সৃজনশীল লেখালেখি সবাই পারে না। সব মানুষই পারে না। আর যন্ত্রের কথা তো আলাদা। তবে স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, বিমান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা রোবট প্রযুক্তি। এমনকি লেখার মতো সৃষ্টিশীল কাজেও ব্যবহার হচ্ছে এআই প্রোগ্রাম। কিন্তু নতুন একটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি এত চমৎকার লিখতে পারে যে, সেটি এখনই বাজারে না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্মাতারা।সৃজনশীল লেখালেখিও করবে রোবট! । আরাফাত আলভী
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, জিপিটি২ নামের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রোগ্রামটি সংবাদপত্রে বা খবরে ব্যবহৃত প্রতিবেদন লিখতে পারে এবং এটি গল্প-উপন্যাসও এত ভালো লিখতে পারে যে এ ধরনের লেখাকে ‘ডিপফেক টেক্সট’ বলা হচ্ছে। একজনের শরীরে আরেকজনের মাথা নিখুঁতভাবে জুড়ে দিয়ে তৈরি ভিডিওগুলোকে ‘ডিপফেক’ বলা হয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এমন একটি ভুয়া ভিডিওতে তিনি কখনোই বলেননি এমন কথা তাকে বলতে দেখা গেছে। ‘ডিপফেক টেক্সট’-ও একইভাবে অন্যের লেখার স্টাইল নকল করে নতুন লেখা লিখতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তাদের জিপিটি২ প্রোগ্রামটি এতটাই শক্তিশালী যে, এটির অপব্যবহারের ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে নির্মাতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাধারণ রীতি অনুযায়ী এটি মুক্তি দেয়ার বদলে, তারা এই যুগান্তকারী প্রযুক্তির প্রভাব আরও খতিয়ে দেখবেন। জিপিটি২ লেখক রোবটকে কয়েকটি শব্দ থেকে কয়েক পৃষ্ঠা লেখা দিয়ে সেই রকম করে আরও লিখতে বলা হয়। কোনও রোবট বা এআই প্রোগ্রাম কী রকম লিখতে পারবে তার সব ধারণা পাল্টে দিয়েছে নতুন প্রোগ্রামটি। এর উন্নত মান এবং নতুন ক্ষেত্রে ব্যবহারের সম্ভাবনা একে নজিরবিহীন এক প্রোগ্রামে পরিণত করেছে।সৃজনশীল লেখালেখিও করবে রোবট! । আরাফাত আলভী
জিপিটি২-কে জর্জ অরয়েলের বিখ্যাত উপন্যাস নাইন্টিন এইটি ফোরের প্রথম লাইন দিয়ে আরও লিখতে বলা হয়। প্রোগ্রামটি এক লাইন থেকেই উপন্যাসের কল্পবিজ্ঞানের ধাঁচটি অনুমান করতে পারে, এবং ওই রকমই একটি ভবিষ্যৎ সময়ের গল্প লিখতে শুরু করে। ব্রেক্সিট নিয়ে গার্ডিয়ান পত্রিকার একটি প্রতিবেদনের প্রম কয়েকটি প্যারাগ্রাফ দিয়ে প্রোগ্রামটিকে বলা হয় সম্পূর্ণ একটি প্রতিবেদন লিখতে। এরপর জিপিটি২ যে লেখাটি দেয়, তাতে প্রবীণ রাজনীতিবিদ জেরেমি করবিনের বক্তব্য, আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত প্রসঙ্গ ও প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের মুখপাত্রের জবাব রয়েছে এবং এর সবগুলোই রোবটটির লেখা, সত্যি নয়। অত্যন্ত শক্তিশালী হওয়ায় জিপিটি২-কে বাজারে ছাড়া হচ্ছে না। নির্মাতারা এআই প্রোগ্রামটির শক্তি পরীক্ষা করতে চাইছেন। এটি দিয়ে কী করা সম্ভব এবং কী করা সম্ভব নয় তার সীমানা নির্ধারণ করতে চাইছেন তারা। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মূলধারায় এটির ব্যবহার শুরু করার জন্য মানুষকে কিভাবে প্রস্তুত করা যায় সেটি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন উদ্ভাবকরা।

Share.

মন্তব্য করুন