট ব্যবধান খুঁজে পাওয়া যায়। অ্যাপ ব্যবহার করা মায়েরা তাদের সন্তানের ভাবনা ও অনুভূতির সঙ্গে অধিক পরিমাণ সম্পৃক্ত ছিলেন অন্যদের তুলনায়। এর আগের গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, মধ্য বিশ বা এর বেশি বয়সী মায়েদের তুলনায় অল্প বয়সী মায়েরা সন্তানের ভাবনা ও অনুভূতির সঙ্গে কম সম্পৃক্ত। এখনকার গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, অল্পবয়স্ক মায়েদের মধ্যে যারা অ্যাপটি ব্যবহার করেছেন, তারা বয়স্ক মায়েদের মতোই শিশুদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

Share.

মন্তব্য করুন